somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান
চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

গডফাদার-৪৪

০৩ রা মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
জামালের ধারণা ছিল তাকে দেখে মোস্তফা সাহেব ও বেলায়েত সাহেব খুব কষ্ট পাবেন কিন্তু প্রথম সাক্ষাতেই মোস্তফা সাহেব জামালকে বুকে জড়িয়ে ধরে হাসতে হাসতে বললেন, আরে জামাল এসো ইয়াং লিডার বাইরের খবর কী বলো?
জামাল অবাক হয়ে বলল, বড়ভাই আমি হাজতে এলাম আর আপনি হাসছেন?
আরে হাসবো না তো কী করব? তুমি শুধু হাসিটাই দেখলে তোমাকে যে আমি আজ লিডার বলে ডেকেছি সেটা বুঝলে না।
না বুঝতে পারিনি।
মানে দু'একবার এরকম হাজত না খাটলে কখনো বড় লিডার হওয়া যায় না, তাই তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি একদিন বড় লিডার হবে। যাক এখন বাইরের খবর বলো।
বড়ভাই আসলে দেশের সার্বিক অবস্থা ভালো না। আমাদের শহরের অবস্থা তো আরো খারাপ। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী তো আছেই তাছাড়া বড় বড় কাজের ঠিকাদারী সব এখন তাদের হাতে। সবকিছুতেই দলীয়করণ। আমরাও একসময় ক্ষমতায় ছিলাম কিন্তু আপনারা তো এমন করেননি। কিন্তু আমরা এখন বিরোধী দল আমাদের উপর অত্যাচার, ভীতি প্রদর্শণ এবং হয়রাণীমূলক মামলা এসব চালানো হচ্ছে। এই তো সেদিনের কথা আমরা আপনাদের মুক্তির জন্য ধারাবাহিকভাবে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছিলাম। গতকাল ছিল মিছিল। ব্যাস আমাদের মিছিলের উপর হঠাৎ শুরু হলো হামলা। যে যার মতো ছুটে পালালো। মিটিং শেষে আমরা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করে পার্টি অফিস থেকে বের হওয়ামাত্র পুলিশ আমাকে এ্যারেষ্ট করে নিয়ে এলো, বলতে বলতে জামালের কন্ঠস্বর বুজে এলো।
মোস্তফা সাহেব জামালের বাহুতে হাত রেখে বললেন, ঘাবড়াবার কিছু নেই ইয়াংম্যান। কিছু হবে না, এই দু'চারদিন হাজতে থাকা আর কী? হাই কোর্ট থেকে আমাদের জামিনের জন্য চেষ্টা চলছে হয়ত শীঘ্রই জামিনে বেরিয়ে যাবো। আমরা বেরিয়ে গিয়ে তোমার মুক্তির জন্য আন্দোলন করবো। ফলে নির্যাতিত মানুষের নেতা হিসাবে তোমার নাম সবার মনের মধ্যে গেঁথে যাবে, যে কোন নির্বাচনে তুমি ভোটারদের সহানুভূতি পাবে। আর এ্যারেষ্ট হওয়া মানেই অপরাধী নয়, সবাই জানে রাজনৈতিক মামলার বেশিরভাগই হয়রাণীমূলক। রাজনৈতিক মামলায় এ্যারেষ্ট হলে মান হানি হয় না। বরং মিথ্যা মামলায় হাজত বাসের কারণ রাজনৈতিক জীবনে সফল হওয়া যায়।
জামাল মোস্তফা সাহেবের কথায় কিছুটা আশ্বস্থ হলো। সে অস্ফুটস্বরে বলল, মোস্তফা ভাই।
হ্যাঁ জামাল সারাজীবনে তো এখানে মরে পঁচবো না, বাংলাদেশ জনদরদী পার্টিও সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে না। দেখতে দেখতে দু'বছর কেটে গেল। আর দু'বছর পরই সরকার হটাও আন্দোলন শুরু হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন সম্ভব না হলেও আগামী তিন বছর পর সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হলে তখন তো নির্বাচন হবে। নির্বাচনে আগামীতে আমাদের দল ক্ষমতায় আসবে। সাহসী কর্মী এবং তোমার মতো জনপ্রিয় যুবনেতা আর বেলায়েতের মতো সহকর্মী পেলে ইনশাল্লাহ আমি এম.পি নির্বাচিত হবো। পার্টির চেয়ারম্যানের সংগে কথা হয়েছে আমি এম.পি নির্বাচিত হলেই মন্ত্রীত্ব পাবো। মন্ত্রীত্ব মানে বিরল সম্মান, সামনে পিছনে পুলিশের গাড়ি, সরকারি সিকিউরিটি, সরকারি গাড়িতে পতপত করে উড়বে ন্যাশনাল ফ্লাগ, বলতে বলতে মোস্তফা সাহেব উদাস হয়ে গেলেন।
জামাল বলল, বড়ভাই।
মোস্তফা সাহেব আবার বলতে শুরু করলেন, আর তুমি। আমি মন্ত্রী হওয়া মানে তুমি কি সেকথা অনুমান করেছ?
