somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবুলের স্বর্গযাত্রা (১৮+ খাইস্টা পোস্ট)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিসক্লেইমারঃ সমস্ত ঘটনা এবং চরিত্র কাল্পনিক, জীবিত কিংবা মৃত কাহারো সহিত কোন মিল পাওয়া গেলে উহা অনভিপ্রেত কাকতাল মাত্র, এর জন্য কেহ দায়ী থাকিবে না

মুখফোঁড় এর মত লেখতে গিয়া সাধু চলিত কথ্য মিশায়া পুরা গ্যারায়া দিছি (মুখফোঁড় এর মত লেখা আমার পক্ষে সম্ভব না), সেইসাথে লেখাটা একটু বেশিই ডিস্টার্বিং এবং খাইস্টা হয়া গেছে, পইড়েন না, পড়লে নিজ দায়িত্বে পইড়েন।



আবুল সাহেব মৃত্যুর পরে দেখিলেন উনার সামনে দুইটা লাইন, স্বর্গের আর নরকের। উনি বিশাল ভাব লইয়া গটগট কইরা স্বর্গের দরজা দিয়া ঢুকতে নিলেন।

স্বর্গের প্রহরী উনাকে গেটে আটকাইয়া ডেটাবেজ চেক কইরা কহিল, তোমার নাম নাই লিস্টে, তোমারে ঢুকতে দেয়া যাইবো না।

আবুল সাহেব বত্রিশ পাটি দন্ত বিকশিত করিয়া বললেন, কি যে বলেন না আপনারা, আমার নাম থাকবে না! ভাল করে দেখেন, ... দুই দুইটা মিনিস্ট্রি চালায়া আসলাম ...

প্রহরী গম্ভীর গলায় বলিল, তুমি পলিটিশিয়ান? তাইলে তুমি নরকে গিয়া খোঁজ নাও। দেখ নরকের লিস্টে হয়তো তোমার নাম আছে।

আবুল সাহেব এইবার পাট নিয়া কহিলেন, আমি নরকে যাব? নেভার! আমি দৌড়ে ফার্স্ট হয়া মিনিস্টার হইছি ...

গেলি, হতচ্ছাড়া.... বলিয়া স্বর্গের প্রহরী লাঠি লইয়া আবুলকে নরকের পানে খ্যাদাইয়া লইয়া গেল।





জীবনের সকল পাপ কাজের কথা স্মরণ কইরা চুল ছিঁড়িতে ছিঁড়িতে আবুল সাহেব নরকের গেটে আইসা খাড়াইলেন।

তেনার নাকে নরকের তীব্র পুঁতিগন্ধ আসিয়া হানিল।

নরকের প্রহরী আবুলকে দেখিয়া এটিএম শামসুজ্জামান স্টাইলে হাসিয়া কহিল, আস আবুল মিয়া, তোমারেই খুঁজতেছি ম্যালাদিন ধইরা!!! আইজকা পাইছি, বানামু তোমারে।

আবুল সাহেব ক্ষীণ গলায় কহিলেন, লিস্ট চেক করবেন না?

প্রহরী কয়, লিস্ট দিয়া কি হইবো? কথা বাড়াইয়ো না, সোজা নরকে ঢুইকা পড়, পরে আইসা লিস্টে সাইন কইরা যাইও। তোমারে আইজকা সাইজ করুম।

আবুল সাহেব শেষ চেষ্টা হিসেবে ঘাড়ত্যাড়ামী করিয়া কহিলেন, সাইন না কইরা ঢুকুম না।

প্রহরী চোখ লাল কইরা খাতা খুলিয়া কহিল, খাড়া, তোরে সাইন করাইয়া লই একবার।



মিনিটখানেক পরে নরকের প্রহরী লিস্ট চেক করিয়া মাথা চুলকায়া কয়, তোমার নাম তো নাই লিস্টে! খাড়াও তো কম্পিউটারে দেখি একটু।



আবুল মিয়া বিশাল পাট নিয়া কহিলেন, আপনারা আসলে কোন কাজেরই না, আমাকে দেখেন, দুই দুইটা মিনিস্ট্রি চালায়া আসলাম...

প্রহরী বিরক্ত মুখে কহিল, ব্যাটা আবুল, দেখতাছস না ডেটাবেজে চেক করতাছি...

