somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এয়ারপোর্ট নামা ও দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের আত্নঘাতি অনুভূতি সন্ত্রাস

২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আহমেদ শাহাব

একটি বিমানবন্দর একটি দেশ বা একটি অঞ্চলের প্রবেশদ্বার যে কারণে সব দেশেই এর নামকরণ ব্যাপারটি সবিশেষ গুরুত্ব পায়।পৃথিবীর বিখ্যাত সব এয়ারপোর্টের নাম বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় প্রধানতঃ দেশের বা অঞ্চলের ঐতিহাসিক বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অথবা স্থানের নাম সিংহ ভাগ এয়ারপোর্টের নামকরণে বিবেচনা করা হয়েছে।ব্যক্তিকেন্দ্রিক নামগুলিতে চোখ বোলালে ভেসে ওঠে জগদ্বিখ্যাত রাষ্ট্র নায়ক সমর নায়ক দার্শনিক লেখক চিত্রকর সঙ্গীতজ্ঞ নাবিক বিজ্ঞানী সমাজ সেবক পর্যটক আবিষ্কারক ব্যবসায়ী বিচারক খেলোয়াড় পন্ডিত ইত্যাদি বিচিত্র পদ পদবীর মানুষের নাম যাদের অনেকেরই অবদান দেশ ও কালের দেয়াল দিয়ে সীমাবদ্ধ করা যায়না।এইসব ভুবনজয়ী প্রতিভার নামাংকিত এয়ারপোর্টে পা দিয়েই যেন আমরা একটি ইতিহাসকে স্পর্শ করি সেসাথে একজন মহান ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎ লাভের রোমাঞ্চ অনুভব করি।যেমন জে এফ কে’র নাম শুনলেই আমাদের মাথায় নিউইয়র্কের নামটি এসে যায় সেসাথে অবলীলায় এসে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেই জনপ্রিয়তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির কথা যার হত্যাকান্ড ইতিহাসের এক অমীমাংসিত বিষয় হয়েই রইলো। বিশ্ববিজয়ী আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের নামে ইউরোপে দুই দুইটি এয়ার পোর্টের নাম করণ করা হয়েছে একটি গ্রীসের কাবালায় এবং আরেকটি মেসিডোনিয়ার স্কোপিতে।হত্যা লুণ্ঠন আর দুর্ধর্ষতায় কুখ্যাত ভারতীয় মোগল সাম্রাজ্যের আদি পুরুষ চেঙ্গিসখান ইতিহাসে যতই নিন্দিত হোননা কেন মঙ্গোলিয়া তাকে তাদের জাতীয় বীরেরই মর্যাদা দেয় তাই উলানবাটোরে অবস্থিত তাদের আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টটির নাম করা হয়েছে তার নামে।গ্রীস সভ্যতার বাতিঘর তাই তাদের অনেক এয়ারপোর্টের নামকরণে রয়েছে তাদের জগদ্বিখ্যাত মণীষীদের নাম।দার্শনিক এরিষ্টটল এর নামে রাখা হয়েছে কাস্তোরিয়ায় অবস্থিত এয়ারপোর্টের নাম তেমনি কসএ অবস্থিত এয়ারপোর্টের নামকরণ করা হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হিপোক্রেটিসের নামে ।সভ্যতার আরেক তীর্থ রোম।রোমের নাবিক অভিযাত্রী পর্যটক বিজ্ঞানী চিত্রকরদের নাম পৃথিবী বিখ্যাত তাই ইতালীর বিমান বন্দরগুলির নামকরণেও এর আলো বিচ্যুরিত হয়েছে।বিখ্যাত নাবিক অভিযাত্রী এমেরিগো ভেসপুসি যার নামে আমেরিকার নামকরণ হয়েছে তার স্মরণে ইতালীর ফ্লোরেন্স এয়ারপোর্টের নামকরন করা হয়েছে।বেলোগনায় অবস্থিত এয়ারপোর্টের নামের সাথে জড়িয়ে আছে বিখ্যাত বিজ্ঞানী মার্কোনীর নাম রেডিও আবিষ্কারের মাধ্যমে পৃথিবীকে ছোট করে আনার কাজ যার হাত দিয়ে শুরু।বারজেমোতে অবস্থিত এয়ারপোর্টের নাম দেয়া হয়েছে অমর চিত্রশিল্পী মাইকেলেঞ্জেলোর নামে। রোমে অবস্থিত এয়ারপোর্টের নাম লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির এবং ভেনিসে অবস্থিত এয়ারপোর্টের নাম পর্যটক মার্কোপোলোর নামে রাখা হয়েছে।সূর্য নয় পৃথিবী ঘোরে বাইবেলের প্রতিষ্টিত তথ্যের বিপরীতে যুগান্তকারী আবিষ্কার করে যিনি চার্চের তরফ থেকে মৃত্যুদন্ডের আদেশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন সেই অমর জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর নামে হয়েছে পিসায় অবস্থিত গ্যালিলিও গ্যালিলি এয়ারপোর্ট।ক্লাসিকেল যুগের কম্পোজার উলফগ্যাং এমেদিউস মোজার্ট এর নামে অষ্ট্রিয়া তাদের সালসবার্গস্থিত এয়ারপোর্টের নামকরণ করেছে।মরক্কো তাঞ্জিয়ারে অবস্থিত এয়ারপোর্টের নামকরণ করেছে তাদের দেশের বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতার নামে।প্রথম এভারেষ্ট বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে আমাদের ঘরের পাশের দেশ নেপাল তাদের একটি এয়ারপোর্টের নাম দিয়েছে তেনজিং হিলারী এয়ারপোর্ট। ইজরাইল রাষ্ট্রের স্বপ্নদষ্টা ও প্রতিষ্টাতা ডেভিড বেনগুরিয়ান এর নামে হয়েছে তেল আবিবের বেনগুরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট আবার ইজরাইলের বিরুদ্ধেই ফিলিস্তিন জাতীর মুক্তি সংগ্রামের নায়ক ইয়াসির আরাফাতের নামে রাফায় করা হয়েছে ইয়াসির আরাফাত ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট।মানব সেবার মহিয়সী নারী মাদার তেরেসার কর্মকান্ড যদিও কলকাতা কেন্দ্রিক কিন্তু আলবেনিয়া তার এই আলোকিত নারীর নামকে স্মরণীয় করে রেখেছে তিরানায় অবস্থিত ‘তিরানা ইন্টারন্যাশনেল এয়ারপোর্ট নানে তেরেসা’ নামের মাধ্যমে।আধুনিক তুরষ্কের পিতা কামাল আতাতুর্কের নামে রয়েছে ইস্তাম্বুলে অবস্থিত এয়ারপোর্টের নাম তেমনি সে দেশের প্রথম নারী যুদ্ধ বিমান পাইলট সাবিহা গোখচেনের নামে এই ইস্তাম্বুলেই আরেকটি এয়ারপোর্টের নামকরণ করা হয়েছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি নাম ফলকিত এয়ারপোর্টের বেশীর ভাগই করা হয়েছে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের নামে।আব্রাহাম লিংকন জন এফ কেনেডি রোনাল্ড রেগান জেরাল্ড ফোর্ড জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রমূখ জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ছাড়াও অনেক সিনেটর বা কংগ্রেসম্যানের নামেও এয়ারপোর্টের নাম হয়েছে।বিখ্যাত বিমান প্রস্তুতকারী ‘বোয়িং কোম্পানীর প্রতিষ্টাতা উইলিয়াম এডওয়ার্ড বোয়িং এর নামে সিটলে একটি এয়ারপোর্টের নাম করা হয়েছে।আবার রাজনীতিবিদ ব্যবসায়ীর বাইরে ব্যতিক্রমও আছে যেমন কমেডিয়ান অভিনেতা সঙ্গীত নৃত্য শিল্পী ক্রীড়াবিদ লেখক বব হোপস, প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান বিচারক থারগুড মার্শাল গলফার আরনল্ড পালমার জাজ সঙ্গীতের স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব কম্পোজার ট্রাম্পিটার আফ্রিকান আমেরিকান শিল্পী লুইস আর্মষ্ট্রং প্রমূখের নামেও বিমান বন্দরের নাম করণ করা হয়েছে।‘জেমস বন্ড’ খ্যাত জনপ্রিয় বৃটিশ লেখক সাংবাদিক ও নৌবিশেষজ্ঞ ইয়ান ফ্লেমিং ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে অবকাশ যাপনকালীন তার জেমস বন্ড সিরিজের এসপিওনেজ ও ইন্ট্রিগো পর্ব দুটি লিখেন আর এই স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতেই জামাইকায় ফ্লেমিং এর নামে একটি এয়ারপোর্টের নামকরণ করা হয়েছে।পার্সিয়ান গালফ পেনিনসোলার ব্যক্তি নামাংকিত বিমানবন্দরগুলির সিংহ ভাগই সে এলাকার প্রবল পরাক্রমশালী বাদশাহদের দখলে যেমন হামাদ, কিং আব্দুল আজিজ,কিং খালিদ,কিং ফাহাদ প্রমূখের নামে এয়ারপোর্ট আছে।আব্বাসীয় খিলাফতের সময়ে অনেক বিজ্ঞানী জ্যোতির্বিদ গনিতজ্ঞ চিকিৎসাবিদ সভ্যতার ইতিহাসে নাম লিখে গেলেও মধ্যপ্রাচ্যের বিমানবন্দরগুলির নামকরণে তাদের নাম অপাংক্তেয়ই রয়ে গেছে।এবার চোখ বুলানো যাক সার্কভুক্ত দেশগুলির দিকে।ভারতের বিমান বন্দরগুলির নাম করণেও যথারিতি রাজনীতিবিদদেরই প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়।সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস বিনায়েক দামোদর সাভারকার লাল বাহাদুর শাস্ত্রী গোপীনাথ বরদলৈ জয়প্রকাশ নারায়ন ইন্দিরা গান্ধী বিজু পটনায়েক রাজীব গান্ধী চৌধুরী চরন সিং প্রমূখের পাশাপাশি বিভিন্ন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব যেমন একাদশ শতকের মালোয়ারের রাজা ভোজ ষোঢ়শ শতাব্দীর প্রাচীন বিজয় নগরের শাসক কাম্পিগাওদা সপ্তদশ শতকের মারাটা মুক্তি সংগ্রামের নায়ক ছত্রপতি শিবাজীর নামেও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামকরণ করা হয়েছে।এছাড়া স্বধীনতা সংগ্রামী শহীদ ভগত সিং সংগ্রামী আদিবাসী বিরসামুন্ডার নামেও তাদের স্মৃতি জড়িত স্থানে এয়ারপোর্টের নাম হয়েছে।পাকিস্তানে তাদের জাতীর পিতা জিন্নাহ প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পাশাপাশি কবি ইকবালের নামেও বিমান বন্দরের নাম দেয়া হয়েছে।আফগানিস্তানের একটি এয়ারপোর্টের নামকরণ হয়েছে হামিদ কারজাইর নামে।নেপালের রাজা মহেন্দ্র কাটমুন্ডুর গোচাউর এয়ারপোর্টের নাম পাল্টে তার বাবা ত্রিভুবনের নাম বসিয়ে দেন।শ্রীলংকার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নাম হয়েছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বন্দরনায়েকের নামে।মালদ্বীপের এয়ারপোর্টের নাম ইব্রাহিম নাসির ইন্টারনেশনেল এয়ারপোর্ট।ইব্রাহীম নাসির মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। ইন্দোনেশিয়ার একটি এয়ারপোর্টের নাম হয়েছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সুকর্ণের নামে।বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের নাম যথাক্রমে হজরত শাহজালালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট শাহ আমানত ইন্টারন্যাশনেল এয়ারপোর্ট ও এম এ জি ওসমানী ইন্টারন্যাশনেল এয়ারপোর্ট।

