চন্দ্রের প্রস্থান হয় সূর্যের আগমনে:
জিয়ার আগের একজন রাষ্ট্রপ্রধান ( তিনি কিভাবে সে পদে অধিষ্টিত হয়েছিলেন সে বিতর্কে আজ যাব না ) যিনি বিশ্বের ধনী রাষ্ট্র সমুহের দুয়ারে দুয়ারে তলা বিহীন এক ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান। যার দিকে আঙ্গুল উঁচু করে নানান হাস্য রসাত্মক গল্প চালু হয়ে গেছে পশ্চিমা বিশ্বে অথচ এখানে তাঁদের যেন কোন বিকার নেই, লজ্জা শরম নেই, কিছু করার চিন্তা নেই, চিন্তা করার মত যোগ্য লোকও যেন সব হারিয়ে গেছে। তিনি সেই আজব দেশের আজব প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট সাহেব বিভিন্ন দেশ থেকে খয়রাতি চাল-ডাল নিয়ে এসে নিজেদের লোকদের হাঁতে তুলে দিয়ে হাভানা আর নেদারল্যান্ডের তামাক ভরে নেন নিজের প্রিয় পাইপটিতে। তাঁর পাইপ টানা আর শেষ হতে চায় না। যতক্ষন তিনি এই ধোঁয়ার নেশায় আচ্ছন্ন থাকেন ততক্ষনে খয়রাত করে আনা সব কিছু পাচার হয়ে গেছে বন্ধু দেশ ভারতে।
একজন সচেতন,স্বাধীন,ন্যুনতম আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মানুষের পক্ষে বছরের পর বছর এমন অরাজকতা মেনে নেয়া কখনো-ই সম্ভব ছিল না। আমরা জানি, আল্লাহ যখন তাঁর কোন বান্দার উপর সর্বচ্চো রুষ্ট হন তখন-ই তাঁর হাঁতে তুলে দেন ভিক্ষার ঝুলি। তাকে ঋনগ্রস্থ করতে করতে এক সময় অতলে হারিয়ে যেতে দেন। দেশের সব কিছু খুইয়ে, দুর্ভিক্ষ ঘটিয়ে যে রাষ্ট্র নেতার এমন লাঞ্চনাকর বিদেয় হল, তারপরেই যেন বর্ষণ ক্লান্ত কাক ডাকা বিকেলের এক লাজুক রোদ্দুরের বেশে হাজির হলেন স্বল্পভাষী জিয়া। দেশের মানুষের কাছে তখনো তিনি মেজর জিয়া। স্বাধীনতার আগে বীরত্বের খেতাব হিসেবে যিনি অর্জন করেছেন হিলাল-ই-জুরাত নামের মহামুল্যবাদ পদক আবার স্বাধীনতা যুদ্ধে অসীম বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে সে স্থানের শোভা বাড়িয়েছেন বীর উত্তম খেতাবের মেডেলে। ততদিনে অবশ্য ইতিহাসের পদ্মা আর প্রমত্তা পদ্মার মর্যাদায় নেই, মানুষও আর আগের মত উদ্যমী যোদ্ধা মেজাজে নেই। আছে শুধু হাহাকার আর হতাশার নিরব বিলাপ। দেশজুড়ে। জীর্ণ বস্ত্র আর শীর্ণ গাত্রে লাশ হয়ে মরে পচে গলে যাওয়া মানুষের কংকালগুলো তখনো এখানে সেখানে পড়ে ছিল। সে সময় দেশের বেওয়ারিশ কুকুর গুলোই কেবল নাদুস নুদুস স্বাস্থ্যে ঘুরে বেড়িয়েছিল। যারা কোনও মতে বেঁচে ছিল তাড়া তাঁদের সন্তানদের বিক্রি করে দিত মাত্র পাঁচ টাকায়, সোমন্ত কচি মেয়েরা বিক্রি হয়ে যেত এক মালসা ফেনের আশায়। অসমর্থ একদল মা তাঁদের দুধের শিশুকে কাপড়ে মুড়ে রাস্তার কিনারে ফেলে চলে যেত। কারো দয়া হলে সে শিশু হয়ত বেঁচে যেত আর না হলে সেসব অবুঝেরা জীবন্ত ফিস্ট হয়ে যেত শিয়াল, কুকুর আর শকুনের। এমন অসম্ভব সময় যারা তৈরি করেছিল, তাঁর মুল্যও তারাই শোধ করেছে একেবারে কড়ায় গন্ডায়।
