somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেভাবে করবেন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তার নামা কি? কিভাবে করতে হয় আমমোক্তার নামা এবং মোক্তারনামা বাতিলের পদ্ধতি

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কোন ব্যক্তি যৌক্তিক কোন কারনে অন্যকে আইনগতভাবে যে ক্ষমতা অর্পণ করে তাকে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ বা আমমোক্তার বলে। সাধারণত সম্পত্তির ভোগদখল, রক্ষণাবেক্ষণ, কেনাবেচার জন্য বিশ্বস্ত কাউকে এ ক্ষমতা অর্থাৎ ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ বা আমমোক্তার দিয়ে থাকে।

ধরুন আপনি অঢেল সম্পত্তির মালিক। কিন্তু বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য চলে গেছেন। ছেলেমেয়েরাও চাকরি কিংবা বিয়ের সূত্রে আপনার সম্পত্তি থেকে দূরে অবস্থান করে। তাই আপনি ঠিক করলেন বিশ্বস্ত কাউকে জায়গা জমি দেখাশোনার দায়িত্ব দেবেন। কিন্তু কিভাবে দায়িত্ব দিতে হবে তা আপনি জানেন না । এজন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে ওই বিশ্বস্ত ব্যাক্তির ওপর ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ বা মোক্তারনামা করতে হবে। মোক্তারনামা এক ধরনের লিখিত আইনি দলিল। এর মাধ্যমে একজন অন্য আরেকজনকে ক্ষমতা প্রদান করেন। যাকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়, তাকে ‘অ্যাটর্নি’ বা মোক্তার বলা হয়। যিনি ক্ষমতা প্রদান করেন তার পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি বা মোক্তার কাজ করেন।

করণীয়
কোনো দায়িত্ব বা ক্ষমতা অর্পণের জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামা করতে হবে। তা হতে হবে লিখিত। এটি একটি আইনগত দলিল। যাকে মোক্তার নিয়োগ করা হলো তিনি মূল মালিকের পক্ষে কোনো সম্পত্তির দান, বিক্রি, হস্তান্তর, রক্ষণাবেক্ষণ, বন্ধক রাখা, খাজনা ইত্যাদি কাজ করে থাকেন। এতে মোক্তারনামা দলিলে এসব বিষয়ে শর্ত স্পষ্ট করে লেখা থাকতে হবে যে তাঁকে পাওয়ার দেওয়া হলো তিনি কী কী করতে পারবেন কিংবা পারবেন না।

সাধারণত মোক্তারনামা দুই প্রকার। একটি হচ্ছে সাধারণ মোক্তারনামা, যাকে আমমোক্তারনামা বলা হয়। আরেকটি হচ্ছে খাস মোক্তারনামা, যা বিশেষ মোক্তারনামা।
সাধারণত মোক্তারনামা মোক্তারদাতার পক্ষে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়, কিন্তু বিশেষ মোক্তারনামা সম্পাদন করতে হয় নির্দিষ্ট কাজের জন্য। সাধারণত আমমোক্তারনামা যেগুলো জমিজমা হস্তান্তরের সঙ্গে জড়িত নয়, সেগুলো নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নোটারি করে নিলে হয়। কিন্তু জমিজমা-সংক্রান্ত মোক্তারনামা অবশ্যই রেজিস্ট্রি করাতে হবে, না হলে এর আইনগত ভিত্তি থাকে না। রেজিস্ট্রেশন দলিল সম্পাদনের তিন মাসের মধ্যে করতে হবে। কোনো মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনার ক্ষেত্রেও পাওয়ার অ্যাটর্নি নিয়োগ করা যায়। এ ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি লাগবে। দলিলের ধরন বুঝে নির্দিষ্ট টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তা সম্পন্ন করতে হবে। কোন দলিল কত টাকার স্ট্যাম্পে করতে হবে তা জেনে নিতে হবে। বর্তমানে যেকোনো দলিল হস্তান্তর, ক্রয়-বিক্রয়, উন্নয়ন এবং ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে দাতা ও গ্রহীতা—উভয়ের ছবি দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বিদেশে অবস্থান করলে
বিদেশে বসবাস বা অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে চাইলে দূতাবাসের মাধ্যমে দলিল সম্পন্ন ও প্রত্যয়ন করে পাঠাতে হবে। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা সত্যায়িত করাতে হবে।

সতর্কতা

পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রধান যে বিষয়ে তা হচ্ছে, যে ব্যক্তিকে মোক্তার করা হচ্ছে, তিনি কতটা বিশ্বস্ত, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। অনেক সময় দেখা যায়, মোক্তার নিজের নামে কিংবা প্রতারণামূলকভাবে জায়গাজমি হস্তান্তর বা বিক্রি করে দেন। তখন মূল মালিক বিপদে পড়েন। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাও কম হয় না। তাই দলিলের শর্তগুলো স্পষ্ট করে লেখা থাকতে হবে। যাঁকে পাওয়ার দেওয়া হলো তাঁর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখাও মালিকের দায়িত্ব।

মোক্তারনামা বাতিল

যেকোনো সময় সাধারণ মোক্তারনামা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বাতিল বা প্রত্যাহার করা যায়।

মোক্তারনামা বাতিলের পদ্ধতি
ক) মোক্তারনামা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য করা হলে মেয়াদ শেষে বাতিল বলে গন্য হবে;

খ) মোক্তারনামা নির্দিষ্ট কোনো কার্যের জন্য করা হলে ঐকাজ সমাপ্তিতে তা বাতিল বলে গন্য হবে;

গ) যৌথ ক্ষমতার মোক্তারনামার পক্ষদের একজনের মৃত্যুতে তা বাতিল বলে গন্য হবে;

ঘ) মোক্তারনামা দাতা কোনো মোক্তারনামা বাতিল করতে ইচ্ছুক হলে যে রেজিস্ট্রি অফিসে মোক্তারনামা টি তস্দিক করা হয়েছিল সে স্থানের জেলা রেজিস্ট্রারের (ডি.আর) বরবরে মোক্তারনামা রদের জন্য আবেদন করতে হবে । মোক্তারনামার উপর তিনি “রদ করা“ কথাটি লিখে দিবেন এবং সে মোতাবেক রেজিস্টার সংশোধন করবেন । রেজিস্ট্রি অফিসার মোক্তারনামা বাতিলের আবেদন পাবার পর তার জেলার সকল রেজিস্ট্রারিং অফিসে বা অন্য কোনো জেলার সদর অফিসকে বিষয়টি নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন । নোটিশ জারীর ডাক টিকেটের খরচ আবেদন কারী বহন করবেন;

ঙ) তবে স্বার্থের সাথে যুক্ত মোক্তারনামা স্বার্থ পূর্ণ বা পরিত্যক্ত না হওয়া পর্যন্ত বাতিল করা যায় না ।

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×