ছোট ছেলেকে একদিন প্রস্তাব দিলাম, "যাবে আমার অফিস দেখতে?"
এর পিছনে আমার শৈশবের এক মধুর স্মৃতি কাজ করেছিল। আব্বু তাঁর অফিসে নিয়ে গিয়ে একটা টাইপরাইটারের সামনে বসিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ৩৫ বছর আগে। চাবি টিপে টিপে টাইপ করার সেই আনন্দ আজও ভুলিনি। ভেবেছিলাম, আমার ছেলেও লাফ দিয়ে উঠবে।
কিন্তু প্রথমেই প্রশ্নঃ " অফিসে কি আছে? কেন যাব?"
বললামঃ "গিয়েই দেখবে, চল। বাবা কি করে। কোথায় কাজ করে।"
মনে হলো, অর্ধ-ইচ্ছায় রাজি হলো। তা-ও যাক। একটা স্মৃতি হয়ে থাকবে।
আধবেলা কাটালো আমার সাথে। পুরোটা সময় ট্যাবে গেম খেলে। আর কোন কিছুতেই আগ্রহ নেই। অফিস জিনিসটা কি, ভেবেছিলাম কিছু হলেও জিজ্ঞেস করবে। কিসের কি? কিন্তু তখনও বুঝিনি, এ জিনিস এযুগের। আমাদের মত ওল্ড মডেল নয়।
এটম বোমাটা মারল বাড়িতে ফিরে।
আমি টিভি দেখছি। হঠাৎ কান গেলো ছেলে আর মায়ের কথোপকথনের দিকে।
"আম্মু, বাবা অফিসে কি করে সারাদিন?"
ওর মা জিজ্ঞাসু চোখ ফেরালো। আরো শুনবে।
"কিছুই তো করে না।
শুধু বসে থাকে চেয়ারে।
মাঝে মাঝে চা খায়।
আর অন্যদের হুকুম দেয় - এই কর, সেই কর।
কোন কাজ তো করলো না।
এইটাকেই কি অফিসের কাজ বলে?"
শেষে ট্যাগ-লাইন মেরে দিল - "সাচ আ ওয়েস্ট অফ মানি।"
স্যালারির কথাই বুঝালো কি না, প্রভু জানেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৬