মিনিটখানেক পরে প্রহরী বিড়বিড় করিয়া কহিল, ডেটাবেজে গন্ডগোল নাকি? ঢুকতেছে না ক্যান?

সাথে সাথে আবুল সাহেবের মুখ দিয়া কথার তুবড়ি ছুটিল।

পাইছেন কি আপনেরা? স্বর্গেও ঢুকতে দিবেন না, নরকেও দিবেন না, আমি তাইলে কই থাকুম, ফুটপাতে? না, না, এসব মেনে নেয়া যাবে না। আমি চললাম ঈশ্বরের কাছে। আপনাদের নামে কমপ্লেইন করতে হবে।



কমপ্লেইনের কথা শুইনা প্রহরী ভড়কাইয়া গিয়া কহিল, খাড়াও, মনে হইতেছে সফটওয়্যারে প্রবলেম, ডেটাবেজটা চেক কইরা দেখি, অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাসওয়ার্ডটা যেন কি ছিল... প্রহরী পাসওয়ার্ড মনে করার চেষ্টা করিতে লাগিল।

অ্যাডমিন শব্দটা কানে পৌঁছিবামাত্র আবুল সাহেব গড় গড় করিয়া বলিতে লাগিলেন, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন? অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কেমনে করতে হয়, আমার কাছ থেকে শিখেন আপনারা... দুই দুইটা মিনিষ্ট্রি চালাইয়া আসলাম... দৌড়ে ফার্স্ট হইলাম, আর সেই আমার নামই আসে নাই! কমপ্লেইন আমি করুমই। আই এম এ কমপ্লেইন বয়!





এইদিকে চেঁচামেচি শুনিয়া উৎসুক জনতা ভিড় জমাইলো তামশা দেখিতে। দুই একটা মিডিয়ার ক্যামেরাও দেখা গেল লাইভ কাভারেজের পাঁয়তারা করিতেছে।

এতলোক সমাগম ও মিডিয়ার সাংবাদিক দেখিয়া নরকের প্রহরী নিচু গলায় বলল, শুনো আবুল মিয়া, কমপ্লেইন কইরা কি ফায়দা হইবো... তারচেয়ে আমরা একটা মিটমাটে আসি...

আবুল সাহেব ক্যামেরায় পোজ দেওয়ার জন্য চুল ঠিক করিতে করিতে বলিলেন, এতক্ষণে লাইনে আইছো মামা। শুনি কি মিটমাট?

প্রহরী গলার স্বর খাদে নামাইয়া বলিল, এক কাম করো, তোমারে আবার দুনিয়াতে ফেরত পাঠাইতেছি, চুপচাপ ভাইগা যাও।

আবুল সাহেব চিন্তা করিয়া দেখিলেন, অফার মন্দ নহে। আগের বার পদ্মা সেতু নাহয় মিস হয়া গেছে, কিন্তু এইবার, নতুন অপটিক্যাল ফাইবারের টেন্ডার খালি একটা বাগাইতে পারলে হয় এইবার, আর মিস করা যাইবো না...



আবুল সাহেব এমন ভাব দেখাইলেন যেন, নরক উনার অতি প্রিয় স্থান, দেখিতে না পারিয়া উনার হৃদয় ভগ্ন হইয়াছে।

উনি মুখ ফিরাইয়া "এইবারের মত ছাইড়া দিলাম" লুক দিয়া কহিলেন, পরের বার কিন্তু আর এইসব চলবে না বলে দিচ্ছি।

প্রহরী শুধু বলিল, সেইটা পরে দেখা যাবে। তুমি যাও তো আগে।

আবুল সাহবে কহিলেন, কিন্তু আমারে কেমনে দুনিয়াতে ফেরত পাঠাইবেন?

প্রহরী মুচকি হাসিয়া কহিল, চোখ বন্ধ কইরা যে কোন একটা গানের প্রথম কয়েক লাইন গাও, তারপরে চোখ খুললেই দেখবা তুমি দুনিয়াতে আছ।

বিজয়ীর হাসি দিয়া আবুল সাহেব খুশিমনে চোখ বন্ধ করিয়া উনার অতি প্রিয় সঙ্গীত গাহিয়া উঠিলেন...

