somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভিনদেশি সিনেমা; আমার প্রিয় থাইল্যান্ডের সিনেমাগুলো

০১ লা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজেরে সিনেমাখোর বললে সামুর লিজেন্ডারি সব সিনেমাখোর ব্লগারদের অপমান করা হবে তবে সিনেমা খুব একটা কম দেখা হয়নাই। এনাদের কল্যানেই খুঁজে খুঁজে বিভিন্ন জনরার সিনেমা দেখা শিখেছি। দেখতে চেয়েছি বাংলা, হলিউড, বলিউডের বাইরে সারা বিশ্বের সিনেমার হালচিত্র। একটার পর একটা মুগ্ধ হয়ে দেখেছি আর ভালোবেসেছি সিনেমাকে। সিনেমা নিয়ে ভালো লিখতে পারিনা বা রিভিউ লেখলে নিজেই সন্তুষ্ট হইনা বলে অনেক সিনেমা দেখার পরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে লিখতে বসলেও কয়েক প্যারা লিখার পরে মুছে ফেলি ওয়ার্ড ফাইলটা। তারপরেও সবাইকে জানানোর জন্য আজকে ভাবলাম একটু অন্যভাবে সিনেমা নিয়ে লিখি। একেকটা দেশ ধরে সেই দেশের মৌলিক আমার ভাল লাগা সিনেমাগুলোর কথা সবাইকে জানাই। আজকে থাইল্যান্ডের সিনেমা দিয়ে শুরু করলাম। অপরুপ প্রকৃতি, মার্শাল আর্ট আর অপরাধ জগত, বেশিরভাগ থাই সিনেমার মূল আকর্ষণ এগুলোই। ভালো লাগলে অন্যান্য অপরিচিত দেশের সিনেমা নিয়ে হাজির হবো। শুরু করা যাক।



১। The Protector (2005)
IMDb rating: 7.1

থাইল্যান্ডের বিখ্যাত অভিনেতা টনি ঝার ( ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস সিরিজেও আছে) এই সিনেমা দিয়ে থাইল্যান্ডের সিনেমাজগতের সাথে আমার পরিচয়। খাম(টনি ঝা) ছোটবেলা থেকেই হাতির সাথে বড় হয়। প্রাচীনকাল থেকেই হাতি তাদের সংস্কৃতির একটা অংশ। হাতির সার্কাস, হাতির মতো যুদ্ধকৌশল, হাতির অনুকরনে নাচ মোটকথা হাতিই তাদের সব। একটি থাই মাফিয়া সিন্ডিকেট খামের পরিবারের সবাইকে মেরে মা ও বেবি হাতিটিকে ছিনতাই করে অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করে দেয়। ওয়ান ম্যান আর্মি, দ্য প্রটেক্টর খামের একার লড়াই শুরু হয় হাতিদের থাইল্যান্ডের জংগলে ফিরিয়ে আনার জন্য। সাথে যোগ দেয় অস্ট্রেলিয়ায় চাকরিরত থাই বংশোদ্ভুত পুলিশ মার্ক। ১ ঘন্টা ৫১ মিনিটের সিনেমাটি টানটান উত্তেজনায় ভরা। মুয়ে থাই নামক থাই মার্শাল আর্টের কলাকৌশলে প্রতিটি ফাইটিং সিন চরম লেভেলের। উপরের ছবিটি আমার খুবই প্রিয়। কি সুন্দর এই দৃশ্য!

দর্শকপ্রিয়তা পাওয়ায় এর সিক্যুয়েল বের হয়েছিল The Protector 2 (2013) নামে। এইটাও দেখার মতো।

