বয়সের সাথে সাথে আবেগ-অনুভূতির সংজ্ঞা পাল্টে যায়। খুব ছোটবেলায় আনন্দ বলতে কী বুঝতাম? একটা পনেরো টাকা দামের ডায়মন্ড কমিক্স অথবা কমলার ছবি দেয়া মিমি চকলেট? চিপসের প্যাকেটের ট্যাজো অথবা জ্যুসের সাথে ফ্রি পাওয়া স্টিকার। কখনও চোখেমুখে লাল-নীল লাইট জ্বলা রোবট অথবা সাইরেন দেয়া খেলনা মোটরসাইকেল; এইতো!
ছোটমানুষের ডিপ্রেশন থাকে না, কথাটা ভুল। অবশ্যই থাকে। স্পষ্ট মনে আছে, ক্লাস টু-তে পড়ার সময় একদিন আমাদের স্কুলের হেডস্যার বলেছিলেন: ফাইনাল পরীক্ষার আগে এক সপ্তাহে তিনবার যার রোল ব্ল্যাকবোর্ডে উঠবে, তাকে টিসি দেয়া হবে। অতি সতর্কে থেকেও কীভাবে কীভাবে যেন সেই ঘটনাই ঘটেছিল। টিসি জিনিসটা তখন সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচ্য। সঙ্গত কারণেই, সেই দুশ্চিন্তা থেকে কয়েক রাতের ডিপ্রেশন...
সংজ্ঞা বদলেছে; বদলেছে অনুভূতির ধরণ, আবেগের গাম্ভীর্য। এখনকার আনন্দগুলো বিশুদ্ধ হয় না, উদ্দেশ্যবিহীন হয় না, সস্তা দামে তা কেনাও যায় না। সপ্তাহ ফুরোলেই মুছে যায় না এখনকার বিষাদ। পাতালপুরীর অন্ধকারে একটু একটু করে হারিয়ে যাবার মতো নির্মম নিশ্চিত পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়। হাইড্রোলিক প্রেসের আকার ধারণ করে পিষে ফেলে বারবার।
আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখি নির্নিমেষ...
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৩