somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুকিঝায়িত দিবস বা রজনী!

২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোট্ট ছানাটির জন্ম হল, তখনও হাঁটতে শেখেনি, ছানার মায়ের খুব চিন্তা হল! ‘এক বছর তো হয়ে যাচ্ছে তবু হাঁটছে না কেন ছোট্ট ছানাটি?’ ভাবতে লাগলেন ছানার মা! ‘কোন সমস্যা নয় তো!’ নাহ, কোন সমস্যা ছিল না, শুধু ছানাটিকে হাঁটতে শেখার সুযোগই দেয়া হয়নি, ছোট্ট ছোট্ট পা ফেলে হাঁটতে না শিখেই শুধু কোলে কোলে ঘোরাঘুরি! এই এত মানুষের পুরো বাড়িতে প্রথম ছোট্ট ছানা। সেই ছানাকে নিয়ে লেগে যেত হুড়োহুড়ি! কে কোলে নেবে, কার কাছে যাবে! একে দিলে সে নারাজ,ওকে দিলে অন্যকেউ! ছানার মা পড়ে গেলেন ভীষণ বিপত্তিতে। এর মধ্যে ছানাকে হাঁটতে শেখাতে হবে, মায়ের খুব ইচ্ছে ছানার প্রথম জন্মদিনে ছানার টুকটুকে লাল আলতা মাখানো পা নিয়ে ছানা হেঁটে হেঁটে সবাইকে অবাক করে দিক, আর ছানার বাবার শখ হল ছানার পায়ে ছোট্ট নুপুরের রুন ঝুন শোনার! কি করা যায়, কি করা যায়। ছানাকে কোলে নেবার প্রতিযোগীদের দায়িত্ব দেয়া হল ছানাকে হাঁটতে শেখানোর। অনেক আগ্রহ আর আনন্দ নিয়ে তাঁরা উঠে পড়ে লেগে গেলেন ছানাকে হাঁটতে শেখাতে... অবশেষে ঠিক জন্মদিনের আগের দিন, ছানা শিখে ফেলল হাঁটতে শেখা... সে থেকেই শুরু, ছানাটি হাঁটছে, আজ অবধি!

তাঁরপর অনেক গুলো বছর কেটে গেল! যে ছানাকে আগলে রাখা, সেই ছোট্টটি থেকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলা, এপর্যন্ত নিয়ে আসা, যেখান থেকে সেই ছোট্ট ছানাটি মাথা উচু রেখে নিজের অস্তিত্বের জানান দিতে পারে! এমন ভাবে বাঁচতে শেখানো যেভাবে ছানাটি নিজের অভিমত, অভিমান, আত্মসম্মানবোধ নিয়ে বেড়ে ওঠে, পুরো জীবন সেই একই বোধগুলো নিয়ে কাটিয়ে দেয়... যাতে ছানাটিকে কখনো হারতে না হয়, কারও কাছে মাথা নত না করতে হয়! যাতে ছানাটি নিজের মহিমায়, নিজেকে আলোকিত রেখে জীবনের বাকি পথ গুলো কাটিয়ে দিতে পারে, নির্দ্বিধায়, আনন্দে, স্বেচ্ছায়...


উৎসর্গঃ বাবা, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মানুষ। বাবা হলেই তো ভালবাসতে হয়, কিন্তু সত্যিই একজন সত্যিকারের বাবা হয়ে কজন পারে পাগলের মত তাঁর সন্তানকে ভালবাসতে? আমার বাবা, যিনি মানুষ হিসেবে শক্তিশালী, নিজের মননে, মেধায়! তবু খুব খুব বেশী দুর্বল শুধু একটি জায়গায় এসে! নিজে কারও কাছে হারবেন না বলে পণ করেন, সেই মানুষটি মেয়ের রাগ ভাঙ্গাতে গলে যান, গলায় দলা পাকায় কষ্টগুলো, গলা ভারী হয়ে আসে... মেয়েকে দূরে রাখতে এসে! বাবা, জানি, তোমার সমস্ত দুর্বলতা জুড়ে আমি আছি, তোমার সমস্ত পৃথিবী জুড়ে আমি আছি, এটাও জেনো, আমার পুরোটা জুড়ে তুমিও আছো, আমি তো তোমারই মেয়ে।
মা, আমার জীবনের সবচে আপন, কাছের আর নির্ভেজাল বন্ধু। যিনি নিজেকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে আমাকে গড়েছেন। যার প্রতিটা আত্মত্যাগে ছিল আমার জন্য বাঁধানো কিছু সুখ! মা, তোমাকে ছাড়া জীবনে কোনদিন একা থাকতে হতে পারে, এটা চিন্তা করলেই আমার সমস্ত অস্তিত্ব বিদ্রোহ শুরু করে, চিৎকার করে ফুপিয়ে ওঠে কান্না গুলো। বাবা যেমন আমার পুরোটা জুড়ে আছে, ঠিক তেমন তুমি আমার পুরোটাই।

আমি আজ এই যে আমি, তা শুধু তোমাদের জন্য, আজকের এই দিনটির জন্য। আমি কৃতজ্ঞ তোমাদের কাছে, এই দিনটির কাছে। আর প্রতিবারের মতন এই যে এবারও তোমাদের প্রথম হবার নির্মল প্রতিযোগিতা, কে আগে উইশ করবে আমাকে, কে ফার্স্ট হবে, কি মিষ্টি একটা খেলা, জেনো শুধু এটার জন্যই আমি চাইবো আমি বাঁচি হাজার হাজার বছর, তোমাদের নিয়ে, যাতে প্রতিবার তোমরা খুনসুটি করতে পারো আমাকে আগে আগে উইশ করে ফেলার জন্য! আর আমি সেই মিষ্টি খুনসুটি দেখে মুগ্ধ হতে থাকি, আজীবন!

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:৩৪
৬৪টি মন্তব্য ৬৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×