এমন তমসাচ্ছন্ন রাতের আঁধার থেকে জাতিকে মুক্ত করতেই সিপাহি জনতার অভূতপূর্ব এক মিলনে সৃষ্টি হয় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের যা জিয়াকে পরিনত করে দেশের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তয়ন দূরীকরণ, অনিয়ম, উশৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাকল্পে তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন। দুর্বৃত্ত লোকেরা যেন রাতারাতি পুনর্বাসিত হতে না পারে, তাঁদের বিরুদ্ধে উচ্চারন করলেন ঐতিহাসিক হুশিয়ারি বানি-আই শ্যাল মেইক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফোর দ্যা পলিটিশিয়ানস। অন্যদিকে তলাবিহীন ঝুড়ির কলংক মুছতে তিনি দেশে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের বিপ্লব শুরু করে দিলেন সরবস্তরে। যেখানে এক বছর আগেও ক্ষুধার্ত মানুষ খাবার জুগিয়েছে কুকুর আর শিয়ালের সেখানেই একের পর এক কারখানা গড়ে উঠতে শুরু করল। তিনি ঘোষণা করলেন-কারখানায় কাজ প্রয়োজনে তিন শিফটে চলবে। দেশ স্বনির্ভর হয়ে উঠতে শুরু করল যখন তখনই জিয়ার কানে বাজল ষড়যন্ত্রের বাঁশি কিন্তু তিনি সেসবের তোয়াক্কা করলেন না। বিপুল বিক্রমে এগিয়ে যেতে থাকলেন দেশের এ মাথা থেকে ও মাথা।
২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর নিজেরও নিজ পরিবারের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন নিজেকে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে। যে দ্বি-জাতি তত্তের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম সেই জাত পাত ভুলে মানুষের অধিকার আদায়ে বদ্ধপরিকর ছিলেন বলেই তিনি এতবড় ঝুঁকি নিয়ে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। অবশ্য যারা বহুকাল ধরে এসব নিয়ে নানাভাবে জল ঘোলা করে এসেছেন তাঁদের মুখে চুন মাখা হয়েছে জনাব তারেক রহমানের তত্ত, তথ্য আর প্রমান সহ বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে। স্বাধীনতার পর বহু জাতির মিলনের মাধ্যমে যে সেক্যুলার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এদেশের আপামর মানুষ, সে স্বপ্ন ভেঙ্গে খানখান হয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ফারাক্কা বাধ, সীমান্ত সমস্যা, বাংলাদেশকে চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলার যে প্রচেষ্টা ভারত শুরু করে তাতে জিয়া বুঝেছিলেন বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ আর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ কখনোই এক নয়, হতে পারেনা। ফলে তিনি ঘোষণা করলেন’বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কনসেপ্ট। দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষ যেন জিয়ার মুখে এমন কিছু শোনার অপেক্ষাতেই ছিল। মানুষের মনে জিয়া হয়ে উঠলেন মধ্যমনি, আরাধ্য আর পরম শ্রদ্ধার পাত্র। আজ আমরা যে বাংলাদেশ দেখি এবং যে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের তত্তে দৃঢ় আস্থা রাখি তা এসেছে একজন জিয়ার হাত ধরেই।
