somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসঃ স্বপ্ন ও স্বপ্ন ভঙ্গের খোয়াব

১৩ ই আগস্ট, ২০০৮ রাত ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(আজ ১৩ অগাস্ট ঢাকা কলেজে অনুষ্ঠীত সেমিনারে এই প্রবন্ধটির অংশ বিশেষ পাঠ করা হয়। ব্লগারদের জন্য সবটা পোস্ট করা হল)




আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বাংলা কথাসাহিত্যে একজন বিরলপ্রজ প্রতিভা। একদিকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও নির্মমতার মধ্য দিয়ে তার উপন্যাসের মহাকাব্যিক ঢং অন্যদিকে সমাজ নিরণ ও তার সাপেক্ষে ব্যক্তি মানুষের মনোজাগতিক স্বরূপ উন্মোচন করেছেন এক রক্তাক্ত বাস্তবতা। গল্পের বুনট ও চরিত্র চিত্রনে আমরা পাই হেরোডোটাস আর থুকিডাইডিসের মানস। একজনের মহাকাব্যের বিস্তার, বহুবর্ণিলতা আর অন্য জনের মনুষ্যজীবনের ট্র্যাজিক আবহÑ নারী, দেবতা, আধ্যাত্ম বোধ আর রহস্যময়তার দূরহ বুনন। ইলিয়াস তার প্রতিভার চরম প্রকাশ ঘটিয়েছেন উপন্যাসেই। উপন্যাসের বিস্তুৃত পটভূমি জুড়ে তিনি খেলেছেন ইচ্ছেমতো। তার দুটো উপন্যাস দেশের এমন দুই ক্রান্তিকাল ঘড়ির দুই বাহুর মতো চিহ্নিত করে রেখেছে যে তা ইতিহাস পাঠেরও একটি অংশ হয়ে ওঠে। কিন্তু তিনি ইতিহাস লিখতে চান নি। লিখেছেন ঐতিহাসিক প্রোপটে মানুষের বাঁচার তীব্রতম আকাক্সায় সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়াবার বৃত্তান্ত। যদিও মানুষের বাঁচার সকল প্রয়াস বরাবরই ব্যর্থ হতে দেখি। এই ব্যর্থতার বোঝা বহন করতে হয় রাজনৈতিক ভ্রষ্টতার কারণে। কিন্তু মানুষের সংগ্রাম অবিনশ্বর, তাকে দাঁড়াতেই হয় বুনো মোষের বিরুদ্ধে। শওকত আলী ইলিয়াসের এই সংগ্রাম প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘ মানুষের বিদ্রোহের আর লড়াইয়ের স্মৃতি থেকে যায় তার অবচেতনার পরতে পরতে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এবং তা বেরিয়ে আসে কখনো মন্ত্র বা গানের শোলক হয়ে, কখনো আঁকিবুকি টানা নকশার ভেতর দিয়ে, আবার কখনো বা স্বপ্ন ব্যাখ্যার মধ্য দিয়ে।’ তাই বলা যায় ইলিয়াসের সাহিত্যে সংগ্রাম আকস্মিক নয়, অনাদিকালের।

ইলিয়াস ক্রমাগত নিজের শিল্পরীতি ও বিষয় প্রকরণ নিয়ে ভাঙচুর করেছেন। মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য তিনি শিল্পকেও উপযুক্ত করে নিয়েছেন। তাই ‘চিলেকোঠার সেপাই’ থেকে ‘খোয়াবনামা’র যাত্রায় তিনি অন্য রকম। শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘ এতই আলাদা দুই বই যে মনে হয় মলাটে লেখক নামের মিলটা নেহাৎ কাকতালীয়...’ হ্যা, খোয়াবনামায় এসে তিনি সাহিত্যাদর্শে নিজেকে সম্পূর্ণ বিনির্মাণ করেছেন। মধ্যবিত্তের প্রতি ক্রোধ আর কৌতুক ছাপিয়ে তিনি উঠে এসেছেন আত্মানুসন্ধানে।

