somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পেট্রোল বোমা থেকে নিজেকে বাঁচান ! যদি গণপরিবহনে উঠতেই হয়, এই নিয়মগুলো মনে রাখুন !!

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইন্টারনেটে অনেক খুঁজছিলাম, পেট্রোল বোমা থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায়। নেই। পেট্রোল বোমা তৈরীর অনেক রেসিপি আছে। মারণাস্ত্র তৈরী কতো সহজ, তা ভিডিওসহ লিপিবদ্ধ হয়ে আছে।

আমি লিখছি। বিষয়গুলো মনে রাখার চেষ্টা করুন। তবে লেখা শুরুর আগে নিচের ২ মিনিটের এই ভিডিওটি দেখে নিন। যেখানে পেট্রোল বোমা বিস্ফোরিত হবার মুহুর্তে ঠিক কি ঘটে দেখতে পাবেন।



উপরের ভিডিওটি দেখে বোঝা গেল যে একটি কাচের বোতল কোন শক্ত কিছুর সাথে আঘাত করার সাথে সাথে ফেটে যায়। এবং পেট্রোল ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে যেখানে ছড়ায় সেখানে সেখানে আগুনকে সঙ্গী করে নিয়ে যায়।

বিষয় গুলো একটু লক্ষ্য করুণ !

০১. অপ্রয়োজনীয় চলাচল আপাতত বন্ধ রাখুন : রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় চলাচল বন্ধ রাখুন। ধরুন, আপনার প্রেশার কুকারের নব নষ্ট হয়ে গেছে। এটা ঠিক করতে গত দুইমাস ধরে নিউ মার্কেটে যাচ্ছি যাব করে করে যাওয়া হয়নি। আজ হঠাৎ কিছুটা সময় পাওয়া গেল, রওনা হবার আগে একবার ভাবুন- এই মুহুর্তে এটা কতটা দরকারি? আরো কিছুদিন অপেক্ষা করা যাবে না ?

০২. গণ পরিবহন এড়িয়ে চলুন : যদি বাইরে বের হতে হয়, তাহলে গণ পরিবহন এড়িয়ে চলুন। রিকশা বা সাইকেল এই মুহুর্তে ভালো কাজে দিবে। হরতালের কারণে রাজপথগুলো রিকশার দখলে। রিকশা চলাচলের দূরুত্বের বাইরে না যাওয়াই আপাতত ভালো।

০৩. গণ পরিবহনে যদি উঠতেই হয় : গণ পরিবহনে উঠতে হলে তাড়াহুড়ো না করে স্থির হয়ে সতর্কতার সাথে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে।

ক. বাসের সব জানালা আছে কি’না দেখে নিন। ঢাকা শহরের অধিকাংশ বাসের জানালা ঠিকঠাক নেই। আর বোমাগুলো ছোড়া হচ্ছে এই পথ দিয়ে। তাই বাসে চড়ার সময় এই সতর্কতাটুকুই আপনার প্রাণ বাচিয়ে দিতে পারে।

খ. বাসের জানালা সব সময় বন্ধ রাখুন। তবে কিছু সহযাত্রীকে দেখবেন কিছুটা জানালা খুলে রাখছেন, বাতাসের জন্য। যদিও এটি অনিরাপদ তবে সহযাত্রীটি সতর্ক হলে অসুবিধা নেই। এই খোলা জানালাটি যদি আপনার কাছাকাছি হয়, তাহলে সেই সতর্ক যাত্রী কোন স্টপেজে নেমে গেলে-নিজ দায়িত্বে জানালাটি লাগিয়ে দিন। কেননা ঐ স্থানে আসনগ্রহণকারী পরের যাত্রীটি আগের জনের মতো সতর্ক নাও হতে পারেন। [ ভিডিওটি দেখে থাকলে আপনি বুঝতে পারবেন, এই সামান্য পথ দিয়েও আগুন ভেতরে প্রবেশ করতে পারে]

