somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দু'আ করার গুরুত্ব এবং হাদীসের নির্বাচিত দু'আ সমূহ

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে কোন ব্যাপারে, যে কোন সময়ে আল্লাহ্‌ তাআলার সাহায্য প্রার্থনা করা, তার কাছে ক্ষমা চাওয়া একজন মুমিন মুসলমানের অন্যতম প্রধান একটা কাজ হওয়া উচিত।
আমরা যদি দুনিয়াতেই তাকাই, তাহলে দেখব প্রার্থনা করা ছাড়া কিছু পাওয়া প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। উদাহরণসরূপ- যে মা তার সন্তানকে এত ভালবাসেন ছোট বেলায় সে সন্তান দুধের জন্য কান্না না করলে সেই মাও কিন্তু সচারাচর সন্তানকে দুধ দেন না। আবার ধরেন, দুইটা ভিক্ষুক রাস্তায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছে আর আপনি পাশ দিয়ে যাচ্ছেন । একটা ভিক্ষুক আপনার দিকে হাত বাড়িয়ে করুন সুরে কিছু চাইলো আর অন্য ভিক্ষুকটা কিছু না করে এমনিতেই দাঁড়িয়ে থাকলো। তাহলে বলেন আপনি কাকে সাহায্য করবেন?
এইবার নিজের দিকে তাকান। মহান সৃষ্টিকর্তা আপনি না চাইতেই আপনাকে কত নিয়ামত দিয়ে রেখেছেন বিনিময়ে আপনি, আমি সেই নিয়ামতের জন্য শোকর করা তো দূরে থাক বরং সারাদিন শুধু তাঁকে দোষারপই করতে থাকি যে তিনি কেন আমাকে এইটা দিলেন না বা অমুক কাজটা করতে সাহায্য করলেন না। অথচ আপনি কয়বার তার কাছে দুয়া করেছেন?
অনেকে আবার বলেন, আমি অনেক দুয়া করি কিন্তু আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেন না। এর উত্তর কিন্তু দেয়াই আছে।

মুমিন বান্দার দোয়া করলে তার ফলাফল নিচের তিনটির যে কোন একটি হয়ঃ
১। তার দোয়া সাথে সাথে কবুল হয়, অথবা
২। সেই দোয়ার কারনে তার অন্য কোন কল্যাণ হয় বা সে কোন বিপদ হতে রক্ষা পায়, অথবা
৩। আল্লাহ তার এই দোয়ার পুরুষ্কার জান্নাতে তৈরি করে রাখেন, কারন আল্লাহ হচ্ছেন সর্বজ্ঞানী। বান্দা যা চেয়েছে তা হয়তো তার জন্য কল্যাণকর নয়, এই দুয়া কবুল করলে উপকারের চেয়ে বান্দার অপাকারই হবে। কিন্তু তার পরও আল্লাহ এত দয়ালু যে তিনি বান্দার এই দুয়ার বিনিময়ে তার জন্য অন্য কিছু নির্ধারন করে রাখেন (২,৩)।

যাইহোক কথা আর না বাড়িয়ে (দুয়ার আরও অনেক উপকার ও গুরুত্ব রয়েছে যা নিয়ে বিশাল বিশাল লেকচার ইন্টারনেটে আছে) আমি এখানে হাদীসের কিছু নির্বাচিত দোয়া তুলে ধরতে চাই, যেগুলো আমি বেশ কিছুদিন আগে কোন একটা লেকচার থেকে কপি করেছিলাম। মহানদী (স) আল্লাহর এত প্রিয় বান্দা হয়ে ও সারাক্ষন দোয়া করতেন মহান আল্লাহর দরবারে। প্রত্যেকটা দোয়া পড়ে একটু চিন্তা করলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে এই দুয়াগুলোর গভীরতা কতটুকু এবং কত সুন্দর একএকটি দোয়া। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিয়মিত তাঁর কাছে দুয়া করার তওফিক দিন। আমিন।
----------------

(১) হে আল্লাহ, দৃষ্টির অন্তরালবর্তী ও দৃষ্টিগ্রাহ্য সকল বিষয়ে যেন তোমাকে ভয় করতে পারি হে আল্লাহ, যদি জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয়, তাহলে আমাকে জীবিত রাখ, আর যদি মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে আমাকে মৃত্যু দান কর। সেই তাওফিক প্রার্থনা করি। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি সত্য কথা বলার তাওফিক, খুশি ও ক্রোধ উভয় অবস্থাতেই। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি মিতব্যয়িতার, সচ্ছল-অসচ্ছল উভয়াবস্থায়। প্রার্থনা করি এমন নেয়ামত যা শেষ হবার নয়। প্রার্থনা করি যা চক্ষু জুড়াবে অনিঃশেষভাবে। আমি তোমার নিকট চাই তকদিরের প্রতি সন্তুষ্টি। আমি তোমার নিকট চাই মৃত্যুর পর সুখময় জীবন। আমি তোমার নিকট কামনা করি তোমাকে দেখার তৃপ্তি, আমি কামনা করি তোমার সহিত সাক্ষাৎ লাভের আগ্রহ-ব্যাকুলতা যা লাভ করলে আমাকে স্পর্শ করবে না কোন অনিষ্ট, আর আমাকে সম্মুখীন হতে হবে না এমন কোন ফেৎনার যা আমাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে। হে আল্লাহ, তুমি আমাদেরকে ঈমানের অলংকার দ্বারা বিভূষিত কর আর আমাদেরকে বানাও পথ প্রদর্শক ও হেদায়েতের পথিক।
(২) হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রভু তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ আর আমি হচ্ছি তোমার বান্দা এবং আমি আমার সাধ্য-মত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করি। আমার প্রতি তোমার নিয়ামতের স্বীকৃতি প্রদান করছি, আর আমি আমার গুনাহ-খাতা স্বীকৃতি করছি। অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও নিশ্চয়ই তুমি ভিন্ন আর কেউ গুনাহ মার্জনাকারী নেই।
(৩) হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি পদস্খলন অথবা পদস্খলিত হওয়া থেকে। পথ হারিয়ে ফেলা অথবা অন্য কর্তৃক পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে। কারও উপর জুলুম করা থেকে অথবা কারো নির্যাতিত হওয়া থেকে। কারও সাথে মূর্খতা-পূর্ণ আচরণ করা থেকে অথবা অন্যের মূর্খতা-জনিত আচরণে আক্রান্ত হওয়া থেকে।
(৪) হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট উপকারী বিদ্যা, গ্রহণযোগ্য আমল এবং পবিত্র জীবিকা প্রার্থনা করি।
(৫) হে আল্লাহ! তোমার জিকির, তোমার শুকরিয়া জ্ঞাপন করার এবং তোমার ইবাদত সঠিক ও সুন্দরভাবে সম্পাদন করার কাজে আমাকে সহায়তা কর
(৬) আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা‘বুদ নেই। তিনি এক তাঁর কোন শরিক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা প্রদান কর তা বাধা দেয়ার কেহই নেই, আর তুমি যা দেবে না তা দেয়ার মত কেহ নেই। তোমার গজব হতে কোন বিত্তশালী বা পদমর্যাদার অধিকারীকে তার ধন-সম্পদ বা পদমর্যাদা রক্ষা করতে পারে না।
(৭) হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাচ্ছি কৃপণতা থেকে এবং আশ্রয় চাচ্ছি কাপুরুষতা থেকে। আর আশ্রয় চাচ্ছি বার্ধক্যের চরম পর্যায় থেকে। দুনিয়ার ফিতনা-ফাসাদ ও কবরের আজাব হতে।
(৮) হে আল্লাহ, আমি আমার নিজের উপর অনেক বেশি জুলুম করেছি আর তুমি ছাড়া গুনাহ্‌সমূহ কেহই মাফ করতে পারে না। সুতরাং তুমি তোমার নিজ গুনে মার্জনা করে দাও এবং আমার প্রতি তুমি রহম কর। তুমি তো মার্জনাকারী ও দয়ালু।
(৯) হে আল্লাহ! আমার অন্তরে তাকওয়া প্রদান কর, তাকে পবিত্র কর। তুমি তার উত্তম পবিত্রকারী, তার অভিভাবক ও মনিব।
(১০) হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা কামনা করছি। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আমার দ্বীন ও দুনিয়া, পরিবার ও সম্পদ বিষয়ে ক্ষমা ও নিরাপত্তা কামনা করছি। হে আল্লাহ! তুমি গোপন ব্যাপারগুলো আচ্ছাদিত করে রাখো। ভয়-ভীতি থেকে আমাকে নিরাপত্তা দাও। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে নিরাপদে রাখ, আমার সম্মুখের বিপদ হতে, পশ্চাতের বিপদ হতে, ডানের বিপদ হতে, বামের বিপদ হতে আর ঊর্ধ্ব দেশের গজব হতে। তোমার মহত্ত্বের দোহাই দিয়ে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি আমার নিম্নদেশ হতে আগত বিপদে আকস্মিক মৃত্যু হতে।