জামাল না বোধক মাথা ঝাকালো।
মোস্তফা সাহেব বললেন, আমি কি তোমার কোন কথা ফেলতে পারবো? আমি তো থাকবো ঢাকায়, তখন পুরো জেলায় ক্ষমতাসীন দলের লিডার হবে তুমি। আজ যারা তোমাকে দেখে নাক ছিটকায় সেদিন তারা তোমাকে দেখে স্যালুট দিবে। যে অফিসে টেণ্ডার দিয়ে তুমি কাজ পাও না সেই অফিসের কাজ তুমিই ভাগ করবে। তুমি কোটি কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করবে, অল্প দিনের মধ্যে তুমি কোটিপতি হয়ে যাবে। নেপথ্যে তুমি হবে সমস্ত জেলার লর্ড।
অনেক কষ্টের মাঝে জামাল একটা শুষ্ক হাসি হেসে বলল, বড়ভাই যেভাবে বলছেন তাতে মনে হয় আপনি মন্ত্রী হয়ে গেলেন আর আমিও জেলার লর্ড হয়ে গেলাম।
যেভাবে বলছি ঠিক সেভাবেই, নির্বাচনে জিততে পারলে আর কোন বাধা নেই এখন কাজ হলো আন্দোলন চাঙ্গা করা, জনগণের মাঝে সরকার বিরোধী মনোভাব তৈরি করা।
কিন্তু বড়ভাই আপনি, বেলায়েত ভাই এবং আমি সবাই তো এখানে আন্দোলন করবে কে?
আমাদের জামিনের ব্যবস্থা হচ্ছে খুব শীঘ্রই, বেলায়েত আর আমার জামিন হবে। আমরা জামিন পেলেই তোমার মুক্তির জন্য আন্দোলন করবো। তোমার যত তাড়াতাড়ি জামিনের ব্যবস্থা করা যায় সে ব্যবস্থা করবো। তুমি কিছু ভেবো না। পলিটিক্যাল কেইস এ সাধারণত কোন জেল-জরিমানা হয় না।
বড়ভাই বেলায়েত ভাইকে যে দেখছি না।
বেলায়েত অন্য ব্যারাকে আছে ওর সঙ্গে তোমার কোনদিন দেখা হবে না। ভাগ্যক্রমে তোমার আর আমার থাকার ব্যবস্থা একই ব্যারাকে হয়েছে তাই হয়ত তোমার সঙ্গে অনেক কথা হলো।
এমন সময় ঘণ্টা বেজে উঠল। দু'জনে জেল খানার মাঠ থেকে ব্যারাকে গিয়ে ঢুকলো।
কয়েকদিনের মধ্যে মোস্তফা সাহেব ও বেলায়েত সাহেব জামিনে বেরিয়ে গেলেন। জামাল একেবারে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ল।
কয়েকদিন আগে জামালের বাবা, মা ও অনন্যা জামালকে দেখতে এসেছিল। জহির সাহেব জামালকে তার জামিনের ব্যাপারে তার প্রচেষ্টার কথা জানালেন এবং শীঘ্রই জামিন হবে বলে জামালকে আশ্বস্থ করলেন। ফাহমিদা গ্রীলের বাইরে থেকে জামালের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, তুই খুব শুকিয়ে গেছিস্‌ বাবা, তোর জামিনের জন্য আমি তোর বাবাকে বলেছি। তোর বাবা ঢাকা গিয়ে বড় ব্যারিষ্টারের সঙ্গে আলাপ করে এসেছে কাল আবার যাবে, তুই কিছু ভাবিস্‌ না বাবা। এবার জেল থেকে বের হলে আমি তোকে আর রাজনীতি করতে দিবো না। তুই শুধু তোর বাবার ব্যবসা দেখবি। তোর পাহাড়ের সমান টাকারও প্রয়োজন নেই আর মন্ত্রী-মিনিষ্টার হওয়ারও প্রয়োজন নেই। আমি তোকে সবসময় আমার চোখে চোখে রাখবো বাবা, বলতে বলতে ফাহমিদার দু'চোখ সজল হয়ে উঠল।
জামালের গণ্ডদেশ বেয়ে কয়েকফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল। সে চোখ মুছে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলল, তুমি দোয়া করিও মা আমি যেন তাড়াতাড়ি মুক্তি পাই।
আমি দোয়া করছি বাবা তুই তাড়াতাড়ি আমার কোলে ফিরে আসবি।
