মৃত্যু পরবর্তী জীবন বলতে মৃত্যুর পর পরকাল জীবন অতিবাহীকে বোঝানো হয়েছে।অথবা অন্য একটি অনন্তকাল অতিবাহী জীবনের কথা বলা হয়েছে।আজ আমরা সে জগতের কিছু ধারণা নেব । মানুষ ধারণা ও ধর্ম অনুসারে ব্যক্তির শরীরের মৃত্যু হয়ে গেলেও তার আত্মপরিচয় বা চেতনার অস্তিত্ব থেকে যায়। পরকালের বিভিন্ন ধারণা অনুযায়ী মৃত্যুর পরেও থেকে যাওয়া ব্যক্তির এসেন্স কোন আংশিক উপাদান অথবা পূর্ণাঙ্গ আত্মা বা স্পিরিট হতে পারে। এই এসেন্স কোন ব্যক্তিগত পরিচয় বহন করতেও পারে আবার নাও পারে যেমন ভারতীয় দর্শনের নির্বাণ। পরকালের উপর বিশ্বাস প্রকৃতিবাদী দর্শন থেকে আসতে পারে অথবা অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস থেকে আসতে পারে। এই বিশ্বাস এটারনাল অবলিভিয়ন ধারণায় বিশ্বাসের বিপরীত।কিছু লোকায়ত মতদেন, মৃত্যুর পরও অস্তিত্ববহন করা এই সত্তা কোন অতিপ্রাকৃত জগতে অবস্থান করে, আবার অন্যান্য কিছু লোকায়ত মতবাদদেন এই সত্তার পুনর্জন্ম ঘটে এবং পুনরায় জীবনচক্র শুরু হয়। এক্ষেত্রে পূর্বের জীবন সম্পর্কে কোন স্মৃতি থাকে না। এই মতবাদ অনুসারে সত্তার একটি অতিপ্রাকৃতিক জগতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত বারবার জন্ম এবং মৃত্যুর প্রক্রিয়া চলতেই থাকে। পরকাল সংক্রান্ত বেশিরভাগ বিশ্বাসেরই উৎপত্তি ধর্ম, এসোটেরিসিজম এবং অধিবিদ্যা থেকে।কিছু বিশ্বাস ব্যবস্থা বিশেষ করে আব্রাহামিক ধর্মেগুলোর বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুর পর সত্তা জীবিতাবস্থায় পৃথিবীতে তার কৃতকার্য এবং বিশ্বাস অনুযায়ী ঈশ্বর বা কোন স্বর্গীয় বিচারের দ্বারা নির্ধারিত বিশেষ স্থানে গমন করে। ওন্যদিকে ভারতীয় ধর্মগুলোর পুনর্জন্ম বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুর পর কৃতকার্য অনুসারে সত্তার প্রকৃতি সরাসরি নির্ধারিত হয়ে যায় এতে ভিন্ন কোন সত্তার সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয় না।অধিবিদ্যীয় মডেলগুলোতে আস্তিকরা সাধারণত একধরণের পরকালে বিশ্বাস করে থাকেন যা মৃত্যুর পর তাদের জন্য আরেকটা দুনিয়া তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কিছু সাধারণ অআস্তিক্যবাদী ধর্মের সদস্যরা পরকালে বিশ্বাসমুখী হন, কিন্তু তাদের সেই বিশ্বাসে কোন ঈশ্বর থাকে না। স্যাডিউসিজ নামে একটি প্রাচীন ইহুদি সম্প্রদায় আছে যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেও পরকালে বিশ্বাস করতেন না।অনেক ধর্মই তা সে খ্রিষ্টধর্ম বা ইসলাম বা অনেক পৌত্তলিকতাবাদী বিশ্বাসব্যবস্থার মত পরকাল বলতে মৃত্যুর পর অন্য এক জগতে আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাসী হোক অথবা হিন্দুধর্ম বা বৌদ্ধধর্মের অনেক ধারার মত পুনর্জন্মেই বিশ্বাসী হোক। সকল ক্ষেত্রেই বিশ্বাস করা হয় যে পরকালে কোন ব্যক্তির অবস্থা হচ্ছে জীবিতাবস্থায় তার কৃতকার্যের শাস্তি অথবা পুরষ্কার।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩৯