বাংলাদেশ রেলওয়ে চলছে অনেকটা খুরিয়ে খুরিয়ে, যেখানে অন্যান্য দেশে ভ্রমনে প্রথম তালিকায় রেল থাকে সেখানে আমাদের দেশে রেল এ মানুষ চড়তে চায় না।আমরা এখনো ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া সিস্টেম আকড়ে ধরে আছি, যা কিনা অন্য দেশে এই সিস্টম খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দিহান। তবে এখন আমাদের দেশের মহাসড়ক গুলোর বেহাল দশার কারনে মানুষ এখন বাসে যেথে অনেকটা ভয় পাচ্ছে, ফলে রেলে যাওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। যা হোক এবার একটা ঘটনা শেয়ার করি তারপর আবার মূল আলোচনায় যাব, গত শনিবার আমি গেলাম টিকেট কাটতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এ, গিয়ে দেখি ঐখানে স্টেশন মাস্টার ছাড়া আর কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নেই। স্টেশন মাস্টার এর কাছে জানতে চাইলাম ঢাকা টু সৈয়দপুর টিকেট কোথায় পাব? উত্তর এল এয়ারপোর্ট স্টেশন এ যান। এখানে টিকেট বিকাল ৫ টার পর পাবেন। ভাল কথা চলে গেলাম এয়ারপোর্ট স্টেশন এ, গিয়ে একজন রে বললাম ভাই আপনাদের ইনফোরমেশন সেন্টার টা কোথায়, উনি হাত ইশারা করে দেখায় দিলেন, গিয়ে কাউরে পেলাম না। তালা দেয়া দরজায়। যা হোক কাউন্টারে বিশাল লাইনে দাড়ালাম টিকেট নেয়ার জন্য, লাইন যেন যাইতেই চায় না, যাবেই বা কেন যারা টিকেট দিচ্ছে তাদের সবার বয়স ৫৫ উপরে (যদি বয়স চুরি না করে থাকে) হবে। তাদের মত করে তারা গল্প-গুজব করে টিকেট দিচ্ছে। তারা সারাদিন যা কাজ করবে সেখানে একটা ২৪-৩০ বছরের ছেলে তা ২ ঘন্টায় করে দিবে এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। এরা যদি রেলওয়েতে বসে বসে থাকে তাহলে রেল সারাজীবন গরুর গাড়ির মতই চলবে। যাহোক আমার সিরিয়াল আসার পর আমি বললাম আন্কেল, আমাকে এসি বার্থ ৮ টি ঢাকা টু সৈয়দপুর টিকেট দেন, উনি না দেখেই বললো, টিকেট নেই। আমি বললাম দেখেন না একটু কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা, এবার বললো ৪টা দেয়া যাবে বলে আমার সামনে মূলা ঝুলিয়ে দিল, এবার বললাম দেখেন না আর ৪ টা পাওয়া যায় কিনা, এবার লজ্জা শরম ভুলে গিয়ে বললো অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে!!!! উনি তখন আলাদিনের চেরাগ এর মত আর ৪ টা টিকেট ম্যানেজ করলেন। এজন্য আমার কাছ থেকে ১৩২ টাকা অতিরিক্ত নিলেন, আমি বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে টিকেট নিলাম। এখন আসি মূল কথায় আমাদের ডিজিটাল সরকার শুধু ডিজিটাল ডিজিটাল বলে চিৎকার করেই গেল, কিন্তু যেখানে আসলেই কাজ করার কিছু আছে সেখানেই কিছু করছে না। রেলেওয়ের ওয়েবসাইট আপডেট কবে থেকা হ্য়না সেটাই হয়তো বা জানে না। মোবাইল দিয়ে যেমন টিকেট কাটা যাচ্ছে (সীমিত আকারে), অবশ্যই এটা ভাল উদ্যোগ, তবে এখানে রেলের কোন কৃতিত্ব নেই, পুরাটাই মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলো করছে তাদের নিজস্ব সফটওয়্যার ব্যবস্থাপনা দিয়ে। এখানে রেলওয়ে যদি অনলাইন টিকেট সিস্টেম চালু করতে পারতো তাহলে রাস্তার মোড়ে মোড়ে টিকেট পাওয়া যেত কোনপ্রকার হয়রানি ছাড়াই, আর আমাদের বলদ মার্কা রেলওয়ের ইন্জিনিয়াররা এখনো পড়ে আছে টেলিফোন হাত দিয়ে ঘুরিয়ে কথা বলা নিয়ে বসে আছে। অথচ মাত্র ১২ হাজার টাকা খরচ করে জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) লাগায় দিয়ে সেন্ট্রালি সব মনিটরিং সম্ভব। তবে এখানে সরকার কে সবার আগে ঢেলে সাজাতে হবে রেলের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী দের কে। যাদের দিয়ে কোন আউটপুট আসবে না তাদের তো শুধু শুধু টাকা দিয়ে লাভ নেই। কাজ করতে না পারলে ছেড়ে দিবে। একবার চাকুরী পেয়ে গেছি আর কোনদিন যাবে না, এই নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আর এজন্য প্রয়োজন সরকারের কঠোর পদক্ষেপ। কারন এখন যে রেলে যাওয়ার জন্য জোয়ার তৈরি হয়েছে তা ধরে রাখতে না পারলে টেলিটক সিম এর মত অবস্থা হবে। আর এখনো রেলওয়েকে লাভজনক প্রতিষ্টান এ আনা সম্ভব হবে যদি সরকার জোরালো পদক্ষেপ নেয়।
রেলওয়েতে দু্র্নীতি চলছে প্রকাশ্যে, বন্ধে প্রয়োজন অনলাইন ব্যবস্থাপনা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ
'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন
কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন
একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।
এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।
ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস
রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন