নর্স পৌরাণীক কাহিনী মোতাবেক রাতের দেবী হিসেবে নট তার ঘোড়া নিয়ে রাতে পরিভ্রমণ করে থাকেন।
মেঘলা রাত্রি মেঘহীন রাত্রি অপেক্ষা অধিকতর গরম হবার কারনে মেঘহীন রাত্রির বায়ু শুষ্ক এবং মেঘলা রাত্রির বায়ু অপেক্ষাকৃত আর্দ্র থাকে। আর্দ্র বায়ু, শুষ্ক বায়ু অপেক্ষা অধিক তাপ শোষণ করতে পারে। দিবাভাগে ভূ-পৃষ্ঠ তাপ শোষণ করে এবং রাত্রিকালে বায়ুমণ্ডল শীতল হলে ভূ-পৃষ্ঠ সেই তাপ বিকিরণ করে থাকে। মেঘলা রাত্রির আর্দ্র বায়ু সেই তাপ শোষণ করে এবং উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মেঘলা রাতে ভূ-পৃষ্ঠের বিকীর্ণ তাপ মেঘের মধ্য দিয়ে ঊর্ধ্বাকাশে যেতে পারে না। উপরন্তু, এ বিকীর্ণ তাপ মেঘে প্রতিফলিত হয়ে ভূ-পৃষ্ঠে ফিরে আসে।পক্ষান্তরে, মেঘহীন রাত্রিতে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপ বাইরে চলে যায় আর ভূ-পৃষ্ঠ শীতলা হয়ে ওঠে। ঊনবিংশ শতকে পিটার নিকোলাই আর্বো কর্তৃক অঙ্কিত একটা চিত্রকর্মে দেখা যায় যে নর্স পৌরাণীক কাহিনী মোতাবেক নট রাতের দেবী হিসেবে তার ঘোড়া নিয়ে পরিভ্রমণ করছেন।
রাত প্রায় সময়েই বিপদ এবং ভৌতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। কারন অজানা আতঙ্কে মানসিক সম্পর্কের ফলে ভয় অন্ধকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়। মানবজাতি কয়েক মিলিয়ন বছর ধরেই দিনের আলোয় সব কাজ কর্মের সাথে জড়িত রয়েছেন।রাতের সময়টুকু প্রকৃতিগতভাবে মানুষ নিজ শরীর রক্ষাকল্পে বিপদ থেকে দূরে থাকার প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। অপরাধী, প্রাণী এবং অন্যান্য বিপদজ্জনক কর্মকাণ্ডগুলোর অধিকাংশই রাতের অন্ধকারে হয়ে থাকে। তাছাড়াও মানবজীবনের উত্তরণ এবং সংস্কৃতিতে মধ্যরাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বিশ্বাস করা হয় যে জাদুবিদ্যা প্রায়শঃই রাতে অধিক কার্যকরী হয়ে থাকে। মধ্যরাতেই অধিকাংশ আধ্যাত্ম্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। অনুরূপভাবে পৌরাণীকি এবং উপ-কথায় ভ্যাম্পায়ার রাতেই অধিক বাইরে বের হয়ে রক্তশোষণ করে বলে মনে করা হয়। ভূত-প্রেতও রাতের সময়েই সচরাচর বের হয়। সকল ধরণের ধর্ম, সংস্কৃতি, বই-পুস্তক এবং উপকথায় রাতের সময়কে সর্বাধিক বিপজ্জনক সময় বলে সকলকে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে।সাহিত্যকর্মেও রাত এবং অল্প-আলোককে ঐতিহাসিকভাবেই অমঙ্গলের প্রতিমূর্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ।
সূর্যের আলো পৃথিবীতে শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আশ্চর্য্যজনকভাব তা জীব-জগতের প্রত্যেকটি স্তরের আচরণে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। কিছু প্রাণী রাতে ঘুমানোর আয়োজন করে। অন্যদিকে কিছু কিছু কীট-পতঙ্গ যেমন ঝিঁ ঝিঁ পোকা এ সময়ে বেশ সক্রিয় হয়ে একনাগারে ডাকতে থাকে কিংবা জোনাকী পোকা আলো জ্বালায় ব্যস্ত থাকে। নৈশ প্রাণীগুলোও শিকারের সন্ধানে বের হয়। খাদ্য সংগ্রহ করে জীবনধারণ করে কিংবা অনেক সময় তারা নিজেরাই অন্যের শিকারে পরিণত হয়।শুধুমাত্র জীব-জগতের মধ্যেই দিন-রাতের প্রতিফলন ও প্রভাব বিস্তার সীমাবদ্ধ নেই। উদ্ভিদজগতের মাঝেও এর প্রভাব সবিশেষ লক্ষণীয়।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