(১১) হে আল্লাহ! তুমি ঈমানকে আমাদের নিকট সুপ্রিয় করে দাও, এবং তা আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দাও। কুফর, অবাধ্যতা ও পাপাচারকে আমাদের অন্তরে ঘৃণিত করে দাও, আর আমাদেরকে হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও। হে আল্লাহ! আমাদেরকে মুসলমান হিসেবে মৃত্যু দাও। আমাদের মুসলমান হিসেবে বাঁচিয়ে রাখ। লাঞ্ছিত ও বিপর্যস্ত না করে আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের সাথে সম্পৃক্ত কর।
(১২) হে আল্লাহ! তোমারই রহমতের আকাঙ্ক্ষী আমি। সুতরাং এক পলের জন্যও তুমি আমাকে আমার নিজের আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়ো না। তুমি আমার সমস্ত বিষয় সুন্দর করে দাও। তুমি ভিন্ন প্রকৃত কোন মা‘বুদ নেই।
(১৩) আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা‘বুদ নেই, যিনি সহনশীল, মহীয়ান। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা‘বুদ নেই, যিনি সুমহান আরশের প্রতিপালক। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা‘বুদ নেই। তিনি আকাশমণ্ডলীর প্রতিপালক, জমিনের প্রতিপালক এবং সুমহান আরশের প্রতিপালক।
(১৪) হে আল্লাহ! তুমিই প্রথম, তোমার পূর্বে কিছু নেই। তুমিই সর্বশেষ, তোমার পরে কিছু নেই। তুমি প্রকাশ্য, তোমার উপরে কিছুই নেই। তুমি অপ্রকাশ্য, তোমার চেয়ে নিকটবর্তী কিছুই নেই; তুমি আমার ঋণ পরিশোধ করে দাও, আমাকে দারিদ্র্যমুক্ত করে সম্পদশালী বানাও।
(১৫) হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য। তুমি আকাশমণ্ডলী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার সকল কিছুর নূর। সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্যই। তুমি আকাশমণ্ডলী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার সকল কিছুর রক্ষক। সকল প্রশংসা তোমার, তুমি আকাশমণ্ডলী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার সকল কিছুর প্রতিপালক। তুমি সত্য, তোমার প্রতিশ্রুতি সত্য। তোমার বাণী সত্য। তোমার দর্শন লাভ সত্য। জান্নাত সত্য। জাহান্নাম সত্য। নবিগণ সত্য। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য। কেয়ামত সত্য।
اَ
(১৬) হে আল্লাহ! তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। তোমার উপর ভরসা করলাম। তোমার প্রতি ঈমান আনলাম। তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম। তোমাকে কেন্দ্র করে বিবাদে লিপ্ত হলাম। তোমার নিকট বিচার ফয়সালা সোপর্দ করলাম। অতঃপর আমাকে ক্ষমা কর, যা আগে করেছি এবং যা পরে করব, যা প্রকাশ্যে করেছি এবং যা গোপনে করেছি। তুমিই আমার মা‘বুদ। তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোন মা‘বুদ নেই।
(১৭) হে আল্লাহ! তুমি তোমার হারাম বস্তু হতে বাঁচিয়ে তোমার হালাল বস্তু দিয়ে আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দাও। এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা সমৃদ্ধ করে তুমি ভিন্ন অন্য সবার থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দাও।
(১৮) হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় চাচ্ছি জাহান্নামের আজাব হতে, কবরের আজাব হতে, মসিহ দজ্জালের ফিতনা হতে এবং জীবন মৃত্যুর ফেনা হতে।.
