নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাইল্যাকাডা

দিনমজুর

নাইল্যাকাডা ১ম বর্ষ, ২য় সংখ্যার প্রাপ্তিস্থানঃ আজিজ সুপার মার্কেট ১। বইপত্র/ ২। জনান্তিক/ ৩। শ্রাবণ/ ৪। প্রথমা (একুশে)/ ৫। তক্ষশীলা/ ৬। লিটল ম্যাগ প্রাঙ্গন লোক/ ৭। বিদিত/ ৮। পলল/ ৯।পাঠশালা মুক্তিভবন (পুরানা পল্টন) ১০। জাতীয় সাহিত্য প্রকাশন

দিনমজুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দরবনের কাছে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত প্রভাব নিরুপন বা ইআইএ বিশ্লেষণ-২

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১২

১ম কিস্তির পর থেকে:



৪) পানি দূষণ: যতই পরিশোধনের কথা বলা হউক, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি নির্গমন হলে তাতে বিভিন্ন মাত্রায় দূষণকারী উপাদান থাকবেই যে কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বেলায় ‘শূণ্য নির্গমণ’ বা ‘জিরো ডিসচার্জ’ নীতি অবলম্বন করা হয়। যে এনটিপিস রামপালে 'জিরো ডিসচার্জ' নীতি অনুসরণ না করে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে, সেই এনটিপিসিই যখন ভারতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করে তখন ‘জিরো ডিসচার্জ’ নীতি অনুসরণ করে যেমন: ভারতের ছত্তিশগড়ের রায়গড়ের কাছে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ রিপোর্টে বলা হয়েছে: “Zero Discharge concepts will be followed”. (রায়গড় ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ, এক্সিকিউটিভ সামারি, পৃষ্ঠা ই-১২ ).



অথচ রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ই্আইএ রিপোর্টে বলা হয়েছে:



“After treatment, effluent shall be discharged to the Passur River at a rate of 100 m3/hr. Effluent quality shall be monitored at different stage of discharge and intake.”



অর্থাৎ “পরিশোধন করার পর তরল বর্জ্য বা ইফ্লুয়েন্ট ঘন্টায় ১০০ ঘনমিটার হারে পশুর নদীতে নির্গত করা হবে। পানি নির্গমন ও গ্রহণ করার প্রতিটা স্তরেই ইফ্লুয়েন্টের গুনাগুনের উপর নজর রাখা হবে।“



আবার অন্যত্র বলা হয়েছে:



"To meet the water demand for plant operation, domestic water, environmental management 9,150 m3/hr (equivalent to 2.54 m3/s) surface water will be withdrawn from the Passur river and after treatment water shall be discharged back to the Passur river at the rate of 5,150m3/hr."



অর্থাৎ “প্ল্যান্ট পরিচালনা, ঘরোয়া ব্যাবহার, পরিবেশগত ব্যাবস্থাপনা ইত্যাদি কাজে পশুর নদী থেকে ঘন্টায় ৯১৫০ ঘনমিটার পানি সংগ্রহ করা হবে এবং পরিশোধন করার পর পানি পশুর নদীতে ঘন্টায় ৫১৫০ ঘনমিটার হারে নির্গমন করা হবে।“



ঘন্টায় ১০০ ঘনমিটার বা ৫১৫০ ঘনমিটার যাই হোক, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি নির্গমন করা হলে নির্গত পানির তাপমাত্রা, পানি নির্গমণের গতি, পানিতে দ্রবীভূতি নানান উপাদান বিভিন্ন মাত্রায় পানি দূষণ ঘটাবে যা গোটা সুন্দরবন এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করবে।



৫) বায়ুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি: ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে ২৭৫ মিটার উচু চিমনী থেকে নির্গত গ্যাসীয় বর্জ্যের তাপমাত্রা হবে ১২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। পরিবেশ সংরক্ষণ নীতিমালা মেনে চিমনি তৈরী করার কারণে এই উচ্চতাপ স্থানীয় এলাকার তাপমাত্র বৃদ্ধি করবে না বলে ইআইএ রিপোর্টে ফাপা আশা প্রকাশ করা হয়েছে:

It is unlikely that the heated stack gas will increase local air temperature. (পৃষ্ঠা ২৭০)



৬) বিষাক্ত ছাই : কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরে ৪ ৭ লক্ষ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টন ফ্লাই অ্যাশ ও ২ লক্ষ টন বটম অ্যাশ উৎপাদিত হবে। (পৃষ্ঠা )এই ফ্লাই অ্যাশ, বটম অ্যাশ, তরল ঘনীভূতি ছাই বা স্লারি ইত্যাদি ব্যাপক মাত্রায় পরিবেশ দূষণ করে কারণ এতে বিভিন্ন ভারী ধাতু যেমন আর্সেনিক, পারদ, সীসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম, বেরিলিয়াম, ব্যারিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, রেডিয়াম মিশে থাকে। (পৃষ্ঠা ২৮৭-২৮৮) উৎপাদিত ছাই যেন পরিবেশ দূষণ না করে সেজন্য ফ্লাই অ্যাশ চিমনি দিয়ে নির্গত হওয়ার আগেই ইএসপি সিস্টেমের মাধ্যমে ধরে রাখা হবে যদিও এরপরও ‘কিছু উড়ন্ত ছাই’ বাতাসে মিশবে বলে স্বীকার করা হয়েছে ইআইএ রিপোর্টে:



“Despite efficient ash management system, some fugitive ash might be produced and dispersed to the surrounding area” (পৃষ্ঠা ২৭১)



“Very little portion of this ash might escape from the system as waste.”(পৃষ্ঠা ২৮৫)



কিন্তু আরো ভয়ংকর ব্যাপার হলো , একদিকে বলা হয়েছে এই বিষাক্ত ছাই পরিবেশে নির্গত হলে ব্যাপক দূষণ হবে(পৃষ্ঠা ২৮৭) অন্যদিকে এই ছাই দিয়েই প্রকল্পের মোট ১৮৩৪ একর জমির মধ্যে ১৪১৪ একর জমি ভরাট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে!(পৃষ্ঠা ২৬৩) এই বর্জ্য ছাই এর বিষাক্ত ভারী ধাতু নিশ্চিত ভাবেই বৃষ্টির পানি সাথে মিশে, চুইয়ে প্রকল্প এলাকার মাটি ও মাটির নীচের পানির স্তর দূষিত করবে যার প্রভাব শুধু প্রকল্প এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।





উৎপাদিত বর্জ্য ছাই সিমন্টে কারখানা, ইট তৈরী ইত্যাদি বিভিন্ন শিল্পে ব্যাবহারের সম্ভাবনার কথা ইআইএ রিপোর্টে বলা হলেও আসলে কোন কারখানায় এর আদৌ কোন ব্যাবাহর হবে এরকম কোন নিশ্চিত পরিকল্পনা করা হয়নি । বড় পুকুরিয়ার মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেই উৎপাদি ছাই এরই উপযুক্ত ব্যাবহার বাংলাদেশে হচ্ছে না। বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত দৈনিক৩০০ মেট্রিকটন বর্জ্য ছাই কোন সিমেন্ট কারখানায় ব্যাবহারের বদলে ছাই এর পুকুর বা অ্যাশ পন্ডে গাদা করে রেখে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটানো হচ্ছে। ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চার বছরে ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৬১৩ টন ছাই পুকুরে জমা করে পুকুরের প্রায় পুরোটাই ভরে ফেলা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যও ১০০ একরের ছাইয়ের পুকুরের পরিকল্পনা করা হযেছে। অ্যাশ পন্ড বা ছাইয়ের পুকুরে গাদা করে ছাই বাতাসে উড়ে, ছাই মিশ্রিত পানি চুইয়ে মাটির নীচে ও আশাপাশের জলাভূমিতে বিষাক্ত ভারী ধাতুর মারাত্মক দূষণ ঘটাবে।