আজকের আলোচ্য উপন্যাস ‘খোয়াবনামা’র বৃহত প্রোপট মূলত ব্রাত্য মানুষের জীবনচরিত। এদের প্রেম- যৌনতা, রাজনীতি ও আশা-আকাংখ্যা ও ব্যর্থতার চিত্রন করেছেন। তবে এই সর্বহারাদের চলচ্ছবি বাঙলা সাহিত্যে আকস্মিক নয়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে সতীনাথ ভাদুরীর ‘ ঢোঁড়াইচরিতমানস’, দেবেশ রায়ের ‘তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্ত’, অভিজিৎ সেনের ‘রহু চণ্ডালের হাড়’ অথবা সোমনাথ লাহিড়ী ও হাসান আজিজুল হকের রচনায় এই অন্ত্যজ মানুষের নিঃশ্বাস আমরা শুনতে পাই। তাহলে ইলিয়াস এঁদের থেকে কোথায় আলাদা? অর্ধ সহস্র পৃষ্ঠা ব্যাপি তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্তে গয়ানাথ জোতদার, সিপিএম রাজত্ম আর এর বাইরে থাকা বাঘারু বা নব্য সৃষ্ট মাদারির জীবন যখন আমাদের সাবঅলটার্ণ সাহিত্যের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি খুলে দেয়Ñ সেখানে ইলিয়াস কেন? কেন আমরা চেরাগ আলীর পান্টির শব্দ আর তমিজের বাপের আধোঘুম জাগরণের খোয়াব দেখতে থাকি? এর উত্তর হচ্ছে ইলিয়াসের এই উপন্যাসটি মৌলিকভাবে সবার চেয়ে পৃথক, কারণÑ অবাস্তবতা, লোকজ পুরাণ, অতীন্দ্রিয়তা, মরমীবাদ ইত্যাদি বিমূর্ত বিষয়গুলোর সাবলিল ব্যবহার। যাকে যাদুবাস্ত-বতা, বা মায়াবাস্তবতা এমন কোননির্দিষ্ট তত্ত্বের জালে ফেলে ইলিয়াসকে ছেকে আনা সম্ভব নয়। একদিকে তাকে বোঝার সহজতা ও দূরহতা পাশাপাশি অবস্থান করে। তার নন্দন ভাবনা ও সমাজ সংলগ্নতা তাকে শুধু নুভো রঁমার মতো, কেবল ঔপন্যাসিক হিসেবেই নন, উপন্যাস-বিজ্ঞানী হিসেবেও চিহ্নিত করা যায়। তিনি ভবিষ্যত লিখিয়েদের সামনে উন্মোচন করেছেন এক নতুন পথ, যার বন্ধুরতা তিনি উৎরে এসেছেন দারুণ রক্তাক্ততার বিনিময়ে। লেখক কত নির্মম ও নির্মোহ হতে পারেন তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ন্যারেটিভ উপস্থাপনের মাধ্যমে। দেবেশ রায় যেখানে নিজেই তার উপন্যাসে কথা বলেন সেখানে ইলিয়াস তার নির্মিত চরিত্রের জীবন সংকট, উপলব্ধির মধ্য দিয়ে উৎসারণ ঘটান। লেখকের ইতিহাস চেতনা, ইতিহাসের নিজস্ব ব্যাখ্যা, নিম্নবর্গের মন-মেজাজ, তাদের কথা বলার ধরণে দেহাতী ভাষার ব্যবহার, তীè ব্যঙ্গ ইত্যাদিতে তিনি সিদ্ধহস্ত। নির্মাণ করেছেনে কাম ও প্রেমের নতুন সংজ্ঞা।

সর্বোপরি চেতন-অবচেতনের মিথস্ক্রিয়া, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ইত্যাদি তার চরিত্রকে আরো সংহত স্বতন্ত্র করেছে। বিশেষত নিম্নবর্গের ধর্মকে ব্যাখ্যা করেছেন ভিন্নভাবে। খোয়াবনামায় শরাফত মন্ডল আর সাধারণ কৃষকÑ এই দুয়ের ধর্মের লেবেল এক হলেও এদের প্রায়োগিক ধর্ম এক নয়। যেমন এক নয় এদের থেকে মুসলীম লীগের নেতৃত্ববর্গের ধর্মীয় রাজনীতির ধরণ। ধর্ম একজনের কাছে নৈতিকতা আর একজনের কাছে মতা। সামাজিক স্তর বিন্যাসে ধর্মের নানা রকমের আচারিক ব্যাপার ঘটে। লেখক তা দেখাতে চেয়েছেন। লোকজ বিশ্বাস, সামাজিক ন্যায়-নৈতিকতার ঐতিহ্যের ওপর দাঁড়ানো ধর্ম আর বেদ- কোরআনের ধর্ম কতটা পৃথক। যেমন চেরাগ আলীর ধর্মকে শুধুমাত্র মরমীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। গৌতম ভদ্র বাংলার কৃষক চৈতন্যের ইতিহাসে দেখিয়েছেন পাগল পন্থীদের ধর্মের স্বরূপ। এখানে ধর্ম, সংগ্রাম-মতার ভিন্ন রকমের প্রকাশ নিয়ে নেয়। তিনি লিখেছেনÑ ‘সমাজে বিশেষ বিশেষ স্তরভূক্ত লোকেরা বিশেষ রকমের আদাব অনুসরণ করেন। বাদশার আদাব, সুফির আদাব বা কারিগরের আদাব এক হবে না। ঠিক একইভাবে ব্যাধের ধর্ম আর সন্ন্যাসীর ধর্ম পৃথক।’ উপন্যাসে দেখা যায় ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধে আলি এবং কালীর তথা ফকির-সন্যাসীদের যুথবদ্ধতার প্রয়োজন অনুভব করে মজনু শাহ আর ভবানী পাঠক। মজনুর নিজের লোক মুনসি লোক- বিশ্বাসে ভবানীর সেনায় পরিণত হয়ে তার আদেশ মতে কালিপুজার রাতে বিলে কাৎরা ভাসায় এবং সেখানে পাঁঠা বলি দিতে পারলে মানুষের সব পাপ মোচন হয়Ñ এই বিশ্বাস তৃণমূল পর্যায়ে হিন্দু-মুসলমানের স¤প্রতিই প্রকাশ পায়। ফলে এই বৃত্তান্তে বরকতুল্লা মুনসি মজনুর ‘লিজের মানুষ’ তেমন ভবানী পাঠকেরও সেনাপতি সে। কেবল মানুষই নয়, দুই স¤প্রদায়ের দেব-দেবীও তার কাছে হাত বদল হয়ে ভবানীর আলি আর মজনুর মা কালিতে পরিণত হয়। এভাবে ইলিয়াস গণঅবচেতনের একেবারে তলানি ছেনে দেখিয়েছেন যে সেখানে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতিই কাম্য, বিভাজন নয় এবং সাধারণ মানুষ গভীর অবচেতনে মূলত অসা¤প্রদায়িক।