(১৯) হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি, আমি সাক্ষ্য দিই যে- তুমিই আল্লাহ। তুমি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তুমি একক অদ্বিতীয়। সকল কিছুই যার মুখাপেক্ষী। যিনি জন্ম দেন নাই এবং জন্ম নেন নাই এবং যার সমকক্ষ কেউ নেই।
(২০) হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি বিপদের কষ্ট, নিয়তির অমঙ্গল, দুর্ভাগ্যের স্পর্শ ও বিপদে শক্রর উপহাস হতে।
(২১) হে আল্লাহ! আমি সকল বিরোধ, মুনাফেকি এবং বদ চরিত্র হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
(২২) হে আল্লাহ! আমার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দাও ছোট গুনাহ, বড় গুনাহ, প্রকাশ্য ও গোপন গুনাহ, আগের গুনাহ, পরের গুনাহ।
(২৩) হে আল্লাহ! তুমি যাদেরকে হেদায়েত করেছ, আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যাদেরকে নিরাপদ রেখেছ আমাকে তাদের দলভুক্ত কর। তুমি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, আমাকে তাদের দলভুক্ত করো। তুমি আমাকে যা দিয়েছ তাতে বরকত দাও। তুমি যে অমঙ্গল নির্দিষ্ট করেছ তা হতে আমাকে রক্ষা করো। কারণ তুমিই তো ভাগ্য নির্ধারণ কর। তোমার উপরে তো কেউ ভাগ্য নির্ধারণ করার নেই। তুমি যার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, সে কোন দিন অপমানিত হবে না এবং তুমি যার সাথে শত্রুতা করেছ, সে কখনো সম্মানিত হতে পারে না। হে আমাদের প্রভু! তুমি বরকতপূর্ণ ও সুমহান।
(২৪) হে আল্লাহ! তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। তোমার প্রতি ঈমান আনলাম। তোমার উপর ভরসা করলাম। তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম। তোমার উদ্দেশ্যে বিবাদে লিপ্ত হলাম। তোমার নিকট বিচার ফয়সালার ভার সোপর্দ করলাম। অতঃপর তুমি আমাকে ক্ষমা কর, যা আগে করেছি ও পরে করব, যা প্রকাশ্যে করেছি ও যা গোপনে করেছি। এবং যে বিষয়ে আমার থেকেও তুমি অধিক অবহিত আছ। তুমিই আমার মা’বুদ তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই।
(২৫) হে আল্লাহ! তুমি আমার অন্তর আলোকময় কর। আমার কর্ণ আলোকময় কর। আমার চোখ জ্যোতির্ময় কর। আমার সম্মুখ আলোকময় কর। আমার পশ্চাৎ আলোকময় কর। আমার ডানে, আমার বামে, আমার সামনে, আমার পিছনে জ্যোতি ছড়িয়ে দাও। আমার নূরকে তুমি বৃহদাকার করে দাও। হে বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক।
(২৬) হে আল্লাহ! তোমারই রহমতের আকাঙ্ক্ষী আমি, সুতরাং তুমি এক পলক পরিমাণ সময়ের জন্যও আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়ো না। তুমি আমার সমস্ত বিষয় সুন্দর করে দাও। তুমি ভিন্ন প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই।
