তারামন বেগম তিনি তারামন বিবি নামেও পরিচিত,তার জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার কাচারী পাড়া গ্রামে । তিনি বাংলাদেশের স্বাধীননতা যুদ্ধের একজন বীর নারী মুক্তি যোদ্ধা ।তারামন বিবি ১১ নং সেক্টরে নিজ গ্রাম কুড়িগ্রাম জেলার শংকর মাধবপুরে ছিলেন। তখন ১১ নং সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। যিনি তারামনের গ্রামের পাশের একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন। তখন তারামনের বয়স ছিলো মাত্র ১৩ কিংবা ১৪ বছর। কিন্তু পরবর্তিতে তারামনের সাহস এবং শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখান।একদিন দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় তারামন এবং তার সহযোদ্ধারা জানতে পারলেন পাকবাহিনীর একটি গানবোট তাদের দিকে আসছে। তারামন তার সহযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অংশ নেন এবং তারা শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হন। তারপর থেকে তারামন পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশশি অনেক যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। অনেক বার তাদের ক্যাম্প পাকবাহিনী আক্রমণ করেছে,তবে ভাগ্যের জোরে তিনি প্রতিবার বেঁচে যান।যুদ্ধে শেষে ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবিকে তার সাহসীকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত করেন।
অপর বীর প্রতিক খেতাব প্রাপ্ত নারী হলেন ডাঃ ক্যাপ্টেন সিতারা রহমান ।
বাংলাদেশে ৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর প্রতিক খেতাব পাওয়া দুই নারীর অন্যতম আরেকজন হলেন ডাঃ ক্যাপ্টেন সিতারা রহমান তিনি একজন নারী মুক্তিযোদ্ধা।যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য মেলাঘরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল নামে ৪৮০ শয্যার একটি হাসপাতাল ছিলো।ঢাকা মেডিকেলের শেষ বর্ষের অনেক ছাত্র সেখানে ছিলো। ক্যাপ্টেন ডাঃ সিতারা সেক্টর ২ এর অধীনে সেখানের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন। তাকে নিয়মিত আগরতলা থেকে ঔষধ আনার কাজ করতে হতো। হাসপাতালে একটি অপারেশন থিয়েটার ছিলো। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বাঙালি ছাড়াও সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর লোকজন চিকিৎসাসেবা নিত। ১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেমম্ববর ডাঃ সিতারা রেডিওতে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার সংবাদ শুনে ঢাাকা চলে আসেন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে তার ভাই মেজর হায়দার নিহত হলে ডাঃ সিতারা এবং তার পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান এবং মার্কিন যুক্ততরাষ্ট্রে স্থায়ী ভাবে থাকা শুরু করেন।১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ক্যাপ্টেন ডাঃ সিতারা বেগমের অবদানের জন্য তাকে বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৯