বিশালায়তন উপন্যাসটির সমাজ ওশল্পিত বাস্তবতা পূর্ব বাংলার উত্তরাঞ্চলের সম্ভবত বগুড়ার প্রায় অজ্ঞাত এক জনপদের ইতিহাস নির্মিত মানুওষর আখ্যান। কাহিনীর সর্বত্র চেরাগ আলীর উপস্থিতি। চেরাগ এক অজ্ঞেয় চরিত্র। এর উপস্থিতি লোকজ জীবন ও পুরাণকল্পের আনাগোনার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত। তমিজের বাপ আর কুলসুমের মধ্য দিয়ে চরিত্রের নমুনা প্রবাহিত। কুলসুমের স্মৃতি চারণের মধ্য দিয়ে তার উলঙ্গ দারিদ্র্যের পরিচয় পাওয়া যায়। কুলসুমকে নিয়ে গান করে বেড়ায় যা এক প্রকার ভিাবৃত্তিÑ ঠিক ভিাবৃত্তিও নয় সে হল স্বপ্নের ব্যাখ্যাদাতা। তাকে সবাই সমাদোর করে। তার শ্লোকের ভেতর অবস্থান করে এক অশরীরি ব্যাপার, যা মানুষকে আরো রহস্যানুভূত করে। কুলসুমের স্মৃতিচারণে পাওয়া যায়Ñ‘ দাদার জেবন কাটল খুব মন দিয়ে মানুষের কথা শুনে আর মানুষের সাথে কথা কয়ে আর দোতারা বাজিয়ে গান করে।’ আমরা জানি এই গান শুধু গান নয়, আরো বিশেষ কিছু। এরা ‘মাদারী ফকির’। এই দুটো শব্দের ভেতর আমরা অনুসন্ধান করতে পারি মাদারী ফকিরের ঐতিহাসিকতা।

পাল যুগের সহমর্মীতা চর্চায় কুঠারাঘাত হানে সেন আমল। বিনষ্ট হয় মানুষে মানুষের ভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌজন্যতা। হিন্দু ধর্মের জাত-পাত বৈষম্য শাসক আর শোষিত শ্রেণীর মধ্যে ঘটায় বিস্তর দূরত্ব। চর্যার কবিরা পালিয়ে বাঁচেন নেপালে। চেরাগ আলীর নামের সাথে সুফিবাদ জড়িয়ে আছে। এদিকে সুফিবাদের উদ্ভবের পেছনে মোটামুটি চারটি লণ পাওয়া যায় যথাÑ ‘বৈদান্তিক ও বৌদ্ধ প্রভাব, খ্রিস্টীয় ও নব্য-প্লেটোনিক প্রভাব, পারসিক প্রভাব এবং কোরআন-হাদিস প্রভাব।’ এর মধ্যে কোন প্রভাবটি ভারতীয় উপমহাদেশে জনজীবনে প্রভাব ফেলেছে। এর সূক্ষ্মতম বিশ্লেষণ হয়ত সম্ভব নয়। প্রথম ও তৃতীয় মতের প্রতি বহুর সমর্থন ল্য করা যায়। হার্টম্যানের মতে খ্রিস্টীয় নয় শতকের মাঝামাঝি খোরাসানে ভারতীয় সন্ন্যাসীদের প্রভাব অনুভূত হয়। সেই সূত্রেই ভারতীয় সন্ন্যাসীদের প্রভাব পড়ে সূফিদের উপড়। তিনি ভারতীয় সন্ন্যাসীদের পোষাকের সাথে সূফিদের পোষাকের সাদৃশ্য ল্য করেছেন। এদিকে এখন আর বলার অপো রাখেনা যে পারসিকদের সংস্পর্শে আসার আগেই ইসলামে সূফিবাদের উন্মেষ ঘটে। এছাড়া পারসিকদের সাথে ইসলামের রয়েছে মৌলিক বিরোধ। কারণ পারসিকরা ছিলেন অগ্নি-উপাসক। ইসলাম যা গ্রাহ্য করেনা।

