somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম স্বশরীরে ডেটিং - তার সাথে দেখা হল, কথা হল, চোখে চোখ রাখা হল

০৪ ঠা মে, ২০০৮ দুপুর ১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিকাল ৩টায় ফোন। বেরিয়েছো?
- এত রোদ! এখনই বেরোতে হবে?
- নাহ, এখন বেরোবে কেন? সূর্যাস্তের পরে বেরিয়ো।

তারপর নিচুস্বরে কি গালিটালি দিয়ে যেন রাগ প্রকাশ করলো। বেশি পাত্তা দিলাম না। এমন কি গালি আর দিবে? সবই তো আমার কাছ থেকেই শেখা। আর আমি শিখেছি ব্লগ থেকে। যা ব্লগের সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য, তাতে আমার নিশ্চয়ই চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার হবে না। তাই মন খারাপ হলো না। কোন কালারের শার্ট পরবো, নাকি টি-শার্ট, তাই নিয়ে গবেষণায় লিপ্ত হলাম।

মাইয়া মানুষ ব্যাপক ভেজাইলা জিনিস। কারো চয়েস ভদ্র পোলা, কারো আবার উড়াধুড়া। এতদিন এমএসএন মোবাইল কইরাও এই মাইয়ার ভাবগতিক পুরা ধরতারি নাই। শার্ট পরলে একটু ভদ্র ভদ্র লাগবে; কিন্তু অনেক মাইয়া খ্যাত ভাবতারে। বিশেষ করে এই গরমে শার্ট পরলে স্মার্টনেস বজায় রাখা টাফ হয়া যাইবো। টি-শার্ট পরলে ভাববে, এইডা ডোন্ট কেয়ার পোলা, কোনো দায়বদ্ধতা নাই, এর লগে প্রেম করলে বিয়ার সময় চাপাচাপি কইরা ফায়দা তুলন যাইতো না। হালায় মহা ঝামেলায় পড়লাম। এরপর আবার আছে, কালার নিয়া ফ্যাকড়া। কোনো মাইয়ার পছন্দ অ্যাশ কালার, আবার কোনো মাইয়ার অ্যাশ কালার দেখে কান্না আসে। তার প্রিয় রঙ সবুজ। সবুজ রঙের মানুষের মন নরম হয়। কিন্তু এই বয়সে সবুজ পইরা স্কুলবয় সাজতে আমার প্রেস্টিজের চাকা পাংচার হইয়া যাইবো। ধুর, এত ভাবাভাবির কি আছে। প্রেম হইলে হইবো, না হইলে নাই। আকাশী রঙের ওপরে কাজ করা টি-শার্ট পরলাম।

আগের পোস্টে অনেকে অনেক রকম টিপস দিয়েছিলেন। ডেটিংয়ে গিয়ে এত সূক্ষাতিসূক্ষ জিনিস মনে থাকে না জানতাম। তবে নীলার সাজেশন বেশ জুতসই হয়েছিলো। প্রেম দিঘীতে না বুইঝা-শুইনা ঝাঁপ দিলে আমি একাই প্রেমজ্বরে কাঁপাকাঁপি করবো আর ওই মাইয়া থার্মোমিটার লইয়া জ্বরই মাইপা যাইবো। জ্বর কমানোর ওষুধ লইয়া আইবো না। অতএব, সিদ্ধান্ত হইলো, মন যতই আউলা হয়া যাক, বেশি পাত্তা দেওন যাইবো না। মেয়েদেরকে ইগনোর থেরাপি দিলে অনেক সময়ই কাজ হয়।

সাড়ে ৪ টায় দেখা হলো। সেও তেমন সাজে নাই। নরমাল ড্রেস। ভেবেছিলাম, শাড়িটাড়ি পরবে। তা পরে নাই। তবে বেশ পরিপাটি বুঝা যায়। চুল আঁচড়িয়েছে বেশ যত্ন করে। চুলের কাঁটাও মানানসই। মাথা থেকে পায়ের জুতা পর্যন্ত কালার ম্যাচিং। তার রূচিবোধ পছন্দ হলো।

সে কথা বলে শুদ্ধ করে, দাঁড়িকমা মেপে। আমি পুরা গাঁইয়া স্টাইলে চালাই। অনেকবারই ফোনে সে অভিযোগ করেছে; কিন্তু আমি জানি, সে এটা লাইক করে। দুনিয়া জুড়ে নেগেটিভ পজেটিভের খেলা।

আলোচনা হলো অনেক কিছু নিয়ে। রাজনীতি বাদে। শুয়োরের বাচ্চারা দেশটাকে কোনদিকে নিয়ে যাচ্ছে, তা ভেবে মাথার চুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে এই মধুর সময়টার অপচয় করতে সে ও চায় না, আমিও না।

একরামুল হক শামীম মজা করে বললেও তার বিষয়টা মাথায় ছিলো। কথা বলে বের করে ফেললাম, তারা দুই বোন, ১ ভাই। ভাইটা পিঠাপিঠি, এবার ইউনিতে থার্ড ইয়ারে, বোনটা পিচ্চি, স্কুলে পড়ে।

বললাম, শামীম নামে আমার একটা দোস্ত আছে।
- কোন শামীম? যে ত্রিভুজ নামে বিভিন্ন ফোরামে আইটি বিষয়ে টিপস দেয়?
- আরে, না না। ত্রিভুজ আমার দোস্ত হবে কেন? আমার দোস্তের পুরা নাম একরামুল হক শামীম। কিন্তু তুমি ত্রিভূজ শামীমকে চেন কিভাবে?
- আইআরসিতে আগে আড্ডা হতো। ত্রিভুজ ওখানকার বেশ কর্মতৎপর অ্যাডমিন।
- অন্য কোথাও ত্রিভুজের লেখা পড়ো নাই? কোনো ব্লগ-ট্লগ?
- না তো!

আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। সে সামহোয়্যারইনে আসে না। ত্রিভুজের সম্মানও বাঁচলো, আমিও অনেক কৈফিয়তের হাত থেকে বাঁচলাম। মেয়েরা অকারণেও রাখঢাক পছন্দ করে। তার সাথে ডেটিং নিয়ে সামহোয়্যারইনে পোস্ট দিয়েছি জানলে যে নার্গিস আসবে, তা প্রতিরোধ করতে আমার সময় এবং ধৈর্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যাবে।

মিয়ানমারে নার্গিস আঘাত হেনেছে। আজ রাত্রে ঢাকায়ও ঝড় হওয়ার পূর্বাভাস। বেশিক্ষণ বাইরে থাকা যাবে না। সাড়ে ৭টার দিকেই যার যার ফিরতি পথ ধরি।

প্রেমের কথাটা আজ বলা হলো না। তবে তার চোখে আমি মুগ্ধতা দেখেছি। আমি নিজেও কি মুগ্ধ হই নি?
৩৫টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×