ফেসবুকে কেউ যদি এমন স্ট্যাটাস দেয় তাহলে ফ্রেন্ড লিস্টের ভদ্র, অভদ্র পুরুষগণ যার যা কিছু আছে তা নিয়ে আক্রমণ শুরু করবেন ৷ ভদ্র মহিলাগণ সমস্বরে জানতে চাইবেন, ঘরে মা-বোন আছে নাকি নেই?
রাস্তা-ঘাটে কোন তরুণীর সাইজ জানতে চাইলে, তার বাবা, ভাই, চাচা, মামা, খালু, আত্মীয়-অনাত্মীয়, পাড়া-পড়শীগণ পিঠের চামড়া তুলে চিইল্লা কাইট্টা লবণ লাগাই দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবেন ৷
কোন এক জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন, ''বাজারে যদি মাগনা দুধ পাওয়া যায় তাহলে কষ্ট করে গাই (গাভী) পোষে কে?" কেউ যদি মাগনা সাইজ জানায় তাহলে এত বড় রিস্ক নিতে যাবে কোন স্টুপিডে!
সাম্প্রতিক সময়ে "মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ - ২০১৭" প্রতিযোগিদের নিয়ে মিডিয়ার মাতামাতি দেখে ডিম পাড়া মুরগীর কথা মনে পড়েছে ৷ হাতি একশ কেজি ওজনের বাচ্চা জন্ম দিয়েও চুপ থাকে, আর মুরগী একশ গ্রাম ওজনের ডিম পেড়েই চিৎকার করে ৷
প্রায় পঁচিশ হাজার তরুণী উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে ৷ এই পঁচিশ হাজার তরুণী থেকে মাত্র একজন! হ্যাঁ, মাত্র একজন "মিস ইউনিভার্স" প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার সুযোগ পাবে ৷
বাকি চব্বিশ হাজার নয়শ নিরানব্বই জন প্রতিযোগির ভাগ্যে কি ঘটবে সেটা আমরা জানি না ৷ তবে এরা কিভাবে ইয়েস কার্ড পেয়েছে সেটা সম্পর্কে একটু ধারণা দেই ৷ এদের প্রত্যেকের উচ্চতা, ওজন, কোমর, নিতম্ব, স্তন সহ শরীরের স্পর্শ কাতর অঙ্গের সাইজের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণণা দিয়েই আবেদন করতে হয়েছে ৷
মিডিয়া খুব সহজে সুন্দর বিষয়কে অসুন্দর, আর অসুন্দর বিষয়কে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করে মানুষকে হিপনোটাইজ করতে পারে ৷ এভারেস্ট বিজয়ের গল্প মিডিয়া খুব ফলাও করে প্রচার করে, কিন্তু এভারেস্টে উঠতে গিয়ে কতজন প্রাণ হারায় সে হিসেব ওরা চেপে রাখে ৷
এই যে চব্বিশ হাজার নয়শ নিরানব্বই জন মেয়ে অন্যদের স্পর্শে "সেকেন্ড হ্যান্ড মাল" হয়েছে, মিডিয়া সেটা চেপে গিয়ে বিজয়ী একজনকে নিয়েই মেতে উঠবে ৷ আর সেটা দেখে আগামীতে দ্বীগুণ প্রতিযোগি অংশ গ্রহণ করবে ৷
এসব প্রতিযোগিদের অভিভাবকরাই হেসে হেসে বিচারকদের হাতে এদের দৈহিক বিবরণ তুলে দিবে ৷ এদের বাবা, ভাই, চাচা, মামা, খালু, আত্মীয়-অনাত্মীয়, পাড়া-পড়শী ভদ্র লোকেরা সে প্রতিযোগিতা উপভোগ করবে ৷
গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে অনেক গাইগরু ছাড়া দেখা যায় ৷ নিজেদের হেডম দেখানোর জন্যই অনেক গৃহস্থ এদের ছেড়ে রাখে ৷ ভয়ে তাদের কেউ কিছু বলে না ৷ সামনে কেউ কিছু না বললেও গোপনে এসব ছাড়া গাই থেকে দুধ দোহন করে অনেকেই মাগনা নিজেদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে ৷
গৃহস্থ ব্যতীত গাই গরুর শরীরে সাধারণত অন্য কেউ হাত বুলাতে গেলে সে পা দিয়ে লাথি মারে ৷ কিন্তু এসব ছাড়া গাইয়ের শরীরে অনেকের হাত লাগতে লাগতে সে নিজেই ভুলে যায় তার আসল গৃহস্থ কে!
অভিনন্দন সেই সব হেডম জাহাজের কচ্ছপ অভিভাবকদের, যারা জাতিকে পঁচিশ হাজার সেকেন্ড হ্যান্ড রমনী উপহার দিয়েছে এবং তরুণদের সাইজ জানতে চাওয়ার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দিয়েছে ৷ সেই সাথে সু-স্বাগতম তাদেরকে যারা আগামী আসরে অংশগ্রহণের মনোবাসনা নিয়ে বাজারী গাইয়ের মত নিজেকে বাজারী মেয়ে হিসেবে প্রস্তুত করছে ৷
বিঃদ্রঃ ইহা একটি চুরি করা লেখা
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:২৫