somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃত্ত

২৫ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একদিন একটা অ্যামিবা দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেল। জমজ ভাই হলেও দুজনের স্বপ্ন ছিল এক্কেবারে বিপরীতমুখী। একজনের ইচ্ছা সবথেকে "সরল" জীবনের স্বাদ নেয়া। অপরজনের ইচ্ছা সবথেকে জটিল সত্ত্বাটার খোঁজ করা। তো যেই স্বপ্ন সেই কাজ। প্রথম ভাই নিজেকে ভেঙ্গে ফেলতে থাকলো- ভেঙ্গে প্রথমে বিশাল চেইনের লম্বা লম্বা জৈব অণুতে পরিণত হল। এরপর হল পিচ্চি পিচ্চি পরমাণু। এরপর সবশেষে এক মৌলিক কণিকা হল সে- যার নাম ইলেকট্রন। কিন্তু এরপর? সে আর নিজেকে ভাঙ্গতে পারলো না। কিন্তু তারপরও সে মেনে চলতে থাকলো বেশ কিছু নিয়মকানুন- সে "পজিটিভ চার্জে" আকৃষ্ট হতে থাকলো, ঘুড়তে থাকলো প্রোটনের চারিদিকে। কিন্তু কেন?? কেন সে পজিটিভ চার্জ দেখলে ঠিক থাকতে পারে না? কিভাবে সে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জই বহন করে? এই "চার্জ"টাই বা কি? এসব তো মোটেও "সরল" কিছু নয়। এতটা সরল হয়েও কেন এতটা ধাঁধাময় তার সত্ত্বাটা ? ইলেক্ট্রন কিছুই বুঝতে পারলো না।
অপর ভাই বিবর্তনের মারপ্যাঁচে জটিল থেকে ক্রমশ জটিল হতে থাকলো। শুরুতে বহুকোষী, তারপর মাছ-গিরিগিটি-ঘোড়া পেরিয়ে সে পরিণত হল একটা মানুষে-এ গ্রহের সবথেকে কমপ্লেক্স সত্ত্বা। সে আরো জটিল হতে চাইলো- কিন্তু উত্তর পেলনা কিছু প্রশ্নের- দুই চোখের পেছনে আপাত বসে বসে পৃথিবীকে দেখতে থাকা এই "আমি"টা আসলে কি? তন্নতন্ন করে সে তার মস্তিষ্ককে খুঁজেও কোথাও এই "আমি"র কোন চিহ্ন পেল না। মেলাতে পারলো না অনুভূতির মত একটা অবস্তুগত বিষয়ের সাথে বস্তুগত মস্তিষ্কের কোন সমীকরণই... কনশাসনেস কি? এটা থাকেই বা কোথায়? বস্তুর ভেতরে থেকেও কিভাবে অবস্তুগত হয়ে যায় একটা সত্ত্বা ? মানুষটা বুঝতে পারলো না...
ওদিকে কে যেন ইলেকট্রনটাকে বলল সবই আসলে শক্তি। সে শক্তি নিয়ে একটু পড়াশুনা করে দেখলো যে এই শক্তি বা এনার্জি একদম রুট লেভেলে শুধুই একটা গানিতিক কনসেপ্ট- সত্যিকারের ফিজিক্যাল ইন্টারপ্রিটেশনটা আসলে কেউই জানে না...
দুই ভাই যখন অস্তিত্বের চরম দুইটি বিপরীত প্রান্তে পৌঁছেও অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে তখন হুট করে একদিন একটা মিরাকল হল। প্রথম ভাই একদিন হুট করে পৃথিবীর সবথেকে সরল বস্তুটার বস্তুগত বাউন্ডারি ব্রেক করে ফেললো। এবং ঠিক সেই মুহুর্তেই অপর ভাই ভেঙে ফেললো সবথেকে জটিল বস্তু- তার মস্তিষ্কের বস্তুগত বাউন্ডারি।
ছোট ভাই ডুব দেয় বস্তুর গভীরে লুকিয়ে থাকা এক অবস্তুর জগতে। আর বড় ভাই ভেসে উঠে বস্তুর উপরে লেপ্টে থাকা আরেক অবস্তুর জগতে।
তারপর কি হল জানেন? দুই ভাই নিজেদেরকে আবিষ্কার করল নিজেদের একদম সামনাসামনি। বহু পথ ঘুরে- সম্পুর্ণ উল্টোদিকে গিয়েও তারা পৌঁছে যায় একই গন্তব্যে- এক অবস্তুর জগতে।
"আমরা কি আরো খুঁড়বো?" ছোট ভাই জিজ্ঞেস করে।
"খুঁড়ে আর লাভ কি? তা কি কখনো শেষ হবার?"
দুই ভাই হুট করে বুঝতে পারে এই ধাঁধার সমাধান শুধু একটাই- পরপস্পর মিশে যাওয়া। দুই ভাই এগিয়ে যায় পরস্পরের দিকে- একসাথে মিলেমিশে তৈরী করে অদ্ভুত একটা বৃত্ত- যে বৃত্তের কোন শেষ নেই, কোন শুরু নেই- যে বৃত্ত শুধুই পদার্থের- যার বাইরে পড়ে আছে অবস্তুগত অজানা অনির্ণেয় কোন একটা জগত... যেখানে যেতে পারে না বৃত্তের ভেতরের কোন বস্তুই... কিন্তু আটকা পড়ে থাকে তারই ভেতরে...
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:৪২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×