somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হজ্বফেরত হঠাৎ বদলে যাওয়া লোককাহিনী শুনুন….

০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





জনাব ‘ক’তিনি সবেমাত্র রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেছেন,চেষ্টা করছেন নিজের ব্যবসাকে উঁচুতে নিয়েযেতে।সে চেষ্টা সব ব্যবসাদারেরই থাকে।তিনি হজ্জ্বে গেলেন।প্রায় দুই মাস পর ফিরে এলেন।দু’দিন বিশ্রাম নেয়ার পর তিনি অফিসে যথারীতি অফিস করার জন্য আসলেন।ঘন্টাখানেক পর তিনি সবাইকে তার রুমে ডেকে পাঠালেন।অনেকদিন পর প্রধানকর্তা হিসাবে যা করেন বা যা হয় আরকি!তিনি তার হজ্বের অভিজ্ঞতা বলতে থাকলেন ওখানে ‍উপস্থিত মুসলিম,হিন্দু,বড়ুয়া সব সম্প্রদায়েরই মানুষ ছিলেন।দশমিনিট যায় আধঘন্টা যায় প্রায় ঘন্টাখানেক যায়…এই অভিজ্ঞতা বর্ণণা শেষ হয়না তাও আবার দাঁড়ায় দাড়ায়..!তিনি কোনটা বেদাত,কোনটা নাজায়েজ,কোনটা হালাল,কোনটা হারাম সেসব বলতে থাকলেন অর্নগল।এদিকে একজন আরেকজনের দিকে,কেউ কোমরে হাতদিয়ে,কেউ হাঁটুভাজকরে, এদিকওদিক তাকানো শুরু করেছে কিন্তু উনার কোন হুঁশনেই।যার যার ডেস্কের কাজ পড়ে আছে…!যাক সেযাত্রায় ও পর্যন্ত গেল…. যাক অবশেষে শেষ হলে এ যাত্রায় রক্ষা।
যারা হিন্দু আর বড়ুয়া ছিলেন তারা খুবই বিরক্তিবোধ করেছিলেন।তারা বলতে থাকলেন,এগুলো আমাদের শুনাবার দরকার কি? তাদেরকে যদি কেউ গয়া-কাশি-মথুরা বা লঙ্কা-বুদ্ধর কথা শুনালে হয়ত ভাললাগত।সবারইতো ঘুরেফিরে একই বিশ্বাসই লালন করে।
হজ্বফেরতের কাহানির পরের ধাপে আসি, হঠাৎ তিনি আমাকে অফিসে নামাজ পড়ার আমন্ত্রণ জানালেন।ভাল কথা জানাতেই পারেন তিনি তো জানতেন যে, আমি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ,অন্তত কাগজেতো তা লিখা আছে!জামাতের সাথে নামাজ আদায় করলে সওয়াব বেশি হয়,জামাতে নামাজ পড়লে মিল বাড়ে।ওইদিন খুবকরে এই নামাজি কার্যক্রম থেকে বাঁচলাম।আমি ধারণা করেনিয়েছিলাম যে, এই এক নতুন প্যারা শুরু হইছে যা একটা খারাপের ভেতর দিয়ে শেষ হবে।কারণ তিনি এরই মধ্যে বুঝেছিলেন ধর্মকর্ম আমাকে টানে না বা উদাসীন বা না করলেও সমস্যা নেই আমাদের সাথে থাকতে থাকতে ঠিক হয়ে যাবে।
এরই মধ্যে অফিসকালীন সময়ের মধ্যে যোহর আর আছরতো পড়েই,শীতকালে মাগরিব ও পড়ে যায়।মুশকিলের প্যারামিটার ওপরের দিকে উঠতেছে তা দিনকে দিন স্পষ্ট হচ্ছে!প্রথম প্রথম কৌশল করে ওই নামাজ সময়সূচীতে আমি যথারীতি অফিস থেকে বেরিয়ে যেতাম।এইরকম চলতে থাকলে তিনি অফিসে বিষয়টাকে প্রকাশ্য নিয়ে আসলেন!একদিন তার স্ত্রীও অফিসে এসে আমাকে দেখে গেলেন!শুরু হয়ে গেল…গুচুর গুচুর,ফুসুর ফুসুর…