শহীদ জিয়া সমুদ্রের তলদেশের সম্পদ সম্পর্কে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক কর্মী, কবি, সাহিত্যিক ও ব্যবসায়ীকদের অবগত করার জন্য এক সমুদ্র বিহারের আয়োজন করেন। সমুদ্রে ভ্রমণ করে সমুদ্র সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন তিনি। এরকম রাষ্ট্রনায়ক পৃথিবীতেই বিরল। বক্তব্যের বিষয়কে বাস্তবানুগ ও হৃদয়েপ্রোথিত করানোর জন্য দরিয়া ভ্রমণের আয়োজন করেন। আনন্দ ভ্রমণের মধ্যদিয়ে মেধাবী ও মননশীল আগামীর ভবিষ্যতকে দিকনির্দেশনা দিলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট জিয়ার সেই কালজয়ী বক্তব্য---
‘‘শোনো ছেলেমেয়েরা, আমি তোমাদের বাংলাদেশের ডাঙা থেকে তুলে উত্তাল বে অব বেঙ্গলের মধ্যখানে নিয়ে এসেছি।
সমুদ্র হল অন্তহীন পানির বিস্তার ও উদ্দাম বাতাসের লীলাক্ষেত্র। এখানে এলে মানুষের হৃদয় একই সাথে উদার ও উদ্দাম-সাহসী হয়ে ওঠে। অন্তত উঠতে বাধ্য। আমি কি ঠিক বলিনি?
আমি ঠিকই বলেছি। তোমার আমার বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সংকীর্ণতা ও কূপমণ্ডুকতাকে পরিহার করে সমুদ্রের মতো উদার ও ঝড়ো হাওয়ার মতো সাহসী হতে হবে।
আমি তোমাদের কাছে এখন যে কথা বলবো তা আমাদের জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক তাগিদ। এই তাগিদকে স্মরণীয় করার জন্য আমি একটা পরিবেশ খুঁজছিলাম। হঠাৎ বঙ্গোপসাগরের কথা মনে পড়লো। এই উপসাগরেই রযেছে দশ কোটি মানুষের উদরপূর্তির জন্য প্রয়োজনেরও অতিরিক্ত আহার্য ও মূলভূমি ভেঙে আসা বিপুল পলিমাটির বিশাল দ্বীপদেশ, যা আগামী দু’তিনটি প্রজন্মের মধ্যেই ভেসে উঠবে। যা বাংলাদেশের মানচিত্রে নতুন বিন্দু সংযোজনের তাগিদ দিবে। মনে রেখো, আমাদের বর্তমান দারিদ্র, ক্ষুধা ও অসহায়তা আমাদের উদ্দামহীনতারই আল্লাহপ্রদত্ত শাস্তিমাত্র।
আমাদের ভিটাভাঙা পলি যেখানেই জমুক, তা তালপট্টি কিংবা নিঝুম দ্বীপ, এই মাটি আমাদের। দশকোটি মানুষ সাহসী হলে আমাদের মাটি ও সমুদ্রতরঙ্গে কোনো ষড়যন্ত্রকারী নিশান উড়িয়ে পাড়ি জমাতে জাহাজ ভাসাবে না।
মনে রেখো, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দশকোটি মানুষ যথেষ্ট সাহসী নই বলে শত্রুরা, পররাজ্যলোলুপ রাক্ষসেরা আমাদের পূর্বপুরুষদের এই স্বাধীন জলাধিকারে আনাগোনা শুরু করেছে। তোমরা বাংলাদেশের সবচে মেধাবী ছেলেমেয়ে, দেশের দরিদ্র পিতামাতার সর্বশেষ আশার প্রাণকণা, যাদের ওপর ভরসা করে আছে সারাদেশ, সারাজাতি। তোমারাই হলে বাংলাদেশের হাজার বছরের পরাধীনতার কলঙ্কমোচনকারী প্রত্যাশার আনন্দ নিশ্বাস।
ইতিহাসের ধারায় দৃষ্টিপাত করলেও তোমরা জানবে এই সমুদ্রে ছিল আমাদের আদিতম পূর্বপুরুষদের নৌশক্তির স্বাধীন বিচরণভূমি। এমনকি বৌদ্ধ যুগে পাল- রাজাদের অদম্য রণপোতগুলো এই জলাধিকারে কাউকেই অনধিকার প্রবেশ করতে দেননি। সন্দেহ নেই আমাদের সেসব পূর্বপুরুষগণ ছিলেন যথার্থই শৌর্যবীর্যের অধিকারী। তখন আমাদের জনগণ ছিল সংখ্যায় কত নগণ্য। কিন্তু আমরা সারাটা উপমহাদেশ, সমুদ্রমেখলা দ্বীপগুলো আর আসমুদ্র হিমাচল শাসন করেছি। বলো, করিনি কি?
