somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাওয়াহিরি বার্তার পোস্ট মর্টেম ও ক্ষমতাসীনদের স্বরূপ উম্মোচন

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিডিনিউজ২৪ এ প্রকাশিত চরম বিনোদনমূলক নিউজ দেখে ২৯শে ডিসেম্বর পর এই প্রথম প্রান খুলে হাসলাম। আমি খুব বিশ্বাস করতে চাই বার্তাটি আসলেই জাওয়াহিরির। কিন্তু যে বা যারা এটি বানিয়েছে এমনকি সয়ং জাওয়াহিরিও যদি বানিয়ে থাকে তাহলে খুব সহজেই চোখে পড়ে যে বাংলাদেশের বর্তমান স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের গতি প্রকৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারনা নেই। তাই কিছু পয়েন্ট নিয়ে আমি একটু আলোচনা করার চেস্টা করছি। যেমন

১. জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য প্রধানত দোষারূপ করা হয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোকে। যা সত্য নয়। বরং বাস্তবে আমরা দেখি পশ্চিমা দেশগুলো ক্রমাগত শেখ হাসিনাকে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য।

২. এ মুহুর্তে বাংলাদেশের একমাত্র এবং প্রধান শত্রু রাস্ট্র হচ্ছে ভারত যাদের ইশারায় ও প্রত্যক্ষ্য মদতে শেখ হাসিনা সরকার প্রতিদিন বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও ভারতের প্রতি বিশেষ কোন বার্তা নেই জাওয়াহিরির পক্ষ থেকে।

৩. বাংলাদেশে এই যে নিরীহ নিরস্ত্র মানুষ হত্যা চলছে যৌথবাহিনী নামক এক জল্লাদ গেস্টাপো বা রক্ষী বাহীনির দ্বারা। ভিডিও বার্তায় এসম্পর্কে কোন বক্তব্য নেই জাওয়াহিরি সাহেবের বক্তব্যে।

৪. বাংলাদেশে সরকার ইসলামিক দলই শুধু নয় জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধেও একধরনের গনহত্যা চালাচ্ছে কথাটা যেমন সত্য তার চেয়েও কঠিন সত্য হচ্ছে পারশ্ববর্তীদেশ মিয়ানমারে আরো কঠিন নির্মমভাবে মুসলমানদের নিঃশ্বেষ করার জন্য মাইনরিটি ক্লিনজিং চলছে অথচ ঐ ব্যাপারে জাওয়াহিরি সাহেবের কোন বক্তব্য আজো পাওয়া যায়নি।

৫. যেহেতু তিনি বাংলাদেশের ভালো! চান এজন্য বাংলাদেশের জিহাদের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ বিরুধী চক্রের প্রধান কিংবা বাংলাদেশে ইসলামিক নেতাদের হত্যা করার নির্দেশ দাতা ইন্ডিয়াতে তারা কি ধরনের অপারেশন চালাবেন সে সম্পর্কে কিন্তু কিছু বলেন নি?

৬. ভিডিও বার্তাটি নাকি বিডি নিউজ ২৪ এর হাতে প্রথম এসেছে। বাংলাদেশে কি পত্র পত্রিকার এতই অভাব। আর জিহাদের ডাক দিবে সংগ্রাম, নয়া দিগন্ত, দিনকাল, সোনারবাংলা ইত্যাদির মাধ্যমে কিন্তু আলকায়েদার জেহাদের ডাকে মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে কিনা বিডিনিউজ২৪। বিষয়টা আমার মাথার উপর দিয়া যাচ্ছে।

৭. সর্বোপরি বাংলাদেশকে নিয়ে কি পরিকল্পনা তিনি এঁটেছেন তাও তিনি জানান নি। যদ্যপি আপনি কঠিন ভাষায় আমারিকাকে আ্যাটাক করে কিছু বলবেননা কিংবা আক্রমনের জন্য আরো লজিক্যাল কিছু বর্ননা করবেন না তদ্যপি আমরিকা বাংলাদেশে এসে পয়সা নষ্ট করবে না।

মোটা দাগের যে কয়টা ভুল উনি বা উনারা করেছেন তা থেকে স্পস্টতই বোঝা যাচ্ছে এইটাতে ঘাপলা আছে। কিংবা বাংলাদেশের ঘোলাটে পরিস্থিতিকে আরো একটু ঘোলা করে বিরোধী দল শুন্য কিংবা বিরোধী দলকে বিপদে ফেলার পাঁয়তারা করছে। তাই জাওয়াহিরির বক্তব্য এখনো পর্যন্ত আমার কাছে একটা ফালতু বিষয়। কারন তার এই বক্তব্যে আমেরিকাকে সরাসরি কোন উস্কানী দেয়া হয়নি বরং খুব পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে পুরো বক্তব্যটিই বাংলাদেশের শোষক গোষ্টির ফেভারে গিয়েছে। জাওয়াহিরি "ধর্ম নিরপেক্ষ" শব্দ দুটিকে এম্ফেসাইজ করে বক্তব্য দেওয়াটা আমাকে বেশ ভাবিত করেছে। কারন জাওয়াহিরির কোন বক্তব্যে ধর্ম নিরপেক্ষ গোষ্টিকে এতো প্রাধান্য কিংবা শব্দটাকে এত গুরুত্ব দেয়া হয়নি। কারন তাদের চোখে হয় তুমি মুসলমান না হয় কাফির কিংবা কাফিরের বন্ধু। অথচ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শব্দটা একটু ফেভারিটিজমের পর্যায়ে চলে গেলো। আওয়ামীলীগ বা ধর্ম নিরপেক্ষ গোষ্টিকে আল কায়েদা তার শত্রু ঘোষনা করায় কার লাভ কার ক্ষতি সেটা আমরা বুঝি।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে বা যারা এটা বানিয়েছে আবারো বলছি এমনকি জাওয়াহিরি নিজেও যদি বানিয়ে থাকেন তাহলে বলতে হবে যে উদ্দেশ্যে এটা বানিয়েছেন উদ্দেশ্য পুরাপুরি সাধন হয়নি। কারন আমেরিকা অলরেডি এটা নিয়ে গবেষনা করে এটা যে ফেইক বা এটা যে কোন হুমকি নয় বুঝতে পেরেছে। এবং তাই হয়তো এটা নিয়ে আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমেও সাড়া শব্দ নেই।

