দুনিয়াতে আমরা কেহই অমর নই। আমাদের একদিন এই স্বাদের দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতেই হবে! চাইলেও কেহ আমরা বেঁচে থাকতে পারবো না। আমাদের দাদা, দাদী সহ আশে পাশে এমন সব মৃত্যু আমরা প্রায় সবাই দেখেছি। বাংলাদেশের মানুষ হিসাবে মৃত্যুর অভিজ্ঞতা আমাদের আরো বেশি কারন এই দেশে অকাল মৃত্যু অনেক বেশি। বাসা থেকে বের হয়ে শত শত মানুষ আর বাসায় ফিরতে পারে না, অনেকে লাশ হয়ে পড়ে কিংবা কারো খবর আর সারা জীবনেও পাওয়া যায় না! ফলে আমাদের দুনিয়ার অন্যান্য দেশের মানুষের তুলনার আরো বেশি সতর্ক থেকে জীবন যাপন করতে হয়, বেঁচে থাকাটাই এখন আমাদের দেশের জন্য একটা বড় ব্যাপার। যাই হোক, এই সব কথা নুতন নয় আপনারাও জানেন আমিও জানি।
আজ আমি আপনাদের সামান্য সময় নিয়ে যা বলবো, তা হচ্ছে প্রিয় ভাইবোনেরা, আপনাদের যাদের বাবা মা বেঁচে আছেন তাদের খবরটা একটু বেশি বেশি নিয়েন। উনারাও একদিন এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিবেন এবং নিয়ম মোতাবেক আপনার আগেই। আজ আপনি যে অবস্থানে আছেন, যা কিছু করছেন এটা উনাদের জন্যই করছেন। বাংলাদেশে বর্তমান এমন কোন জেনারেশন নেই যে বলতে পারবে, যাদের মানুষ করার পেছনে বাবা মায়ের কষ্টকর অধ্যায় নেই। আমি নিশ্চিত আপনাকে মানুষ করতে, আপনার বাবা মাকে অনেক বেলা হয়ত না খেয়ে থাকতে হয়েছে! এর চেয়ে আর দুঃখজনক কি হতে পারে!
আজ আপনার সব হয়েছে বা হবে, আপনি নিজে বিয়ে করেছেন, আপনার সুন্দর স্ত্রী আছে, সুন্দর সন্তানেরা আছে, বড় চাকুরী বা ব্যবসা করেন, আরো হবে সব কিছু। দয়া করে বাবা মায়ের খবরটা নিয়েন, মাসে মাসে একটা নিদিষ্ট টাকা তাদের জন্য পাঠাবেন, আপনার কম পড়বে না! মাঝারি মানের একটা হোটেলে না হয় এক বেলা খাবেন না, দুইহাজার টাকা বেঁচে যাবে, সেই টাকাই উনাদের পাঠিয়ে দিয়েন।
অনেক স্ত্রীরাই বাবা মা এবং আপনার মধ্যে একটা দুরত্ব/দেয়াল তৈরী করে দেন, প্লিজ বিবেক বোধ জাগান, দোয়াল ভাঙ্গুন, স্ত্রীকে স্ত্রী জায়গায় রাখুন বাবা মাকে তাদের পাপ্য মর্যদা দিন। বাবা মাকে টাকা দিতে কিংবা সেবা করতে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে দিতে/করতে হয় না। স্ত্রীকে বোঝাতে চেষ্টা করুন, একদিন তিনিও আর সুন্দরী থাকবেন না, চামড়া কুচকে যাবে, তিনিও একাকী হয়ে পড়বেন, তিনিও মারা যাবেন, এতেও কাজ না হলে আপনি আপনার পথেই থাকুন। একটু ভেবে দেখুন এই যে, আপনি প্রতিটা বেলা ভাল খাচ্ছেন, আপনার বৃদ্ধ বাবা মা কি খাচ্ছেন!
আসলে, এই বিষয়ে কিছু বলার দেখি না, আমি জানি আপনারা আমার চেয়ে আরো আরো বেশি বুঝেন। তবুও যখন গ্রামে/শহরে বৃদ্ধ মানুষ গুলোর শুকানো মুখ দেখি, তখন প্রশ্ন উঠে যায়! আপনি আমি আমাদের বাবা মাদের যঠিক যত্ন নিচ্ছি না বলেই তো উনার এমন মলিন হয়ে পড়ছেন!
আবারো বলি, মা বাবাকে ভুলে যাবেন না, উনাদের হক/সেবা আদায় করুন সবার আগে, উৎসবে উনাদের উপহার ও বাড়তি টাকা দিন, উনারা নিশ্চিন্তে দিন কাটাক, জীবনের শেষ কয়েকটা দিন অন্তত!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:১৮