আমাদের তিনটি এয়ারপোর্টের নামকরণকেই ইউনিক বলা যায়।তিনটি নামই দেয়া হয়েছে তিনজন ব্যতিক্রমী মানুষের নামে যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।রেংকের দিক থেকে তিন নম্বর বিমান বন্দরটির নামকরণ করা হয়েছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নামে।সারা পৃথিবীর ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের কোনো সেনাপতির নামে কোনো এয়ারপোর্ট আছে কি না তা গবেষণাসাপেক্ষ তবে মধ্য প্রাচ্য বা আমাদের সার্ক অঞ্চলে এমনটি বিরল।এক্ষেত্রে মুম্বাইর ছত্রপতি শিবাজী এয়ারপোর্টের সাথে এটি আংশিক তূলনীয় হতে পারে।কারণ ছত্রপতি শিবাজীও একজন বীর সেনানায়ক ছিলেন যিনি তার সুশৃংখল সেনাবাহিনী নিয়ে সফলভাবে মারাটা জাতির মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন।তবে আংশিক বলার কারণ শিবাজীর কর্মপরিধি ছিল অনেক ব্যাপক কেননা তিনি শুধু দক্ষ সেনাপতিই ছিলেননা, ছিলেন সফল সংগঠক ও আদর্শ রাষ্ট্রনায়কও।এম এ জি ওসমানী এয়ারপোর্ট নামটি অন্য কারণেও প্রশংসা পাবার দাবী রাখে কেননা তিন বিমানবন্দরের নামের সাথে সম্পৃক্ত তিন ব্যক্তিত্বের মাঝে তিনিই একমাত্র বাংগালী একারণে সিলেটের মানুষ তাদের একজন বীরের জন্য গর্ব করতেই পারেন।এ নামকরণের পেছনেও সিলেটের গণ দাবীটিই মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিল।অবশ্য আরেক খ্যাতিমান বাঙ্গালী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের নামে দমদম এয়ারপোর্টের নামকরণ করায় পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশ অন্ততঃ দুইজন বাঙ্গালীকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপিত করতে পেরেছে।আরেক বাঙ্গালী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামেও কবির জন্মস্থান বর্ধমানে একটি আভ্যন্তরিন এয়ারপোর্টের নামকরণ করা হয়েছে। রেংক এক ও দুই নম্বর এয়ারপোর্টের নামকরণ করা হয়েছে দুইজন পীরের নামে এটাও আরেক বিরল বিস্ময়ের ব্যাপার।যে অঞ্চল থেকে ইসলামের উৎপত্তি সেই আরব ভূখন্ডের কোনো এয়ারপোর্টের নামকরণে কোনো ধর্মীয় নেতা বা আধ্যাত্বিক ব্যক্তিত্তের নাম খুঁজে পাওয়া যায়না।আরবের বাইরে একমাত্র ইরানে একটি বিমানবন্দরের নাম দেয়া হয়েছে ধর্মীয় নেতা ইমাম খোমেনীর নামে।ইমাম খোমেনী ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নায়ক।তার সময়ে মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের জিম্মি ইস্যু ও স্যাটানিক ভার্সেস এর লেখক সলমান রুশদীর মৃত্যুদন্ড ঘোষণা ইস্যু তাকে বিশ্বব্যাপি পরিচিত করে তোলে।১৯৭৯ সালে নিউইয়র্ক টাইমস তাকে ম্যান অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করে।এরকম একজন প্রভাবশালী ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামে বদলে যাওয়া ইরান তাদের একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামকরণ করবে তাইতো স্বাভাবিক।আরেকটি দৃষ্টান্ত আছে ভারতে।শিখদের চতুর্থ ধর্মগুরু শ্রীগুরুরাম দাসজীর নামে অমৃতসর এয়ারপোর্টের নাম।শ্রীগুরুরাম দাসজী শুধু শিখদের চতুর্থ ধর্মগুরুই ছিলেননা তিনি শিখদের বিবাহ রীতির অন্যতম পর্ব চার স্তোত্র যা লেভা নামে পরিচিত রচনা করেন এছাড়া তিনি শিখদের তীর্থ বলে সম্মানিত রামদাসপুর শহরের পরিকল্পনাকারী ও প্রতিষ্টাতা।তিনি অমৃতসরের গুরুদুয়ারা হরমন্দির সাহেব এর ডিজাইনার।সবচেয়ে বড় অবদান তিনি শিখ সম্প্রদায়কে একতাবদ্ধ করেন।এমন একজন ধর্মগুরুকে ঘোর রক্ষনশীল বলে পরিচিত শিখ সম্প্রদায় তাদের পবিত্রভূমির শীর্ষে তুলে ধরবে তাই স্বাভাবিক নয়কি ?কিন্তু আমাদের দেশের দুই দুইটি বিমানবন্দরের নামের সাথে দুইজন কিংবদন্তিনির্ভর ভিনদেশী পীরের নাম যুক্ত করে দেয়ার প্রেক্ষাপট কী?এ দুইজন পীরের মাঝে কারোর শরীরেই বাঙ্গালী রক্তের ছিটেফোঁটাও নেই।নেই বাঙ্গালী জাতি স্বত্তার বিকাশে বিস্তারে এদের ন্যুনতম অবদানও।