অনন্যার চোখে পানি নেই, শুধু নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। জামালও অনেকক্ষণ অনন্যার চোখে চোখ রাখল তার দৃষ্টিতে যেন বেদনা ও হৃদয়ে হাহাকার। জামাল অনন্যার চোখের দৃষ্টি, মনের অবস্থা ও ভালোবাসা কোনদিন বুঝবার চেষ্টাও করেনি। আজ অনন্যার চোখে চোখ রেখে জামাল যেন অনন্যাকে নতুনভাবে আবিস্কার করল। অনন্যাও কিছু বলল না। শুধু জামালের মুখের দিকে তাকিয়েই রইল। যাবার সময় গ্রীলের কাছাকাছি এসে অস্ফুটস্বরে বলল, ভালো থাকো।
জামাল বলল, তুমি ভালো থাকো আমার জন্য চিন্তা করবে না।
মোস্তফা সাহেব ও বেলায়েত সাহেব জেল থেকে বেরিয়েই জামালের মুক্তির জন্য আন্দোলন শুরু করলেন। শহরের দেয়ালে দেয়ালে ছেয়ে গেল জামালের ছবি সম্বলিত পোষ্টার, “জামাল ভাইয়ের মুক্তি চাই, জামাল ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তুলে নাও, নিতে হবে।” প্রায় দিনই জামাল মুক্তি আন্দোলনের নিউজ পেপারে ধারাবাহিকভাবে আসতে থাকল। ফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে জামালের পরিচিতি একজন যুব সংগঠনের নেতা থেকে বলিষ্ঠ নেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করল। যারা জামালের নামটাও জানতো না তারাও জামালকে একজন জনপ্রিয় নেতা হিসাবে জানাল। অনেক অপরাধের হোতা হওয়া সত্ত্বেও বেশিরভাগ জনগণের মনেই জামালের জন্য সহানুভূতি স্থান পেল।
প্রায় দু'মাস পর জামাল জামিন লাভ করল, জেলখানার গেটে পুস্পাঞ্জলী ও ফুলের মালা নিয়ে কর্মীরা অপেক্ষা করতে থাকল তাদের প্রিয় নেতা জামালের অপেক্ষায়। জামাল জেলখানার গেট থেকে বেরিয়ে আসতেই মোস্তফা সাহেব, বেলায়েত সাহেবসহ অসংখ্য নেতাকর্মী তাকে গেট থেকে পার্টি অফিসে নিয়ে গেল। মুহূর্তেই জামালের দীর্ঘদিনের হাজত বাসের কষ্ট মন থেকে মুছে গেল বরং হাজত বাসের কষ্টের চেয়ে আজকের বিরল সম্মান তার জীবনে স্মরণীয় হয়ে রইল।
জামালের মুক্তি উপলক্ষে পার্টি অফিসে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে দলের বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের উপর ক্ষমতাসীন দলের নির্যাতন ও বঞ্চনার নির্মম কাহিনী তুলে ধরল। জামাল তার উপর হয়রাণীমূলক মামলার কথা বলল এবং হাজতে তার কষ্টকর জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিল। আজ জামালের মোস্তফা সাহেবের কথা মনে পড়ল। জেলখানায় বসে মোস্তফা সাহেব বলেছিলেন, “দু'একবার জেল-হাজত না খাটলে বড় নেতা হওয়া যায় না।” জেল থেকে বেরিয়েই দেখবে তুমি রাতারাতি বড় নেতা হয়ে গেছ। আজ নেতা-কর্মীদের দেয়া বিরল সম্মান ও স্বতঃস্ফুর্ততা দেখে জামালের মনে হলো সে সত্যি সত্যি রাজনীতিতে হঠাৎ করেই কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে। অনুষ্ঠান শেষে জেলা পর্যায়ের দু'একজন নেতৃবৃন্দ ছাড়া সবাই চলে গেল।
মোস্তফা সাহেব জামালের পিঠ চাপড়িয়ে বললেন, জামাল বলছিলাম না দু'একবার জেলা-হাজত না খাটলে বড় নেতা হওয়া যায় না। আজ বুঝলে তুমি কত বড় নেতা হয়ে গেছ? আমি তোমার মধ্যে যে মনোবল, দলের প্রতি আনুগত্য, বক্তৃতা দেওযার ধরণ দেখেছি তাতে আমার মনে হয়েছে তুমি একদিন বড় নেতা হবে। ভালোভাবে কাজ করো পুলিশ, জেল, জরিমানা এসব কোন বিষয়ই না। দলের জন্য কাজ করো, তাতে যদি তোমার হাজত না জেলও হয়ে যায় তবে দল ক্ষমতায় গেলে তোমাকে জেল থেকে মুক্তি দিবে।
জামাল যেন চম্‌কে উঠল, বড়ভাই দল কি জেল থেকে মুক্তি দিতে পারে?
হ্যাঁ পারে না কেন? আমার কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে সামনে সরকার হঠাও আন্দোলন, মরণ পণ লড়াই করতে হবে। রক্ত দিতে হবে, জুলুমবাজ সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যাবে না। আর আন্দোলন করতে গিয়ে যদি কারো জেল হয় তবে দল ক্ষমতায় গেলে তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় মুক্তি দিবে।
জামাল অনেকটা আশঙ্কা মুক্ত হলো। তার চোখে-মুখে একটা একটা তৃপ্তির আভা ফুটে উঠল।
মোস্তফা সাহেব বললেন, সরকরের মেয়াদ দু'বছরেরও বেশি অতিক্রম করল। কেন্দ্রের নির্দেশ আসবে শীঘ্রই সরকার হঠানোর আন্দোলন। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে হঠাতে পারলে ক্ষমতায় যাওয়া সহজ হবে আর সরকার পূর্ণ মেয়াদ শেষে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলে নির্বাচনে জয়ী হতে বেশ কষ্ট পেতে হবে। কাজেই বুঝতেই পাচ্ছ সরকার হঠাও আন্দোলনের বিকল্প নেই।
জামাল বলল, আপনি কোন চিন্তা করবেন না বড় ভাই কেন্দ্রের কর্মসূচী পেলেই আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ব।
জামালের কথা শুনে বেলায়েত সাহেব একবার আড়চোখে তার দিকে তাকালেন, তার চোখে-মুখে ক্রোধ আর হিংসার চিহ্ন ফুটে উঠল। জামাল বুঝতে পারল তাকে বেলায়েত সাহেব সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না। বেলায়েত সাহেব হয়ত অনুমান করছেন একদিন এই জামালই তার সেক্রেটারীর পদ দখল করবে। একদিন জামালই তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বি এবং পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে।
মোস্তফা সাহেব জামালকে উদ্দেশ্য করে কী যেন বলতে যাচ্ছিলেন বেলায়েত সাহেব বললেন, বড়ভাই জামাল অনেক দিন পর মুক্তি পেয়েছে এখনো-
ওহ্‌ তাইতো আমি তো এক রকম ভুলেই গেছিলাম।
জামাল ঈর্ষান্বিত দৃষ্টিতে বেলায়েত সাহেবের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল, বাঃ আমার জন্য বেলায়েত ভাইয়ের দরদ উতলে উঠেছে, শালা আসলে মোস্তফা ভাই'র সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারছে না। আমিও দেখি কিভাবে তোমাকে সাইজ করতে হয়?
জামাল মোস্তফা সাহেবকে বলল, বড়ভাই আমি আজকের মতো আসি, তারপর সবার সঙ্গে হ্যান্ডশ্যাক করে বেরিয়ে গেল।
জামাল বেরিয়ে যাবার পর বেলায়েত সাহেব বললেন, বড়ভাই জামালকে এত বেশি গুরুত্ব দেয়া মনে হয় আপনার ঠিক হচ্ছে না।
মোস্তফা সাহেব গম্ভীর স্বরে বললেন, বেলায়েত সামনে আন্দোলন এখন তরুণ নেতাদের এগিয়ে দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন বিফলে যাবে, আমরা এবারো এ সিটটা হারাবো। তখন দেখা যাবে দল ক্ষমতায় গেল আর আমরাও গতবারের মতো আসনটা হারালাম। তখন আমাদের সম্মান যাবে কোথায়? এসব কিছু মনে করবে না, মনে রাখবে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। সামনে কে এগিয়ে গেল সেটা বড় কথা নয়, দলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন ঘটাতে হবে এবং ক্ষমতায় যেতে হবে। এখন নিজেদের মধ্যে দলাদলি করার সময় নয়, সবাই এক সাথে কাজ করার সময়।
সবাই মোস্তফা সাহেবের বক্তব্যকে সমর্থন জানালো।
বেলায়েত সাহেব বললেন, সরি বড় ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে। তারপর মনে মনে বললেন, সবকিছুই ঠিক আছে কিন্তু আমি ভাবছি আমার কথা, সামনের কাউন্সিলে যদি জামাল সেক্রেটারী পদে প্রার্থী হয় তবে আমার কী হবে?
বেলায়েত সাহেবকে চুপ করে থাকতে দেখে মোস্তফা সাহেব বললেন, বেলায়েত কী ভাবছ?
বেলায়েত সাহেব চমকে উঠলেন, কিছু না।
চলবে..
গডফাদার-০১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×