somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজেই ফানুস তৈরি করতে চান ? তো হয়ে যাক । :P আসুন কম খরচে দেখেনি কিভাবে ফানুস তৈরি করতে হয় ।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :











আমাদের দেশে রেডিমেট ফানুস পাওয়া যায় কিন্তু সেগুলো আমাদের নাগালের বাইরে কিছুটা। তাই চাইলেও সহজে ফানুস ওড়ানো সাধ্যের ভিতরে পড়ে না। /:)
অনেকে নিজের মনের ইচ্ছা লিখে উড়িয়ে দেন ফানুসে । কোন উৎসবকে আলাদা পর্যায়ে নিয়ে যেতে ফানুসের বিকল্প নেই। তাছাড়া ফটোগ্রাফির একটা চমৎকার সাবজেক্ট হলো ফানুস। B-)

এবছরের প্রথম দিনটা ফানুস উড়িয়ে শুরু করেছিলাম। তাই ভাবছিলাম ফানুস তৈরির টেকনিকটা সামুতে দিবো অনেকের কাজে লাগতে পারে। আমার মতো কেঊ যদি আবার ফানুস প্রেমি হয় :P

তো চলুন দেখেনি কিভাবে তৈরি করবো ফানুস।

মোঠামুটি মাঝারি আকারের একটি ফানুস তৈরি করতে আমাদের লাগবে মাত্র ১২ টাকা। আর বড় ফানুস তৈরি করতে কয়েকটি কাগজ বেশি লাগতে পারে। কিন্তু একটি ফানুস তৈরি করতে ২০ টাকার বেশি খরচ হবেনা বললেই চলে। জায়গা ভেদে জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে।

তৈরির প্রয়োজনীয় সামগ্রিঃ



* - টিস্যু বা খুব পাতলা পেপার ঃ ফানুস তৈরির জন্য আপনার প্রথমেই প্রয়োজন হবে খুব পাতলা কাগজ। আপনি বড় কোন কাগজের দোকানে গিয়ে ঘুড়ির কাগজের কথা বললেই পেয়ে যাবেন। একটি ফানুস বানাতে সাধারনত কমপক্ষে চারটি কাগজ প্রয়োজন হয়।


* - আঠা
* - পেইন্ট ব্রাশ
* - পাতলা তার
* - বাঁশের পাতলা কঞ্চি
* - কেঁচি
* - ছুরি
* - প্লাস বা তার কাটার যন্ত্র


কার্যপ্রণালীঃ

মাপঃ










উপরের চিত্রে ফানুসের প্রকৃত আকার দেখানো হলো। আমাদের দেশে খুচরা বাজারে সাধারণত এতো বড় মাপের কাগজ পাওয়া যায় না। আপনি প্রয়োজনে আপনার কাগজ জোড়া দিয়েও এই আকারের ফানুস তৈরি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কাগজগুলোর আকার দৈর্ঘ্যে কমপক্ষে ৪০ ইঞ্চি আর প্রস্থে ২২ ইঞ্চি হওয়া প্রয়োজন।
অথবা,
আমাদের দেশে সাধারনত দিস্তা হিসেবে যেগুলো কাগজ পাওয়া যায় সেগুলোর আকার হয় সাধারণত দৈর্ঘ্যে ৩০ ইঞ্চি আর প্রস্থে ১৮ ইঞ্চি। এগুলো দিয়েও তৈরি করতে পারবেন।



১/ কাগজ কাটার নিয়মঃ

- প্রথমে চারটি বড় টিস্যু পেপার একটি আরেকটির উপর একসাথে রাখুন
- এরপর এটি লাম্বালম্বি দুই ভাজ করুন
- এরপর এটি কেঁচি দিয়ে ঘণ্টার মত করে চিত্র অনুযায়ি কাটুন



একটু বিস্তারিতই বুঝিয়ে দেই :P


এভাবে সব গুলো কাগজ মাঝ বরাবর ভাজ করুন।

-


ছোট আকারের কাগজ হলে কাগজগুলো দৈর্ঘ্য ৩০ ইঞ্চি, মাঝখানে (১৮/২)= ৯ ইঞ্চি এবং শেষে (১২/২)= ৬ ইঞ্চি আকারে কেটে নিন।
বড় আকারের কাগজে করতে হলে ভাজ করা কাগজগুলো দৈর্ঘ্য ৪০ ইঞ্চি, মাঝখানে (২২/২)= ১১ ইঞ্চি এবং শেষে (১২/২)= ৬ ইঞ্চি আকারে কেটে নিন।


কাগজ গুলো কাটার পর দেখতে এমনি হবে :)

- আপনার কাছে চারটি বড় আকারের ঘণ্টা আকৃতির কাগজ থাকবে ।



বডি তৈরিঃ


এবার একটি কাগজ আলাদা করে নিয়ে চিত্রের মত কাগজটির এক পাশে আঠা লাগান।




কাগজটি ভালোভাবে বসিয়ে উপরের কাগজটির আর এক পাশ উল্টিয়ে নিন। এবং র্পুরের ন্যায় আবার আঠা লাগান ।





**** যেহুত ৩ টি কাগজ লাগানো হয়ে গেছে। তাই চিত্রের মত শেষে লাগানো কাগজটির আর প্রথমে লাগানো কাগজটির উভয়টির কিনারে আঠা লাগিয়ে নিন এভাবে--




শেষ ধাপে আগের মত করেই ৪ নং কাগজে শেষ কিনার আর ১ নং কাগজের প্রথম কিনার জুড়ে দিন। আঠা শুকাতে দিন। আঠা শুকিয়ে গেলে খুলে দেখুন ফানুসের প্রায় তৈরি।

বডির ফ্রেম তৈরিঃ



- এরপর বাঁশের পাতলা কঞ্চি নিয়ে সেটা কাগজের যে পাশে খোলা আছে সে পাশের মাপমত করে একটি গোলাকার চাকতি তৈরি করুন।আপনি ইচ্ছা করলে জি আই তাঁর দিয়েও ফ্রেমটি তৈরি করতে পারেন।



এখন জি আই তার নিয়ে চার ফুট আকারে একটুকরা তার কেটে নিন। তারপর তারটি পেচিয়ে গোল করুন। তারের মাথা দুটি একসাথে আটকে দিন। ছোট আকারের আরো দুটি তার কেটে নিন। সেগুলো চিত্রের মত গোল তারটির সাথে আটকে দিন। চিত্রের ন্যায় একটি ফ্রেম আপনি নিজেই এখন তৈরি করে ফেলেছেন :P

এখন পালা ফানুসের বডির সাথে ফ্রেমের জোড়া দেওয়া :P



আঠার আস্তরনটা খুব বেশি ভারি করে ফেলবেন না। ফানুসের বডির সাথে ফ্রেমটি ভালো ভাবে জোড়া দিন। খেয়াল রাখবেন, সব সাইডে ভালো ভাবে আঠা লাগে এবং কোন সাইডে যেন লিক না থাকে ফ্রেমের গোঁড়ায় ।

ফানুস ওড়ানোর জন্য প্রয়োজন ফানুসের জ্বালানিঃ
কেউ কেউ ছোট ভালো মোমবাতিও ব্যাবহার করতে পারেন।



সবচেয়ে ভালো হয় নিজে জ্বালানি তৈরি করে নিলে।বাজারে খোলা মোম পেতে পারেন র্হাডওয়্যারের দোকানে।র্ফামেসির দোকার থেকে ব্যান্ডেজ সংগ্রহ করুন।



কিছু মোম (পরিমাণ মত) একটা পাত্রে গরম করুন। মোম গোলে গেলে ৬-৭ ইন্সি ব্যান্ডেজ কেটে নিয়ে গোলিত মোমের ভিতরে ছেড়ে দিন। ভালো ভাবে মোম ব্যান্ডেজে মাখিয়ে নিন। তারপর ব্যান্ডেজটি শুখাতে দিন।



শুখালেই তৈরি হয়ে গেলো আপনার কাংখিত জ্বালানি।

এবার ফানুস উড়াবার পালা।
তৈরি করা ফানুসের মধ্যে যেখানে জি আই তার দুটি পরস্পরকে ক্রস করেছে সেখানে জ্বালানির তারটির সাহায্যে জ্বালানিটি বেধে দিন।
সবইতো শেষ বসে আছেন কেনো ? আগুন ধরিয়ে দিন :P
এবার জ্বালানিতে আগুন ধরিয়ে দিন। কিছুক্ষণ আগুন জ্বললেই ফানুসটি ফুলে উঠবে। তারপর আস্তে আস্তে উপরের দিকে টান বাড়বে। কিছুক্ষন ধরে থাকুন। টান বেড়ে গেলে আস্তে করে ছেড়ে দিন। ফানুস আস্তে আস্তে উপরে উঠে যাবে।


কিছু সর্তকতাঃ

১ ভালো করে খেয়াল করুন কাগজের কোথাও যেন ছেঁড়া না থাকে বা আঠা কোথাও যেন খোলা না থেকে গরম বাতাস না বের হয়ে যায়। কারন গরম বাতাসই ফানুসকে উপরে টেনে নিয়ে যায়।
২ ফানুস ছাড়ার সময় যাতে এক দিকে কাত না হয়ে যায়। এতে ফানুস এক দিকে হেলে আগুন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর বুঝতেই পারছেন আগুন একবার লাগলে কি অবস্থাটা না হবে।/:) সো সাবধান কাঁথায় যেনো আগুন না লাগে :P ;)

৩ যখন বাতাস থাকে বা জোরে বাতাস বয় তখন ফানুস উড়াবেন না কারোণ বাতাসে হেলে গিয়ে আগুন লাগতে পারে। /:)

তৈরি করুন উড়ান ফানুস আর উপভোগ করুন ফানুসের আলোকিত আকাশ :P B-)

ধন্যবাদ সবাইকে, শুভ কামোনা রইলো :)

আমার ব্লগ থেকে ঘূরে আসতে পারেন - মাইন্ড লোকাষ্ট ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬
৩১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×