এখানে একটি কথা বলে নেয়া ভালো মানুষের জীবন এমন কঠোর সূত্রাবদ্ধতা মেনে চলে না। সংস্কৃতি বাঁকে বাঁকে এসে ভিন্নতর চেহারা নেয়। মাটি ও জলবায়ু একই দার্শনিক গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকে পৃথক পৃথক করে দিতে পারে।

আমরা এখানে সূফিমত না বলে ফকিরি মত বলে চেরাগ আলীকে বুঝতে চেষ্টা করতে পারি। উল্লেখ্য, বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণযোগ্য হয়েও শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে অভিজাততান্ত্রিক। কেন এই ফকিরি মত মানুষের মধ্যে দানা বাঁধলো এর পেছনে বৈষ্ণবদের উজ্জ্বলতা মলিন হবার কথা অনেকেই বলবেন। সুধীর চক্রবর্তীর ভাষায়Ñ‘ জন্ম দিল কর্তাভজা, সাহেবধনী, বলাহারী স¤প্রদায়ের, মুসলমান জনগোষ্ঠীর নিম্নবর্গীয় বা চিস্তি -সুরাওয়ার্দির বলয় থেকে, সীমাহীন অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণেই, মারফতী বয়াতী ফকিরের অবস্থান স্থায়ী করল।’ ‘ফকির’ শব্দটি যে অর্থনৈতিক অবস্থানের নিম্নতম স্তর, তা ভারতচন্দ্রের লেখা থেকেই পেয়েছি আমরা, তাঁর ‘ফকির শরীর’ চিত্রকল্পের ব্যবহারে, বা আরও বিশদ করে রামপ্রসাদের রচনায়।

মনে হয় চেরাগ আলী ফকিররা লোকজ ধর্মের প্রতিনিধি। তার শরিয়ত মেনে না চলা, তার নিবিড়ভাবে মানুষ পর্যবেণ, তার প্রায়শ নিরন্ন জীবন ও ভিাবৃত্তিÑ এসব আমাদের ভাবিত করে, নিছক ভণ্ডামী বলে উপোও করা যায় না। চেরাগ তার আদি ও অকৃত্রিম ‘খোয়াবনামা’ পুথির উত্তরাধিকারী নির্বাচন করে তমিজের বাপকে এবং তার নাতনী কুলসুমকেও তার সাথে বিয়ে দেয়। কাফকার ঞযব ঞৎরধষ এর চরিত্রের মতো তমিজের বাপও নামহীন। এখানে দেবেশ রায়ের বাঘারু চরিত্রের কথা মনে করে নিতে পারি। ‘খোয়াবনামা’র উত্তরাধিকার বানাবার মধ্যে কি ইঙ্গিত রয়েছে তা এখনও আমার কাছে অতলস্পর্শী।