(একজন ছাত্র উত্তর দিল)- হ্যাঁ করেছি। আলবৎ করেছি।
প্রেসিডেন্ট হেসে প্রশ্ন করলেন-
তুমি কি সেই বীরদের কারও নাম জানো?
ছাত্রটি- রাজা মহীপাল।
প্রেসিডেন্ট- তুমি ঠিক বলেছো মাই সান। তুমি কি ইতিহাসের ছাত্র?
ছাত্রটি- না, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমি রসায়নের ছাত্র।
প্রেসিডেন্ট- বিউটিফুল।
প্রকৃতপক্ষে আমার স্বজাতির মধ্যে মেধারও অভাব নেই। এই ছেলেটির কথাই ধরাই যাক না। সে কেমিস্ট্রির ছাত্র কিন্তু ইতিহাস জ্ঞানও বেশ টনটনে। এরাই জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।
শোনো ছেয়েমেয়েরা, আমি তোমাদের সান্নিধ্য পেয়ে খুবই খুশি। তিনটি দিন ও তিনটি রাত আমরা এই দরিয়ার নোনা বাতাসে দম ফেলতে এসেছি। এখন এই জাহাজটিই হলো বাংলাদেশ। আর আমি হলাম তোমাদের ক্যাপ্টেন। (যেন আরব্য উপন্যাসের সিন্দাবাদ)
আমি চাই আমাদের দেশের প্রতিভাবান ছেলেমেয়েদের মধ্যে একটা চাক্ষুস পরিচয় ও বন্ধুত্বের আদান প্রদান হোক। চেনাজানা থাকলে পারস্পরিক আত্মীয়তা রচিত হয়। হয় না কি?
(সবাই একস্বরে জবাব দিলো- ইয়েস মিস্টার প্রেসিডেন্ট।)
আমি তোমাদের কাছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ব্যক্ত করতে চাই।
আমাদের রয়েছে যোজন যোজন উর্বরা জমি। একটু আয়েসের ফলেই যেখানে ফসলে ভরে যেতে পারে। অর্থৈর অভাবে শুধু কোনো বৈজ্ঞানিক চাষের উদ্যম নেওয়া যাচ্ছে না। কে আমাদের বিনাস্বার্থে এই উদ্যমে সহায়তা করবে? কেউ করবে না। অথচ যে সম্পদের বিনিময়ে অর্থের প্রাচুর্য ঘটে তা আমাদের দেশের পেটের ভিতরেই জমা আছে। আমরা তুলতে পারছি না।
কী সেই সম্পদ যা আমরা তুলতে পারছি না? তোমরা কী জানো সেই লুক্কায়িত সাতরাজার ধন কী? কোথায সেগুলো আছে? সেই সাতরাজার ধন হলো তেল, গ্যাস, কয়লা, চুনাপাথর আরও অনেক কিছু।
(একজন ছাত্রী প্রশ্ন করলো-)
- গ্যাসতো আমরা খানিকটা তুলেছি। আমাদের কি তেলও আছে? পেট্রোল?