এইরকম ছেলেকে অফিসে রাখলে অফিসের আয়রোজগার কমে যাবে,খোদা নারাজ হবে!বেটা নাস্তিক!!যততাড়াতাড়ি পারেন ছাঁটাই করেন!সবাই আমাকে দেখে হাসাহাসি করত,টিপ্পনী কাটত,মকারিকরা শুরুকরল তাতে ওইসব হিন্দু বড়ুয়ারাও যোগ দিল।তারাওতো আসলে ওইরকমই ধারণা পোষণ করেন।সুযোগের অভাবে নেতিয়ে থাকেন আরকি।যাক এই ইঁদুরবিড়াল খেলা খুব জমে উঠল নৃশংসতার মতো।
আরেকদিন,তিনি তার পারিবারীক একটা ছোট আয়োজনে অফিসের সবাইকে দাওয়াত দিলেন।আমি যাওয়ার কোন ইচ্ছে ছিলনা।কলিগরা বলল,নাগেলে স্যার মাইন্ড করবেন।যাক গেলাম… ঠিকই আমি যা আশঙ্কা করেছিলাম তাই হলো..তিনি তার পরিবার আর অন্যসবার সামনে খুব সুক্ষকরে করে আমাকে খুবই অপমানিত করলেন স্বস্ত্রীক।ঘরের বউয়েরা অফিসের কোন পদবি না থাকলেও তারচেয়ে বড়পদ তো আর কারো নাই।তিনার ছোটভাই,মানে মালিকের শ্যালক সবাইতো সেএকই গোত্রসংহার।
তবে উনারা যাই করুক,আমার সামনে সরাসরি কিছু বলার সাহস ওদের কোনদিনই ছিলনা। তবুও এই মানসিক নিপীড়ন,যন্ত্রণার কথা আমি কাউকে বলিনি।এই প্রথম যা বললাম।সবাই ভাবল যে,উনি আমাকে অন্যদশজনের মতোই ছাঁটাই করেছেন!যা হোক,এই মানসিক চাপ নিজেই সিদ্ধান্তই নিলাম জব ছেড়ে দিব এবং দিলাম।অফিসে কাজ নিয়ে কলিগ কলিগদের মধ্যে,মালিকদের মধ্যে একটু হেচিংলেগেই থাকে তাতো কোন সমস্যা না।যদিও ফেয়ার কম্পিটিশন এখানে কেউ করে না,করার যোগ্যতা রাখে না…সবাই তলে তলে যাকরার করে আরকি!
উনার ছোটছোট ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ায় খুব ভাল।ছোট হলে সবাই ভালই হয়।তিনি স্কুলে মোটামুটি নামকরা স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য উঠেপড়ে লাগলেন।যথারীতি ভর্তিপরীক্ষায় টিকলো না তবে তিনলাখ খরচ করে কামসারলেন যাক তবু তারা লেখাপড়া করে বড়ো হোক।
প্রায় তিনবছর পর ওখানকার এক কলিগকে দেখা সাথে পরিবর্তিত পরিস্থিতি!তিনি এখন শার্টপ্যান্ট ছেড়ে সৌদিটাইপ জামা পড়া ধরলেন,ইয়া লম্বাদাড়ি,সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার টুপি… সুযোগ পেয়ে বললাম,ভাই উনার এই অবস্থা কেন?ভয়াবহ ব্যাপার হয়ে গেল নাকি…………. তিনি বললেন, আগে ছিলেন হাফ,এখন ফুল আর কি!!!এখনো এই কলিগ উনার সাথে আছেন!শুধু তাই নয় এও বললেন,কোন সময় শাটডাউন হয় প্রতিষ্ঠানের সেই অপেক্ষায় আছি!!
লোকমুখে শুনতাম,একদিন উনি এক অফিসে চাকরি করতেন…দশবছরের মধ্যেই তিনি কেমনে কোম্পানি খুললেন সেটা বড়উ আর্শ্চয্যের!!!!
[যাক এভাবে বাঙালি মুসলমানের বেশিরভাগ হজ্জ্বে গিয়ে সমাজ আর রাষ্ট্রের মধ্যে কোন্দলের মধ্যমণি হয়ে উঠছে...এ এক অনন্ত যাত্রা বাঙালির।কবে এযাত্রা শেষ হবে অথবা আদৌ হবে কিনা কেউই জানেনা।মানুষ হিসেবে সভ্য হওয়ার চেয়ে জালিমবেশে সভ্য হওয়ার লোভই ওদের বেশি]।।।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×