somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যর্থতা

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০০০ সাল, দুপুর ২টা। ১৩ বছরের এক বালক টিভির সামনে বসে আছে। টিভিতে সিডনি অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে। সে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না টিভিতে কি দেখাচ্ছে। তবুও দেখছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এর মনোমুগ্ধকর প্রদর্শণ দেখে সে মুগ্ধ। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি আর আদিবাসী সম্পর্কেও জানল। তার কল্পনায় ভেসে উঠল তার দেশেও একদিন এমন কিছু হবে। তখন সারা বিশ্বও তার দেশকে চিনবে। ১৩ বছরের সেই বালক হলাম আমি; আজ ২৩ বছরের তরুণ। আজ আমি আমার কল্পনার খুব কাছাকাছি। বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটাও এখানে হবে।

হঠাৎ থমকে গেলাম। আজ আমাদের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর দেখে শিহরিত হই। বিশ্বকাপ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব নাকি পাচ্ছে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠান। আর অনুষ্ঠান পরিকল্পনাও নাকি ওদের ইচ্ছেমতো হচ্ছে। ওদের ইচ্ছের এই প্রতিফলন ঘটবে আমাদের দেশের মাটিতে, ষ্টেডিয়াম-এ। নামেমাত্র দায়িত্ব পাচ্ছে এটিএন ইভেন্টস।

প্রতিটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এ থাকে আয়োজক দেশের নিজেকে তুলে ধরার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। নিজের কৃষ্টি, ইতিহাস আর সংস্কৃতি কে তুলে ধরার এটাই সম্ভবত সর্বোত্তম মাধ্যম। আর এক্ষেত্রে যৌথ আয়োজক থাকলে প্রাধাণ্য পায় সেই দেশ যেখানেই তা অনুষ্ঠিত হয়।যেমন টা আমরা দেখেছি কোরিয়া-জাপান ফুটবল বিশ্বকাপ ২০০২ এ। এমন অভাগা আমার দেশ, আমরা, যারা এমন সুযোগ পাওয়া সত্বেও তা অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছি। ছি দেব, না থুতু মারব আমাদের?

এমন যদি হত আমরা এমন আয়োজন করতে পারতাম না তাহলে অন্য কথা। কই আমরা তো এস. এ. গেমস এর আয়োজন করেছি। বিশ্বমানের সফল সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যারা টিভিতে দেখেছেন তারা যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে নি যে এমন আয়োজন ও আমরা পারি। আর এস. এ. গেমস এর চেয়ে এই ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাজেট নিশ্চয়ই আরো বেশি। নিজেদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করতে না পারার কোনো কারণ নেই। তাহলে কেন এই সিদ্ধান্ত? কেন ভারতকে সুযোগ করে দিতে নিজেদের বিকিয়ে দেয়া, সম্মানহানী করা?

ওতে নাকি, অমিতাভ বচ্চন, অভিষেক, ঐশ্বরিয়া, সালমান খান এরা আসবে।আমার ক্ষুদ্র জীবনে যত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখেছি কোথাও দেখিনি নায়ক-নায়িকা আর ফিল্মষ্টারদের কদাকার নাচানাচি আর রঙ্গতামাশা (আই.পি.এল. ছাড়া)। সেখানে দেখেছি প্রস্ফুঠিত হয়ে উঠেছিল দেশাত্, সেখানে দেখেছি প্রস্ফুঠিত হয়ে উঠেছে দেশাত্মবোধ, উদ্ভাসিত হয়েছে বিশ্বজনীন চেতনা; যা অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধারণ, শৃঙ্খলিত কতক স্বেছাসেবী দ্বারা, নিষ্পাপ শিশুদের সমবেত পরিবেষণার দ্বারা। দু-চারজন সেলিব্রিটির চকচকে মুখ না দেখিয়ে দেখান হয়েছে সম্মিলিত প্রাণোচ্ছ্বাসের জনজোয়ার। দুঃখের বিষয় আমাদের দেশে, আমাদের মাটির, আমাদের ষ্টেডিয়াম এ বসে আমাদের কেই দেখতে হবে ওইসব দৃশ্য আর বিশ্ববাসী আমাদেরকে, বাংলাদেশকে জানবে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে, দেখবে একটি রাষ্ট্রকে যারা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে।

জানিনা, বিসিবির কর্তাব্যক্তিরা কেন এটা করেছেন; জানিনা, বিসিবি সভাপতি কেন এটা করেছেন; জানিনা ১৩ বছরের একজন বালক তার দেশকে সম্মানিত দেখতে চায় অথচ তার দেশের গর্ধভ কর্তাব্যাক্তিরা তা চায় না। তবে একটা জিনিস জানি, আমার মত ২৩ বছরের তরুণদের কাছে তোমরা চিরদিন ঘৃণিত থাকবে, নিন্দিত থাকবে, হয়তোবা মীর জাফরের চেয়েও বেশি।

লিঙ্কঃ Click This Link

১৫টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×