যশোর
প্রতিবেশী মিলনের যৌনহয়রানির শিকার স্কুলছাত্রী সুমিতা অবশেষে আত্মহত্যা করে কুৎসা থেকে মুক্তির পথ খুঁজেছে।
শুক্রবার বিকেলে সে গলায় ফাঁস দেয়; মুমূর্ষু অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সে মারা যায়।
সুমিতা যশোর সদরের কাশিমপুর উত্তরপাড়ার ট্রাকচালক বজলুর রহমানের মেয়ে।
সুমিতার চাচা ফজলুর রহমান জানান, ১৫ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমিতা প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল তারই স্কুল হাশিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। পথিমধ্যে তাকে জাপটে ধরে পাটক্ষেতে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে প্রতিবেশী মিলন। সেসময় তার চিৎকারে মাঠে কাজ করা কৃষকরা ছুটে এলে পালিয়ে যায় লম্পট মিলন। পরে চাচাতভাই হাবিবুর রহমান তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
তার চাচা আরও জানান, সুমিতা ও মিলনদের বাড়ির একটাই উঠান। ওইদিনের পর থেকে মিলনের মা সরুজান বিবি ও বোন আঁখি তাকে নিয়ে নানা নিয়ে কটুকথা ও কুৎসা করতে থাকে। বকাঝকা করেন তার পরিবারের লোকজনও। এর ফলে মানসিকভাবে খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়ে সুমিতা।
শুক্রবার বিকেলে তাদের আরেক প্রতিবেশী এক বৃদ্ধার মৃত্যুতে বাড়ির লোকজন সেখানে যায়। ফাঁকা বাড়িতে তখন সুমিতা ওড়না ঘরের আড়ায় বেঁধে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি জানতে পেরে পরিবারের লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সে মারা যায়।
লম্পট মিলনের স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। তার পিতার নাম জয়নাল আবেদীন।
আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে সুমিতার চাচা ফজলুর রহমান কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মাসতিনেক আগে ঘরে ঢুকে মিলন সুমিতাকে জাপটে ধরে। তার চিৎকারে সে পালিয়ে যায়। অভিযোগে তিনি তার ভাইঝির আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী হিসেবে মিলন, তার মা ও বোনের নাম উল্লেখ করেছেন।
মিলন প্রতিনিয়ত তার ভাইঝিকে উত্ত্যক্ত করতো বলে তিনি দাবি করেন।
কোতয়ালী থানার এসআই শাহিনুর রহমান জানান, ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে। আর অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ঘটনার পর থেকে মিলন পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।