তমিজের বাপ প্রসঙ্গে লেখকের দৃষ্টিপাত এই রকমের, ‘ঘুম হল তমিজের বাপের এক ধরণের কাজ, তার খুব প্রিয় পেশাও বলা যায়।’ সমগ্র উপন্যাস জুড়ে তার বিচিত্র নিদ্রার বর্ণনা আছে যার ঘুমের মধ্যে আছে অর্ধ-অচেতনে তার সারারাত ধরে কাৎলাহার বিলের চারদিক ঘিরে পায়চারি, চেরাগ আলীর সঙ্গে তার কেেথাপকথন। আবার তারপর দিন সব ভুলে যাওয়া। তার জীবন ও মৃত্যুর অধিকাংশই রহস্যাবৃত। যতটুকু বাস্তবতা আছে তা হলো অপরিমাণ ুধাবোধ। লোকটি আবার অন্যের জমিতে বেগার খাটে। কৌমসমাজে এরকম ফিল্যনাথ্রপির পরিচয় পাওয়া যায়। এর মধ্য দিয়ে লেখক আদীম সাম্যবাদী সমাজের চিত্র আঁকতে চেয়েছেন হয়ত, তাই বর্তমান কালে বসবাস করেও বাঘারুর মতো স্থাপিত হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক কালে। এদিকে ৪০ এর দশকে উত্তাল ভারত, আকাল, আধিয়ার-তেভাগা, মুসলীম লীগ কৃষক প্রজা পার্টি, পাকিস্তান প্রস্তাব, ৪৬এর নির্বাচন, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় আচ্ছন্ন দেশ ইতিহাসের এই জ্বালামুখ যখন উগরে দিচ্ছে লাভা তখন তমিজের বাপ বেড়িয়েছে চেরাগ আলীর খোঁজে। সেই তাকে এইসব স্বপ্নের বাস্তবতা বা বাস্তবের স্বপ্নময়তা বলে দেবে। কিন্তু হঠাৎই আবি¯কার করে পাকুড় গাছটি নেই। হঠাৎ করে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া গাছের খবর কেউ জানে না। কারো জানার আগ্রহও নেই। পাকুড় গাছটিকে একটি প্রতীক হিসেবে ভাবা যায়। এই গাছটি যে সময় বোধের বাহক হয়ে ছিল তা কি ‘লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ ধ্বনিতে শিকড়সহ উঠে বিলীন হয়ে যায় না। আর নেই সেই কাৎলাহার বিলের শাসন, নেই জেলে মাঝিদের অধিকারও। মুনসি কি করে বাজাবে তার পান্টি? বিলের সুতীব্র স্রোতে সাঁতার কাটে না গজার মাছ, চেরাগ আলীর অলৌকিক মহিমায় বছরের বিশেষ দিন আর মাছগুলো ভেড়ার আকৃতি নিয়ে আর সাঁতরাবে না। চারিদিকে শুধু চোরাবালি আর চোরাবালি। যার অন্তহীন অন্ধকারের ভেতর আটকে থাকে তমিজের বাপের খোয়াব।

এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্রগুলোর মধ্যে তমিজ একজন। যার আছে একটুকরো জমির স্বপ্ন। যে চাষবাস করে ফুলজানকে নিয়ে প্রাণভরে বাঁচতে চায়। তার ভেতর এই স্বপ্নের বীজ বপণ করেছে তেভাগা। সে দেখেছে তেভাগা আন্দোলনের প্রবল ঢেউ, দেখেছে চাষীদের সংঘবদ্ধ লড়াই। তার প্রত্যাশা এই সংগ্রামকে ঘিরে। মাঝির ছেলে হয়েও পরম মমতায় চাষের জমিকে সে রমণ করে ফুলজানের মতই। হুরমতের ভর্ৎসনার জবাব দেয় ফসল ফলিয়ে। তার ঘরে সমবয়সী সৎমা কুলসুম। তার বয়সের ঝিলিমিলি পাতা, পিতার নিরুত্তাপ অবস্থান, প্রায় তমিজ কুলসুমকে শারীরিক সম্পর্কের বিন্দুতে দাঁড় করিয়ে দিয়েও কেন্দ্রচ্যুত হয়ে পড়ে। তমিজের পেশীবহুল শরীরের প্রতি কুলসুমের বাসনাও ল্য করা যায়।
কোনও একদিন তমিজের ভেতর থেকে তার বাপ উঠে এসে কুলসুমের শাড়ীর আচল খুলে ফেলে। সেই রমণ মুহূর্তের বর্ণনা ইলিয়াসের ভাষার মুন্সীয়ানায় তমিজ নয় তমিজের বাপের নিরুত্তাপ যৌনতারই দাহ্য দেখতে পাই? কিন্তু তমিজের সমস্ত যৌবন নিবেদিত কঠিন মাটিকে চাষের উপযোগী করে তোলা। তার চরিত্র তার বাপের ঠিক বিপরীত মেরুতে। তার চরিত্র রূপায়িত হয়েছে বাস্তববাদী সাহিত্যানুসারে, অনেকটা চিলেকোঠার সেপাই উপন্যাসের হাড্ডি খিজিরের চরিত্রের সাথে সংলগ্ন করে। তমিজের স্বপ্নও ভেঙে যায়। চিলেকোঠার সেপাইতে হাড্ডি খিজির মহাজনের জাল ছিঁড়ে বেরোতে পারে না। বরং স্বাধীনতার পর মহাজানের ছেলের মতার নতুন বিন্যাসে খিজিররা শুধু বন্দুকের খাদ্য হয়ে সুবিধাবাদী মধ্যবিত্তদের প্রাসাদের দূর্গ রচনা করে যায়। স্বাধীনতার জন্য দেশের মানুষের রক্ত যেভাবে যে উন্মুত্ততায় দুলে উঠেছিল তার যথার্থ রাজনৈতিক সমাধান না থাকায় যেভাবে ব্যর্থ হয়ে গেছে স্বাধীনতার স্বপ্ন, ঠিক তেমনি তমিজের তেভাগার স্বপ্ন বিলীন হয়ে যেতে দেখি এই উপন্যাসে। একটু হতাশ হয়ে বিপ্লবপূর্ব সময়ে লেখা মায়াকোভস্কির একটি ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করা যায়Ñ নাটকে পুরানো সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ নির্মাণ করতে পারেনি। মায়াকোভস্কি আত্মহত্যা করেছিলেন, কেন করেছিলেন? তার ঝঁরপরফব হড়ঃব এ লিখেছেন, ‘ অন্যকে এ পথ নির্দেশে আমরা পরামর্শ দিতে পারি না।’ কিন্তু মানুষ জৈবিক ভাবেই এ পরামর্শ গ্রহণ করেÑ তমিজদের যতই ট্র্যাজেডি ঘটুকনা কেন! মানুষের সংগ্রাম ব্যর্থ হয় কিন্তু তার কি কোন ফলাফল থাকে না, থাকে না কোন ও সাফল্য? যে পান্টিই ছিল অসা¤প্রদায়িকতার বীজ কিংবা বলা চলে দুই স¤প্রদায়ের মিলনের ঐকতান। তেভাগা অথবা ষাট দশকের নকশালবাড়ি আন্দোলন কি শুধুমাত্র ব্যর্থতাই?

