somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মন থেকে বলি
আদ্যন্ত গৃহী। বইপোকা। লেখালিখিটা প্যাশন; তেমন বাছবিচার না থাকলেও থ্রিলার আর হরর জনরাতে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি। অল্প বিস্তর ছবিয়ালও। ইন্সটাতে shajus shot হিসেবে পাবেন। মুভি দেখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে খোলা আকাশ, সাগরের পাড়ে চুপ করে বসে থাকা আর নিস্তব্ধতা। প্রিয়

জেনারেল মটোরস এর ওয়ান্ডার ডায়েট প্রোগ্রাম - মাত্র ৭ দিনে কমান ৪/৫ কেজি বাড়তি ওজন

০৭ ই এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে আপনাদের যে ডায়েট প্রোগ্রামের কথা বলবো, সেটাকে ওয়ান্ডার ডায়েট বললেও ভুল হবে না। এটা করা হয়েছিলো জেনারেল মটোরস এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। ইউ.এস. ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার এবং ফুড এ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর অনুদানে এটা বানানো হয়েছিলো। ফিল্ড টেস্ট করা হয়েছিলো জন হপকিন্স রিসার্চ সেন্টারে। ১৯৮৫ সালের ১৫ই অগাস্ট সাধারন মিটিংএ জেনারের মটোরস এর বোর্ড অব ডিরেক্টররা এটা সব কর্মচারীদের এবং তাদের পরিবারের মধ্যে এই ডায়েট প্রোগ্রামটি বিতরনের নির্দেশ দেন। এর উদ্দেশ্য ছিলো সবার সুস্থতা এবং ফিটনেস নিশ্চিত করা।

এই প্রোগ্রাম ডিজাইন করা হয়েছে ৭ দিনে কমপক্ষে ১০-১৭ পাউন্ড ওজন ঝরানোর জন্য। একই সাথে এর পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কারের প্রভাবের কারণে এটা আপনার এ্যাটিচ্যুড এবং ইমোশনের ক্ষেত্রেও উন্নতি করবে। এই ৭-দিন ডায়েট প্রোগ্রামটা এমনভাবে কাজ করে যে, খাবারগুলো দেহে ক্যালোরি হিসেবে যা যোগ করে, তার থেকে বেশি পুড়িয়ে ফেলে।

সাত দিন পর আপনি নিজেকে অনেক হালকা অনুভব করবেন কারণ আসলেই আপনি কমপক্ষে ১০ পাউন্ড হালকা হয়ে যাবেন। এটা এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে এটা আপনার দেহের সব দুষিত পদার্থ পরিষ্কার করে আপনাকে চনমনে করে তুলবে। আপনি অনুভক করবেন যে আপনার কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে গেছে এবং উৎসাহও বেড়ে গেছে।

যতবার ইচ্ছা আপনি এই প্রোগ্রাম রিপিট করতে পারবেন, কোন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। আর প্রতিবারই আপনি একই ফল পাবেন।

শর্তাবলী ঃ
১. প্রথম ৭ দিনে কোন ধরনের অ্যালকোহল পান করা যাবে না।
২. প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ গ্লাস পানি পান করতেই হবে।

এবার আসুন এক একদিনের ডায়েটগুলো দেখি।

প্রথম দিন - ফল-দিবস ঃ
যেকোন ফল খেতে পারবেন তবে কলা বাদ। বিশেষভাবে পরামর্শ দেয়া হয়েছে যত বেশি সম্ভব তরমুজ বা বাংগি (মেলন) খেতে। যদি আপনি শুধু তরমুজ/বাংগিতেই থাকেন, তাহলে প্রথম দিনে ৩ পাউন্ড ওজন ঝরানোর সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

দ্বিতীয় দিন - সবজি-দিবস ঃ
যত ইচ্ছা যেকোন ধরনের সবজি খান এদিন। রান্না বা কাঁচা -যা আপনার খুশি। এক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। তবে আপনার জটিল কার্বোহাইড্রেটের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এদিন নাস্তাটা প্রচুর পরিমানে বেক্ড আলু দিয়ে শুরু করুন। চাইলে আলুর ওপর এক পরত মাখনও লাগিয়ে নিতে পারেন।