থাকার কথাও নয়।হজরত শাহজালালের (১২৭১-১৩৪৬) জাতীয়তা কী তা নিয়েই ইতিহাসবিদদের মাঝে মত পার্থক্য রয়ে গেছে।কারো মতে তিনি ইয়েমেন থেকে এসেছিলেন কারো মতে তুরস্ক থেকে।আবার ইয়েমেন বা তূর্কির ইতিহাস ঘেঁটেও ইতিহাসবিদেরা এ নামের কারো অস্থিত্ব খুঁজে বের করতে পারেননি। শাহজালালের প্রায় আড়াইশ বছর আগে আমাদের বিক্রমপুরের শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপংকর (৯৮২-১০৫৪) সুদুর তিব্বতে গিয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন সেখানে তিব্বতের ঐতিহ্যবাহী কদমা ও সর্মা নামের স্কুল প্রতিষ্টা করেছিলেন এটা আমাদের সতত গর্বের বিষয় ইতিহাসের অংশ। অথচ বাংলাদেশের ইতিহাস ও সমাজজীবনে অসামান্য প্রভাব বিস্তারকারী শাহজালাল নামের অস্তিত্বই তাঁর জন্মস্থানে নেই সেটা কেমন কথা। গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত ‘ফকির চিনেনা দেশে আর ফকির চিনেনা কেশে’ এই প্রবাদের মাঝেই কি তাহলে এর উত্তর লোকিয়ে আছে?নিজ এলাকায় অখ্যাত অথবা কুখ্যাত কিন্তু বাইরে কামেল খ্যাত অনেক পীর ফকিরের গল্প সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।এটা বহুলভাবে জনশ্রুত যে শাহজালালের আধ্যাত্নিক প্রভাবে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের অনেক মানুষ ধর্মান্তরিত হয়েছিল।বাঙ্গালী হিন্দু বা বৌদ্ধ বাঙ্গালী মুসলমানে রুপান্তরিত হয়েছিল এটাকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে বিশাল কৃতিত্বপূর্ণ কাজ বলে ধরে নিয়েই তাঁকে শুধু বাংলাদেশেই নয় পুরো বিশ্বের সামনেই উপস্থাপন করা হয়েছে। অবশ্য শাহজালালের অলৌকিকতা না ইসলামীকরণের জন্য এখানে তাকে দেশের ব্রান্ড এম্বেসেডর করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।তাই এই দুই প্রেক্ষাপট নিয়েই কিঞ্চিত আলোচনা করা প্রয়োজন। এতদঞ্চলে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের ইসলাম গ্রহণের পেছনে দারীদ্রতা ধর্মীয় নিপীড়ন ও সামাজিক বৈষম্য ব্যাপক প্রভাব রেখেছিল বলেই সমসাময়িক সমাজচিত্র স্বাক্ষ্য দেয়।সিলেটের প্রথম ইংরেজ কালেক্টর রবার্ট লিন্ডসের (১৭৫৪-১৮৩৬)বর্ণনায় সিলেটীদের দারীদ্রতার মর্মস্পর্শী চিত্র ফুটে উঠেছে(তথ্যসূত্র- সৈয়দ মর্তুজা আলীর ‘হজরত শাহজালাল ও সিলেটের ইতিহাস)।এই দারীদ্রতাই সিলেটীদের বিপুলভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হতে উৎসাহিত করেছে।সিলেট প্রাচীন কাল থেকেই বিশাল একটি জলমগ্ন এলাকা ছিল।মধ্যযুগের পর্যটকগণ সিলেটের নিম্নাঞ্চলকে সাগর বলেই তাদের লেখায় বর্ণনা করেছেন।সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরকে বেহুলা লখীন্দর উপাখ্যাণে বর্ণিত কালীদহ সাগর বলে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন।কালের প্রবাহে এই জলাভূমিই ধীরে ধীরে ভরাট হয়েছে দরীদ্র নিঃস মানুষ সেখানে বসতি গড়ে তুলেছে।কেউ জলাভূমিতে মাছ ধরে কেউ পানির নিচ থেকে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেছে।এই দুই শ্রেণীর মানুষই ভূমিপুত্র স্বভাবতই শোষিত বঞ্চিত এবং সমাজের নিচের স্তরে অবস্থানকারী।সে সময়কার শাসক ছিলেন ব্রাহ্মণ, সমাজের সবচেয়ে উঁচু স্তরে যাদের অবস্থান।ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্র মনুসংহিতার শ্লোক অনুযায়ী ত্রিভুবনের রক্ষার জন্য মহাতেজযুক্ত প্রজাপতি ব্রহ্মা নিজের মুখ থেকে ব্রাহ্মণকে সৃষ্টি করে অধ্যাপন,স্বয়ং অধ্যয়ন,যজন,যাজন,দান ও প্রতিগ্রহণ এই ছয়টি কাজ তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সেসাথে এটাও সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন জগতে যা কিছু ধন সম্পত্তি তার সব কিছুই ব্রাহ্মণের নিজ সম্পদতূল্য অতএব সকল বর্ণের মধ্যে শ্রেষ্ট বলে ব্রাহ্মণই সমুদয় সম্পত্তি প্রাপ্তির যোগ্য হয়েছেন।আর ব্রহ্মার নোংরা পা থেকে সৃষ্ট শূদ্রদের জন্য একটি কাজই বেঁধে দেয়া হয়েছে তাহলো কোনো দ্বিধা দ্বন্ধ না করে অকৃপণভাবে তিন বর্ণের মানুষের সেবা সুশ্রুষা করে যাওয়া।শুধু তাই নয় নাম রাখার ক্ষেত্রেও শূদ্রদের প্রতি ভগবান প্রত্যাদেশ হলো ব্রাহ্মণের নাম যেমন মঙ্গল বাচক তেমনি শূদ্রের নাম হবে জুগুপ্সিত নিন্দা বা হীনতাসূচক যেমন-কৃপণক,দীন,শবরক ইত্যাদি আর তদের নামের উপাধী হবে দাস বা ভৃত্যবাচক শব্দ যেমন-দীনদাস,দেবদাস রামদাস ইত্যাদি।