বার্তার নিগুঢ় উদ্দেশ্য বিচারে এটা এমন একটি বার্তা যাকে বলা যায় "সাপও মরবে লাঠিও ভাংবে না"। কিভাবে? আমেরিকা-বৃটেনকে এই বার্তার মাধ্যমে বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমন যুদ্ধের সরাসরি উস্কানী নেই। বরং ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তি নিয়ে মাথা ব্যাথা প্রকাশ। অর্থাৎ এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে যে বা যারা এটি বানিয়েছে তাডের উদ্দেশ্য ছিলো এমন বার্তা পাঠাতে হবে যেটা দেখে আমেরিকা আসবে না কিন্তু আওয়ামীলীগকে সহযোগীতা করবে। কারন আমরেকিা বাংলাদেশে আসলে আওয়ামীদের কোন লাভ নেই বরং লাত্থি মেরে সবার আগে ক্ষমতাচ্যুত করবে।

তবে আমি এই ভিডিও বার্তা বানানোর পেছনে ৩ টি পক্ষকে সন্দেহ করেছিলাম। সেগুলো হলো।
১. জাওয়াহিরি বা আল কায়েদা
২. আমেরিকা বা পশ্চিমা শক্তি
৩. আওয়ামী বা ইন্ডিয়ান গুপ্তচরেরা

উপরের আলোচনা থেকে প্রথমেই আমেরিকা কে বাদ দিচ্ছি কারন নির্বাচন ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কথা বিবেচনা করলে আমেরিকা সহ পশ্চিমা শক্তি হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপিসহ আওয়ামীলীগ কে নিয়েই একটি ইনক্লুসিভ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা দেখতে চায়।

আল কায়েদাকে বাদ দিতে চাই কারন তারা এখনো পর্যন্ত কাস্মীর ও মিয়ানমার সহ দক্ষিন এশিয়া ও এই পাশের বিষয় নিয়ে ওদের কোন ইন্টারেস্ট দেখা যায়নি ইতোপূর্বে। তাছাড়া ভৌগলিক ও সাপ্লাই লাইন চিন্তা করলে আল কায়েদার জন্য এ দিকটা মোটেও অনুকূল নয়, বিশেষ করে বাংলাদেশ।

আওয়ামীলীগ ও ইন্ডিয়াই থাকলো বাকি। এদের দ্বারা এটা করার খুবই সম্ভাবনা কারন বিগত বেশ কিছুদিন যাবত তারা বাংলদেশে আলকায়েদা, জঙ্গী ইত্যাদি বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কিছুতেই বাংলাদেশে আল কায়েদার টিকিটি পাওয়া যাচ্ছিলোনা। কারন যেসব কথিত জংগী বাংলাদেশে পটকা ফুটিয়েছিলো, কর্নেল গুলজাররা তাদের নাকানী চুবানী খাইয়ে ১৪ শিকের ভেতর ঢুকিয়ে রেখেছিলো তাই আওয়ামী ফেভারিট জংগিরা আজ আর দেশে নেই। তো এখন বাংলাদেশে জংগী না থাকায় বিগত ৭/৮ বছর ধরে কোন চিঠি দাঙ্গা হাঙ্গামা কিংবা হুমকি না দেয়াতে এখন বিদেশী জংগী এনে হুমকি দিয়ে ৫ টা বছর ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করার পন্থা বের করার একটা উদ্দেশ্যে এটি তৈরি হতে পারে।

এখন কথা হচ্ছে এই ভিডিও বার্তাকে সুযোগে নিয়ে দু একটা ঘটনা ঘটতে পারে বাংলাদেশে। কারন দেশে কয়েক হাজার ওয়েল ট্রেইন্ড ইন্ডিয়ান গুপ্তচর ও কমান্ডো আছে এটা বাংলাদেশের ডিজিএফআই, এনএসআই, আমেরিকা, বৃটেনের দূতাবাসগুলোও অবগত আছে। তাই সবারই ধারনা কিছু ঘটনা ঘটবে কিন্তু অতীতে আওয়ামী সরকারের সময় যেমন করে রমনা, উদীচি বোমা হামলা হয়েছে কিন্তু অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বািরে থেকে গেছে এবারেও ঘটনা ঘটবে কিন্তু কাউকে ধরা হবে না।

তবে সত্যি সত্যি যদি জংগিদের কোন পাত্তা আবারো মিলে বাংলাদেশে তাহলে এই হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপি মিলেই অতীতের মতো কর্নেল গুলজারদের নিয়ে বাংলাদেশ জংগী মুক্ত করবে। কর্নেল গুলজারদের হত্যা করা হলেও তাদের চেতনা বেঁচে আছে লক্ষ গুলজারদের মধ্যে। তাই আবারো বলছি যারাই আল কায়দা আগুন নিয়ে খেলছেন তারা এবং তাদের বন্ধু সহ আল কায়েদা টাল কায়েদাকে কাঁটা তারের ওপারে পাঠিয়ে দেয়া হবে যেখান থেকে ট্রেইনড হয়ে আসছে।





সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৬
২০টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×