somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কৃষিতে শিক্ষিত যুবদের সম্পৃক্ত করতে যশোরের পল্লীতে ব্যাপক আয়োজন

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত একটি গ্রাম কঠুরাকান্দি। শনিবার এই গ্রামটিতে সাজ সাজ রব ছিল সারাদিন। কারণ, এই গ্রামে আসছেন বাংলাদেশ রাইস রিসার্স ইনসটিউিটের (ইজজও) মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. শাহজাহান কবীর, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এফএম মঈনুদ্দিন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. জমশের আহমেদ খন্দকারসহ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা।
উদ্দেশ্য একটাই, কৃষিতে যেন শিক্ষিত যুবরা এগিয়ে আসে।
কঠুরাকান্দি গ্রামের সন্তান কৃষক সংগঠক আইয়ুব হোসেন ১৯৮০ সালে গড়ে তোলেন বনিক কৃষি ক্লাব। এই ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম যথাক্রমে বন্দবিলা, নিমটা ও কঠুরাকান্দি এই তিনটি গ্রামের আদ্যাক্ষর নিয়ে নামকরণ হয় বনিক। আর সেখান থেকে হয়েছে বনিক কৃষি ক্লাব। তিনজন সদস্যকে নিয়ে শুরু হওয়া এই কৃষি ক্লাবের উদ্দেশ্য ছিল কৃষিতে উৎপাদক শ্রেণিকে বৈজ্ঞানিকপন্থায় উৎপাদনে সম্পৃক্ত করা। সেই থেকে শুরু। সেলক্ষ্যে ২০০১ সালে বন্দবিলা স্কুল মাঠে কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষকদের মিলনমেলা করা হয়।
কৃষকদের সনাতন পদ্ধতি থেকে আধুনিক যন্ত্রপাতি, চাষাবাদের নয়াকৌশল সর্বোপরি সার, বীজ আর কীটনাশকের পরিমিত ব্যবহার পদ্ধতি সাধারণ কৃষককে অবহিত করাই ছিল উদ্দেশ্য। সে উদ্দেশ্য অনেকখানি সফলও হয়েছে ক্লাবটি। সেকারণে জেলার অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বাঘারপাড়া কৃষিতে বেশ উন্নত।
শনিবার বনিক ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এক সেমিনারের। সেখানে শিক্ষিত যুবকরা যাতে চাকরির খোঁজে দেশের বাইরে না গিয়ে কৃষিকেই তাদের পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারে সেলক্ষ্যে জনমত তৈরি করা। ইতোমধ্যে বনিক ক্লাবের সে উদ্দেশ্য বেশ সফল বলে জানালেন স্থানীয় যুবক যশোর এমএম কলেজের দর্শন বিভাগের তৃতীয়বর্ষের ছাত্র রাজু আহমেদ।
তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি কৃষিকাজে বাবাকে সময় দিয়ে থাকি। আমাদের মতো ছেলেরা যদি কৃষিতে এগিয়ে আসে, তবে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার যেমন হবে, তেমনি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। দেশের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে তা বাইরে রফতানির সম্ভব হবে। আর এক্ষেত্রে সরকারকে যুবদের কল্যাণে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
বনিক কৃষি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা কৃষক সংগঠক আইয়ুব হোসেন বলেন, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই কৃষক। যারা প্রতারক তারা কখনোই চায় না, কৃষিতে ভাল উৎপাদন হোক। সেকারণে লেখাপড়া জানা যুবকরা যদি এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আসে তবেই কৃষির জন্য তা মঙ্গলকর হবে।
তিনি বলেন, বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার, কৃষিপদ্ধতি, উন্নত বীজ সার ব্যবহার আর আমাদেও কৃষকদেও অভিজ্ঞতার সম্মিলন ঘটিয়ে উৎপাদনে বিপ্লব সাধন সম্ভব। তাহলে, আমাদের শিক্ষিত যুবকদের মালয়েশিয়া, সৌদিআরব, কুয়েত বা অন্য কোনদেশে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হবে না। দেশে সবুজের মাঝে বসেই তারা সেইসব দেশের মত উপার্জন করতে পারবে।
বনিক কৃষি ক্লাবের এ আয়োজনকে যুগোপযোগী এবং কল্যাণকর বলে মত দেন বাংলাদেশ রাইস রিসার্স ইনসটিউিটের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা সমন্বয়কারী মো. আবু সালেহ। তিনি বলেন, শিক্ষিত যুবকরা যদি কেবল শহরমুখি হয়, তবে কৃষির জন্য তা ইতিবাচক হবে না। কৃষিতে বিপর্যয় নেমে আসবে। কৃষিতে শিক্ষিত যুবরা এগিয়ে এলে তারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে; কেননা এই পেশাটা অত্যন্ত সম্মানজনক।
আগামীদিনে কৃষির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষিত যুবদেও কৃষিতে এগিয়ে আসার প্রতি জোর দেন বাংলাদেশ রাইস রিসার্স ইনসটিউিটের মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস। তিনি বলেন, আগে জমি ছিল বেশি, ফসল হতো কম। এখন কৃষিজমি কমলেও উৎপাদন বেড়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে বৈজ্ঞানিকপন্থায় চাষাবাদের ফলে।
তিনি যুবকদের উদ্দেশে বলেন, চাকরির জন্য বিদেশে যাবার দরকার নেই। কৃষিজ্ঞান, তত্ত্ব তথ্য সবই এখন হাতের মুঠোয়-সেক্ষেত্রে অফুরন্ত সুযোগ ব্যবহার করে দেশে কাজ করুন। কেন খামোখা অনিরাপদ কাজে নিজেদের জীবন হারাবেন।
এদিকে, কৃষিবিজ্ঞানীদের আগমন উপলক্ষে কঠুরাকান্দি গ্রামে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার। পার্শ্ববর্তী কাতলী গ্রাম থেকে লাঠিয়ালরা এসে মনোমুগ্ধকর এই খেলা।





০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×