নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিকাল বেলা স্কুল থেকে বাসায় ফিরতেই আমার ছোট ফুফু খুব এক্সাইটেড হয়ে বলল, মিথী,জলদি দেখো বাসায় কে এসেছে!
কে এসেছে এটা জিজ্ঞেস করার সুযোগ না দিয়েই আমার কাঁধ থেকে ব্যাগ টেনে নিয়ে ফুফু ভেতরে চলে গেলেন। আমি ডাইনিং রুমে চেয়ারে বসে জুতোর ফিতা খুলতে খুলতে কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম ভেতরে কে হতে পারে!
ড্রইং রুম থেকে দাদীর খুব আনন্দমাখা একটা গলা শোনা যাচ্ছে আর সেইসাথে একজন অপরিচিত মানুষের খুব বিনয়ী কথার শব্দ। কে হতে পারে! মোজা-জুতো খুলে আমার রুমে যাওয়ার আগেই হালকা করে পর্দা সরিয়ে ড্রয়িংরুমে একটা উঁকি দিলাম। আমাকে দেখতে পেয়ে খুশিতে ডগমগ হয়ে দাদী বললেন, 'এই তো বাবা তোমার ছাত্রী চলে এসেছে।'
আমি সালাম দেওয়ার পর তিনি অবাক চোখে আমাকে দেখে নিয়ে উচ্ছাসিত কন্ঠে দাদীকে বললেন, 'কি বলেন খালাম্মা! এটা মিথী!'
নিজের চোখকে কিছুতেই যেন বিশ্বাস করতে পারলেন না। তাই কিছুটা বিড়বিড় করে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে আরেকবার বললেন, 'ওহ্! তুমি মিথী! কত্ত বড় হয়ে গেছ। আমাকে চিনতে পেরেছো?'
আমি একটু বিব্রত হয়ে গেলাম। সাথে একটু লজ্জাও পেলাম। এক ঝলক তাকিয়ে সামনে বসা মানুষটাকে দেখলাম। ফর্সা, চশমা পড়া, একটু স্বাস্থ্যবান, মধ্যবয়সী একজন ভদ্রলোক।
মাথা নীচু করে আমি শুধু না বোধক হালকা করে মাথা নাড়লাম।
আমার দাদী হৈ হৈ করে উঠল- 'আরে! এটাতো আতিক, তোমার ছোটবেলার টিচার। তোমার প্রথম টিচার ছিলো এই আতিক। তোমাকে যে কত আদর করত জানো? কোনদিন হাতে করে তোমার জন্য কিছু একটা না নিয়ে তোমাকে পড়াতে আসেনাই। তুমি একবার ওর নাকে এমন জোরে পেন্সিল বক্স দিয়ে ব্যথা দিয়েছিলে, রক্ত বের হয়ে সে কি অবস্হা! কি যে আদর করত তোমাকে আর এখন তোমার মনে নাই!'
আমি আরো লজ্জায় পড়ে গেলাম। স্যার এবার হেসে উঠে দাদীকে বললেন, 'এই কথাটা আপনার মনে আছে খালাম্মা?'
দাদী বললেন, 'মনে থাকবেনা কেন বাবা? তুমি ওকে কতটা আদর করেছে সেটা কি ভুলে যাওয়ার মত? আমারতো প্রায় সময়ই তোমার কথা মনেহয় বাবা।'
দাদী আরো উৎসাহ নিয়ে আমাকে মনে করিয়ে দিতে লাগলেন, 'তোমার জন্মদিনের ভিডিওটাতেও তো ও আছে। পাগল ছেলেটা কি করেছিলো জানো! তোমাকে নিয়ে অনেকগুলো মিষ্টি মিষ্টি ছড়া লিখে উপহার দিয়েছিলো তোমাকে। কি যে আদর করতো তোমাকে!'
স্যার নিজেই এবার একটু লাজুক হেসে বললেন, ' ওর তো মনে থাকার কথাও না খালাম্মা। ওতো তখন ছোট্ট একটা বাচ্চা।'
আমি এতক্ষণে একটু মুখ তুলে স্যারের দিকে তাকালাম। চেহারাটা এখন একটু একটু পরিচিত লাগছে। আমার পঞ্চম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে করা ভিডিও-তে দেখা চেহারাটা একটু যেন পরিষ্কার হল আমার কাছে। তখন এই চশমাটা ছিল না। আর গঠণটাও আরেকটু হালকা পাতলা ছিল। স্যার আমাকে বললেন, 'এখন তো ক্লাস এইটে পড়। কেমন লাগে পড়াশুনা?'
