পুরুষ মানুষ দুই ধরনের। জীবিত আর বিবাহিত। বিয়ের পর পুরুষ মানুষের স্বাধীনতা বলতে থাকে শুধু বাইরের ঠাট। ভিতরে ভিতরে হয়ে যায় ক্ষয়িষ্ণু নদী।
গ্রাম বাংলায় এই ছড়াটা প্রায়ই শুনা যায়,
যখন থাকে দুই পাও
যথা ইচ্ছা তথা যাও।
যখন হয় চাইর পাও
খানা খরচ দিয়া যাও।
বন্দিত্বের আরেক নাম বিয়ে। বাংলাদেশে কোন উঠতি বয়সের ছেলে লেজটা বেশি নাড়ালে, বেশী রাত করে বাসায় ফিরলে মুরব্বীরা বলে ছেলে বিয়ে করিয়ে দাও। লেজতো সোজা হবেই সারা দিন ঘরে বৌয়ের আচল ধরে বসে থাকবে।
হ্যা, ছেলেরা ঘরমুখো হয় ঠিকই, তবে সব বন্ধু-বান্ধব ত্যাগ করে। আমার এক বন্ধু বিয়ের পর নিজের বাসায় বেড়াতে আসে। আর আমরা তো ছাড়পোকাই। ফোনে বৌয়ের সাথে এমন ভাবে কথা বলে যেন কোন উর্ধ্বতন বসের সাথে কথা বলছে।
এক লোক তার অফিসের ডেস্কের সামনে সব সময়ই তার বৌয়ের ছবি রাখে। এটা দেখে তার এক সহকর্মী জিজ্ঞেস করে, ‘ভাইজান মনে হয় বৌদিরে অনেক ভালোবাসেন। সব সময়ই দেখি আপনার বৌয়ের ছবি ডেস্কের সামনে রাখেন।’
লোকটি বলল, ‘ ভাই আসলে তা না। অফিসে মাঝে মাঝে বড় কোন ঝামেলায় পড়লে বৌয়ের ছবি দেখি আর ভাবি, বাসায় এত বড় একটা ঝামেলা সামলাই আর অফিসে এটা সামলাতে পারবো না!!
জনৈক কবি বলেছিলেন, ‘বিয়ে হলো প্রেমের মৃত্যু।’ বিয়ের পরেই প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে যায়। তুমি থেকে শুরু হয় তুই।
এক মাতাল মদ খাওয়ার সময় সামনে তার বৌয়ের ছবি রাখে। অন্য মাতাল এটা দেখে বলল, ‘ভাই আপনি মদ খাওয়ার সময় বৌয়ের ছবি সামনে রাখেন কেনো?
আরে বোকা এটা হলো মিটার। মিটার। মদ খেতে খেতে যখন বৌকে সুন্দর লাগে, তখনই বুঝি নেশা হয়ে গেছে। খাওয়া অফ।
আমার এক বন্ধু একবার আমায় জিজ্ঞেস করলো, “ দুস্ত বলতো বিয়ের সময় কন্যাকে কেনো ডান পাশে বসায়?”
আমি বললাম, “ জানি না দুস্ত। বলে দে।”
সে তখন বিজ্ঞের মতো বললো, “ আরে ব্যাটা হিসাববিজ্ঞানে চুড়ান্ত হিসাব করার সময় ‘দায়’ সব সময় ডান পাশে বসে।
খুব কষ্ট হয়। যখন ইন্ডেক্স প্লাজা বা সুন্দরি ক্লথের সামনে দুই হাত ভর্তি শপিং ব্যাগ আর কোলে বাচ্চা সহ কোন পুরুষকে দেখি।
“চোখ ফেটে আসে জল,
এমন করিয়া কি মার খাবে সবলের দল।”
ফেসবুকে আমি আদিত্য দার খুব ফ্যান। আদিত্য দা কে দেখতাম বিয়ের আগে কত সুন্দর সুন্দর পোষ্ট দিতো। কিন্তু বিয়ের পরে সব কর্পূরের মত উধাও। যদিও এখন দুই একটি পোষ্ট প্রদান করে তাও সংযত ভাবে। জাতীর এসব মেধা ধ্বংস করতে একটা বিয়েই যথেষ্ট।
বিয়েটা সকল মেয়েরাই আগ্রহ সহকারে ঘটাতে চায়, আর সকল ছেলে তা এড়াতে চায়।
আমি এমন অনেক পুরুষকে দেখেছি যারা বিয়ে ছাড়াই সারাজীবন দিব্যি আনন্দে কাটিয়ে দিচ্ছে।
এক জনকে বিয়ে না করার কারন জানতে চাইলে বলল, “দেখো আমি ভাবতেই পারি না, আমার টাকায় খেয়েপরে কেউ আমাকেই নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবে। তাই ও পথ মাড়াইনি!”
অবশ্য পুরুষের বিয়ের বয়স বলতে কিছু নাই। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সে পুরুষ। ইদানীং অনেকেই বয়স ত্রিশ কিংবা চল্লিশ হলে বিয়ে করছে। বৌ হিসেবে পাচ্ছে আঠার কিংবা বিশ বছরের মেয়ে। ফলে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে অনেকাংশেই সমন্বয়হীনতা দেখা যায়।
জনৈক ভদ্রলোক বিয়ের পরে বাসর ঘরে ডুকছে আর বলছে, হে ঠাকুর! জীবনের প্রথম বাসর রাত। কোন অভিজ্ঞতা নাই। কি যে করি?
তখন ঘোমটা পরা বৌ ঘোমটা ফেলে বলল, “ তুমি শুধু শক্তি চাও। অভিজ্ঞতা আমার আছে।”
সেই লোকটিই বিয়ের পাঁচ বছর নাম করা ডাক্তারের চেম্বারে।
ডাক্তার আমি কি ভাবে বাবা হতে পারি?
ধরুন, আপনি সুন্দরবনে গেলেন বাঘ শিকার করতে। সামনে একটা বাঘ পেয়েও গেলেন। যেই গুলি করতে যাবেন দেখেন সাথে বন্দুক নেই। বন্দুকের বদলে আছে ছাতা। আপনি ছাতাই তাক করলেন বাঘের দিকে এবং বাঘটি মারাও গেলো।
না। এটা অসম্ভব। নিশ্চয়ই পাশ থেকে কেউ গুলি করেছে
জ্বী, এভাবেই আপনি বাবা হতে পারেন।
দেশের জন্মহার কমানোর ব্যাপারে আমরা বেকাররা ব্যাপক ভূমিকা পালন করছি। মেয়েদের বিয়ের কথা বললেই বলে, “ বিয়ের পরে খাওয়াবে কি?” তখন মনে মনে চিন্তা করি মেয়েরা কী শুধু খাওয়ার জন্যই বিয়ে করে?
সব শেষে এটাই বলতে চাই। দুস্ত বিয়ে করস ভালো কথা আরো বিয়ে কর মানা করবো না। কিন্তু দাওয়াত থেকে বঞ্চিত করিস না। জাতী সইতে পারবে না। আমি বিয়ের বিপক্ষে নই। তবে অন্যান্য ছেলেদের মত ৩আমিও বলতে চাই আমি বিয়ে করবো না। আমার সন্তানদেরও বলে যাব, তারাও যেন বিয়ে না করে। তাদের সন্তানদেরও যেন বলে দেয় বিয়া না করার জন্য।