রাজাকার শব্দটি যাকে তাকে ইচ্ছা মত বলার আগে একটু ভেবে নিন।
রাজাকার আসলে কে???
"রাজাকার" শব্দটি একটি ফারসী শব্দ যার মানে হচ্ছে ভলান্টিয়ার। একাত্তরে সাধারনত তাদের নিয়েই রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছে, যারা ছিল প্রো-পাকিস্তানী বাংগালী অথবা বাংলাদেশে বসবাসরত উরদু ভাষী মাইগ্রেন্ট। ইস্ট-পাকিস্তানী রাজাকার অরডিন্যান্স এবং মিনিস্ট্রি অফ ডিফেন্স অরডিন্যান্স এর মাধ্যমে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। রাজাকাররা পাকিস্তানী আরমির অংশ বলেই ধরা হত। রাজাকাররা লাইট ইনফেন্ট্রি উইপন্স পেয়ে থাকত।
রাজাকার ছাড়া একাত্তরে আরো ২ ধরনের বাহিনী ছিল। সেগুলো হলঃ শান্তি কমিটি এবং আল-বদর।
শান্তি কমিটির কাজ ছিলঃ
১।মুক্তি-বাহিনীর বিপক্ষে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো,
২। মুক্তি-বাহিনীর বিপক্ষে স্পাইয়িং,
৩। বুদ্ধিজীবীদের বের করা,
৪। পাকিস্তানী ফৌজকে খাবার বা আশ্রয় দেয়া,
৫। মেয়ে অপহরন এবং যৌন হয়রানি/ধরষনের জন্য পাকিস্তানী বাহিনীকে সাপ্লাই দেয়া,
৬। ইন্টারোগেশন।
আল-বদর গঠিত হয়েছিল বিভিন্ন লেভেলের মুসলিম ছাত্রদের নিয়ে যারা জামাত-ইসলামীর প্রতি অনুগত ছিল।তাদের কাজ ছিলঃ
১। ইন্টারোগেশন,
২। মুক্তি-বাহিনীর বিপক্ষে স্পাইয়িং,
৩। রেগুলার আরমির গাইড হিসেবে কাজ করা,
৪। অপারেশনে সাহায্য,
৫। হত্যা ইত্যাদি।
আল-শামস গঠিত হয়েছিল মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও জামাত-ইসলামী বাদে অন্যান্য ইসলামিক রাজনৈতিক দলের সাপোরটারদের নিয়ে।
এই হল ১৯৭১ এ সকল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দলের গঠন ও কাজ। এদের গঠনে সবচেয়ে জোরালো এবং গুরুত্ত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে গোলাম আজম।
*** "গোলাম আজম ১৯৪৭ সালে ডাকসুর সেক্রেটারী জেনারেল ছিল।-->ডাকসুতে কি সেই বছর ভিমরতি ধরছিল?? ১৯৫০ এ সে বাংলা ভাষা আন্দোলন এ অংশ নেয়। বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষাগুলোর মধ্যে একটা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার জন্যে গোলাম আজম পাকিস্তান সরকারের কাছে মেমোরান্ডাম দেয়। কিন্তু পরবরতীতে সে এই আন্দোলন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয়।"--> সুত্র ঃ উইকি...>>তাইলে এই কুত্তারও জীবনে একবার সত্য কথা বলার উদাহরন আছে??? আহারে বড় বালা কুত্তা ছিল।
ইতিহাসের কথা শেষ। এবার নিজের কিছু চিন্তা উপ্সথাপন করছি। একাত্তরে যারা পাকিস্তানের অখন্ডতা চেয়েছিল সবাইকে রাজাকার বলা ঠিক না। কেননা, যারা শুধু অখন্ডতাই চেয়েছিল কিন্তু কোনরুপ অনৈতিক কাজে জড়িত ছিলনা,তারা কোন দোষেই দুষ্ট না। তবে ভাবনার বিষয় হল, একাত্তরে আসলেই উপরে উল্লেখিত নোংরা বাহিনী গুলো ছাড়া এমন মানুষ কয়জন ছিল?? যদি এমন ১ জন ও থেকে থাকে যে পাকিস্তানের অখন্ডতা চায়নি, কিন্তু আবার কোন অনৈতিক কাজেও সাহায্য করেনি,তবে আমরা তাকে রাজাকার বলতে পারিনা।
ধরেন, পার্বত্য এলাকায় শান্তি-বাহিনী স্বাধীনতা চায়। আমি, আপনি যদি তার বিরোধিতা করি, তবে যদি তারা স্বাধীনতা পেয়ে যায়, আমরা কি রাজাকার হয়ে যাব?? আমরা বিরোধিতা করব এটাই স্বাভাবিক।
এছাড়া ৭১ এ এমন অনেকেই ছিল যারা রাজাকার হিসেবে নাম দিয়েছে বাধ্য হয়ে কিন্তু পরে তারা গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যও করেছে। তাদের ইচ্ছাই ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে কাজ করা, কিন্তু বিভিন্ন কারনে হয়ত রাজাকার হিসেবে নাম ঢূকে গেছে। কিন্তু ৭১ এর পর তারা বিভিন্নভাবে অপদস্থ হতে হয়েছে শুধু মাত্র নাম ঢূকে যাওয়ার কারনেই। এদের প্রতিও আমাদের সম্মান জ়ানানো উচিত।
জামাত-ইসলামীর প্রতি আমার কোন ভাল ধারনা নাই। কিন্তু আমার মনে হয় বরতমানে যারা জামাত-ইসলামীর সাপোরটার তাদের আমরা ঢালাও ভাবে রাজাকার বলা ঠিক না। যারা ৭১ এ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত ছিল সেই রাজাকার। সেই হিসেবে প্রায় সব দলেই এখন রাজাকার আছে। এককভাবে জামাত-ইসলামীকে রাজাকার হিসেবে দায়ী না করে আমরা সকল রাজাকারের বিরুদ্ধে চলুন আন্দোলন করি।
জামাত-ইসলামীকে আমরা অপছন্দ করতে পারি তাদের ধরমের নামে অধরমের রাজনীতির কারনেই। এছাড়া জামাত-ইসলামী সবচেয়ে বেশি রাজাকার নিয়ে সংঘটিত এবং এদের নেতারাই রাজাকার বলে এদের বরজন করা উচিত। কেননা গোড়াতেই যদি গলদ থাকে তবে বাকিটা কেমন হবে তাতো বোঝাই যায়।
আরো জানতে নিচের লিঙ্ক গুলো দেখুনঃ
১। রাজাকারঃ Click This Link)
২। গোলাম আজম Click This Link
৩। একাত্তরের ঘাতক-দালালেরা কে কোথায়ঃ
http://www.nybangla.com/March_26/Doc of WAR/Razakar List.htm
৪। আনিসুজ্জামানের গোলাম আজমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগঃ
http://en.wikipedia.org/wiki/Daily_Prothom_Alo
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:২৮