(তথ্যসূত্র-অস্পৃশ্য ও ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং একজন বাবাসাহেব-রণদীপম বসু)সিলেটে পানির নিচ থেকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আবাস গড়ে তোলা মানুষদের অধিকাংশই ছিল এই দীনদাস দেবদাস এবং ব্রাহ্মণ্যবাদী নিষ্পেষণে চরমভাবে দলিত বৌদ্ধ ধর্মাবললম্বী নাথ যোগী ইত্যাদি সম্প্রদায়ভুক্ত যাদের সম্পদ বলতে ছিল কারো হালের লাঙ্গল কারো মাছ ধরার জাল আর কারো ঘানি টানার বলদ।শাস্ত্রই যদি ব্রাহ্মণ আর শূদ্রের এই আকাশ পাতাল ব্যবধান রচনা করে দেয় আর কোনো অঞ্চল যদি হয় সরাসরি ব্রাহ্মণশাসিত তবে সে এলাকার সিংহ ভাগ নাগরিক তথা শূদ্রদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা কী হতে পারে তা নির্ণয় করতে গবেষণার প্রয়োজন পড়েনা।১৬৯৩ সালে এক শূদ্র নারী ষোল কাহন মূল্যে বিক্রির এবং ১৭৮৮ সালে যথাক্রমে ১৫ বছর ও ১০ বছর বয়সের একজোড়া শিশু সতেরো রুপাইয়ায় বিক্রি হওয়ার দলিল (তথ্যসূত্র-শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত-অচ্যুত চরণ চৌধুরী) সিলেট থেকে আবিষ্কৃত হওয়া থেকেই এই অঞ্চলে শূদ্রের হাজার বছরের নিষ্পেষিত সমাজ চিত্রের নমূনা পাওয়া যায়।সেই শূদ্রদের ধর্ম ছিল কিন্তু ধর্মে কোন অধিকার ছিলনা।তারা শাস্ত্র উচ্চারণ করলে জিহবায় উত্তপ্ত লোহার শলা দিয়ে ছিদ্র করে দেয়া হতো এমনকি অসাবধানতাবশতঃ শুনে ফেললেও কানে তরল সীসা ঢেলে দেয়া হতো।এই ব্রাহ্মণ শাসক আর তাদের শাস্ত্র নামক শাসনতন্ত্রের প্রতি এই দীনদাসদের মনোভাব বুঝতে মনোবিজ্ঞানী হওয়ারও প্রয়োজন নেই।মুসলমান অনুপ্রবেশকারীরা যখন একহাতে তলোয়ার আর আরেক হাতে নতুন ধর্মের আহবান নিয়ে এই ভূখন্ডে প্রবেশ করল তখন এই দীনদাসদের বিশাল একটি অংশ কিছুটা আতংকিত হয়ে কিছুটা পরিবর্তনের আশায় দলে দলে ধর্মান্তরিত হতে শুরু করে।এই বিপুল ধর্মান্তকরণে নতুন ধর্মের আবেদন যতনা কাজ করেছিল তারচেয়ে অনেকগুণ বেশী কাজ করেছিল ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মের অমানবিক নিষ্পেষণ।বখতিয়ার খলজী কতৃক বিনাযুদ্ধে বঙ্গবিজয়ে বড় নিয়ামক ছিল বর্ণবাদের স্রষ্টা সেন রাজাদের প্রতি মানুষের সীমাহীন ঘৃণা আর অসহযোগিতা।সিলেট বিজয়ী মুসলমানের সাথে সে সময় শাহজালাল না হয়ে অন্য যে কেউই যদি জায়নামাজ বিছিয়ে নদী পাড় হওয়া জাতীয় বুজরুকির কাহিনী নিয়ে পর্দায় আবির্ভুত হতেন অথবা বিজয়ী বাহিনী যদি খৃষ্টান ইহুদিও হতো ফলাফলে কোনো হেরফের হতোনা।প্রান্তিক মানুষ একটুখানি মুক্তি ও পরিবর্তনের আশায় হাতের কাছে খড়খুটু যা কিছু পেত তাকেই আকড়ে ধরতো।বাঙ্গালী অলৌকিক মাজেজা আর মাজেজা প্রদর্শণকারীদের প্রতি কত যে দুর্বল এখনও তার হাজারো প্রমান পাওয়া যায়।এখানে প্রসঙ্গক্রমে একটি কাহিনী উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।কাকতালীয় ভাবে এটিও সিলেটের ঘটনা।সম্ভবতঃ ১৯৯৭/৯৮ ইংরেজীর দিকে সিলেট বি ডি আর ক্যাম্পের এক বি ডি আর সদস্য (নামটি সম্ভবতঃ) মতিউর রহমানের মাঝে হঠাৎ করেই অলৌকিক ক্ষমতার উন্মেষ ঘটে।গুজব রটে তার পানি পড়া খেলে যেকোনো রোগই সেরে যায়।খবরটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বাসের ভাইরাস।পানির জন্য লাইন পড়ে যায়।দিনে দিনে লাইন লম্বা হতে থাকে।মানুষের ভীড় একসময় সামালের বাইরে চলে যায়।মতিউর প্রমাদ গুণেন।এরকম চললে চাকুরী থাকবেনা।উপায়ান্তর না দেখে তিনি আখালীয়ার বড় এক পুকুরেই তার সর্বরোগ হরা ফুঁ দিয়ে দিলেন।মতিউর রহমান বেঁচে গেলেন।জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ হাড়ি পাতিল লোটা কলস ড্রাম বালতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লো সেই পুকুরে।দিন দুই একের ভেতর বিশাল পুকুরের সমুদয় জলই চলে গেল বিশ্বাসী মানুষের সংগ্রহে।এ না হলে আর আধ্যাত্বিক রাজধানী!সুনামগঞ্জ শহরে এক বিয়েতে যোগ দিতে গিয়ে জলহীন শুকনো পুকুরটি দেখার সৌভাগ্য এই লেখকের হয়েছিল।তৎকালীন সময়ে এই ঘটনা নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়।মনোবিজ্ঞানীরা একে বড় ধরণের এক ম্যাস হিষ্টরিয়া বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই ঘটনার নায়ক মতিউরকে সিলেট থেকে ট্রান্সপার করে ময়মনসিংহের কোথাও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল।এরপর তার আর কোনো খবর জানা যায়নি।