২। Ong-Bak: The Thai Warrior (2003)
IMDb rating: 7. 2

এটাও টনি ঝার সিনেমা। একশন, ক্রাইম থ্রিলার বেসড এই সিনেমাটার পুরোটাই ভর্তি মুয়ে থাই মার্শাল আর্ট দিয়ে। ছবির মতো সাজানো একটি গ্রামে বাস করে টিং। গ্রামটির ঐতিহ্য এবং সম্মানের বাহক হচ্ছে একটি বৌদ্ধমূর্তি। গ্রামেরই একজনের বিশ্বাসঘাতকতায় চুরি হয়ে যায় এই অমূল্য সম্পদ। গ্রামের উপর নেমে আসে অমংগল, খরা। অভিশাপ থেকে সবাইকে বাঁচাতে টিং গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমায়। উদ্দেশ্য মূর্তি উদ্ধার। রাস্তায় হাজির হয় একের পর এক বিপদ। মুয়ে থাইয়ের কলোকৌশলে সব কিছুকে পরাস্থ করে মূর্তি খুঁজে বের করে টিং। বোরড হওয়ার কোন সুযোগ নেই। মার্শাল আর্ট দেখতে দেখতে ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট কিভাবে কেটে যাবে টেরই পাবেন না।

Ong-Bak এর সাফল্যের পর এর আরো দুইটি সিক্যুয়েল বের হয়েছে। সমান উপভোগ্য।

৩। Tropical Malady (2004)

IMDb rating: 7. 3

মার্শাল আর্ট খুব একটা পছন্দ নয় ? তাহলে কান চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি পুরস্কার পাওয়া রোমান্টিক সাইকোলজিক্যাল জনরার এই সিনেমা দেখতে পারেন। সিনেমাটিতে সূক্ষভাবে দুইটা গল্পের সমন্বয় করা হয়েছে। প্রথম গল্পে একজন ছুটি কাটাতে আসা সৈনিক এবং একজন গ্রাম্য কৃষক ছেলের মধ্যকার বন্ধুত্ব থেকে বিভিন্ন ঘটনায় ভালোবাসায় পরিনত হওয়াকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তারপরে হঠাত করেই সিনেমা ভিন্নদিকে চলে যায়। প্রাচীন মিথোলজিক্যাল যুগে চলে যায় যেখানে এক সৈনিক জংগলে মুখোমুখি হয় বাঘের উপরে ভর করা এক জাদুকরের। এই জাদুকর আবার আগের সেই কৃষক ছেলে এবং সৈনিক সেই আগেরজনই। দুইটি ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ঘটনার মেলবন্ধনের ছবিটিতে থাইল্যান্ডের রেইনফরেস্টের অপরূপ সৌন্দর্য্য মুগ্ধ হয়ে দেখবেন।

একই পরিচালকের Blissfully Yours (2002) রোমান্টিক জনরার আরেকটি উপভোগ্য সিনেমা।

৪। The Gangster (2012)

IMDb rating: 6.6

এটি একটি পিউর গ্যাংস্টার মুভি। পঞ্চাশের দশকের থাইল্যান্ডের অপরাধ জগতের গল্প। রাস্তার মারপিট দিয়ে হাত পাকিয়ে সময়ের সাথে গ্যাংস্টার হয়ে উঠা জড এবং তার বন্ধু ডেং এর গল্প। ক্ষমতার শীর্ষে উঠতে গিয়ে একটা সময় এই খুনাখুনি, হানাহানির জীবন বিস্বাদ হয়ে উঠে জড এর কাছে। কিন্তু উপায় নেই গোলাম হোসেন। তুমি অপরাধ জগতে আটকা পড়েছ। অনেকগুলো চরিত্র থাকায় প্রথমে আপনার একটু বিরকত লাগতে পারে কিন্তু ছুরি দিয়ে ফাইটিং এর সিনগুলো আপনাকে উপভোগ করতেই হবে।গ্যাংস্টার, মাফিয়া নিয়ে সিনেমা পছন্দ করলে এইটা মাস্ট সি।

এই সিনেমাগুলো আমার পারসোনাল চয়েসে সেরা। এর বাইরে আরো কিছু সিনেমা আছে যেগুলোও দেখার মতো। The Overture(2004), Bangkok Dangerous (নিকোলাস কেজের) , Mysterious Object at Noon(2000).

আপনার যদি হলিউড, বলিউডের গন্ডির বাইরে অন্যান্য দেশের সিনেমা দেখতে ইচ্ছে হয় তাহলে ফেসবুকের এই গ্রুপে( World Cinema Paradiso) জয়েন করতে পারেন। নিত্যনতুন সব বিভিন্নরকম সিনেমা নিয়ে হাজির থাকে।

এক জীবনে আর কয়টাই বা সিনেমা দেখা যায়!
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×