কোন এক বদ্ধ গুহায় তিনটা মাছি বসে ছিল। একটা ধূসর মাছি, একটা কালো মাছি আরেকটা নীলচে রঙের লালমুখো ভোমামাছি। ধরা যাক, প্রথম মাছিটার নাম হতাশা, দ্বিতীয়টার নাম বিভ্রান্তি, আর তৃতীয়টার নাম রাগ।
তিন মাছি বসে থাকে অবিরাম। সূর্য ওঠে, অস্ত যায়; ওরা পাখা নাড়ায়, তবে জায়গা বদলায় না। গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসে থাকে "মাছিত্রয়", হয়তোবা ভুলে যায় নিজেদের আলাদা সত্বা।
এরপর কোত্থেকে যেন উড়ে আসে এক জোনাকি পোকা, কালো মাছি উড়ে যায়। মিটিমিটি আলোতে কিছুটা হলেও উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে বদ্ধ স্থান।
তারপর হাজির হয় এক রঙিন প্রজাপতি, উড়ে যায় নীলরঙা লালমুখো ভোমামাছি। জোনাকির আলোতে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে প্রজাপতির পাখার রঙ। অথচ এই আলোর অভাবেই হয়তো সে থেকে যেত অনাবৃষ্কিত! আলো আর রঙের বন্ধনে, ডানায় ছড়িয়ে থাকা জীবনের স্পন্দনে অনেকটা পরিবর্তন ঘটে শ্যাওলা পড়া স্যাঁতসেঁতে গুহার অভ্যন্তরে।
ধূসর মাছিটা কিন্তু ঠায় বসে থাকে। ওর ছোট্ট সরু অথচ বিষাক্ত হুলটা সময়ের সাথে সাথে বর্ষীয়ান অশ্বথু বৃক্ষের মতো অভেদ্য শেকড় ছড়িয়ে দিয়েছে গুহার স্যাঁতসেঁতে মাটির নীচে। অজস্র শাখা প্রশাখার জাল ছড়িয়ে সুনিশ্চিত করেছে নিজের অবস্থান: অটল, চিরন্তন, অনড়, চিরঞ্জীব।
জোনাকির আলো নিভে যায়, ঝরে পড়ে প্রজাপতির রঙিন পাখা। কেঁচো, জোক আর শূককীটের দল বেরিয়ে আসে মাটি ফুঁড়ে। সেই সাথে আবার এসে হাজির হয় কালোমাছি আর নীলচে বর্ণের লালমুখো ভোমামাছি।
এরপর, তিন মাছি বসে থাকে অবিরাম। তিনজনের হুল মিলেমিশে ছড়িয়ে যায় গভীর অন্তরালে...
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৩৪