তৃতীয় দিন - ফল-সবজি-দিবস ঃ
আজ যত খুশি ফল আর সবজি খাবেন। তবে কলা বাদ। আলুও বাদ।

চতুর্থ দিন - দুধ আর কলা দিবস ঃ
আজ আপনি সর্বোচ্চ ৮টা কলা খাবেন। সাথে ৩ গ্লাস দুধ। তবে এর সাথে যথাযথ পরিমানে স্পেশাল স্যুপ পান করতে পারেন যদি চান।

পঞ্চম দিন - ফিস্ট দিবস ঃ
আজ আপনার ফিস্ট দিবস। আপনি আজ গরুর মাংস আর টম্যাটো খাবেন। ২টা ১০ আউন্সের (০.২৮৩ কেজি বা ২৮৩ গ্রাম) পাতলা মাংসের ফালি খাবেন। হ্যামবার্গারও খেতে পারবেন। এর সাথে ৬টা আস্ত টম্যাটো খান। এদিন আপনার পানি পানের মাত্রাটা অবশ্যই প্রায় ১ লিটার বাড়াতে হবে। এটা দরকার হবে আপনার দেহে যে ইউরিক এসিড তৈরি হবে সেটা পরিস্কার করার জন্য।

ষষ্ঠ দিন - মাংস-সবজি-দিবস ঃ
আজকে আপনি মন ভরে গরুর মাংস আর সবজি খেতে পারেন। যত মন চায় ততটাই।

সপ্তম দিন - সমাপ্তি ঃ
আজ সপ্তম দিন। আজকে আপনার মেনু হবে বাদামী চালের ভাত, ফলের রস আর পছন্দ মতো সবজি।

আগামীকাল সকালে আপনি এক সপ্তাহ আগের ওজনের থেকে ১০-১৭ পাউন্ড কম হবে। আপনি যদি আরও ওজন ঝরাতে চান তাহলে যতবার ইচ্ছা এই প্রোগ্রামটা চালাতে পারেন। প্রোগ্রাম চলাকালীন বিয়ার ছাড়া অন্য কোন এ্যালকোহলিক পানীয় পান করা যাবে না। অবশ্য ২ গ্লাস সাদা ওয়াইন বা শ্যাম্পেইন পান করা যেতে পারে। কোন ধরনের লিকার চলবে না। ক্রিমযুক্ত পানীয় বিশেষভাবে নিষেধ। তবে একদিনে একধরনের পানীয়ই পান করবেন। বিয়ার হলে শুধু বিয়ার, ওয়াইন হলে শুধুই ওয়াইন।

অন্যান্য ঃ
সবজিটা সালাদ হিসেবে খাওয়া যাবে। তবে ড্রেসিং ছাড়া। তবে মল্ট/ওয়াইন/লেবুর রস/ভিনেগার/আদা/হার্বস ইত্যাদি দিয়ে ড্রেসিং করা সালাদ চলবে। কোন ভাবেই এক চা-চামচের থেকে বেশি তেল ব্যবহার করা যাবে না।

এই প্রোগ্রাম চলাকালীন যেসব পানীয় পান করা যাবে ঃ
 পানি (লেবুর বা অন্য কিছুর সুগন্ধিযুক্ত)
 ক্লাব সোডা
 কালো কফি (দুধ, চিনি, ক্রিম ছাড়া)
 কালো চা
 শুধুমাত্র সপ্তমদিনের জন্য ফলের রস

জেনারেল মটোরস ওয়ান্ডার স্যুপ ঃ

এই স্যুপটা সাপ্লিমেন্ট ডায়েট হিসেবে প্রোগ্রাম চলাকালীন যতবার যত খুশি পান করা যাবে। বরং এটা বেশি বেশি করে পান করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

উপাদানসমূহ -
ক্স ২৮ আউন্স পানি (০.৮ কেজি)
ক্স ৬টা বড় পেঁয়াজ
ক্স ২টা গ্রীন পিপার (বা অন্য কোন সবজি)
ক্স আস্ত টম্যাটো
ক্স ১টা বাধাঁকপি (বা অন্য কোন সবজি)
ক্স ১ আঁটি সেলেরি
ক্স ৪ প্যাকেট লিপটন অনিয়ন স্যুপ মিক্স
ক্স হার্বস
ক্স সুগন্ধি
যে কোন ধরনের বিন নিষিদ্ধ

কিভাবে এবং কেন এই ডায়েট প্রোগ্রামটা কাজ করে?

