somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সর্ষের মধ্যে ভূত, না ভূতই করছে সর্ষে চাষ?

২৭ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ম্যানহোলের ঢাকনা চুরির সময় এক লোককে হাতেনাতে আটক করেছে এলাকার চৌকিদার। মধ্যরাতেও পাড়া জেগে উঠেছে, মহল্লার গণ্যমান্য থেকে নগণ্য সবাই মিলে হুলুস্থুল যাকে বলে আর কি! তো সাব্যস্ত হলো- বেটা যেহেতু হাতেনাতে ধরা পড়েছে তাই তার কোনো রক্ষা নাই, এক সপ্তাহ তাকে ম্যানহোলেই চুবিয়ে রাখা হোক।

এটা শুনে চোর তো কেঁদেকেটে একাকার, এলাকার কমিশনারের হাত-পা চেপে ধরে আর্জি জানালো, “আলমপনা, গান্দায় চুবান আপত্তি নাই; কিন্তু একটা দিন সময় দেন”।

কমিশনার তো শুনে টং! মানুষের ফাঁসির আগে শেষ ইচ্ছা পূরণ করা হয় না, আর বেটা কি না ম্যানহোলে যাওয়া নিয়ে নাটক করে!!

“বল, তোর কি ইচ্ছা...।”

আজ্ঞে ভেবেছি ম্যানহোল বাসশেষে ভালো মানুষ হয়ে যাবো, তার আগে আমার কাছে আজিব দেশের এক আজিব গাছের বীজ আছে; যা লাগালে চারা হবে আর তা থেকে যে গাছ হবে সেই গাছে নাকি টাকা ধরবে, তো ইচ্ছে হচ্ছে সেই বীজটা লাগিয়েই ম্যানহোলেই নামি!

এই কথা শুনে তো সবাই হেসে খুন, তো কই লাগাবি – লাগা! বীজ লাগাতে আর কতক্ষণই বা লাগে?

না, বস; এই বীজ যে কেউ লাগালে তো চারা হবে না! এটা লাগাতে হবে এমন কাউকে যে জীবনে কখনো চুরি করে নাই। আর, যদি মিথ্যা বলে তবে সাতদিনের মাঝে নির্বংশ হবে!!

বেশ, তবে তাই হোক... বলে কমিশনার হাঁক ছাড়েন, “রঘু, লাগা তো বিচিটা।”

স্যার, আমি তো খালি পাড়া পাহারাই দেই না, লোকে ভুল করে এটা সেটা বাড়ির বাইরে রেখে দিলে পাছে আবার চুরি হয় ভেবে মাঝে মাঝে নিজেই নিয়ে যাই! আমি লাগানোটা কি ঠিক হবে!!

কমিশনার ঘাড় বাঁকা করে তাকালেন যার বাসার সামনের ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হচ্ছিল তাঁর দিকে, মধ্যবয়সী আংকেল স্মিতহাস্যে বললেন, “আসলে আমি বাড়িওয়ালা মানুষ, গ্যাস-পানি-বিদ্যুত কত কিছু নিয়ে কারবার আমার! আমার এই বীজ হাতে নেয়াটাই ঠিক হবে না।”

কমিশনার ‘সব বুঝছি’ ভঙ্গিতে তাকালেন এলাকার মুদি দোকানদার কাশেমের দিকে। বাড়িওয়ালা তো বিদ্যুৎ নিয়ে নয়-ছয়ের কথা ইশারায়-ইঙ্গিতে বোঝালো, কিন্তু কমিশনার তাকানোয় মুদি দোকানদার নিজেই যেন কারেন্টের শক খেলো!

“কাকা, আফনে তো জানেন- আমার দাঁড়িপাল্লায় ডিস্টাব! মাপে মাঝেমইধ্যে কমবেশি হয়!!”

