somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“ভ্রমণ বাংলাদেশ ট্র্যাভেল লাইব্রেরীর”--- যাত্রা শুরু হল

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাত্রা শুরু হল – “ভ্রমণ বাংলাদেশ ট্র্যাভেল লাইব্রেরীর”---

'অর্ধেক জীবন' বইতে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন - 'যে পৃথিবীতে জন্মেছি তাকে পুরোপুরি দেখব না?'। সত্যিতো, একজন মানুষের কি সাধ জাগতে পারে না এই বসুন্ধরার পুরো রূপের সুধা পান করতে। কিন্তু সাধ থাকলেই তো সব সময় তা পূরণ হয় না। এমনিতেই কি আর বিজ্ঞাপনের ভাষায় বলা হয়, “সাধ ও সাধ্যর অপূর্ব সমন্বয়”। তো ভ্রমণপ্রিয় মানুষ যারা, তারা নিজের চোখে যেমন পৃথিবীটাকে দেখতে পারদর্শী, তেমনি তার সাধ্যর বাইরের ভুবন তারা দেখতে উদগ্রীব অন্য পর্যটকের দর্পণে। আর তাইতো যুগে যুগে ভ্রমণসাহিত্য থেকে শুরু করে হালের অনলাইনে ট্র্যাভেল আর্টিকেল ভ্রমণ পিয়াসীদের তৃষ্ণা মেটানোর অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে। তো ভ্রমণ বিষয়ক সকল সাহিত্য, প্রবন্ধ, ফিচার সহ আরও বিভিন্ন মাধ্যমে সংরক্ষিত তথ্যাদি নিয়ে যে বিষয়ভিত্তিক লাইব্রেরী তথা পাঠাগার, তা এক নামে ভ্রমণপ্রিয় মানুষের নিকট পরিচিত “ট্র্যাভেল লাইব্রেরী” নামে।

বিশ্বের প্রথম কার্যকর ট্র্যাভেল লাইব্রেরীর কথা ভাবতে গেলে প্রথমেই যার নাম সামনে আসে তিনি ছিলেন স্কটিশ স্যামুয়েল ব্রাউন। ১৮১৭ সালে স্কটল্যান্ডের লোথাইন নামক স্থানে তিনি বিশ্বের প্রথম ট্র্যাভেল লাইব্রেরী’র সূচনা করেন। তবে বিশ্বের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ট্র্যাভেল লাইব্রেরী ১৮৬০ সালে মেলবোর্ন পাবলিক লাইব্রেরী দ্বারা আরম্ভ হয়। ১৮৭৮ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ঠিক তার পরপরই ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি তাদের এক্সটেনশন কোর্সের জন্য ছোট্ট পরিসরে ট্র্যাভেল লাইব্রেরী’র কার্যক্রম শুরু করে।
তো আমাদের এই উপমহাদেশে তেমন একটা পৃথক ট্র্যাভেল লাইব্রেরী’র কথা জানা যায়না। তবে উপমহাদেশে প্রায় সকল লাইব্রেরীতে ট্র্যাভেল বিষয়ক আলাদা ক্যাটাগরিতে বই-পুস্তকাদি সংরক্ষণের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে যুগে যুগে খুব শৌখিন এবং আগ্রহী ভ্রমণপিয়াসী মানুষ তাদের ব্যাক্তিগত উদ্যোগে নিজস্ব পরিমণ্ডলে ব্যাক্তিগত ট্র্যাভেল লাইব্রেরী’র আদলে সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে ‘ট্র্যাভেল’ একটি ক্রেজ। গত এক দশকে প্রচুর ছেলেমেয়ে এই বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারা ছুটে বেড়িয়েছে দেশের আনাচে কানাচে থেকে শুরু করে মেরুদেশ পর্যন্ত। আর এই ট্র্যাভেল ক্রেজ থেকে জন্ম নেয়া প্রায় ৩০টি’রও বেশী ট্র্যাভেল রিলেটেড সংগঠন বর্তমানে একটিভ রয়েছে বাংলাদেশে। আর এই সংগঠনগুলোর মধ্যে সেই ১৯৯৯ সাল থেকে যে সংগঠনটি অগ্রজ হিসেবে নিরলসভাবে ভ্রমণ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সেটি হল “ভ্রমণ বাংলাদেশ”। তাদের পথচলার ১৫তম বর্ষে এসে তারা বাংলাদেশে প্রথমবারের মত শুরু করতে যাচ্ছে “ভ্রমণ বাংলাদেশ ট্র্যাভেল লাইব্রেরী”। আসছে বিজয় দিবসে সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে ছোট্ট পরিসরে যাত্রা শুরু করবে এই ট্র্যাভেল লাইব্রেরীটি। এরই মধ্যে প্রায় শতাধিক ভ্রমণ সাহিত্য, গাইড, ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টারি তাদের সংগ্রহশালায় সংযোজিত হয়েছে।

ভ্রমণ বাংলাদেশের সাধারন সম্পাদক, রবিউল হাসান খান (মনা) জানান, “অনেক সময় প্রয়োজনীয় তথ্য বা ভ্রমণ বিষয়ক কোন লেখার জন্য আমাদের বহু উৎসে দৌড়োতে হত। তখন প্রায়ই মনে হত যদি একটি ট্র্যাভেল লাইব্রেরী থাকতো; যেখানে হতে আমি পেয়ে যেতাম আমার কাঙ্ক্ষিত তথ্য। আর এই ভাবনা থেকেই আমাদের এই ট্র্যাভেল লাইব্রেরী। যদিও বর্তমানে আমাদের সংগ্রহশালা সীমিত, ভবিষ্যতে এর কলেবর আরও ব্যাপ্তি পাবে ইনশাল্লাহ”। বর্তমানে ভ্রমণ বাংলাদেশের সদস্যরা লাইব্রেরী’র সকল কাজ গুছিয়ে নিয়ে এসেছেন, তাদের অফিসে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। ভ্রমণ বাংলাদেশের সভাপতি, আরশাদ হোসেন টুটুল বলেন, “আমাদের এই ট্র্যাভেল লাইব্রেরী সকলের জন্য সবসময় উম্মুক্ত থাকবে।

আমরা চেষ্টা করেছি বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষার ভ্রমণ সাহিত্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভ্রমণ গাইড, ফিচার, ডকুমেন্টারি ইত্যাদি এই লাইব্রেরীতে সংযোজন করতে। সাথে থাকছে “ন্যাশনাল জিওগ্রাফী ট্র্যাভেল”, “লোনলি প্ল্যানেট” প্রভৃতি বিখ্যাত ট্র্যাভেল ম্যাগাজিনগুলোর পুরোনো সংখ্যার সাথে সাথে প্রতিটি নতুন সংখ্যা।”

বিজয় দিবসে যাত্রা শুরু করা ভ্রমণ বাংলাদেশ’র এই ট্র্যাভেল লাইব্রেরী আমাদের দেশের ভ্রমণপিয়াসীদের মনখোরাক জোগাতে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে আশা করি।

ভ্রমণ বাংলাদেশের ঠিকানা –
১১৩/১, লালবাগ রোড, ঢাকা-১২১১
০১৮২২-৬১১-৪৮৮
(খাঁন মোহাম্মদ মৃধা মসজিদের সংলগ্ন – লালবাগ কেল্লা হতে পশ্চিমে)।



৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×