কিন্তু মতিউর নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষ অথবা বোকা ছিলেন।তার মনে যদি সামান্যতম লোভ বা কপটতা থাকতো তবে তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে সিলেটেই দরগা বানিয়ে বসে যেতে পারতেন এবং দুতিন সালের মাঝেই এলাকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিতে পরিনত হতে পারতেন।যে উর্ধ্বতন অফিসারদের স্যালুট টুকতে টুকতে বুটের তলা ক্ষয় হয়ে যাচ্ছিল সেই অফিসাররাই তার পায়ে চুম্বন করে ধন্য হতেন।তার সর্দি কাশি থুথু উচ্ছিষ্ট আধা চর্বিত খাবার ভক্তরা রেশনের মতো ভাগ করে নিতো।১৯৯৮ খুব দূর অতীত নয়।কিন্তু কল্পনা করুন ছয় সাত শত বছর পেছনের কথা।রাতে কুপি জ্বালাবার মতো সাধ্য ছিলনা মানুষের।রাত মানেই ছিল ঘরের ভেতর অসহায় ঘুম আর বাইরের জগত থাকতো ভুত প্রেত পেত্নী ডাকিনী যোগিনীর দখলে।সেই অন্ধকার সময়ে জায়নামায বিছিয়ে নদী পারাপার আজানের শব্দে সাততলা দালান খসে পড়ার কাহিনী মানুষকে কেমন মন্ত্রমুগ্ধ করতে পারে তা অনুমান করা কঠিন কাজ নয়।অথচ যে ধর্মের বাণী নিয়ে শাহজালাল বা অন্যান্য অলৌকিক ক্ষমতাধরদের আবির্ভাব সেই ধর্মের প্রতিষ্টাতার জীবনে এরকম কোনো অলৌকিক ঘটনারই জন্ম হয়নি।তিনি সাধারণ একজন মানুষের মতোই জন্ম গ্রহন করেছেন মৃত্যু বরণ করেছেন খাদ্য গ্রহণ করেছেন প্রাকৃতিক কর্ম করেছেন বিয়ে করেছেন সংসার করেছেন সন্তানাদির জন্ম দিয়েছেন তলোয়ার হাতে অন্যান্য সৈনিকের মতো যুদ্ধ করেছেন আহত করেছেন নিহত করেছেন প্রতিপক্ষের আঘাতে দাঁত ভেঙ্গে গিয়েছে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুঠিয়ে পড়েছেন এমন জীবন মরন সন্ধীক্ষণেও এক বিন্দু অলৌকিকতা দেখা যায়নি।জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে যিনি রক্ষা করেছিলেন তিনি কোনো ফেরেশতা নন মানুষ, চাচাতো ভাই ও জামাতা ।অলৌকিকতা বলে কিছুর অস্থিত্ব থাকলে নবীর সেই জীবন-সংকটকালীন সময়েই প্রদর্শিত হতো।আমাদের দেশে পীর ফকিরদের নামে যে হাজার হাজার বুজরুকির গল্প প্রচলিত রয়েছে তা মুলতঃ উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে রটনা করা হয়েছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের উপর মনঃস্তাত্তিক চাপ তৈরির জন্য।বলাবাহুল্য এই কৌশলে বহিরাগত মুসলমানরা শতভাগ সফল হয়েছে।সামরিক হামলার আগেই সম্ভবতঃ তারা সঙ্গী কোনো পীর ফকিরের নামে এধরণের গল্প রটনা করে প্রতিপক্ষের মনোবল ভেঙ্গে দিত এবং পরে অনেক সহজে কোথাও বিনা যুদ্ধেই রন জেতা হয়ে যেত।এসব কাহিনী অনেকটা বর্তমান সময়ের যুদ্ধকালীন প্রপাগান্ডার মতো।পরে এই কৌশল ব্যবসায়িক ধান্ধায় পল্লবিত হয়। অলৌকিকতা নিয়ে এখানে একটি কাল্পনিক রুপকল্প চিন্তা করা যেতে পারে।আমাদের দেশের প্রখ্যাত যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলেন।দেশব্যাপী তল্লাশী করেও তার আর খোঁজ পাওয়া গেলনা।জুয়েল আইচ মুলতঃ একটি কুপ্রবৃত্তি নিয়ে নিজেই আত্নগোপন করেছেন।ছয়মাস পর এক গভীর অরণ্যে তাকে আবিষ্কার করে একদল কাঠুরে বিশাল চুল দাড়ি ঢাকা এক কামেল সাধক হিসেবে।অনেক পরিশ্রমে তারা জানতে পারে তিনি কামেল পীর শাহ খুদাবন্দ আজিমপুরী।গভীর জঙ্গল থেকে খুদাবন্দকে তারা লোকালয়ে নিয়ে আসে।চাঁদা তোলে তারা খুদাবন্দের সাধনা আর বসবাসের জন্য একটি কুঁড়েঘরও তৈরি করে দেয়।বাস, খুদাবন্দরুপী জুয়েল আইচ এবার আস্থে আস্থে তার পেন্ডুরার বাক্স খুলতে শুরু করলেন।এবার চিন্তা করুনতো দৃশ্যপট কেমন হবে?যার যাদুকে নিছক কৌশল আর চালাকী জেনে দেখেও আমরা আমাদের সাধারণ বোধ বুদ্ধি দিয়ে সেই কৌশলগুলির কুল কিনারা করতে পারিনা সেই ম্যাজিকগুলিই যদি একজন কামেল পীরের অলৌকিক ক্ষমতাজ্ঞাণে দর্শণ করি তাহলে আমাদের বিশ্বাসী চিত্তের ষোল আনাইযে সেই বাবাজীর দখলে চলে যাবে এটা গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়।পুরো দেশ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়বে।ছ’মাসের মধ্যে জাতী ধর্ম নির্বিশেষে দেশের আশিভাগ মানুষ খুদাবন্দ আজিমপুরীর মুরীদ হয়ে যাবে।তার অঙ্গুলী নির্দেশে দেশ পরিচালিত হবে।সরকার পরিবর্তন হবে।আরো কত কি।একটা দেশের হর্তাকর্তা বিধাতা হওয়ার মতো সম্ভাবনা থাকা সত্তেও জুয়েল আইচ এটা করবেননা কারণ তিনি একজন যুক্তিবাদী মানুষ।যুক্তিবাদে যার আস্থা তার বিবেক ইস্পাতের মতো শানিত।এখানে প্রতারনা ভন্ডামীর কোনো স্থান নেই।

