পথে, ঘাটে, হাটে, মাঠে ছেলেরা বসে থাকে বান্ধবীর আশায়, কিন্তু হায়
অবুঝ মেয়েরা বসে থাকে সি এন জির আশায়। এই জন্যই কোনো এক বিজ্ঞ ব্যাক্তি সিএনজির পিছিনে লিখেছিলেন,
"ছেলেরা বসে আছে বান্ধবীর আশায়,
মেয়েরা বসে আছে সিএনজির আশার!"
যেদিন থেকে এটা দেখলাম সেদিন থেকেই আর মাঠে ঘাটে না বসিয়া, দাড়াইয়া থাকিতাম সিএনজির স্ট্যান্ডে!আর এইভাবে দাড়িয়ে থাকতে থাকতেই হঠাৎ একদিন পেয়ে গেলাম আমার হৃদয়ের রানী, নূপুরকে!
শুরু হলো নূপুরের সাথে, "অল্প অল্প প্রেমের গল্প, একটু একটু প্রেমের গিট্টু!"
আবেগী হইয়া বলিলাম, আসিবো ফিরে এই স্ট্যান্ডে ওগো আমার চুমকি , যখন হইবে আমাদের প্রেমের বর্ষপূর্তি!
প্রেম যখন পরিনত হইলো তখন একদিন নূপুরকে বলিলাম- "চলো সাথী ঘোড়ে আসী!"
উত্তরে সে বললো- "যদি থাকে পেট ভরা, ভয় করিনা দেশ ঘুরা!"
কি আর করা, ফাস্ট ফুডে খাওয়াইয়া দিলাম তাহারে পেট ভরাইয়া।"
আহা কি মজা এইবার যাবো দেশ ঘুরিতে!
দেশ ঘুরার উদ্দেশ্যে, উঠিলাম চুমাইয়া পরিবহনে!
সিএনজিতে তারে একলা পাহিয়া গেলো আমার রোমান্স বাড়িয়া! সুধাইলাম তাহারে আহ্লাদ করিয়া, "ফুল দিয় কলি দিয়,কাঁটা দিও নাহ, আস্তে আস্তে কিস্ দিও কামড় দিওনা!"
এই কথা শুনিয়া, সিএনজিআলা মাথা ঘুরাইয়া বলিল,
ভাইজান, "ভালোবাসা গাড়িতে নয় বাড়িতে" করিতে হয়!
আমি গেলাম চেতিয়া, বলিলাম চালাও চুমাইয়া পরিবহন আর চুমা দিতে দিবা না এইডা কেমন কথা! সেদিনের মতন খান্ত দিলাম!
এই ঘটনার অনেকদিন পরের কথা,
আমাদের প্রেম যখন চরমে তখন একদিন দেখিলাম, আমার হৃদয়ের রানীরে আরেকজনের সাথে করিতেছে ইটিশ পিটিশ!
ইহা দেখিয়া আমার হৃদয় গেলো ভাংগিয়া! মনে মনে প্রমোদ গুনিলাম, আর ভাবিতে লাগিলাম এতো দেখি, "এক ফুল দুই মালি কখনো ভর্তি কখনো খালি!"
কাছে গিয়া জিগাইলাম এইসব কি চলিতেছে! ধরা খাইয়া সে কহিল আরেহ ওহ তো আমার ভাইয়ের মতন আমরা করিতেছি একটু ফাইজলামি!
আমি বলিলাম বাহ, " দেখলে ফাইজলামি, আর না দেখলি চুরি"??
এইবার নিজেকে অনেক কষ্টে শান্ত করিলাম কারন, কোথায় যেনো পড়েছি, "রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন!"
তাই কোনো ক্রমেই রাগা যাবে নাহ।শান্ত কন্ঠে বলিলাম, আমাকে এভাবে জুলিয়ে রাখবানা!
