মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভী হলেন ইরানের একজন বিখ্যাত রাজা । তিনি ১৯১৯ সালের ২৬শে অক্টোবর তেহেরানে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি তারিখে ইসলামিক বিপ্লবের ফলে তার ক্ষমতা হারাতে হয়। রেজা পাহলভী রেজা পাহলভী এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী তাজ উল মূলক দম্পতির সন্তান তিনি। অধিকতর পড়াশোনার লক্ষ্যে ১১ বছর বয়সে তিনি ইনস্টিটিউট লে রোজে নামের একটি সুইস বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হন। চার বছর অধ্যয়নের পর ১৯৩৬ সালে হাইস্কুলের ডিপ্লোমা নিয়ে ইরানে ফিরে আসেন। তারপর তেহরানের স্থানীয় সামরিক একাডেমিতে নিবন্ধিত হন ও ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি সে দায়িত্ব পালন করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালিন সময় ১৯৪১সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তারিখে তিনি ক্ষমতায় লাভ করেন। সে সময় অ্যাংলো সোভিয়েত বাহিনী তার বাবা রেজা শাহকে জোরপূর্বক ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করায়। তিনি শাহানশাহ পদবী ধারণ করেন। তাছাড়াও আরিয়ামের, বোজর্গ আর্তেশতারান পদবীও তিনি লাভ করেন। ইরান সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় এবং পাহলভী পরিবারের সর্বশেষ সম্রাট ছিলেন তিনি। তার আমলে সংক্ষিপ্তকালের জন্য ইরানের তৈলশিল্প জাতীয়করণ করা হয়। শাসক হিসেবে অর্থনীতি, সামাজিক এবং রাজনৈতিক পুণর্গঠনকে ঘিরে শ্বেত অভ্যুত্থানের প্রবর্তন করেন। তাছাড়াও ইরানকে বৈশ্বিক শক্তিতে রূপান্তর এবং রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত শিল্প-কারখানার আধুনিকীকরণ এবং মহিলাদের ভোটাধিকার মঞ্জুর করেন।ধর্ম নিরপেক্ষবাদী মুসলিম হিসেবে তিনি শিয়াদের সমর্থন হারানোসহ শ্রমিক শ্রেণী, বাজারী নামে পরিচিত ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষ, ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক বজায়, দূর্নীতিতে শাসকগোষ্ঠীর জড়ানোয় তার জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। তাছাড়াও, বিভিন্ন বিতর্কিত নীতি গ্রহণ, সমাজতান্ত্রিক দল তুদেহ পার্টি নিষিদ্ধকরণ এবং গোয়েন্দা সংস্থা সাভাককে রাজনীতিতে জড়ান। রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৯৭৮ সালে ২,২০০ রাজনৈতিক কর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছিল।আর তার ফলশ্রুতিতে ইসলামিক অভ্যুত্থান ঘটে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মদদপুষ্ট সরকারকে ঘিরে ইসলামপন্থীদের সাথে তার মতভেদ ঘটতে থাকে ও কম্যুনিস্টদের কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে ১৯৭৯সালের ১৭ই জানুয়ারি বিপ্লব সংঘটিত হয় এবং তাকে ইরান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। তারফলে ইরানীয় রাজতন্ত্রের আনুষ্ঠানিকভাবে বিলোপ ঘটে ও মোল্লা খোমেনি’রও নেতৃত্বে ইরান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রে রূপ নেয়।ইরানে ফিরে আসলে তিনি আসন্ন মৃত্যুদণ্ডে সাব্যস্ত হবেন তাই তিনি মিশরে নির্বাসিত জীবন ধারণ করেন। কায়রোতে তার মৃত্যু ঘটে। মিশরের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আনোয়ার সাদাত তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করেন।সে সময় পাহলভীর পরিবার আনোয়ার সাদাত, রিচার্ড নিক্সন এবং গ্রীসের দ্বিতীয় কনস্ট্যানটাইন উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যসূত্রঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