এবার আসা যাক চট্টগ্রামের শাহ আমানত প্রসঙ্গে।এটি আরো কৌতুহলোদ্দীপক।শাহ আমানত চট্টগ্রামে খুব সম্মানিত ও গুরুত্বপূর্ণ আওলিয়া।তাঁর নামে শুধু এয়ারপোর্টই নয় কর্নফুলী নদীর উপরের একটি ব্রীজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলেরও নামকরণ করা হয়েছে তার নামানুসারে।এতেই জনমানসে তার প্রভাব কতটুকু তা বুঝা যায়।তথ্য উপাত্ত ঘেঁটে শাহ আমানত সম্পর্কে যা জানা যায় তা খুবই মজার।তিনি বিহারের অধিবাসী।মূল শিকড় না কি বাগদাদে।অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে তিনি চট্টগ্রামে আসেন চট্টগ্রাম জজকোর্টের পাখা টানার কাজ নিয়ে।একাজে থেকেই তিনি আধ্যাত্বিক সাধক হয়ে ওঠেন।তার অলৌকিকতা বিকাশের গল্পটি এরকম-অনেক দূর থেকে আগত এক ভদ্রলোক মামলার তারিখে কোর্টে হাজির হয়ে দেখেন যে জমি সংক্রান্ত মামলায় আদালতে এসেছেন তার দলিলটিই ভুলক্রমে ফেলে এসেছেন।দিশেহারা ভদ্রলোক কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।এসময় পাখাটানা শাহ আমানত তাকে স্বান্ত্বনা দিয়ে বলেন ভেঙ্গে পড়বেননা আল্লাহ একটা উপায় নিশ্চয়ই করবেন।দশ মিনিট পরে শাহ আমানত দলিলটি তার হাতে ধরিয়ে দিলে তিনি বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে যান।এসংবাদটিই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।বিশ্বাসী মানুষ ধরে ফেললেন শাহ আমানত কোনো সাধারণ মানুষ নন।বাস,এর পরের গল্পতো পীর সাহেবের আকাশে ওড়ার কাহিনী।গল্পটি যদি সত্য হয় আর কোনো যুক্তিবাদী যদি বলে গল্পোক্ত মামলাবাজ ভদ্রলোক মামলা রুজু করার সময় দলিলের যে কপিটি দাখিল করেছিলেন শাহ আমানত কোর্টে কাজ করার সুবাদে কৌশল করে সেই নকলের কপিটিই তাকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন তবে ভক্তরা মানবেনা।একবার যার উপর অলৌকিকত্ব আরোপ করা হয়ে গেছে তা আর সংশোধনের পথ নেই।পূর্বে উল্লেখিত সিলেটের আধ্যাত্বিক বিডিআর সদস্য আর শাহ আমানতের মাঝে পার্থক্য হলো বুজরুকি প্রকাশের পর বিডিআর সদস্যটি চাকরীতেই বহাল ছিলেন আর শাহ আমানত চাকুরী ছেড়ে দিয়ে পীরাগীতে আত্ননিয়োগ করেন ফলাফল বিডিআর সদস্যটি দৃশ্যপট থেকে চিরকালের জন্য অদৃশ্য হয়ে যান আর শাহ আমানত মরেও অমর।এখন চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণভোমরা।

না,এয়ারপোর্টনামার এখানেই শেষ নয়।আমাদের আরো কয়েকটি আভ্যন্তরিন বিমানবন্দর রয়েছে।রাজশাহীতে অবস্থিত এয়ারপোর্টের নাম ‘শাহ মখদুম এয়ারপোর্ট।কে এই শাহ মখদুম ?উনি নাকি ইয়েমেনের এক যুবরাজ ছিলেন ধর্ম প্রচারার্থে এদেশে এসে এখানকার হিন্দু শাসকের হাতে সঙ্গীসাথী সহ নিহত হন।ঘটনাটি বেদনাদায়ক নিঃসন্দেহে কিন্তু অপ্রত্যাশিত নয়।ভারত থেকে একদল হিন্দু সাধু যদি এদেশে সদল বলে এসে হিন্দু ধর্ম প্রচার করতে শুরু করে তাদের প্রতি আমাদের শাসক বা জনগণের আপ্যায়ন কি ইবনে বতুতার অতিথী পরায়নতার সার্টিফিকেটের যথার্থতাই প্রমান করবে না কি কচুকাটা করবে?শাসক লাগবেনা এই সাধুদের যথোপযুক্ত সৎকার করতে আল্লাহর বান্দা জনগণই যথেষ্ট।তবুও শাহ মখদুম এবং তার সঙ্গীদের জন্য আমরা অনুতপ্ত আর আমাদের এই অনুতাপ প্রকাশের স্বাক্ষী হিসেবে আমরা তাদের জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে দিতে পারি।কিন্তু তা না করে আমাদের নগরীর আকাশ পথের প্রবেশদ্বারটিতেই তার নামের ফলক লাগিয়ে দেব?এটা কি আমাদের অসীম উদারতা না হীনমন্যতা না কি অতূলনীয় ধর্মীয় উন্মাদনার প্রকাশ? খুলনাতে নাকি আরেকটি এয়ারপোর্টের নির্মান কাজ চলছে।নির্মানাধীন সেই এয়ারপোর্টের নাম?হাঁ ঠিকই অনুমান করেছেন এটির নাম ‘হজরত খান জাহান আলী এয়ারপোর্ট।না,খান জাহান আলীর ইতিহাস ঘেঁটে লেখাটিকে আর দীর্ঘ্য করার প্রয়োজন নেই।পাঠকের উপরই সেই চিন্তা আর মূল্যায়নের ভার ছেড়ে দেয়া হলো।

উপসংহার
