নীলমানব হলো একপ্রকার পৌরাণিক জীব যারা উত্তর হেড্রিজ থেকে স্কটল্যান্ডের মূলভূখন্ডের মধ্যবর্তী সমুদ্রে বাস করে এবং নাবিকদের পানিতে নিমজ্জিত করতে এবং নৌকা ডোবাতে চেষ্টা করে। তারা প্রধানত মিন্চ এবং এর আশপাশের এলাকার স্থানীয় ভাবে বসবাস করে এবং বাকি স্কটল্যান্ডে তেমন একটা সুপরিচিত নয়।আর বাকি বিশ্বে তাদের কোন সমগোত্রীয় পৌরাণিক জীবও নেই।শুধুমাত্র গাত্রবর্ণ ব্যতীত এই পৌরাণিক জীবগুলোর বাকি সবকিছুই মানুষের মত। তাদের আকারও মানুষের সমান। তাদের ঝড় সৃষ্টি করার ক্ষমতা আছে, কিন্তু আবহাওয়া ভালো থাকলে তারা সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে বা ঠিক নিচেই ভাসমান থাকে। নীলমানবরা তাদের কোমরের উপর অংশ পানির উপরে তুলে সাঁতার কাটে। তারা কথা বলতে পারে, এবং যখন একদল মিন্চ কোন জাহাজের দিকে অগ্রসর হয় তখন এদের নেতা জাহাজের কাপ্তানের উদ্দেশ্যে দুই পদ কবিতা আবৃত্তি করে এবং কাপ্তানকে বাকিটা বলতে বলে। কাপ্তান এতে ব্যর্থ হলে নীলমানবেরা জাহাজটি উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করে।পৌরাণিক নীলমানবকে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ধারনা করা হয়, এটি সমুদ্রেরই ব্যক্তিসত্বায় বহিঃপ্রকাশ হতে পারে। এরা পিক্টও হতে পারে, যাদের রঙ্গিন দেহ এবং কায়াক নৌকা দেখে সমুদ্র থেকে উঠে আসা মানবদেহ বলে বিভ্রম হতে পারে। নীলমানবের উপাখ্যান ভাইকিংদের সাথে আনা উত্তর আফ্রিকান দাসদের মাধ্যমেও আসতে পারে, যারা শীতের সময়টা মিঞ্চের শাইন্ট দ্বীপপুঞ্জে অবস্থান করতো।
ম্যাকেনজির ব্যাখ্যা অনুসারে, নীলমানবের উপাখ্যান বেশ প্রাচীন এবং এর শেকড় আয়ারল্যান্ডের প্রথম নর্স রাজা ফেয়ারহেয়ার এর ভাইকিং এর সাথে যুদ্ধের আমলে প্রথিত। স্কটিশ গায়েলিক শব্দ fear gorm যার অর্থ নীল মানব একই সাথে নিগ্রোদেরও বোঝায়।একইভাবে নীলমানবদের গায়েলিক নাম fear gorm, যার আক্ষরিক অর্থের ভাষান্তর হয় নীলমানবদের খড়া বা নীল নিগ্রোর নদী নবম শতাব্দীর দিকে ভাইকিংরা মুর জাতিগোষ্ঠির কিছু সদস্যকে আটক করে দাস হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। ভাইকিংরা শীতকাল শাইন্ট দ্বীপপুঞ্জে কাটাতো, এবং ম্যাকেঞ্জির ধারণামতে নীলমানবদের উপকথাটি এই বিদেশি দাসদের মাধ্যমেই প্রাণ পেয়েছে।তিনি ইতিহাসবিদ এলেন অরর এনডারসন-এর স্কটিশ ইতিহাসের আদি উৎস ৫০০ হতে ১২৮৬ অব্দ থেকে উদ্ধৃত করেন।এরাই হলো নীলমানব, কারণ মুরেরা আর নিগ্রোরা একই মৌরিতানিইয়ার মানেও নিগ্রোল্যান্ড যার আক্ষরিক অর্থ হল কালো।
সাম্প্রতিক সংবাদপত্রগুলোও ম্যাকেঞ্জির ধারণাকেই উপজিব্য করেছে। ইতিহাসবিদ ম্যালকম আর্চিবাল্ড একমত হন যে আদিম নর্সদের হাতে বন্দি আফ্রিকান দাস থেকেই এই উপকথার উৎপত্তি কিন্ত তার ধারণা যে আফ্রিকান দাসগুলো সাহারার তুয়ারেগ গোত্রের। এরা মরুভূমির নীল মানব নামেও পরিচিত ছিলো।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৫