somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লুটেরা পরিবারতন্ত্রের বাহির থেকে এই দেশে পরিবর্তন আনার একটা উপায় সম্পর্কে আলোচনা

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকন্ঠ দুর্নীতি মগ্ন যে পলিটিকাল সিস্টেম টা বাংলাদেশের জনগণ এর ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছে তা আরো অনেক বছর ধরে চালু থাকবে বলেই মনে হচ্ছে | আওয়ামী লিগ এবং বিএনপির নেতৃত্বে এই সিস্টেম টায় রাজনৈতিক দল গুলো একজন আরেকজন এর সাথে

প্রায়ই ক্ষমতার বখেরা পাওয়ার জন্যে লগি বৈঠা দা কুড়াল নিয়া মারামারি করলেও এরা সায়ামিজ টুইন এর মত একজন আরেকজন এর অঙ্গাঙ্গী সঙ্গী |

এই পলিটিকাল সিস্টেম এর বাহিরে এই দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে যার সাথেই কথা বলবেন, দেখবেন সকলে বোঝে এবং জানে এরা দুর্নীতিমগ্ন


এবং এই দেশের প্রতিটা মানুষ জানে এদের প্রধান উদ্দেশ্য রাষ্ট্রীয় সম্পদ এর লুটপাট | এবং এই লুটপাট এর কারণে বিশ্ব যখন এগিয়ে যাচ্ছে দুর্দম্য গতিতে বাংলাদেশের মানুষ পিছিয়ে পরছে অথবা আমাদের যে সুযোগ তার ১০% ও অর্জিত হচ্ছে না |
এবং এই দুর্নীতিবাজ লুটেরা দের দিয়ে দেশের মৌলিক পরিবর্তন আনা সম্ভব নয় |

কিন্তু দুঃখজনক ভাবে বাংলাদেশের জনগণ পাচ বছরের মধ্যে মাত্র এক দিন এর জন্যে ক্ষমতার স্বাদ পায়, তা হলো ভোট এর দিন | এই দিন বাংলাদেশের জনগণ তার এভেইলেভেল দুইটা অপশন এর মধ্যে ওই সময়ই যাকে অপেক্ষাকৃত ভালো পায়, তাকেই ভোট দেয়|এবং বাকি পাচ বছর , তার ভোটকৃত শক্তির হাত থেকে লুন্ঠিত হতে মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নেয় |

বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ পরিবর্তন চায় কিন্তু আমরা নিজেরাই রাডিকাল পরিবর্তন এর জন্যে প্রস্তুত নই |

বাংলাদেশের জনগণ এর যে অপার সমভাবনা তার বিকাশ চায়| কিন্তু কারেন্ট সিস্টেম টা এমন ভাবে ডিজাইন করা তাতে, নতুন কোনো শক্তির বিকাশ এর কোনো পরিবেশ নাই, সুযোগ নাই, রাস্তা নাই |


তার কারণ, প্রকৃত পক্ষে এই দুর্নীতি বাজ রাজনৈতিক যন্ত্র এখন আলাদা কোনো শক্তি না তারা কর্পোরেট, সিভিক সোসাইটি, মিলিটার, মেডিয়া, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, বিভিন্য লেভেল এর পুজির মালিক এর সাথে মিলে মিশে এমন একটা সিস্টেম তৈরী করেছে যেই সিস্টেম এর মধ্যে আমি এবং আপনিও একটা পার্ট |

ফলে দেখা যাচ্ছে, বড় বড় কথা বললেও, আমরা নিজেরাই এই সিস্টেমকে ভেঙ্গে মৌলিক ভাবে নতুন কোনো সিস্টেম তৈরী করতে প্রস্তুত না |