৭) শব্দ দূষণ: কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টারবাইন, জেনারেটর, কম্প্রেসার, পাম্প, কুলিং টাওয়ার, কয়লা উঠানো নামানো, পরিবহন ইত্যাদির কাজে ব্যাবহ্রত যন্ত্রপাতি ও যানবাহন থেকে ভয়াবহ শব্দ দূষণ হয়। সুন্দরবন এলাকায় রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের বেধে দেয়া মাত্রার(দিনের বেলা ৫০ ডেসিবল, রাতে ৪০ ডেসিবল) চেয়ে বেশি শব্দ তৈরী হবে বলে ইআইএতে স্বীকার করা হলেও বলা হয়েছে সবুজ বেষ্টনী তৈরীকরার কারণে প্রকল্পের সীমার বাইরে উচ্চ শব্দ যাবে না:



The operation of the plant will produce noise and at plant site, it may be felt exceeding the DoE’s limit (50 dB during daytime and 40 dB during nighttime). However, outside the project boundary, there will be no or very limited noise might be felt. The green belt and natural

buffer zone around the plant and boundary wall will dampen the generated noise.(পৃষ্ঠা ২৮৪)



সবুজ বেষ্টনি আসলে কতটুকু তৈরী করা হবে বা হলেও সেটা কতটা শব্দদূষণ প্রতিরোধ করতে পারবে সে দিকে যদি নাও যাই,তাহলেও প্রশ্ন থাকে সবুজ বেষ্টনি তো একদিনে তৈরী হবে না। গাছপালা বড় হয়ে পরিপূর্ণ বেষ্টনি তৈরী হতে যে সময় লাগবে সে সময়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকার উচ্চ শব্দ এবং সেই সাথে সবুজ বেষ্টনির বাইরে কয়লা পরিবহন, ওঠানো নামানো, ড্রেজিং, স্থল ও নদীপথে বাড়তি যান চলাচল ইত্যাদির কারণে যে শব্দ দূষণ হবে তার ফলাফল সুন্দরবন ও আশপাশের পরিবেশের উপর কি হবে! ইআইএ রিপোর্টে বেষ্টনির বাইরের শব্দ দূষণকে অস্বীকার করা হয় নি, যদিও এর পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে কোন কথা বলা হয়নি:



Traffic movement, loading and unloading of coal, operation of conveyor belt, and coal

transportation through waterways may generate noise.(পৃষ্ঠা ২৮৪)



৮) স্বাস্থ্যগত ঝুকি: কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত সালফার, নাইট্রোজেন, কার্বন ইত্যাদির বিভিন্ন যৌগ কিংবা পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, ব্যারিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতুর দূষণ ছাড়াও কুলিং টাওয়ারে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামণের কারণেও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আকারে নিউমোনিয়া জাতীয় রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ইআইএ রিপোর্টে এসম্পর্কে বলা হয়েছে:



Another major health risk involves cooling tower. With world experience, different studies suggest that bacterial contamination of cooling tower may cause outbreak of pneumonia in the surrounding community. Aerosol dispersed from the cooling tower favor growth of bacteria causing pneumonia.(পৃষ্ঠা ২৯১)



সুন্দর বনের ভেতর দিয়ে কয়লা পরিবহনের ফলাফল

রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানীকৃত কয়লা সুন্দরবনের ভেতর দিয়েই পরিবহন করা হবে! এ জন্য সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রায় সারা বছর ধরে হাজার হাজার টন কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ চলাচল করে গোটা সুন্দরবনের পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলবে।