ভিড়ের মাঝে কে যেন বলে উঠলো, “গল্প আর না লম্বা করে কমিশনার সাহেব নিজে লাগালেই তো ঝামেলা মিটে যায়। পাঁচবারের কমিশনার, তার উপর গত বছর ‘সাদা মনের মানুষ’ অ্যাওয়ার্ড পাইছেন; আপনিই লাগান আর চোররে ম্যানহোলে নামাইয়া দেন, ও বুঝুক এবার চুরির মজা!”

কমিশনার সাহেব মিনমিন করে কী যেন বলে কাঁপা হাতে গিয়ে চোরের হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে বললেন, “সামান্য একটা ম্যানহোলের ঢাকনাই তো!”।

সর্ষের মধ্যে ভূত – বহু পুরানো প্রবাদ। ‘ভূতে ধরা’ বা অস্বাভাবিক আচরণের চিকিৎসায় কবিরাজ বা ওঝাঁগণ সরিষা ব্যবহার করতেন গ্রামে গ্রামে। এক্ষেত্রে সরিষাকে ভূত তাড়ানোর উপযোগী করে তুলতে কোনো ত্রুটি থাকলে সেই সরিষা দিয়ে আর ভূত তাড়ানো যেত না বলেও প্রচলিত। আর, এই ত্রুটিকেই সর্ষের মধ্যে ভূত বলা হতো।

থাক সে কথা, উপমার পেছনের কারণে চলে আসি...।



সম্প্রতি ‘ট্রিজন’ তথা রাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র অভিযোগ এসেছে ক্যাসপারস্কি অ্যান্টিভাইরাসের কর্মীসহ রাশিয়ান স্পাইদের বিরুদ্ধে! আমেরিকান ইন্টেলিজেন্সের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক দ্যা টেলিগ্রাফ জানায়, এছাড়াও ভাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধেও ইউএস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিলারি ক্লিনটনের গোপন নথি ফাঁস ও ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনের তথ্য হ্যাকিংয়ে মদদের অভিযোগ রয়েছে।

খবরে প্রকাশ, ক্যাসপারস্কি ল্যাবের ওই ব্যবস্থাপক (রুজল্যান স্তয়ানভ) হ্যাকিং ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক নিজেই হ্যাকিংসহ রাশিয়ার উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ঘুষ প্রদান সাপেক্ষে তাদের যোগসাজশে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য চুরি ও পাচারে জড়িত।

ক্যাসপারস্কি, মস্কোভিত্তিক বহুল ব্যবহৃত অ্যান্টিভাইরাস, এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট কর্মী বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে বলে জানালেও এটি অভিযুক্ত কর্মীর ক্যাসপারস্কিতে যোগ দেয়ার আগের ঘটনা বলে দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রসঙ্গত, শুধু সাইবার সিকিউরিটি মুঘল ক্যাসপারস্কিই যে কেবল রাশিয়ার তাই নয়, বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করা অধিকাংশ ভাইরাসের উদ্ভাবকও রাশিয়ান বা রুশভাষী দল ও গোষ্ঠী।

টেক সমাধান ব্লগে ক্যাসপারস্কি নিয়ে লেখায় গোঁড়ার দিকে কেউ কেউ ক্যাসপারস্কির মার্কেটিং ভেবেছিলেন, এবার আবার কেউ যেন উল্টোটা না ভাবেন সেই প্রত্যাশা থাকলো। দল-মত-কোম্পানির উর্ধ্বে টেক সমাধান কেবল সাইবার নিরাপত্তা নিয়েই আলোচনা করে। কখনো ক্যাসপারস্কি, কখনো রিভ, আবার কখনো এভিজি বা পান্ডা! কেননা, বিচারাধীন বিষয় হয়তো একসময় মীমাংসা হবে, কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক-এর অর্থ আত্মসাৎজাতীয় কোনো ঘটনা ঘটলে হয়তো আবার প্রশ্ন উঠবে- ডিজিটাল লাইফ আসলে কতটা নিরাপদ?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:০১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×