কেমিস্ট্রি পরীক্ষার পড়াশোনা বাদ দিয়ে দুপুরবেলা এক হাই
ভোল্টেজ ঘুম দিয়ে রিফ্রেশড হয়ে উঠে যা দেখলাম তাতে তো
চক্ষু আমার সন্দেশবড়া (ছানাবড়া নয় কিন্তু)।
কি দেখলাম ঠাওর করতেই লেগে গেল পাক্কা দুই মিনিট।
সূত্রমতে, (আমি নিশ্চিত নই) একদল একদল ছেলেমেয়ে মিলে
একটি প্রেম প্রস্তাব ভিডিও করেছে। ভিডিওটা নতুন হলেও
ঘটনা কিন্তু পুরনো। একই জিনিস কিছুদিন আগে কমার্স
কলেজেও ঘটেছিল। যাই হোক, জানতে পারলাম এবারের
ছেলেমেয়েগুলো নাবালক। আই মিন, ক্লাস সিক্সে পড়ে।
(মেয়েটাকে ছোট মনে হলেও ছেলেটাকে ক্লাস সিক্সের মনে
হল না।)
যে ভঙ্গিতে হাটু গেড়ে বসে, ফুল দিয়ে প্রপোজ করল, অতঃপর
একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে চুমু বিনিময় করল তাতে মনে হল
ঢাকার বুকে এক টুকরো হলিউড (সিগারেটের কথা বলছি না)।
একজনের প্রতি আরেকজনের অনুভূতি থাকতেই পারে।
অস্বাভাবিক নয়। সেই অনুভূতি প্রকাশ করাও দোষের কিছু নয়।
কিন্তু তাই বলে এভাবে নিজস্ব সংস্কৃতিকে বলি দিয়ে, ঘটা
করে ভিডিও করে অনুভূতি ব্যক্ত করার মাঝে আমি কোন সুস্থ্য
মানুষিকতার পরিচয় দেখি না। এরা আসলে সেই সব মানুষ
হিসেবেই গড়ে উঠছে যারা "আধুনিকতা"কে ভাবে ব্যক্তিত্ব।
অথচ আধুনিকতার সংজ্ঞা তাদের অজানা।
তাদের এভাবে গড়ে উঠার পিছনে কারা দায়ী? এর দায়ভারও
কি তবে শিক্ষা ব্যবস্থার? আলবৎ। তবে এ শিক্ষা পাঠ্যপুস্তক
বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত নয়। এর দায় শিক্ষামন্ত্রীরও নয়। এর দায়
আমাদের সকলের। এ শিক্ষা পারিবারিক শিক্ষা।
আজ যখন ছোটবেলা থেকেই একটি বাচ্চা সৃষ্টিশীল কিছু
দেখে এবং শিখে বড় না হয়ে, মায়ের সাথে প্রতিদিন গড়ে
চার ঘণ্টা সিরিয়াল এবং দুই ঘণ্টা সিনেমা (বয়স অনুপাতে
যেগুলো একটু বেশিই ভারী) দেখে বড় হচ্ছে সে তো এভাবেই
তার প্রেমিকাকে সবার সামনে ধরে চুমু খাবে এবং সে ভিডিও
ভাইরাল করে সেলিব্রেটি হবার চেষ্টা করবে। বড়ই
স্বাভাবিক।
শুধুই তাই শিক্ষামন্ত্রীকে গালিগালাজ না করি। বরং
নিজেকে পালটাই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