সরকারি পরিবেশ সমীক্ষা ইআইএ)অনুযায়ী, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বছরে ৪৭ লক্ষ ২০ হাজার টন কয়লা ইন্দোনেশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সমুদ্র পথে আমদানী করতে হবে। আমাদানীকৃত কয়লা সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজের মাধ্যমে মংলা বন্দরে এনে তারপর সেখান থেকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সুন্দরবনের ভেতরে পশুর নদীর গভীরতা সর্বত্র বড় জাহাজের জন্য উপযুক্ত না হওয়ার কারণে প্রথমে বড় জাহাজে করে কয়লা সুন্দর বনের আকরাম পয়েন্ট পর্যন্ত আনতে হবে, তারপর আকরাম পয়েন্ট থেকে একাধিক ছোট লাইটারেজ জাহাজে করে কয়লা মংলাবন্দরে নিয়ে যেতে হবে। এর জন্য সুন্দর বনের ভেতরে হিরণ পয়েন্ট থেকে আকরাম পয়েন্ট পর্যন্ত ৩০ কিমি নদী পথে বড় জাহাজ বছরে ৫৯ দিন এবং আকরাম পয়েন্ট থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত প্রায় ৬৭ কিমি পথ ছোট লাইটারেজ জাহাজে করে বছরে ২৩৬ দিন হাজার হাজার টন কয়লা পরিবহন করতে হবে!



সরকারের পরিবেশ সমীক্ষাতেই স্বীকার করা হয়েছে, এভাবে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ চলাচল করার ফলে-



১) কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ থেকে কয়লার গুড়া, ভাঙা /টুকরো কয়লা, তেল, ময়লা আবর্জনা, জাহাজের দূষিত পানি সহ বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নি:সৃত হয়ে নদী-খাল-মাটি সহ গোটা সুন্দরবন দূষিত করে ফেলবে;



২) সুন্দরবনের ভেতরে আকরাম পয়েন্টে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে কয়লা উঠানো নামানোর সময় কয়লার গুড়া, ভাঙা কয়লা পানিতে/মাটিতে পড়ে- বাতাসে মিশে মাটিতে মিশে ব্যাপক পানি-বায়ু দূষণ ঘটাবে;



৩) চলাচলকারী জাহাজের ঢেউয়ে দুইপাশের তীরের ভূমি ক্ষয় হবে;



৪) কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ ও কয়লা লোড-আনলোড করার যন্ত্রপাতি থেকে দিনরাত ব্যাপক শব্দ দূষণ হবে;



৫) রাতে জাহাজ চলের সময় জাহাজের সার্চ লাইটের আলো নিশাচর প্রাণী সহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল সুন্দরবনের পশু-পাখির জীবনচক্রের উপর মারাত্বক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে ইত্যাদি।







সুন্দরবনের ভেতরে দিয়ে কয়লা পরিবহণের এই সব ফলাফল বর্ণনা করে আবার সমীক্ষায় আশাবাদ প্রকাশ করা হয়েছে জাহাজ চলাচলের আন্তর্জাতিক আইন, বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ইত্যাদি মেনে চললে, জাহাজ ধীর গতি চলাচল করলে, অপ্রয়োজনে শব্দ না করলে ও সার্চ লাইটের অপ্রয়োজনীয় ব্যাবহার নিয়ন্ত্রণ করা হলে নাকি এইসব ভয়ংকর ক্ষতির প্রভাব সুন্দরবনের পরিবেশের উপর মাইনর বা সমান্য হবে!

(সূত্র: প্রস্তাবিত রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশ সমীক্ষা, Impact of coal transportation, transshipment and handling, page 293-294)



প্রস্তাবিত রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ রিপোর্টের এই সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা থেকে স্পষ্ট যে, ইআইএ রিপোর্টে ভুল মানদন্ড ব্যাবহার, ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেখানো, কোন কোন ক্ষেত্রে ক্ষতির মাত্রার কোন পর্যালোচানাই না করা, ‘হতে পারে’, ‘না হওয়া সম্ভাবনাই বেশি’, ‘সুযোগ কম’ জাতীয় বিশেষণ ব্যাবহার করে ক্ষতির মাত্রাকে হালকা ভাবে উপস্থান ইত্যাদির মাধ্যমে সুন্দরবনের পাশে ১৩২০ মেগাওয়াটের এই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে জায়েজ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা স্বত্ত্বেও, এরপরও খোদ ইআইএ রিপোর্টে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, পরিচালানা ও কয়লা পরিবহনের ফলে সুন্দরবনের উপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে এমন সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে যা প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পকে পরিবেশগত বিবেচনায় অগ্রহণযোগ্য বিবেচনা করার জন্য যথেষ্ট।