ঘ. বাসের দরজার আশেপাশের সিটগুলোকে এড়িয়ে বসার চেষ্টা করুন।

ঙ. লোকাল বাসগুলোতে নারীদের জন্য যে ড্রাইভারের পাশে যে আসন- সেগুলোতে জানালার দিকে পিঠ দিয়ে বসতে হয়। ফলে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকেন নারীরা। এই কদিন তারা এই সিটগুলো এড়িয়ে চলতে পারেন। আর বসলেও জানালাগুলো বন্ধ করে নিতে হবে। গতকাল বাসে কয়েকজন সতর্কপুরুষ দেখলেও নারীদেরকে খোলা জানালার পাশে বেশ নিশ্চিন্ত দেখলাম। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের দেশের নারীরা রাজনীতি, সহিংসতা ও সংবাদ- এগুলোকে এড়িয়ে চলেন। ফলে তাদের ভেতরে সচেতনতাটা তৈরী হয়নি। তাই রাস্তায় চলাচলকারী আপনার স্ত্রী বা কন্যা সন্তান বা বোনকে সাধারণ সতর্কতাগুলো বুঝিয়ে দিন।

চ. চলাচলকারী সময়টুকু পুরো মাত্রায় সতর্ক থাকুন। একদিনের জন্য গণ পরিবহনে চড়ে ফেসবুকিং, কানে হেডফোন দিয়ে গান শোনা বা অন্য মনস্ক হয়ে দূর আকাশের চিলের ভাবনা বন্ধ রাখুন। এ সময়টা চারপাশে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।

ছ. গত এক মাসের হামলাগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ফাঁকা এবং অতিরিক্ত ভীড়ের জায়গাগুলো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। বাস এমন স্থানে এলে সকতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে দিন।

যদি আক্রান্ত হনঃ

যদি আক্রান্ত হন তাহলে কয়েকটি বিষয় আগেভাগেই জেনে রাখুন



আগুনের ত্রিভুজ সূত্র : একটি আগুনের জন্য তিনটি বিষয়ের প্রয়োজন। ১. জ্বালানী ২. অক্সিজেন ৩. তাপ । যখন কোথাও আগুন ধরে তখন একটি চেইন রিএ্যাকশনের মাধ্যমে এগুলোর যোগান তৈরী হয় এবং পুড়ে শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটা চলতে থাকে। তাই আগুন নেভাতে গেলে তিনটির যেকোন একটির অনুপস্থিতি ঘটাতে হবে।

নিজে আক্রান্ত হলে করনীয় : আপনার শরীরের কোথাও আগুন লাগলে যদি আপনি প্যানিক হয়ে দৌড়াতে শুরু করেন, তাহলে আগুনে অক্সিজেন যুক্ত হবে, আগুনের মাত্রা বেড়ে যাবে। তাই খালি হাতে আগুনের সাথে লড়াই করার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে দুহাতে মুখ ঢেকে মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়া। এভাবে কয়েকবার গড়িয়ে আপনি নিজেই নিজের আগুন নিভিয়ে ফেলতে পারবেন।



আক্রান্ত হতে দেখলে করনীয় : পেট্রোল পানির চেয়ে হালকা অর্থাৎ পানিতে ভাসে এবং পানিতেও অক্সিজেন থাকে। তাই পেট্রোলের আগুনে পানি দিলে আগুন নেভানো যায় না। বরং বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির গায়ে পানি না ঢেলে মোটা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে ধরতে হবে।



সকলের জন্য :

দুটি নম্বর এখনই আপনার মোবাইলে সেইভ করে রাখুন। এ দুটি ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের কন্ট্রোল রুমের নম্বর। টিন্ডটি- ০২-৯৫৫৫ ৫৫৫ এবং ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯। প্রথমবারে টিএন্ডটি’তে চেষ্টা করুন। তেনাদের মোবাইল মাঝে মাঝে বন্ধ থাকতে পারে।

তবে আমার মনে হয়, আক্রান্ত হবার মুহুর্তে আপনার ফায়ার সার্ভিসের চেয়ে এ্যাম্বুলেন্স এর প্রয়োজন হবে। আপনার চলাচলের এলাকাকে বিবেচনায় রেখে পছন্দ অনুযায়ী অন্তত পাঁচটি নম্বর মোবাইলে সেভ করে রাখুন।


হাসপাতালের নাম ও যোগাযোগ নম্বরঃ

আল মাজহারুল ইসলাম এম্বুলেন্স
৮১২৫৫৪৯, ৯১২৭৮৬৭, ৮১১৪৯৮০

আনজুমান মফিজুল ইসলাম
৯৩৩৬৬১১, ৭৪১১৬৬০, ৭৪১০৭৮৬

আপনজন এম্বুলেন্স
৯১২৫৪২০

বারডেম
৯৬৬১৫৫১-৬০, ৮৬১৬৬৪১-৫০ এক্স-২৩০১

ঢাকা আই হাসপাতাল
৮০১৪৪৭৬

সিটি কর্পোরেশন
৯৫৫৬০১৪, ৯৫৫৬০১৮৬, ৯৫৫৭১৮৬-৮৭

মিরপুর কন্ট্রোল রুম
৯০০৪৭৩৪

সি এম এইচ
৯৮৭১৪৬৯, ৯৮৭০০১১

ডে নাইট এম্বুলেন্স
৯১২৩০৭৩, ৮১২২০৪১

ঢাকা মেডিকেল
৮৬২৬৮১২

ফায়ার সার্ভিস এম্বুলেন্স
৯৫৫৬৬৬৬, ৯৫৫৫৫৫৫

গ্রীন এম্বুলেন্স
৯৩৩৪১২১, ৮৬১২৪১২

হাড হাসপাতাল
৯৮০১৭৪, ৯৮০৩৩০২

হলি ফ্যামিলি
৯১১৩৫১২, ৯৩১১৭২১-২৫

কলেরা হাসপাতাল
৮৮১১৭৫১-৬০

লাইফ লাইন
৮১৫৫৫৫০-২

মেডিনোভা
৮১১৩৭২১, ৯১২০২৮৮, ৯১১৬৮৫১

মনোয়ারা হাসপাতাল
৮৩১৮১৩৫, ৮৩১৯৮০২

জাতীয় হার্ট ইনষ্টিটিউট
৯১২২৫৬০-৭২

পিজি হাসপাতাল
৮৬১৪০০১-৫, ৮৬১৪৫৪৫-৯, এক্স ৪৬৯

প্রাইম হাসপাতাল
৯৫৬২২৬৭, ৯৫৫৯৮৬২

রাফা এ্যাম্বুলেন্স
৯১১০৬৬৩

রেড ক্রিসেন্ট এ্যাম্বুলেন্স
৯১১৩৫১২, ৮৩১১৭২১-২৫

সলিমুল্লাহ মেডিকেল
৭৩১৯০০২-৬

শহীদ সোহরাওয়ার্দি হাসপাতাল
৯১৩০৮০০, ৯১২২৫৬০-৬৯

শেফা এম্বুলেন্স
৯১১১৭৫৮, ৮১১০৮৬৪

শিশু হাসপাতাল
৮১১৬০৬১-২, ৮১১৪৫৭১-২

সাউথ এশিয়ান হাসপাতাল
৮৬১৬৫৬৫, ৯৬৬৫৮৫২



সাহস হারাবেন না। সতর্ক থাকুন। জাতীয় সংকটকালীন সময়ে সতর্কতায় আমাদের মতো সাধারণ মানুষের একমাত্র অস্ত্র।

কৃতজ্ঞতাঃ মেহেদী হাসান সুমন । { http://blog.bdnews24.com/pothiksumon }


সকলের সুস্থ ও সাবধনতা কামনা করছি। নিজে সতর্ক হওন অন্যকেও সতর্ক করুণ।

১২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×