না, তা মানুষের সামনে তুলে ধরে সংগ্রামের নতুনতর প্রয়াস। অভিজ্ঞতা তাকে আরও শাণিত করে। যেমন প্যারী কমিউনের ব্যর্থতার ভেতরই শোনা গিয়েছিল রুশ বিপ্লবের পদধ্বনি।

আর চারণ কবি কেরামত? যে সংসার সন্তান ফেলে তেভাগার লড়াইয়ে ভিড়ে গিয়েছিল। সে গান গেয়ে মানুষকে উত্তাল করার সেই আশ্চর্য মন্ত্র কোথায় হারালো? তমিজের সাথে কি তার যৌন ঈর্ষার সম্পর্কের সৃষ্টি হয়? কুলসুমকে পাওয়ার তার তীব্র বাসনা কি জেগেছিল তমিজ ও তার সাবেক স্ত্রী ফুলজানের সম্পর্কের শোধ হিসেবে? কেরামতের এই পরিণতি কি শুধুমাত্র যৌনতার জোয়ারের বিপর্যস্ততা নাকি তেভাগার স্বপ্ন ব্যর্থ হওয়ার সাথে সাথে তার কবি সত্ত্বার স্তিমিত হয়ে যাওয়া! এই প্রশ্ন রেখে যায় আমাদের কাছে, প্রকৃত পাঠকের কাছে।

উপন্যাসটিতে হিন্দু মুসলীম সম্পর্ক, তাদের যার যার ধর্মীয় জীবন প্রণালী অনুযায়ী চলছিল। কিন্তু পাকিস্তান আন্দোলন শেষ পর্যন্ত তাদের বিভ্রান্ত করে। একে অপরের প্রতি জন্ম দেয় অবিশ্বাস। কিন্তু তারা এসব ঘটিয়েছে কি কোনও রাজনৈতিকতা থেকে? মুসলমানরা উত্তেজিত হয়ে কামারপাড়ায় আগুন লাগিয়ে দেয়ার পর নেতৃত্বদানকারী কালাম মাঝির ভাইপো আফসারের অন্তর্দাহ শুরু হয়। মুসলীম লীগ নেতা ইসমাইলও কাদেরের হিন্দুবিদ্বেষ শুনে বলেছিল, ‘তোমার ভাইয়ের সম্বন্ধীকে কি মেরেছে কামারপাড়ার মানুষ? ঐ বুড়ো দশরথের ঠ্যাং পুড়িয়ে আর আর ওর দুটো গোরু মেরে কি তোমার আত্মীয়কে ফিরিয়ে আনতে পারবে?’ এদিকে কুদ্দুস মৌলভী কামারপাড়া ঘটনার জন্য আফসারকে সেদিন শাপান্ত করে। আবার জুম্মার নামাজের পর কলকাতা বিহারের মুসলমানদের দুর্দশা নিয়ে মোনাজাতে কান্নাকাটি করে। তার মধ্যে এই দ্বন্দ্বের পরিচয় পাই। দাঙ্গার এই সব পাত্র পাত্রীদের দেখা যায় শুধুমাত্র রাজনীতির ক্রিড়ানক হিসেবে। কিন্তু বৈকুণ্ঠ হত্যার পেছনে কালাম মাঝির ব্যক্তিগত লোভকেই দেখি, শরাফতের সঙ্গে তার মতার লড়াইয়ের অংশ মাত্র। যা সা¤প্রদায়িকতা প্রবাহিত নয়, একান্ত ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থতার প্রতীক।

