মোটামুটি সবাই (বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালের) গতকাল ২৫/০৪/২০১৫ তারিখের ভূমমিকম্পনের স্বিকার। যা এখন আর বলার কিছুই নেই। কেননা ভূ-কম্পনগুলো সবাই অনুভব হয়েছেন। বিশেষ করে নেপালের কাঠমন্ডুর কাছাকাছি, যেখান থেকে গতকাল ৭.৯ মাত্রার ভূ-কম্পনের উৎপত্তি ঘটেছিল সেখানে প্রায় মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছে। সেখানে চলছে হাহাকার আর কান্নার মাতম। তাছাড়া ভারত কাছাকাছি হওয়ায় সেখানেও মোটামুটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই লেখা লেখা পর্যন্ত আরো ৬.৭ মাত্রার কম্পন অনুভূত হলো। সবাই দৌড়ে ১৫ তলা থেকে নিচে নামতে নামতে কম্পন শেষ হলো। আমাদের ভাগ্যটা এতোই ভালো যে, মহান আল্লাহ তা-আলার অশেস রহমতে আমাদের প্রিয় এ দেশের তেমন কোন ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি। বৃহত্তর ভবন গুলোতে কিছুটা আতংক বিরাজ করায় কিছু হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আল্লাহ আমাদের এতোবড় বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন, এ জন্য মহান আল্লাহ কে যানাই লাখোকোটি শুকরিয়া।
কারনঃ
পৃথিবীর মাটি পর্যস্থায়ক্রমিক ভাবে স্থরে স্থরে গঠিত। মাটিতে আটকে থাকা গ্যাস, অথবা বিভিন্ন ধরণের কঠিন পদার্থ
গলে গিয়ে মাটির ভেতরের বিভিন্ন স্থরে ফাকা/গভিরতা সৃষ্টি হয়। এক সময় উক্ত গভিরতায় ক্ষয় সৃষ্টি হতে হতে বড় আকার ধারন করে। উক্ত গভীরতা ভরাটের জন্য মাটির উপরের স্থর ভেঙ্গে নিচের দিকে দাভিত হওয়ায় পৃথিবীর মাটির স্থরে কম্পন সৃষ্টি হয়। কম্পন সৃষ্টি হওয়ার নিকট বর্তি এলাকায় উক্ত কম্পন অনুভূত হয়। কম্পনের মাত্রা এবং ভূমির উপর নির্মিত স্থাপনার উপর ক্ষয় ক্ষতি হয়ে থাকে।
গত কালকে অনুভূত কম্পনই আমার জীবনের প্রথম ভূমি কম্পন অনুভুত হওয়া। জদিও গ্রামে থাকা অবস্থায় অনেক বার শুনেছি ভূমি কম্পন হয়েছে বাট কখনো অনুভুত হয়নি, শুধু পুকুরের পানিতে ঢেউ উঠতে দেখেছি। কিন্তু গত কালের অনুভূতিটা ছিলো একটু আলাদা। গতকাল ছিলো সরকারি বন্ধের দিন। তার আগেরদিন ফুফুর বাসায় গিয়েছিলাম। আমি ফুফুর বাসা রামপুরা থেকে একটি বিষেশ প্রয়োজনে মগবাজারে (বাসায়)আসি। একটু বিছানায় সুয়ে বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু যখন আমি শুয়ে ১০ মিনিট অতি্ক্রম করি ঠিক সে সময়ই। মাথায় ক্যমন জানি অনুভুত হয়। শরীর টা দোলা দেয়ার মতো লাগে। আমি উপরে ফ্যনের দিকে তাকাই এবং দেখি ফ্যনটা সমান তালে দুলছে। আমার সন্ধেহ হয় ভূমি কম্পের। আমি কনফার্ম হওয়ার জন্য আনলার দিকে তাকাই, সেখানে কাপড় গুলো ও সমান তালে দুলছে। আমার আর বুঝার বাকি রইলো না সাথে সাতে শরীরে জোড়ে জোড়ে দোলা অনুভূত হলো। দৌড়ে গেঞ্জিটা হাতে নিয়ে বাহীরে দৌর দিলাম। বাট সমস্যা বাধলো সিড়িতে সেখানে আমার আগে ফ্লাটের অন্যান্যরা দৌড়া দউরী করে নামার চেষ্টা করতেছে। আমি তো পুরাই শেষ এই অবস্থা দেখে। পুরা সিড়ি লোকজনে পরিপূর্ণ এবং জ্যামে আটকে আছে। কিছু বৃদ্ধ লোক নামার চেষ্টা করছে আর দুলছে । আমি ও নিজের জান বাচাঁনোর জন্য তাদের পাস কাটিয়ে দৌড় দিতে দিতে নিচে নেমে আসলাম । দেখলাম নিচে লোকে লোকারন্ন। কিছুক্ষন পরে জানতে পারলাম যে কম্পন শেষ আমিও অনুভূত হলাম। কিছুক্ষন পরে উপরে উঠলাম। কিন্তু এখনো আমার মনের ভেতর আতঙ্ক কাজ করতেছে। তার উপরে আবার আজকে কম্পন অনুভুত হলাম। জানিনা আল্লাহ জীবনের স্বপ্ন গুলো বাস্তবে রুপান্তর করার শুযোগ দেন কিনা !
নেপালে সরকারি হিসেব অনুযায়ী এই পর্যন্ত ১৮০০ এর মতো লোক মারা গেছে। এখনো বহু লোক চাপা পরে আছে। বহু স্থাপনা ধ্বংস স্থুপে পরিনত হয়েছে। সংস্লিষ্ট এলাকা এখন ভূতুরে এলাকায় পরিনত হয়েছে। আমরা মৃত ব্যক্তিদের আত্নার মাগফিরাত কামণা করছি। উক্ত এলাকায় সংগঠিত ধ্বংস যজ্ঞের কিছু ফটো দেয়া হলো।