হ্যাঁ। গ্যাস আমরা খানিকটা তুলেছি বটে, তবে এর বিপুল ভাণ্ডারে এখনও হাত দেইনি। গ্রামে গ্রামে জ্বালানী সরবরাহের জন্য তিতাস, বাখরাবাদের মতো অসংখ্য গ্যাসকেন্দ্র দরকার। দরকার দেশের কোন কোন অঞ্চলের গ্যাসের পরের স্তর থেকে তেল নিংড়ে বের করে আনা।
(নঈমা নামের একটি মেয়ে প্রশ্ন করলো- আমাদের কী তবে জ্বালানী তেলও আছে?)
(প্রেসিডেন্ট নঈমাকে বসতে বললেন। তারপর একটি শিশি হাতে নিয়ে একটা ঝাঁকুনি দিলেন। শিশিটা দেখয়ে বললেন-)
এতে আছে বাংলাদেশের পেটের ভেতরে লুক্কায়িত সাতরাজার ধন, পেট্রোল। বিশুদ্ধ পেট্রোল। যা পুড়িয়ে বিমান, গাড়ি অসংখ্য ভারী যানবাহন, সমুদ্রে জাহাজ অনায়াসে চলাচল করতে পারবে। শক্তির ধাত্রী এই তেল। আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। তোমরা ভাল করে দেখে রাখো ছেলেমেয়েরা, আমার হাতে রয়েছে সেই মহার্ঘ নিয়ামত যা বাংলাদেশের সীমানার ভেতর, মাটির উদরে তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। যা ক্রমাগত বাধার ফলে আমি শত চেষ্টা সত্ত্বেও তোমাদের ভাগ্য ফেরাতে তুলে আনতে পারছি না।
(প্রেসিডেন্ট কিছুক্ষণ থেমে তারপর ক্লান্ত ভঙ্গিতে বললেন-)
আমার জীবৎকালে সম্ভবপর না হলে তোমরা, আমার ছেলেমেয়েরা, এই তেল তুলবে।’’
(পুরো পরিবেশ স্তব্ধ হয়ে গেল। এ সময় বিদ্রোহী কবির কবিতা গানের মতো গেয়ে উঠলো শিল্পীরা।)
কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙে ফেল কররে লোপাট
রক্তজমাট শিকলপূজার পাষাণবেদী….
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গানটি শুনতে শুনতে কেঁদে ফেললেন। অন্তরার সময় তিনি আর বসে থাকতে পারলেন না। দাঁড়িয়ে গেলেন। এই ছিলেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তাঁর আদর্শে বিশ্বাসীরা সত্যি কতটুকু তাঁর সম্পর্কে জানি বা জানতে চেষ্টা করি? এই দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ককে ভুলে গেলে বা তাকে চর্চায় না রাখলে বাংলাদেশ এগোতে পারবে না। সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক দর্শন ও প্রজ্ঞা তৈরি হবে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কী কী ধন সম্পদ রয়েছে। এবং সে সম্পদ কাজে লাগাতে এবং বিদেশি শত্রুদের মোকাবেলায় নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে হলে শহীদ জিয়ার বক্তব্যটিকে অনুধাবন করতে হবে।
শহীদ জিয়ার সেই বক্তব্য আজ ১৭ কোটি মানুষের কাছে তৃষিত জলধির মতো। শহীদ জিয়ার জন্মবার্ষিকী, শাহাদৎবার্ষিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো প্রভৃতি বার্ষিকীতে শুধু রাজপথের কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না। এসব বার্ষিকীতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বক্তব্য, কর্মকাণ্ড ও জীবনাচার প্রতিরূপিত করতে হবে। তাহলেই চেতনাবাজদের মুখোশ উন্মোচিত হবে আর সত্যিকার দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়কদের সম্পর্কে আগামীর বাংলাদেশ অবগত হতে পারবে।
** বিভিন্ন ওয়েব পেজের সহায়তা নেয়া হয়েছে। তথ্যগত ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন প্লিজ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০৭