"সুঁই হয়ে ঘরে ঢুকে ফাল হয়েছে, আআআবুল মামা...."





তিন সেকেন্ড পরেই তীব্র কটু গন্ধ উনার নাকে লাগিল। চোখ খুলিয়া তিনি রাগের চোটে চিৎকার করিয়া উঠিলেন।

কিন্তু বিধিবাম!

উনার গলা দিয়া কক কক ছাড়া আরো কোন শব্দই বাহির হইলো না। অবাক হইয়া উনি খেয়াল করিলেন, সিস্টেমে সমস্যার কারণে উনি এইবার মানুষের বদলে মুরগী হইয়া জন্মাইয়াছেন।

তাও আবার ফার্মের মুরগী। তীব্র কটু গন্ধ আর কিছুই নহে, মুরগীর বিষ্ঠার গন্ধ।



আবুল সাহেব সাহেব ঘটনা বুইঝা কপাল চাপড়াইবার ব্যর্থ চেষ্টা করিলেন আর ভাবিলেন, ব্যাটা মোরগ বানাইলেও তো পারতি, বানাইলি মুরগী। আর মুরগীই যখন বানাবি, দেশী মুরগী বানাইতি, তা না, এক্কেবারে ফার্মের মুরগী!!!

তিনি মনে মনে বারংবার নরকের প্রহরীর গুষ্টির সহিত সঙ্গম করিবার ইচ্ছা পোষণ করিতে লাগিলেন।





এমন সময় উনার পাশের মুরগীটা উনারে কক কক করিয়া বলিল, হায় হায়, তুই এখনো ডিম পাড়োস নাই, তাড়াতাড়ি ডিম পার, ফার্মের মালিক অলরেডি ডিম কালেক্ট করা শুরু কইরা দিছে আজকে।

আবুল সাহেব রাগের চোটে কহিলেন, ডিম পারুম না, আমার ইচ্ছা! আমার ডিম আমি পারুম, যখন ইচ্ছা তখন পারুম, কার বাপের কি রে!

পাশের মুরগীটা তখন মুখ ফিরায়া কহিল, ডিম না পারলে তোরে জবাই কইরা রোস্ট বানায়া খাবে ফার্মের মালিক। রোস্ট হইতে চাইলে পারিস না। কার বাপের কি!

আবুল সাহেব ঢোক গিলিয়া কহিলেন, কস্কি মমিন!!!



আবুল সাহেব দেখিলেন, ফার্মের মালিক তাহার পাশের খাঁচা অব্দি আসিয়া পড়িয়াছে।

জান বাঁচানো ফরজ, তাই আবুল সাহেব তার পাশের মুরগীটাকে হাতে পায়ে ধরিয়া কহিলেন, দোস্ত, ডিম যেন কেমনে পারে? একটু ক তো দোস্ত, ভুইলা গেছি, তাড়াতাড়ি, আমি রোস্ট হইতে চাই না।

পাশের মুরগীটা একটু অবাক হইয়া পা ছড়াইয়া বলিল, এইভাবে কোঁৎ দে।

আবুল সাহেব কোঁৎ দিয়া বলিলেন, এইভাবে?

পাশের মুরগীটা বলিল, আরো জোরে... আরো জোরে...

আবুল সাহেব আরো জোরে কোঁৎ দিয়া বলিলেন, ডিম আসে না ক্যান?

পাশের মুরগীটা বলিল, ব্যাটা আবুল কোনহানকার, আরো জোরে দে, ডিম আসলো বইলা...

ততক্ষণে ফার্মের মালিক আবুল সাহেবের সামনে আইসা পড়ছে।

আবুল সাহেব শেষ চেষ্টা হিসাবে, চোখ বন্ধ কইরা দাঁতে দাঁত চাপিয়া সর্বশক্তিতে কোঁৎ দিলেন।

হলো না...

আবার দিলেন...

হলো না...

আবার....

আবার...

...





এক সময় প্রবল ঝাঁকুনিতে আবুল সাহেবের ঘুমটা ভেঙে গেল।

উনার মিসেস বলছেন, অ্যাই তুমি তাড়াতাড়ি উঠ তো, পুরা বিছানা তো হাইগা ভরায়া ফেলছ!!!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৩:০৫
৩৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×