-আন্টি কোথায় যাচ্ছেন? আন্টি বললেন
-বিড়ালটা কিছুই খাচ্ছে না তাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। আমার খুবই কৌতুহল হল বিড়ালের ডাক্তারের ভিজিট কত জানার জন্য,আন্টিকে জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম। বললেন ৭০০টাকা,আরো একটি তথ্য নিজে থেকেই দিলেন যেমন তিন হাজার টাকা খরচ করে বিড়ালকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন।
মাঝে মাঝে বাসার দারোয়ানকে গ্যারেজে আট দশ কেজি সিলভার কার্প, তেলাপিয়া মাছ কাটতে দেখি যেগুলি বিড়ালের খাদ্য। দারোয়ান এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম আন্টি সেদিন বিড়ালকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন ডাক্তার কি বলেছে জানেন? বললো
-হ জানি, ডাক্তার নাকি বলেছে বিড়ালের মাছ খেতে খেতে রুচি নস্ট হয়ে গেছে হয়ে গেছে তাই মাংস খাওয়াতে। আন্টি তাই বিড়ালের জন্য ব্রয়লার মুরগি এনেছেন। আন্টির প্রাণীদের প্রতি ভালবাসা অবশ্যয়ই অনুকরণীয়।
কিছুক্ষণ আগে যে দারোয়ানের কথা বলছিলাম যাকে দিয়ে আন্টি বিড়ালের জন্য মাছ কোটায় সেই দারোয়ান আমাকে বেশ সম্মান করে। কারণ আমি তাকে মাঝেমাঝেই দশ বিশ টাকা দেই চা খাওয়ার জন্য,ঈদের সময় ভাল বকশিশ দেই। গত রমজানে দারোয়ান মামা আমাকে বললো,
-আমি এই বাসায় আর কাজ করবো না, আমি বললাম কেন? দারোয়ান মামা বললেন,
-এত বড় দিন ইফতারে শুধু মাত্র একটু ছোলা পিয়াজু মুড়ি আর সেহেরিতে ভাত দেয়। উনি ক্ষুধার কষ্টে চাকুরী ছেড়ে দিতে চান। আমি মামাকে ডেকে আমার বাসায় এনে ভাত খাওয়ালাম। ভাত খেতে খেতে আরো কিছু তথ্য দিলেন যেমন :আন্টির বাসায় তিন ধরনের খাবার রান্না হয়। একটা নিজেদের জন্য, একটা বিড়াল কুকুরের জন্য, আর এক ধরনের খাবার কাজের লোকেদের জন্য।
স্বামী বিবেকানন্দ আজ বেচে থাকলে আর এই গল্প শুনলে আমার মনে হয় 'জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর' এই বাণী তুলে নিয়ে বলতেন, 'সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই '।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৪