আমার বসের বাবা মারা গিয়েছেন ৩-৪ দিন আগে কলকাতায়। গতকাল লাশ দেশে এসেছে, তাই গিয়েছিলাম উনার জানাযা এবং দাফন করাতে। উনাদের ফ্যামেলি শিক্ষিত এবং অনেকেই বেশ উচ্চপদে চাকুরী করেন। শুধু আত্মীয় স্বজনরাই এসেছে এর বাইরে তেমন কাউকে দেখলাম না দাফনের সময়। তবে মসজিদে জানাযার সময় অনেক মানুষই ছিল। মৃতের ছেলেমেয়ে আত্মীয়স্বজনসহ একটা মানুষকেও খুব বেশি কাঁদতে দেখলাম না। বরং অনেকদিন পর কাউকে দেখলে আমরা যেমন একটু হেসে স্বাগত জানাই সেই ভঙ্গীতেই মাটি দিতে আসা আত্মীয় স্বজনদের স্বাগত জানানো হচ্ছে। দু একজনের চোখ পানিতে ছলছল করছে, কিন্তু পরক্ষনেই চোখের পানি মুছে ফেলেছে সবাই মুটামুটি স্বাভাবিক। জানাযার পর লাশ নেওয়া হল মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের কবরস্থানে। কবরস্থানের ভিতরে গিয়ে দেখি কবর দেওয়ার একবিন্দু জায়গা নেই। প্রতিটি কবরের পাশেই ৩-১০ বা তার অধিক সাইনবোর্ড এ কত মানুষের নাম লেখা। অর্থাৎ একটি কবর দেওয়ার পর সেটি তুলে ফেলে কয়েকদিন পর আর একটি কবর দেওয়া হয়।আমার ধারনা কোন কবরেই লাশ নেই সব লাশই বিক্রি হয়ে গেছে কংকাল ব্যবসায়ীদের কাছে।
গ্রামের মানুষের টাকাপয়সা শিক্ষাদীক্ষা যতই কম থাকুক, তারা এতটা যান্ত্রিক নয়। প্রিয়জনের মৃত্যু তারা বিলাপ করে কাদতে পারে। আশপাশের শত শত মানুষ আসে কবর দিতে। মৃতের বাড়িতে ৩ দিন রান্না হয় না, আশপাশের প্রতিবেশীরা এই ৩ দিন ধরে সেই বাড়িতে খাবার পাঠায়। আর গ্রামের মানুষ যাই করুক নিজেদের বাবা মায়ের লাশ কংকাল ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেয় না।
আধুনিকতার সাথে আমরা সবাই এক একটি যন্ত্রে পরিণত হচ্ছি। মৃত্যুর পর সাড়ে তিন হাত মাটি পাওয়াটাই এখন ভাগ্যের ব্যাপার।
মন খারাপ করে দেওয়ার জন্য দুঃখিত।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