চিলেকোঠার সেপাইতে দেখি পশ্চিম পাকিস্তানের মতার বদল হয় মহাজনের ছেলের হাতে, তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্ততে সিপিএম গয়ানাথ জোতদারের মতাকে আরো সংহত করে, খোয়াবনামায় ইসমাইলরা যেভাবে মানুষের রক্ত বিকিকিনি করে সফলতা পায়। এসব সংগ্রামে যে বৃহৎ মানুষের সংগ্রাম আত্মত্যাগ রয়েছে তারাই নিপ্তি হয়েছে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে। মোটামুটি এই হতে পাড়ে খোয়াবনামার ট্র্যাজেডি।

ইলিয়াসের সাহিত্যে যৌনতা একটি বিশেষ মাত্রায় এসেছে। এমন দগদগে চিত্র বাংলা সাহিত্যে পাওয়া বিরল। চিলেকোঠার সেপাইতে দেখি হাড্ডি খিজিরের মা ও স্ত্রী দুজনেই মহাজনের যৌন রিরাংসার শিকার হয়। দাস যুগে দাসদের প্রতি মালিকের যেমন নিরুঙ্কুশ অধিকার ছিল তেমনি এই প্রাক-পুঁজীবাদী সময়ে তার কিছুটা পরিবর্তন ঘটলেও সম্পর্কটা লেনদেনের উপড় নির্ভর করে আছে। খিজিরের মা অথবা স্ত্রী মহাজনের কাছ থেকে কিছুটা সুবিধা আদায় করে নেওয়ার জন্যই দেহ দান করে বা বাধ্য হয়। খোয়াবনামায় যৌনতার যে চিত্র পাই তাতে পাঠক কিছুটা ধন্দে পড়তে পারেন। তাকে ফ্রয়েডের ইদিপাস কমপ্লেক্স দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। লেখক আগাগোড়া কুলসুমকে যৌন আর্তির অবদমিত চরিত্র হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। তার নারীসত্ত্বা তমিজের বাপের মৃত্যুর পর যৌনতার উজ্জ্বল উদ্ধার খোঁজে। এটাকে যৌন শাস্ত্রের অবধারিত পরিণতি বললে অতুক্তি হবে না। শরীর বিজ্ঞান বলে এ অবস্থায় নারী শীতল হয়ে যেতে পারে বা অতিযৌনতায় উন্মূত্ত হতে পারে। ইংগবার্ট দেখিয়েছেন এর জন্য দায়ী সুষুম্নাকাণ্ড পিউডেনডাল স্নায়ু, ত্রিকাস্থি স্নায়ুজাল। তাই তমিজ এবং তার সৎ মা অর্থাৎ কুলসুমের সাথে যে শারীরিক সম্পর্কের ঘটনা ঘটেছে তাকে অবাস্তব বা অশ্লীল বলার সুযোগ নেই, অন্তত
ভারতীয় অলঙকার শাস্ত্রে তো নয়ই। তাছাড়া গ্রীক নাট্যকার সফোকিসের ‘কিং ইদিপাস’র পর এই উপন্যাসে এই ঘটনা হয়ত উল্লেখ বা তর্ক সৃষ্টিতে উদ্রেগ ঘটাবে না। বরং তমিজের ভেতর থেকে তার পিতার উদ্ভব যেন প্রথাগত পাপবোধ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। আর ফুলজানের সাথে তার সম্পর্ক, অবারিত মাঠের মধ্যে তাদের সহসা সহবাস, মোষের ঢালে তাদের মাথার ওপর কেবল আকাশের চাঁদোয়াÑ মিলন স্থানের কয়েক হাত দূরেই খরখরে চষা জমি। ‘তাদের মাথার কাছে হুরমতুল্লার জোড়া বলদ’Ñএ যেন হুরমতুল্লার প্রতিকূলতা। তমিজ ফুলজানকে বাসনা করে শুধুমাত্র উদ্দাম প্রেমের কারণেই? আসলে তমিজ মাঝির পরিচয় ফেলে পুরোদস্তুর কৃষক হয়ে উঠতে চায়। হুরমতুল্লার কাছ থেকে ভর্ৎসনা শুনে তমিজ কঠিন মাটির বুক চিঁড়ে বের করে আনতে চায় রাশি রাশি ফসল। পাশাপাশি ফুলজান কৃষিকাজে তাকে সমান ভাবে সহায়তা করবে। হুরমতুল্লার সম্পদের ভাগ পেয়ে তার চাষের সীমানার আরও ব্যাপ্তি ঘটবে। ফুলজানের জীবনের নিঃসঙ্গতা, বাপের বাড়ি গলগ্রহের মতো থাকার অপমান, রোগা সন্তানের ওপর বাৎসল্য তাকে আরও বেশি প্রেমিক করে তোলে।