এইটা যেমন একটা ইস্যু তেমনি আর একটা ইস্যু হইলো, এই সিস্টেমটা এমন ভাবে ডিজাইন করা তাতে এই সিস্টেমকে ভেঙ্গে নতুন কোনো স্ট্রাকচার গড়ে তোলার একমাত্র গ্রহনযোগ্য প্রসেস হইলো, ভোট এর মাধ্যমে নির্বাচনে পার্টিসিপেট করা |

এই ভোট কেন্দ্রিক সিস্টেম এর একটা বৈশিষ্ট্য হলো, অনেক অর্গ্নানায়জড, অনেক ব্যপক একটা প্রতিষ্ঠান (রাজনৈতিক দল ) সৃষ্টি করে পাচ বছর মেয়াদী একটা ভোটিং সিস্টেমে কোটি কোটি মানুষের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করে তার পর ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত এবং কোন পরিবর্তন এর এজেন্ডা আপনি বাস্তবায়ন করতে পারবেন না |

এইটাই গণতন্ত্র |

কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্র যেই স্টাইলে দাড়াইছে সেই স্টাইলের গনতন্রের একটা সমস্যা হইলো, ভোটকেন্দ্রিক পরিবর্তন ব্যবস্থার একটা রাজনৈতিক দল এর অংশ হওয়া বাদে, বা নিজে একটা রাজনতিক দল করা বাদে আপনি দেশের কোনো ধরনের পরিবর্তনে পার্টিসিপেট করতে পারবেননা |

এবং এই দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক সিস্টেম এবং দুই পরিবার যে রাজতন্ত্র সৃষ্টি করেছে, তাতে কিছু এলিট পরিবার এবং কর্পোরেট, সিভিক সোসাইটি, মিলিটার, মেডিয়া, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, বিভিন্য লেভেল এর পুজির মালিকদের শক্তিশালী প্রতিনিধি না হইলে এই পলিটিকাল সিস্টেম আপনারে কোনো বেইল দিবেনা এবং আপনার কোনো সমস্যার সমাধান করবেনা |

ফলে কি দেখা যাচ্ছে ?
দেখা যাচ্ছে, কোনো বিষয়ে আপনি যদি ক্ষুব্ধ হন, বা কোনো বিষয়ে যদি আপনি পরিবর্তন কামনা করেন এবং এই দেশের লুটেরা তন্ত্র থেকে বেরিয়ে সত এবং যোগ্য মানুষের শাসন যদি সহ আর যা যা পরিবর্তন আপনি চান তার সব কিছুর জন্যে আপনাকে হয় আওয়ামি লিগ, বি এন পি, জামাত বা জাতীয় পার্টি বা বাম দলদের রাজনীতির একটা পার্ট হইতে হবে |

এবং আমজনতার একজন প্রতিনিধি হিসেবে আপনি জানেন, এই দলগুলো মূলত পরিবার ভিত্তিক লুটপাট যন্ত্র, ওদের কাছে আপনার কোনো বেইল নাই | ফলে আমজনতার একজন অংশ হিসেবে আপনার পক্ষে এই সিস্টেমে কোনো ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব না | এরা যেমন ইচ্ছা তেমন লুটপাট করে গেলেও আপনাকে সব এক্সেপ্ট করে নিতে হবে |


ফলে এই সিস্টেম কে পরিবর্তনের আল্টিমেটলি আপনার শুধু একটা অপশন থাকতাছে, সেইটা হইলো পাচ বছর বাদে একটা ভোট দেয়া |


এবং আপনি যখন ভোট দিচ্ছেন তখন সিস্টেম আপনার হাতে দুইটা গান্ধা মার্কা অপশন থেকে একটা বেছে নিতে বলতাছে| এইটার সব চেয়ে বড় বিপদ হইলো, আপনি যাকে বেচে নিচ্ছেন সে যে আপনি যেই পরিবর্তন চাচ্ছেন, সেই পরিবর্তন আনবে তার কোনো গেরেনটি নাই | এবং আমাদের বিগত ২০ বছরের ইতিহাস বলে, যে লঙ্কায় যায় সেই রাবন হযে পরে |