এয়ারপোর্টের সাইনবোর্ড বদলের কাজটি শুরু করেছিল বিএনপি তেমনি নামকরনে ধর্মীয় অনুভুতি নামক অস্ত্রের ব্যবহারও তাদের হাত দিয়েই শুরু।১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমান ঢাকা ইন্টারন্যাশনেল এয়ারপোর্টের উদ্বোধন করেন।জিয়াউর রহমান সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হলে প্রেসিডেন্ট সাত্তার ১৯৮৩ সালে ঢাকা ইন্টারন্যাশনেল এয়ারপোর্টের নাম পাল্টে জিয়াউর রহমানের নামে নামকরণ করেন।আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে তাদের একজন বিশিষ্ট নেতা যার নামের সাথে স্বাধীনতা ঘোষণার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু জড়িয়ে আছে সেই এম এ হান্নানকে স্মরণীয় করে রাখতেই চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টের নামটি তার নামে করে।এটা সুবিবেচিত একটি সিদ্ধান্ত ছিল বলেই মনে হয়। দেশের তিনটি এয়ারপোর্ট স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত তিন ব্যক্তিত্ত্বের নামে এটি আমাদের জন্য একটা অহংকারের ব্যাপার ছিল কিন্তু বি এন পি দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম এম এ হান্নান এয়ারপোর্টের সাইনবোর্ড নামায়।এম এ হান্নান নামটিকে তাদের ভালো লাগার কোনো কারণ নেই কারণ স্বাধীনতা ঘোষণায় তাদের নেতার প্রতিপক্ষ এই নামটি।এক খাপে দুই তলোয়ার ধরে কীকরে?কিন্তু নাম করণের ক্ষেত্রে তারা চট্টলার বীর সন্তান সূর্যসেনের নাম পছন্দ করবেনা তা স্বাভাবিক কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রামের কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার নামটি কি তারা বিবেচনা করতে পারতোনা?কর্নেল ওলীর নাম দিলেওতো একটা যুক্তি থাকতো।কিন্তু তারা নিশ্চিত ছিল এটি করলে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে আবার এম এ হান্নানের নামে সাইনবোর্ড উঠাবে সুতরাং এমন একজনের নাম ব্যবহার করতে হবে যে নামে হাত দিতে আওয়ামীলীগ সাহস করবেনা।এক্ষেত্রে কোনো ধর্মীয় বা আধ্যাত্বিক ব্যক্তিত্বের বিকল্প নেই।এর আগে তারা ঢাকা ইন্টারন্যাশনেল এয়ারপোর্টের নাম বদলে জিয়ার নামে করলেও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে তাতে হাত দেয়নি কিন্তু এর পরের দফায় ক্ষমতায় এসে আওয়ামীলীগ চট্টগ্রামের বদলা নিল জিয়ার নাম নামিয়ে।এক্ষেত্রে তারা বিএনপিকেই অনুসরণ করল।তারাও কোনো বাঙ্গালী মণীষী বা বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহারের ঝুঁকি নিলনা বেছে নিল দেশের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী একজন পীরকে।এখন প্রশ্ন হলো বড় দল দুটি তাদের পারস্পরিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গিয়ে আমাদের জাতীয় সত্তার উপর এমন অনাকাংখিত জগদ্দল পাথর চাপিয়ে দিতে পারে কি না ?এটা কি তাদের এখতিয়ার বহির্ভুত নয়? আবার জঘন্যভাবে এই প্রতিহিংসায় তারা ধর্মীয় অনুভূতি নামক এসময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ অস্ত্রটিকে ব্যবহার করেছে এজন্য এ লেখার শিরোনামে আমি ‘অনুভূতি সন্ত্রাস’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। আপাতদৃষ্টিতে দুই দল পরস্পরকে ঘায়েল করেছে মনে হলেও মুলতঃ দল দু’টি ঘায়েল করেছে আমাদের জাতি সত্তাকে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে।প্রমান করেছে জাতী হিসেবে আমরা কতটুকু বেকুব এবং অবিমৃষ্যকারী। মেধাহীন এবং অসভ্য জংলী পর্যায়ের।‘নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা’ বলে বাংলায় একটি বহুল প্রচলিত কথা আছে কিন্তু এক্ষেত্রে প্রথমে বিএনপি ও পরে আওয়ামীলীগ যা করেছে তাকে বর্ণনা করা যায় জাতির নাক কেটে প্রতিপক্ষের যাত্রা ভঙ্গের প্রয়াস হিসেবে।তাদের পরস্পরের প্রতিহিংসা হয়তো সফল হয়েছে কিন্তু জাতির যে নাকটি কাটা গেল তা কি আর জোড়া দেয়া সম্ভব হবে?হয়তো সম্ভব কিন্তু তার জন্য যে প্রয়োজন একজন কামাল পাশার।সেই অনাগত বাঙ্গালী কামাল পাশার আগমনের জন্য আমাদের কতটি বছর কতটি দশক অপেক্ষা করতে হবে কে জানে।
পুনশ্চ; বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনেল এয়ারপোর্ট নির্মাণ নিয়ে আওয়ামীলীগ চিন্তা ভাবনা করছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে রকম জেদী আশা করা যায় পদ্মাসেতুর মতো এটিও তিনি নির্মাণ করেই ছাড়বেন।যদি তাই হয় তবে দুই রাজনৈতিক দলের সম্পর্কে কোনো অলৌকিক পরিবর্তন না হলে বিএনপি ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্টের নাম বদলাবে।বিএনপি কি ইতোমধ্যে নামের ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করে ফেলেছে? হাইগ্রেডেড পীরতো শেষ এবার কে? আজমীরের মঈনুদ্দিন চিশতি না কি বাগদাদের আব্দুল কাদির জিলানী?

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৫৫
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×