সে বলিল ওক্কে তুমাকে জুলিয়ে রাখবো নাহ! তুমাকে ছাড়িয়া দিলাম!
তাহার কথা শুনিয়া তো আমার আক্কেলগুরুম! আমি বলিলাম এইভাবে ছারিয়া দিবা! বলে কিনা, "পিছনের দূর্ঘটনার জন্য পিছনের গাড়ি দায়ী থাকিবে!"
আমি তাহার পিছন পিছন ঘুরিয়াছিলাম তাই সব দায় দায়ীত্ব আমার!!
আমি বলিলাম আমার মধ্যে কি নাই যা ঐ নুনু মিয়ার কাছে আছে??
আমাকে বলিল তোমারটা অনেক ছোটো থুক্কু তুমি অনেক ছোটো!!
আমি স্বীকার করিয়া বলিলাম আমি ছোটো কিন্তু হৃদয় তো অনেক বড়! তাছাড়া ওর ড্রেসআপ অনেক স্মার্ট!
আমি ছোটো প্লীজ আমাকে মেরো নাহ! কারন তোমাকে না পেলে যে আমি মরে যাবো, আর বাঁচবো নাহ!!
তাহার মন গলে নাহ! এবার হালকা খেপিয়া গিয়া বলিলাম দেখো, "বাবা চাইলে ভাংতি নাই, শ্বশুর চাইলে অভাব নাই!"
মন ভাংগিয়া করিও না পাপ কারন, "পাপ কিন্তু বাপকেও ছাড়ে না!"
থ্রেট এ কোনো কাজ হইলো না, তাই এইবার ছাড়িলাম নীতি বাক্য, বলিলাম "পৃথিবীর শ্রষ্ঠ আদালত হচ্ছে মানুষের বিবাগ!
"পরম সুখের উদ্যানে সেই প্রবেশ করে যার হৃদয় সৎ ও পবিত্র!"
সে যদি নীতি বাক্য মানতই তাহলে কি আর আরেকজনের সাথে ঢলাঢলি করিতে পারিত, নাহ নীতি বাক্যেও কাজ হইলো নাহ!
এইবার আমি পুরাই ভাংগিয়া গিয়া নমনীয় হইয়া বলিলাম, "ফুলকে ভালোবেসে ফেলে দিও না, মানুষকে ভালোবেসে বুলে জেও নাহ!"
কিন্তু কিছুতেই পাষান হৃদয় গলিল না! সেদিন জীবনে অনেক বড় একটা শিক্ষা পাইলাম!আর কে না জানে শিক্ষাই জাতির মেরুন্ড!
একটা মানুষ তার সারা জীবনি শিক্ষা অর্জন করতে পারে, শিক্ষার আসলে কুনু বয়স নাই!এই ব্যাপারে আমাদের নবীজি বলেছেন, "দুলনাথেকেকবরপরজনতোগেনওরজনকরুন!"
এই ঘটনায় আমার অনেক বড় একটা উপলব্ধি হইলো!
"একটি ফুলের বাগান নষ্ট করতে যেমন একটা ছাগল যথেষ্ঠ,
তেমনি কয়েকটি ছেলের জীবন নষ্ট করতে একটা মেয়েই যথেষ্ঠ!"
তারপর অনেক দিন পার হইয়া গিয়াছে!
আজকে তাহার সাথে দেখা হইবার বর্ষপূর্তি! কথা ছিল সেলিব্রেট করিব একসাথে, তাইতো হাটিতে হাটিতে ফিরিয়া আসিয়াছি সেই সিএনজির স্ট্যান্ডে!! হালকা, নষ্টালজিক হয়ে গেলাম! আকাশপানে চাহিয়া থাকিলাম আর গুন গুন করে আওরাইতে লাগিলাম!
"পাখিরা উড়ে যায়, ওদের নিজের বাসায়, মানুষ দাড়িয়ে থাকে সি এন জির আশায়!"