বস্তুত, এর চেয়ে আরো সামান্য কারণে খোদ এনটিপিসিরই ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত অনুমোদন দেয় নি ভারতের কেন্দ্রীয় গ্রীণ প্যানেল। গত ৮ অক্টোবর ২০১০ তারিখে ভারতের দ্যা হিন্দু পত্রিকায় প্রকাশিত NTPC’s coal-based project in MP turned down বা ‘মধ্যপ্রদেশে এনটিপিসির কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প বাতিল’ শীর্ষক খবরে বলা হয়: জনবসতি সম্পন্ন এলাকায় কৃষিজমির উপর তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র গ্রহনযোগ্য হতে পারে না বলে ভারতের কেন্দ্রীয় গ্রীন প্যানেল মধ্যপ্রদেশে ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশন(এনটিপিসি) এর ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়নি। অথচ বাংলাদেশে সেই এনটিপিসিকে ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে সুন্দরবনের মতো সংরক্ষিত একটি বনাঞ্চল, কৃষি জমি, স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকার উপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাবগুলো তোয়াক্কা না করেই।



তথ্য সূত্র:

# Final Report on Environmental Impact Assessment of 2x (500-660) MW Coal Based Thermal Power Plant to be Constructed at the Location of Khulna

Click This Link of 2x (500-660) MW Coal Based Thermal Power Plant at Rampal in Bagerhat District, Khulna.pdf



# Environmental Impact Assessment for The Proposed 1320 MW Super Critical Coal based Thermal Power Plant at Kukurda In Raigarh Thesil and District in Chhattisgarh State

Click This Link -Executive Summary.pdf



# NTPC’s coal-based project in MP turned down

Click This Link

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: দারুন একটা পোষ্ট। প্লাচ সাথে প্রিয়তে। আমি একটা লেখা লিখেছিলাম কিন্তু টাইপ করার অলসতায় সেটা ব্লগে দেওয়া হয় নাই।


আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

সোহানী বলেছেন: বিশ্লেষনধর্মী লিখা কিন্তু শুনছে কে? পোষ্টটা স্টিকি করা উচিত যাতে সকলের নজর কাড়ে...

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৯

লুব্ধক০১ বলেছেন: +++++++

৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৩

মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: জন গুরুত্বপূর্ণ লেখা স্টিকি করা হোক ।

৫| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৯

মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: জন গুরুত্বপূর্ণ লেখা স্টিকি করা হোক ।

৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

জেনো বলেছেন: এক কথায় অসাধারন।
বড়পুকুরিয়ায় রাতের বেলা করে চিমনিতে ছাই ছাড়া হয়।
ধন্যবাদ।

৭| ০৭ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

মশামামা বলেছেন: মজার একটা গল্প শোনাই - দেখেন কি চমকপ্রদ কাহিনী। নিজে পাত্তা না পাইয়া দু'জন ব্লগারের প্রেমের কবিতা আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করিয়া একজন জনপ্রিয় ব্লগার জ্ঞান-বুদ্ধি হারাইয়া কিভাবে তার চক্ষুশূলদ্বয়কে গালিগালাজ করিয়া ব্লগ থেকে বিতাড়িত করিতে পারেন।

এখানে দেখেন - শায়মার ন্যাকা কাহিনী:
Click This Link

দুইদিন হইতে বিরাট গবেষণা করিয়া আমি ইহা আবিষ্কার করিয়া ফেলিলাম। তবে, নীলঞ্জন বা সান্তনু একটা গাধা। দিবাকে আমার ভালোই লাগতো। যাইহোক, উচিত ফল পাইয়াছে। তবে, শায়মা ও যে এক বিশাল মক্ষীরাণী এ ব্যাপারেও কোন সন্দেহ নাই।

৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১০

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: প্লাস!!

৯| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: প্রিয়তে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.