আপনার সেকেন্ড অপশন হইলো নিজেই একটা পলিটিকাল পার্টি করা

কিন্তু, আপনি একজন সংসারী মানুষ আপনি কিছু চেঞ্জ চান, আপনি চান দেশ টা ভালো মত চলুক, আপনি চান আপনার বাসার সামনে রাস্তায় যে ভাঙ্গা চূড়া আছে তা মিউনিসিপাল ঠিক মত ঠিক করুক, আপনি চান সরকারী দুর্নীতি বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন শক্ত হোক | আপনি তো পলিটিকাল পার্টি করতে চান না | এই টাইম, ইচ্ছা ,সামর্থ্য কোনটাই আপনার নাই |

তাইলে এখন কি দাড়াচ্ছে ? আপনি পলিটিকাল দল ও করতে পারবেন না ফলে দেখা যাচ্ছে যেই স্টেটাস কো আছে সেই স্টেটাস কো বজায় থাকবে, আপনি , এই দেশ পাচ বছর ধরে লুন্ঠিত হইতে থাকবেন |

ধরে নিলাম, আপনার সেই এনার্জি আছে - একটা দল করার |

তো আপনি কয় একজন মিলে একটা দল করলেন| তো সেই দল কে জন মানুষের কাছে নিতে হইলে, আপনাকে যাইতে হবে মিডিয়ার কাছে| এই মেডিয়া আবার সম্পূর্ণ ভাবে পরিবার তন্ত্রের ধারক বাহক দের দখলে ফলে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার খাতিরে এরা আপনার দল কে এক্সেস দিবেনা | তাছাড়া সংগঠন কে গ্রাস রুট লেভেল এ ছড়িয়ে দিতে হলে আপনাকে একটা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে হবে দেশ ব্যাপী তার জন্যে আপনার কোটি কোটি টাকা লাগবে অনেক অনেক কার্যকলাপ চালাতে হবে, যেইটার সামর্থ্য আপনি এবং আপনার দলের বাকি যারা আছে তাদের নাই | আর আপনি একটা দোল করলেই আপনাকে দেশের জনগণ লিডার হিসেবে যে মেনে নিবে তাও তো না | আপনার মত হাজার হাজার লিডার তাদের দুখ কষ্ট নিয়া রাস্তা ঘটে ঘুরে বেড়াচ্ছে |

তাইলে দেখা যাছে আপনার দল ও হবেনা মানে যেই স্টেটাস কো আছে সেই স্টেটাস কোই চালু থাকবে |


তাইলে আমজনতার একজন প্রতিনিধি হিসেবে আপনার অপশন কি ?

আপনি না পারতাছেন, পরিবার তন্ত্রের একজন হইতে কারণ, আপনি সেই সব পরিবারে জন্ম নেন নাই এবং আপনার এই সব লুটেরা দস্যুদের সাথে দেশ কে রেপ করার মানসিকতা নাই, আপনি না পারতাছেন পলিটিকাল দল গঠন করতে কারণ আপনার সেই সময় নাই কারণ আপনাকে আপনার পরিবার এর জন্যে রুটি রুজির জন্যে লড়াই করতে হচ্ছে এবং আপনি যদি দল গঠন করেন ও সিস্টেম আপনার দল কে এস্ক্সেস দিবেনা এবং দল এর সাংগঠনিক কাজ চালানোর মত কোটি কোটি টাকা আপনার নাই|

তাহলে কি এখন নিজের দেশ কে, বছর এর পর বছর ধরে লুন্ঠিত হতে দেখে যাওয়া ছাড়া এবং পাচ বছর পরে একটা ভোট দেয়া ছাড়া আপনার আর কোনো অপশন নাই ?

আছে | সেইটা বলতেই এই লেখা | এবং সেইটা থাকবে পরের পর্বে |
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×