ইতু চায়ের পানি বসিয়ে জানালার ধারে বসল,বাইরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে,জানালার কাঁচে কি সুন্দর আঁকা বাঁকা রেখা,ইতু যখন বাসায় থাকতো তখন এমন দিনে তার মা খিচুড়ি রান্না করতেন,বেগুন ভাজি দিয়ে খিচুড়ির কথা মনে করতেই ইতুর জিবে পানি চলে এলো, এই ঢাকায় সে যে কেন এলো,এই শহরে মেয়েদের একা থাকা কতোটা কঠিন টা যদি কেউ বুঝতো,ইতু নামের অর্থ সুর্য, বাবা ডাকতেন সূর্যী, বৃষ্টি হলে বলতেন, যাও তো সুর্যী মা, বাইরে একটু আলো ছড়িয়ে এসো, ইতু আলো ছড়াতে গিয়ে ভিজে চুপচুপে হয়ে যেত,বাবার কথা মনে হতেই ইতুর চোখ দীর্ঘশ্বাসে ভিজে গেল,আহা তার বাবাটা বড় অবেলায় মারা গেলেন,প্রায় বছর হলো মায়ের সাথেও দেখা হয় না,ছোট খাটো চাকরীর পর টিউশনি, ইতুর আর ভালো লাগে না,দু তিনটা গর্ধপ টাইপ স্টুডেন্টকে একই কথা বার বার বার বার বলতে,আজ পড়াতে যেতে ইচ্ছে করছে না, ইচ্ছে করছে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাতে,উপায় নেই, যেতেই হবে, না গেলেই বেতন কাটা, আজ এই মেঘলা দিনে যদি সে বাসায় থাকতো তবে বড় ভালো হতো,
বান্ধবীদের নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে হাফ প্লেট ফুচকা খেয়ে বাড়ী ফিরে হইচই হইচই,
তার খুব ইচ্ছে করছে মাকে নিয়ে তুমুল বৃষ্টির ছাদে ভিজতে,ভিজতে ভিজতে মেঘ হয়ে ফুড়ুত করে উড়ে যেতে,হতাথই চায়ের ছ্যাত করা শব্দ ইতুকে ফিরিয়ে আনলো তার মাসিক ১৫০০ টাকার ঘুপচি রুমে,যে যে রুমে একটাই জানালা আর জানালার বাইরে মেঘে মেঘে উড়ে জল পাখায় তৈরী একঝাক বৃষ্টির প্রজাপতি।