প্রথম দিনে আপনি আপনার পরিপাকতন্ত্রকে প্রস্তুত করছেন আসন্ন ডায়েট প্রোগ্রামটার জন্য। আপনার একমাত্র পুষ্টির উৎস হলো তাজা ফল। আমরা জানি, ফল হলো প্রকৃতির সবচেয়ে নিখুঁত ব্যালান্সড খাবার। জীবনধারনের জন্য যা যা দরকার, তার সবই আপনি ফলের মধ্যে পাবেন, শুধুমাত্র সম্পূর্ণ ব্যালান্স আর বৈচিত্র ছাড়া।

দ্বিতীয় দিন শুরু হচ্ছে জটিল কার্বো-হাইড্রেট দিয়ে, সাথে কিছু তেল। শক্তি এবং ভারসাম্যের জন্য সকালেই এটা খাওয়া হচ্ছে। দিনের বাকি সময়টা সবজি খেয়ে পার করছেন যা কিনা ক্যালরি মুক্ত এবং আপনাকে দিচ্ছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এবং আঁশ।

তৃতীয় দিনে আলু বাদ, কারণ আপনি সবজি থেকেই প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট পেয়ে যাচ্ছেন। আপনার পরিপাকতন্ত্র কিন্তু এখন অতিরিক্ত মেদ পোড়ানোর জন্য তৈরি।

চতুর্থ দিনের ডায়েটে রয়েছে কলা, দুধ আর স্যুপ, তাইনা? আপনার কাছে এর থেকে উদ্ভট কম্বিনেশন আর হতেই পারেনা। হয়তো আপনি আপনার বরাদ্দ সব কলাও খেতে চাইবেন না। কিন্তু মনে রাখবেন, এই কলাগুলোই কিন্তু আপনার হারিয়ে যাওয়া পটাশিয়ামের একমাত্র উৎস। এমনকি আগের তিন দিনে আপনি যে সোডিয়াম পাননি, সেটারও একমাত্র উৎস। এদিন আপনি দেখবেন যে মিষ্টির প্রতি আপনার আসক্তি অনেকটাই কমে এসেছে। আপনি হতবাক হয়ে যাবেন যে চতুর্থ দিনটা কত সহজে পার হয়ে যায় তা দেখে।

পঞ্চম দিন, গরুর মাংস আর টম্যাটো। গরুর মাংস আয়রন আর প্রোটিন এর জন্য। টম্যাটো পরিপাক আর আঁশের জন্য। প্রচুর পানি আপনার পরিপাকতন্ত্রকে বিশুদ্ধ করছে। এদিন আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে আপনার পেশাব বর্ণহীন হবে। তবে এদিন আপনার বরাদ্দের সবটুকু মাংসই যে খেতে হবে, তা নয়। তবে ৬টা টম্যাটো কিন্তু খেতেই হবে।

ষষ্ঠ দিন পঞ্চম দিনের মতোই। আয়রন আর প্রোটিন আসছে মাংস থেকে, ভিটামিন আর আঁশ আসছে সবজি থেকে। এতদিনে আপনার পুরো সিস্টেমটা কিন্তু ওজন হারানোর দিকে চলেছে। এদিন প্রথম দিনের তুলনায় আপনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক দেখাবে।

সপ্তম দিন হলো একটা চমৎকার সিগার ধরিয়ে একটা উপাদেয় ডিনার শেষ করার মতো, যদিও খুব বেশি স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে নয়। আপনার পরিপাকতন্ত্র এখন আপনার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে এবং এটা হয়তো আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে তাকে এতো ভালো ভাবে সার্ভিসিং করার জন্য।

তাহলে আর দেরি কেন? এখনই শুরু করে দিন যারা ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত আছেন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×