উপন্যাসটির রাজনৈতিকতা সম্পর্কে বলা যায় এটি প্রলেতারিয়েত শ্রেণীর প্রতি সহানুভূতিলগ্ন একটি নিম্নবর্গের মানুষের রাজনৈতিক-সামাজিক ইতিহাস। জনগণের অপরিমেয় আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতার মধ্যে তাদের জেগে ওঠার স্পৃহা দেখতে পাই। এদের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে শরাফত মণ্ডল, কালাম মাঝি ইসমাইলের মতো শোষক শ্রেণী। যারা আধিপত্যবাদী রাজনীতির প্রান্তিক সংগঠক। এদর সাথে যেমন টিকে থাকার স্বার্থে আপোষ করতে হয় তেমনি এদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়। কিন্তু অসাংগঠনিক জনগণের দাবানল উল্কার মতো দ্রুত পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়।

খোয়াবনামার উত্তোরাধিকার শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে পৌঁছায়? পাকুড় গাছটির অনঅস্তিত্ত্ব ঘোষিত হবার পর মোটামুটি ধারণা করা গেছে এবার খোয়াবনামা ভিন্ন এক খোয়াবের ব্যাখ্যায় ব্যর্থ হবে। তমিজের বাপের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তার চূড়ান্ত বিলয় ঘোষিত হবে। তমিজের বাপের থেকে কেরামত, কেরামতের পর আজিজÑ তারপর? তারপর খোয়াবনামার কোনও গল্প থাকে না। পাশাপাশি পূনঃপাঠ করে দেখি খোয়াবনামার শুরুটাÑ

কাৎলাহার বিলের ধারে ঘন জঙ্গল সাফ করে সোভান ধুমা আবাদ শুরু করে বাঘের ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে। ঐ সব দিনের এক বিকালবেলা মজনু শাহের বেশুমার ফকিরের সঙ্গে মহাস্থানগড়ের দিকে যাবার সময় ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির সেপাই সর্দার টেলারের গুলিতে মারা পড়ে মুনসি বয়তুল্লাহ শাহ্ । কাৎলাহার বিলের দুই ধারের সবাই জানে। বিলের উত্তরে পাকুড় গাছে আসন নিয়ে রাতভর বিল শাসন করে মুনসি। দূরে কোথাও ভূমিকম্প হলে যমুনা বদলে যায়। বন্যায় ভেঙে পড়ে কাৎলাহারের তীর। মুসসির নিষ্কণ্টক অসিয়াতে চাষীরা হয় কাৎলাহার বিলের মাঝি। খোয়াবনামার শুরু... মুনসির শোলকে শোলকে মানুষের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে বেড়ায় চেরাগ আলি ফকির। ...তাকে যদি এক নজর দেখা যায়Ñ এই আশায় তমিজের বাপ হাত নাড়াতে নাড়াতে আসমানের মেঘ খেদায়।










পাঠসূত্রঃ

১. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস: সংস্কৃতির ভাঙা সেতু: ভূমিকা: শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়; নয়া উদ্যোগ।
২. শওকত আলী; মীথ, তৃণমূলে যাবার এক পথ: ‘তৃণমূল’ ৪র্থ সংখ্যা, ১৯৯৮; আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সংখ্যা।
৩. পাঠে-পুনর্পাঠে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস: পৃথ্বীশ সাহা সম্পাদিত: উপন্যাসের প্রোয় আখতারুজ্জামান ইলিয়াস।
৪. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস রচনা সমগ্র: ভূমিকা: খালিকুজ্জামান ইলিয়াস।
৫. গৌতম ভদ্র: ইমান ও নিশান।
৬. মুসলিম দর্শন পরিচিতি: ডঃ আবদুল হামিদ, ডঃ মুহাম্মদ আবদুল হাই ঢালী।
৭. তিস্তা পারের বৃত্তান্ত: দেবেশ রায়
৮. পরিকথা: খোয়াবনামাÑ একটি বিশ্বমুখ দর্পণ: মলয়চন্দ মুখোপাধ্যায়।
৯. নিম্নবর্গের ইতিহাস: সম্পাদনা: গৌতম ভদ্র এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
১০. লিরিক: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সংখ্যা।
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×