হারাতে ভাল লাগে আমার, বেশ ভাল লাগে।
তাই হারাই, মাঝে মাঝেই হারিয়ে যাই।
কখনও উত্তরে, কখনও দক্ষিণে,
পূবে যাই না, তবে পশ্চিমে যাই।
পূবে যে আছে অসংখ্য বিস্মৃতির দলা পাকানো-
কাঠিন্য প্রলেপ দেওয়া নীলচে অনুভূতির মেঘমালা।
যে মেঘমালা ডুকরে কাঁদে সারাক্ষণ, অবিরাম।
পাথরের মত শক্ত অনুভূতির দলা গুলো ভূমিতে লুটায়।
তাই আমি যাবো না সেথা, যেতে চাই না।
কারণ, আমি রক্তাক্ত হতে চাই না।
চাই না, ছোপ ছোপ রক্ত লেগে থাকুক স্মৃতির প্রতিকৃতিতে।
চাই না, সে রক্তের ঘ্রাণে ছুটে আসুক রক্তচোষার দল।
চেটেপুটে সব রক্ত, আমায় করে দিয়ে যাক রক্তশূন্য।
তাই আমি থমকে দাড়াই, তখনই।
যখন আঁধার ঘিরে ধরে পূর্বাকাশের আনাচে কোনাচে।
ভয়ার্ত আর্তনাদে মুখিয়ে থাকে স্মৃতিগুলো।
কখনও থেমে থেমে নিঃশ্বাস নেয়, নীরবে।
আমি শুনতে পাই, তাদের কর্কশ ধ্বনি।
আমায় কাছে ডেকে যায় বিরতিহীন।
স্বার্থপরের মত আমি দূরে দাড়িয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পরি।
আর চিৎকার করে বলি, তোরা অভিশপ্ত।
তোরা অভিশপ্ত, তোরা অভিশপ্ত।
এই তো, পূর্ব আর আমার আত্মীয়তা।
বরাবরের মতই আমি ফিরিয়ে দেই তাকে,
ফিরিয়ে দেই কিছু ঘৃণা মিশ্রিত আবেগে,
এবং তখন আমার বাধ ভাঙ্গে, ভাঙ্গে নীরবতা।
আমার নীরবতা নয়, সেই স্মৃতির প্রতিকৃতির নীরবতা।
এবং অস্ফুট কণ্ঠে খানিকটা আফসোস মাখিয়ে সে বলে,
আর কতকাল চলবে এই খেলা, এই অভিনয় ?
আমি বরাবরের মতই নিশ্চুপ হয়ে রই।
আর আমার দৃষ্টিতে তখন গাড় নীল আকাশ থাকে,
মেঘেরা ছুটি নেয়, ছুটি নেয় আমার থেকে।
শুরু হয় আমার যাত্রা, স্মৃতি কুড়ানোর যাত্রা।
উত্তরে যাই, দক্ষিণে যাই, পশ্চিমে যাই।
আবারও থমকে দাড়াই, পূবের প্রবেশ পথে।
নাটকীয়তার পুনরাবৃত্তি ঘটে, আমি অভিনয় করি।
অখ্যাত একজন অভিনেতা হয়ে-
আমি অভিনয় করি।
তবুও প্রশংসনীয় এবং বরাবরের মত নির্ভুল।