(২৭) হে আল্লাহ! আমি তোমার বান্দা, তোমারই এক বান্দার পুত্র আর তোমার এক বান্দির পুত্র। আমার ভাগ্য তোমারই হাতে। আমার উপর তোমার নির্দেশ কার্যকর। আমার প্রতি তোমার ফয়সালা ইনসাফপূর্ণ। আমি সেই সমস্ত নামের প্রত্যেকটির বদৌলতে, যে নাম তুমি নিজের জন্য নিজে রেখেছ, অথবা তোমার যে নাম তুমি তোমার কিতাবে নাজিল করেছ, অথবা তোমার সৃষ্ট জীবের মধ্যে কাউকে যে নাম শিখিয়েছ, অথবা স্বীয় ইলমের ভাণ্ডারে নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছ, তোমার নিকট এই কাতর প্রার্থনা জানাই-তুমি কুরআন মাজিদকে আমার হৃদয়ের প্রশান্তি, আমার বক্ষের জ্যোতি, আমার চিন্তা-ভাবনার অপসারণকারী এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিদূরণকারীতে পরিণত কর।
(২৮) হে অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী! তোমার দ্বীনের উপর আমার অন্তরকে অবিচল রাখ।
(২৯) হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কল্যাণময় সকল বিষয় কামনা করি, কল্যাণের আগত ও অনাগত বিষয়গুলো; যা আমি জানতে পেরেছি এবং যা আমি
জানতে পারিনি। আর আমি তোমার আশ্রয় কামনা করছি সকল প্রকার অনিষ্ট হতে, অনিষ্টের আগত ও অনাগত সকল বিষয় হতে, যা আমি জানতে পেরেছি এবং যা আমি জানতে পারিনি।
(৩০) হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় কামনা করছি অসার জ্ঞান হতে, অশ্রুত দো’আ হতে, এবং এমন প্রবৃত্তি হতে যা পরিতৃপ্ত হয় না,এমন অন্তর হতে যা বিগলিত হয় না।
(৩১) হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সকল ঘৃণিত স্বভাব, অবাঞ্ছিত আচরণ, কুপ্রবৃত্তির তাড়না ও রোগ-ব্যাধি হতে দূরে রাখ।
(৩২) হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে হেদায়েত, তাকওয়া, চারিত্রিক পবিত্রতা, সম্পদের প্রাচুর্য এবং সে কাজ করার সামর্থ্য কামনা করি যা তুমি পছন্দ কর ও যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও।
(৩৩) হে আল্লাহ! আমাকে ইসলাম সহকারে দাঁড়ানো অবস্থায় এবং বসা অবস্থায় তথা সর্বাবস্থায় হেফাজত কর। আমার ক্ষেত্রে আমার কোন শত্রু, আমার কোন নিন্দুক বা হিংসুক খুশি হয়ে উপহাস করতে পারে এমন কোন কাজ করনা।
(৩৪) হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কামনা করছি সেসব কল্যাণ ও মঙ্গল যার ভাণ্ডার তোমার হাতে। আর তোমার কাছে আশ্রয় কামনা করছি সেসব অনিষ্ট ও ক্ষতি হতে, যার ভাণ্ডারও তোমার হাতে।
(৩৫) হে আমাদের রব! তুমি আমাদিগকে দুনিয়া ও আখেরাতে মঙ্গল দান কর। আর জাহান্নামের শাস্তি হতে আমাদের রক্ষা কর।
_____________
১.নাসায়ি : ৫৪/৩
২.বোখারি : ৫৮৩১
৩.নাসায়ি : ৫৩৯১
৪.ইবনে মাজা : ৯১৫
৫.হাকিম : ৪৯৯/১
৬.বোখারি : ৭৯৯
৭.বোখারি : ৫৮৮৮
৮.বোখারি : ৫৮৫১
৯.মুসলিম : ২০৮৮/৪
১০.আবু দাউদ : ৪৪১২
১১.আহমদ : ১৪৯৪৫
১২.আবু দাউদ : ৪৪২৬
১৩.আহমদ : ৩২৮৬
১৪.মুসলিম : ৪৮৮৮
১৫.বোখারি : ৫৮৪২
১৬.বোখারি : ৫৮৪৩
১৭.তিরমিজি : ৩৪৮৬
১৮.মুসলিম : ৯৩০
১৯.তিরমিযি : ৩৩৯৭
২০.বোখারি : ৫৮৭১
২১.বোখারি : ৫৩৭৬
২২.মুসলিম : ৭৪৫
২৩.তিরমিযি : ৪২৬
২৪.বোখারি : ৫৮৪২
২৫.মুসলিম : ১২৭৯
২৬.আবু দাউদ : ৪৪২৬
২৭.আহমদ : ৩৫২৮
২৮.তিরমিযি : ৩৪৪৪
২৯.ইবনে মাজা : ৩৮৩৬
৩০.মুসলিম : ৪৮৯৯
৩১.তিরমিযি : ৩৫১৫
৩২.মুসলিম : ৪৮৯৮
৩৩.সহিহ জামেউস সগীর : ১২৬০
৩৪.বোখারি : ১৬৩/৭


২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×