মানুষের জীবন আসলে উল্টা। সারাটা জীবন ধাপে ধাপে প্রচুর কষ্ট নিয়ে, দায় দায়িত্ব নিয়ে শেষমেশ আমরা কি পাই?
মৃত্যু।।
হোয়াট দ্যা ফাক!! এর থেকে আনফেয়ার আর কিছু হতে পারে না।
জীবনের শুরুতে কোন প্রেশার নাই, দায়িত্ব নাই, আস্তে আস্তে সেটা বাড়তে থাকে- এবং কখনো শেষ হয় না । তাহলে ওই ছোটবেলার পরের সময়টা বেঁচে থাকি কেন আমরা? আই থিঙ্ক এটা জাস্ট স্রোতের সাথে গা ভাসায় দেয়া। সবাই কষ্ট করে বেঁচে থাকে- তাই আমাকেও থাকতে হবে টাইপ একটা ব্যাপার। যৌক্তিক কোন কারন আসলে নাই ৪০ বছরের পর কষ্ট করে বেঁচে থাকার, এতটা সংগ্রাম করার।
জীবনের ধারাটা উল্টো হলে সেটা আসলে কিছু সেন্স মেক করতো। যৌক্তিক প্রেষণা থাকতো বেঁচে থাকার পেছনে। তারুন্যের লোভ, মাথা থেকে চিন্তা, প্রেশার, দায়িত্ব চলে যাওয়ার লোভ- এসব বেশ ভালো মোটিভেশন হতে পারত তখন জীবন কাটানোর পেছনে।
মানুষের জীবনের শুরুটাই হবে মৃত্যু দিয়ে।
মেইন ঝামেলা শ্যাষ। এরপর বৃদ্ধাশ্রমে ভগ্ন শরীর নিয়ে কষ্ট করে করে আমরা ১০ বছর ধরে শরীরটাকে একটু লাইনে আনতাম। তারপর ছাড়া পেয়ে যেতাম কর্মক্ষেত্রে। সেখানে ২৫ বছর তিলে তিলে পৃথিবীকে কিছু একটা দেয়ার চেষ্টা করতাম। সাথে জমতো কিছু টাকা পয়সা যা দিয়ে কম বয়সে ফুর্তি করা যাবে।
বয়স ২৫ এর দিকে আসলেই কেল্লা ফতে। অনেক কাজ হয়েছে। এখন সময় নিজের চিন্তার জগতকে গড়ার, এখন সময় উপভোগ করার। এতদিনের কাজের প্রতিদান আমরা পাওয়া শুরু করবো। শুরুতেই আমরা ভার্সিটিতে ঢুকবো। "ক্যারিয়ারের" জন্য না। সেটা আমাদের শেষ। আমরা ওখানে ফিলোসফি পড়বো, ছবি আঁকবো, শখের বশে রোবট বানাবো, মাতাল হয়ে অবাধ যৌনতায় জড়াবো, পিঙ্ক ফ্লয়েডের গান শুনবো, নেশা করবো - স্বাস্থ্যের দিকে তাকানোর তো আর কিছু নেই- স্বাস্থ্য দিন দিন ভালোই হবে। সো, হু কেয়ার্স? গত ২৫ বছরের চাপ আর পরিশ্রমকে গুড়িয়ে দেবে আমাদের ভার্সিটি লাইফের আনন্দ আর সুকুমার বৃত্তির চর্চা। "ফিউচার", "ক্যারিয়ার" এসব বালছাল নিয়ে ভাবার আর কোন দরকার থাকবে না তখন। শুধু চিল... আর চিল... ভার্সিটি শেষে আমরা কলেজে যাবো- চিল চলবেই।
এভাবে ৮-১০ বছর কাটালে মনে হয় না আর নিজেকে কন্ট্রোল করার মত অবস্থা আর থাকবে আমাদের। পারমানেন্ট মাতাল হবার একটা চান্সও আছে। (ইয়েসসসস...... ) তাই আমাদেরকে এসাইন করা হবে একজোড়া বাবা-মার আন্ডারে। তারা আমাদেরকে দেখে রাখবে- ভালবাসা দিয়ে ভুলিয়ে রাখবে আমাদের ফেলে আসা দিনগুলোকে। শেষ দিনগুলো আমরা কাটাবো অর্থহীন খেলাধুলা করে আর কার্টুন দেখে।
তারপর একসময় আমাদের স্থান হবে মায়ের পেটে- সেখানে আমরা দুলতে থাকবো ১০টি মাস- অন্ধকার একটা উষ্ণ তরলে। তৈরী হবে পরাবাস্তব একটা সম্মোহন। আমরা তৈরী হব অস্তিত্বহীনতার জন্য।
তারপর একদিন সবকিছু শেষ হয়ে যাবে তীব্র একটা অর্গাজমের মধ্যে দিয়ে...
আ......হ...
তারপর সব শেষ। উই উইল এন্ড উইথ আ ব্লাস্ট- লিটারেলি।
জীবনের প্রতিটি ধাপে আরো বেশী প্রশান্তি, মুক্তি এবং সবশেষে আক্ষরিক অর্থেই একটা "জীবন বিদারী" অর্গাজমের সুখের জন্য বেঁচে থাকাটা কিন্তু আসে... সবসময় আসে...
"জর্জ কারলিনের একটা কোটেশন এটা। বাংলায় লেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। "
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:১৩