কৃষক :
গ্রামে বাড়ি হওয়ায় আমি নিজেও কৃষি কাজের সাথে সরাসরি জড়িত, তাই আমি জানি এক কেজি চাল উৎপাদন করতে কৃষকের কি পরিমাণ পরিশ্রম হয়। শহুরে একটা বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করেন চাল কোথায় পাওয়া যায়? সে বলবে দোকানে। কথা সঠিক, চালতো দোকানেই পাওয়া যায়। এই চালকে দোকান পর্যন্ত নিয়ে আসার পিছনে কৃষকের যে অমানুষিক পরিশ্রম জড়িত রয়েছে তা কি কেজিতে ৬০ দিয়ে মেটানো যায়? আবার আপনার আমার দেওয়া এই ৬০ টাকা অর্ধেক চলে যায় মধ্যস্বত্তভোগীদের দখলে। কোন কোন সময় কৃষক তার প্রকৃত উৎপাদন খরচও পান না। তবুও তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করে যান। একজন শিশু কাদামাটির মত, তাকে অবশ্যই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানানোর পাশাপাশি মানুষ বানান। আমরা যে খাবার খাচ্ছি তার পিছনে কৃষকের কি ত্যাগ জড়িত রয়েছে তা তাকে বোঝান এবং কৃষকের কাছে কৃতজ্ঞ হতে শেখান।
শ্রমিক :
প্রতিদিন আমি যে সময়ে অফিসে বের হই গার্মেন্টস শ্রমিকরাও একই সময়ে তাদের কাজে হয়,রাস্তায় পা ফেলার জায়গা থাকে না এত মানুষ। বেশিরভাগই মহিলা। যারা একসময় শুধুমাত্র ঘরের কাজ করে সময় কাটাতো, তারা আজ ঘরে বাইরে সমানতালে পরিশ্রম করে যাচ্ছে,যে অর্ধেক জনগোষ্ঠী একসময় ঘরের কাজে সময় কাটাতো আজ তারাই দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। যাদের অমানুষিক পরিশ্রমের ফলেই আমরা আজ সুন্দর পোষাক পরতে পারছি। আমার দেশের ১কোটি শ্রমিক পৃথিবীর বিভিন্নদেশে নানা পেশায় নিয়জিত থেকে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করছে। পরিবার পরিজন ফেলে হাড়ভাংগা খাটুনি খেটে অর্থ উপার্জন করছে, যা অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে।
দেশ প্রাতি বছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবলে পড়ে কিন্তু আমরা ভয় পাইনা, আমাদের এই সাহস কে দিয়েছে? দিয়েছে আমাদের কৃষক, আমাদের শ্রমিক। আমাদের কৃষক যেমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দমে যান না,সব ফসল নষ্ট হয়ে গেলেও আবার নতুন উদ্যমে ফসল ফলান। আমাদের মুখে খাবার তুলে দেন।শ্রমিকও তার পরিশ্রমের হাত সবসময় সচল রাখেন।
তাই আমাদের সবার উচিৎ এইসব
মেহনতি মানুষকে ভালবাসা,এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। মহান মে দিবসে এইসব শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪৭