somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুলায়মান ( আঃ ) এবং সেবার রাণী বিলকিসের কিছু কথা

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সেবার রাণী বিলকিস একজন ঐতিহাসিক চরিত্র যিনি কিং সলোমনের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। ইহুদী, আরবীয় এবং প্রাচ্যের আলোচনায় তিনি অধিকভাবে পরিচিত ।আনুমানিক দশম খ্রিষ্টপূর্বাব্দে তিনি ছিলেন সাবাহ্ অর্থাৎ বর্তমান ইয়েমেনের শাসক, যখন মহাপ্রতাপশালী বাদশাহ সোলায়মান, বাইবেলে যিনি কিং সলোমান নামেই সমুজ্জ্বল বা পরিচিত। তিনি জেরুসালেমের স্বর্ণ-সিংহাসনে দোর্দ-প্রতাপে সমাসীন। ইহুদি-খ্রিষ্টান এবং মুসলমান তিনটি প্রধান সেমেটিক বর্ণনাতেই প্রায় অভিন্ন চিত্র আঁকা হয়েছে রানী সাবাহ্র। সামান্য এদিক-ওদিক ধর্তব্যের মধ্যে নানিলে তোরাহ-বাইবেল-কোরানে সবচেয়ে অনুপম কাহিনীর মধ্যে কুইন-অফ-সাবাহ্র গল্পটি অসাধারণ চিত্তাকর্ষক।সে গল্প তো কল্পনা নয়, নয় কোন আরব্য উপন্যাস ।

তাই রেনেসাঁ-পরবর্তী শিল্পীরা মনের মাধুরী মিশিয়ে আঁকলেন সেই-সব অমর-দৃশ্য, যা অমরাবতীকে হার মানায়! পরাজিত এবং পলাতক ইহুদিরা বরাবরের মতো নির্লজ্জত-উদাসীনতায় মেনে নিলো সেই ভ্রষ্টাচার, যেন সত্য এবং কল্পনার মধ্যে তেমন ব্যবধানই নেই। আর তার ফলেই ইতিহাস হয়ে উঠলো গল্প, আর রেনেসাঁসের লাগামহীন কল্পনায় মিথ্যা হয়ে উঠলো নতুন মিথোলজি। এভাবেই রানী বিলকিস কিসসাখানির বাজারে নেমে এলেন আর আমরাও ইহুদিদের বাণিজ্যে-নীতিকে শিরোধার্য করে বরণ করে নিলাম লক্ষ্মীকে। অথচ বিলকিস ছিলেন এমন প্রতাপশালী রানী যার গুণমুগ্ধ-হুদহুদ সোলোমানকেও প্রভাবিত করলো পরদেশী নারীর প্রতি আগ্রহী হতে, আর সেই ললনা,রূপে, গুণে, বুদ্ধিতে এবং পরাক্রমে যিনি ছিলেন নবী-সোলেমানের প্রায়-সমকক্ষ সমৃদ্ধিতে জেরুসালেমকে হারিয়ে দেওয়ার উপক্রমী এবং সমরনীতিতে এতটা দক্ষ যেসব ঐতিহাসিকই তার দ্বৈত-সত্তাকে স্বীকার করে নিয়েছেন জিন এবং মানুষ-রূপে আর সে-যুগে এটা হয়তো সম্ভবও ছিল, কারণ নবী সোলেমানেরও ছিলেন সীমাহীন অলৌকিক ক্ষমতাবান। সাধারণের অনেক উপরে বাতাস, পানি, এবং অশরীরীদের নিয়ন্ত্রণসহ অবিশ্বাস্য রকম অতি-মানবিক। পচনশীল দেহের মানুষের শক্তি যখন এতটা অলৌকিক হয় তখন কল্পনা আর বাস্তবে কিছুটা গোলমাল হয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। সেই যে নদীর দুই পাড়ে দুই ব্যক্তি অতি ভোরে গোসল করতে এসে পরস্পরকে ভাবছিলেন নিজের চেয়েও বড় কিছু আমাদের জীবনেও সেরকম ঘটে যায় সে দৈত্য-দানোর গল্প হোক বা সত্যজিতের তিন ভূত অশরীরীকে যারা চোখে দেখতে পান তাদের ক্ষমতাকে কল্পনা করা যেতে পারে কিন্তু পরিমাপ করা তো সম্ভব নয় ।

