রংপুরে ভণ্ড কবিরাজের কুকীর্তি, ধর্ষণ আর ধর্ষণ..........
রংপুর ব্যুরো
বার্তা২৪ ডটনেট
রংপুর, ২৩ অক্টোবর: রংপুর মহানগরীর হাউদার পার এলাকায় মঙ্গলবার পুলিশ জিনের বাদশা নামধারী এক ভণ্ড কবিরাজের আস্তানা খুঁজে পেয়েছে। ওই আস্তানায় জিনের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের মনোবাসনা পূরণের নামে যৌন হয়রানীসহ শারীরিক নির্যাতন করা হতো।
আস্তানা থেকে মানুষের মাথার খুলিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। ডিআইজি’র কাছে একজন প্রতারিত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ তথ্য ফাঁস হয়ে পড়ায় এলাকাবাসী বিস্মিত হয়ে গেছেন। এ ঘটনায় ভণ্ড কবিরাজ আতিয়ার রহমানসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনাকারী রংপুর পুলিশের বি সার্কেল রেজা জানান, একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি’র কাছে কবিরাজ আতিয়ার রহমানের প্রতারণা এবং যৌন হয়রাণীর অভিযোগ করেন। ডিআইজির নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে দুই দিন ওয়াচে রেখে আমরা প্রথমে ডিবি পুলিশ দিয়ে হাউদার পাড়ের গুঞ্জর খাঁ গ্রামে আতিয়ারের বাড়িতে অভিযান চালাই।
এ সময় আতিয়ার রহমান, তার সহযোগি রেজাউল ইসলাম, আব্দুল ওয়াহেদ এবং স্ত্রী ও পুত্র বধূকে আটক করি।
তিনি আরো জানান, বাড়ির উঠোন দিয়ে পাইপ বসিয়ে পশ্চিম পাশের ঘর থেকে পূর্ব পাশের অপর একটি অন্ধকার খুপড়ি ঘরে কথিত জিনের শব্দ দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আতিয়ার। অন্ধকার খুপড়িতে আতিয়ার মানুষের মাথার খুলি নিয়ে বসে থাকতো। আর অপর ঘরে রেজাউল ও ওয়াহেদুল জিন হয়ে কথা বলতো।
এক পর্যায়ে জিন বলতো, তার মনের ইচ্ছা পূরণ হওয়ার জন্য শারীরিক মেলামেশা করতে হবে। লোভে পড়ে নারী গ্রাহকরা ওই ঘরেই আতিয়ারের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক করতো। এরপর আবার আতিয়ার অন্য ঘরে যেতো। অন্ধকার ঘরে আসতো পালাক্রমে রেজাউল ও ওয়াহেদ। তারাও নারী গ্রাহকদের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক করতো। এরপর পাঁচ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত কন্ট্রাক্টে আতিয়ার কবিরাজি চলতো।
এভাবে ভালোবাসা মিলিয়ে দেয়া, স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন ভালো করে দেয়া, ছেলেমেয়েকে বশ করা, জমিজমা ফিরিয়ে পাওয়াসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নারীদের ভোগ করতো কবিরাজ আতিয়ার ও তার সিন্ডিকেট।
পুলিশ জানায়, আতিয়ার, রেজাউল, ওয়াহেদ ছাড়া আরো অন্য কাউকে এনে এখানে যৌন হয়রানীর ব্যবসা করা হতো কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে মানুষের মাথার খুলি, আরবী অক্ষর দিয়ে লেখা ডিম, পাইপ, বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজন আইয়ুর্বেদী ইউনানী ঔষধ ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ বিপুল পরিমাণ জিনিস পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এলকাবাসী সাহেব আলী, আকলিমা, আফাজ উদ্দিন খান, মমতাজ, সোহরাবসহ অনেকেই জানান, আগে নাপিতের ব্যবসা করতো আতিয়ার। হঠাৎ করে কবিরাজি ব্যবসা ধরে। গত তিন বছর ধরে বাইরে থেকে প্রতিদিনই শত শত মানুষ এসে তার কাছে চিকিৎসা নিতো। এরমধ্যে অধিকাংশরাই বিভিন্ন বয়সের নারী। এলাকার কারো সঙ্গে তার কোওর সম্পর্ক ছিল না। ওই বাড়িতে কখনই পুরুষকে ঢুকতে দেয়া হতো না। তবে চলাফেরা দেখে মনো হতো না, ওই বাড়িতে এত অন্যায় অপকর্ম হতো।
আব্দুল বাছেদ নামে এক প্রতারিত যুবক বলেন, “এক মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক করে দেয়ার কথা বলে ছয় হাজার টাকা নেয়। ওই মেয়ের সঙ্গে আমাকে মেলামেশার লোভও দেখায়। কিন্তু বেশী টাকা চাওয়ায় আর আমি তার কাছে যাইনি। অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছি।”
ডিআইজির কাছে অভিযোগকারী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী জানান, আমার কাজ করে দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে ২০ ভরিরও বেশি স্বর্ণ দিয়েছি আমি ওই কবিরাজকে। এছাড়াও কাজ করে দেয়ার নামে অন্ধকার ঘরে জিনের বাদশার কণ্ঠ শুনিয়ে একটি ভিন্নরকম আবহ তৈরি করে আমাকে শারীরিকভাবে মেলামেশা করতেও বাধ্য করে ওই কবিরাজ। আমি এই ভণ্ড কবিরাজের ফাঁসি চাই।”
রংপুর পুলিশের বি সার্কেল এএসপি রেজা জানান, ভণ্ড কবিরাজ আতিয়ার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকার জিনের বাদশাদের শীর্ষ। তাদের ফমুর্লা দিয়েই সে এখানে কাজ শুরু করে গোপনে। তার গোপন আস্তানায় মেয়েদের যৌন হয়রানী করার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি আরো জানান, শুধু একটি মেয়েকেই ২০ দিন ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও আমরা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুরো গ্যাংটাকেই ধরার জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।
ভণ্ড কবিরাজ আতিয়ার রহমান জানান, রেজাউলের মাধ্যমে এক হিন্দুর কাছ থেকে মাথার খুলি কিনে নিয়ে পাইপসহ আরও আনসঙ্গিক নানা উপকরণ দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। কখনও আমি জিন কখনও রেজাউল ও ওয়াহেদ জিন হয়ে মানুষকে অন্ধকার ঘরে নিয়ে কথা বলে চিকিৎসা করি।
কবিরাজ আতিয়ার জিনের দোহাই দিয়ে মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “আমি কখনই মেয়েদের সঙ্গে খারাপ কাজ করিনি। তবে ঘর বদলের পর রেজাউল ও ওয়াহেদ এটা করতে পারে।”
বার্তা২৪ ডটনেট/জিহ
রংপুরে ভণ্ড কবিরাজের কুকীর্তি, ধর্ষণ আর ধর্ষণ..........
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২৩টি মন্তব্য ২২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...
ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।
মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হার জিত চ্যাপ্টার ৩০
তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবনাস্ত
ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে
প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?
আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন