ফুটি মসজিদ পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম বৃহৎ এবং প্রাচীন মসজিদ। এটি নির্মান করেন মুর্শিদকুলি খাঁর দৌহিত্র নবাব সরফরাজ খান। মসজিদটির দৈর্ঘ্য এবং উচ্চতা যথাক্রমে ১৩৫ ফুট ও ৪০ ফুট। মসজিদের চারকোণে চারটি মিনার রয়েছে। এই মসজিদের গড়নের সাথে মুর্শিদাবাদের কাটরা মসজিদের গঠনপ্রনালীর মিল আছে।এই মসজিদটি আবার ফৌত মসজিদ নামেও পরিচিত ।
মুর্শিদকুলি খাঁর দৌহিত্র নবাব সরফরাজ খান তার অক্ষয়কীর্তি হিসাবে তৈরি করতে চেয়েছিলেন এই মসজিদটিকে। তাই তিনি নাকি এক রাত্তিরের মধ্যেই বিশাল এই মসজিদ বানানোর চেষ্টা করেন। সুজাউদ্দৌলার মৃত্যুর পর ১৭৩৯ খৃষ্টাব্দে তার পুত্র সরফরাজ নবাবী মসনদে বসেন। নবাবী মসনদে বসলেও রাজ্য শাসনের ভার মন্ত্রীবর্গের ওপরে ন্যস্ত করে তিনি ভোগ বিলাস এবং অনাচারের পথে পা দেন। তার রাজত্বকালে অরাজকতা, মন্ত্রী মন্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে নবাবের বিরোধ উত্তরোত্তর বেড়েই চলে। অবশেষে দিল্লীর বাদশাহ হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন।
নবাব আলীবর্দী খানের নেতৃত্বাধীন ফৌজের হাতে নবাব সরফরাজ খাঁ নিহত হন। নিজের স্মৃতি রক্ষার জন্য একটি সুরম্য মসজিদ স্থাপন করার কাজ শুরু করেছিলেন নবাব সরফরাজ তার জীবদ্দশায়। কিন্তু যুদ্ধবিগ্রহে জড়িয়ে পড়ার ফলে কাজটি সম্পূর্ণ হয়ে ওঠেনি। নবাবের মৃত্যুর সঙ্গে তার সাধের কীর্তি সৌধ নির্মানের কাজ অসম্পূর্ণই রয়ে গিয়েছিল। নবাবের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হবার আগেই নবাব 'ফৌত' হয়ে যান। তাই অসম্পূর্ণ গম্বুজের কারণে মসজিদটি ফৌতি মসজিদ বা ফুটি মসজিদ বলে পরিচিত হয়।সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় এখন এটি প্রায় বর্তমানে ধ্বংসের মুখে। মসজিদের দেওয়ালে ইন্দো-সারাসেনিক স্থাপত্যশৈলীর কারুকাজ রয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৭:৫১