সেই বিলকিসের কাহিনীও এতটা চমকপ্রদ যে সেটি যুক্তিকে হার মানিয়ে তাযকেরাতুল অম্বিয়াকেই বিশেষ যোগ্য করে তোলে। কোনো কোনো বর্ণনায় এতটাও পাওয়া যায় যে বিশ্বাস কবতে মন চায় যে তার জন্মই হয়েছে আগুনে এবং নির্বাচিত-মানুষ না হয়েও তিনি জুড়ে আছেন সকল বিকৃত-অবিকৃত ধর্মগ্রন্থে এক অসীম ক্ষমতাধর বিদূষী-নারীর মহিমাময়ী রূপে!কোথাকার রানী ছিলেন বিলকিস? সবাই জানি তিনি সাবাহ্র রানী ছিলেন। কিন্তু সাবাহ্র নামে তো দুনিয়ায় কোনো দেশ নেই। তাহলে ? ঐতিহাসিক দাবিগুলোর পক্ষে শুধু এটুকু নিশ্চিত করা যায় যে লোহিত সাগরের পাড়ে ছিল সেই ধনাঢ্য রাষ্ট্র সাবাহ্র। অনেকের মতে ইথিওপিয়া, কারো বিশেষ উগান্ডা এবং বেশিরভাগের দাবিতে বর্তমান ইয়েমেনই ছিল প্রাচীনকালের সেই সাবাহ্র।


পিতার মৃত্যুর পর সোলেমান হেবরন আর জেরুসালেমের মধ্যবর্তী কোন স্থানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তন্দ্রার ঘোর তার সামনে আবির্ভূত
হলো ৮ জন ফেরেশ্তা যাদের প্রত্যেকের ডানা বিচিত্র রংধনুতে বর্ণিল। তাদের দেখে সোলেমান প্রশ্ন করে কে তোমরা ? অধনিমিলত চোখে জানতে চায় সোলেমান।তাদের পক্ষ থেকে জবাব আসে আমরা সাত বায়ুর পরিচালক খোদা আমাদেরকে আপনার অধীন করে পাঠিয়েছেন। এখন থেকে আমরা আপনার হুকুমে চালিত হবো আস্তে কিংবা, জোরে, পূর্বে কিংবা পশ্চিমে। আমাদের গতি এবং দিক আপনার ইচ্ছানুগত। আমরা আপনাকে তুলে নেব আকাশের দূর প্রান্তে কিংবা পাহাড়ের চূড়ায়- যেখানে আপনার আদেশ।
তারা অদৃশ্য হতে না হতেই নতুন ৪ জন ফেরেশতা অবির্ভূত হলো। তাদের আকার আকৃতি ভয়ানক এবং অদ্ভুত তিমি, ঈগল, সিংহ ও অজগর।

জলে এবং স্থলে বিচরণকারী সকল জীবজন্তুর প্রভু আমরা! হে সোলেমান, মহাপ্রভুর নির্দেশে আপনার খেদমতে হাজির। আপনার ইচ্ছাকে আমরা বাস্তবায়িত করবো যত কঠিন বা অসম্ভবই মনে হোক না কেন সেটা।বলতে বলতে পাখিদের-রাজা ঈগল একটি অমূল্য পাথর সোলেমানের দিকে এগিয়ে বললো সকল সৃষ্টির মালিক আমাদেরকে এই রটের দ্বারা ডাকার অধিকার দিয়েছেন। সামান্য মাথা নেড়ে ইঙ্গিত করার হুকুমই এজন্য যথেষ্ট হবে।মুহূর্তের মধ্যে সোলেমান বললেন, এক্ষুণি পৃথিবীর সকল সৃষ্টির জোড়া জোড়া হাজির করো, যা পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিয়েছেন নূহ নবী।চোখের পাতা ফেলতে না ফেলতেই হাতি থেকে শুরু করে সকল প্রাণী সকল জীব সামনে এসে হাজির হল। সমুদ্র থেকে উঠে এলো কোটি কোটি প্রকার মাছ। আকাশ কালো করে নামলো সকল প্রজাতির পাখিরা। সোলেমান সময়কে বললেন ধীরে চলো আর সবাইকে বললেন, তোমাদের জীবনযাপনের পদ্ধতি আমাকে শোনাও।সবার কথা শুনে পাখিদের কাহিনীই বেশি ভালো লাগল সোলেমানের তাদের সুরেলা ভাষা এবং বুদ্ধিদীপ্ত উচ্চারণের জন্যে। যেমন ময়ূর বললো তুমি মহান এবং মহত্তমরাই তোমার সঙ্গী। বুলবুল বলল, প্রশান্তিই ? হলো সুখের সেরা।শোনালো আরো অনেক সৃষ্টির কাহিনী । হুপু বললো- যে ক্ষমা করে না, সে যেন ক্ষমা প্রত্যাশা না করে।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×