আমি মাথা নীচু করে হেসে বললাম, 'জ্বি, ভালো।'
তিনি এবার একটু জোরে হাসলেন। আনমনেই যেন বললেন, 'তখন তুমি পড়াশুনা নিয়ে কি-যে মর্জি করতে! চেয়ার টেবিলে কখনো পড়তে বসোনি। তোমাকে আমি কোলে নিয়ে বাগানে ঘুরতাম আর বর্ণমালা শেখাতাম। ছড়াগুলোও এভাবেই শিখেছো। কোলে না বসালে লিখতেও চাইতে না। খুব মিষ্টি একটা বাচ্চা ছিলে তুমি। ওভালটিন চকলেট আনতাম তোমার জন্য। তুমি খুব পছন্দ করতে। আর দোকানে নিয়ে গেলে গ্লুকোজ বিস্কুটেরর প্যাকেটটা ধরতে। তোমার মনে নাই হয়ত:। মনে থাকার কথাও না অবশ্য।'
এবার আমি আরেকটু লজ্জা পেলাম। এমন অনেক সুন্দর কিছু স্মৃতিচারণের পর স্যার আমাকে বললেন, 'গল্পের বই পড় তুমি?'
আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়তেই খানিকটা উদাস কন্ঠে স্যার বললেন, 'রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা গল্পটা পড়েছো তুমি?'
আমি বললাম, 'জ্বি'।
আমাকে অবাক করে দিয়ে স্যার বললেন, 'এই গল্পটা আমাকে তোমার কথা মনে করিয়ে দেয় মিথী। আমার জন্য তুমিই ছিলে ঐ ছোট্ট মিনি। মজার ব্যাপার দেখো, কাবুলিওয়ালা জেল থেকে ফিরে আসার পর মিনি তাকে চিনতে পারে নাই। আজ তুমিও আমাকে চিনতে পারোনি'।
একটু থেমে স্যার বললেন, 'আমার কাছে তুমি এখনো সেই ছোট্ট মেয়েটা, যে সবসময় মিনির মত আমার সন্তানতূল্য হয়ে থাকবে। মিনিকে কাবুলিওয়ালা তার দেশে ফেলে আসা মেয়ের স্হান দিয়েছিল, পড়েছো তো! আমি তোমাকে তেমন করেই ভালবেসেছি সবসময়'।
কথাগুলোর শেষদিকে স্যারের গলাটা খুব বিমর্ষ লাগছিল। আর ততক্ষণে আমার চোখে পানি চলে এসেছে। আমি প্রাণপণ মাথা নিচু রেখে চেখের পানি লুকাতে লাগলাম। কতগুলো চকচকে লাল,সবুজ ওভালটিন চকলেটের মোড়ক আর গোলাপি প্যাকেটে একগোছা আঙ্গুরের ছাপাওয়ালা গ্লুকোজ বিস্কিটের প্যাকেটের ছবি মনে হতেই কেমন একটা অপরাধ বোধে আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম।
এই মানুষটাকে কেন আমি এক দেখাতেই চিনলাম না!
আমার জন্য তিনিও সেই কাবুলিওয়ালার মত কষ্ট পেলেন। নিজেকে খুব অপরাধী লাগছিল। এখনো এমনটাই অনুভব করি। ক্ষমা কি চাওয়া উচিৎ ছিলনা আমার! তারপরও কেন যে ক্ষমা চাওয়া হয়নি! কেন যে মুখ ফুটে বলতে পারিনি- এখন আমার মনে পড়েছে স্যার। আপনাকে আমি চিনতে পেরেছি। কাবুলিওয়ালার মত মনে কষ্ট চেপে আপনাকে আমি কিছুতেই যেতে দেবোনা স্যার!
কিছুই বলা হয়নি।শুধু চলে যাওয়ার সময় পায়ে হাত ছুঁয়ে সালাম করেছিলাম। স্যার বলেছিলেন, 'যোগাযোগ রেখো'।
স্যার আমার দাদীর কাছে উনার ঠিকানা আর ফোন নাম্বার লিখে দিয়েছিলেন। মাঝে মাঝে স্কুল থেকে ফিরে শুনতাম স্যার ফোন করছিলেন।খুব ভাল লাগত আমার।
আবার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেল। এনালগ ফোনগুলো ডিজিটাল হয়ে যাওয়ায় ল্যান্ড ফোনের নাম্বার বদলে গেল। ঠিকানাটাও কোথায় রেখেছেন একসময় ভুলে গেলেন দাদী। আরেকবার হারিয়ে ফেললাম জীবনের আরেকজন পিতৃতুল্য, পরম শ্রদ্ধেয়, প্রিয় একজন, আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক। ছোটবেলার পরম বন্ধু। আমার অনেক প্রিয় কাবুলিওয়ালা।
প্রাত্যহিক ব্যস্ততায় তেমনভাবে সারাবছর মনেও পড়েনা আজকাল এতটাই অকৃতজ্ঞ আমি। তারপরও বছরঘুরে শিক্ষক দিবস যখন আসে, তখন কেন যেন এই মানুষটার চেহারাটাই সবার প্রথম আমার মনে ভেসে ওঠে। সহস্র কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি স্যার, আমাকে এতটা আপন ভেবে মনে ঠাঁই দেবার জন্য। এতটা স্নেহ আর ভালোবাসা দেবার জন্য। আপনার এই ভালবাসার ঋণ আজীবন মাথা পেতে বয়ে বেড়াব আমি।
ছবি কার্টেসি : গুগল
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৮
মিথী_মারজান বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
উনাকে পেয়ে হারানোর ব্যর্থতা অবশ্যই আমার।
আসলে তখনও সম্পর্ক মূল্যায়ন করার মত ম্যাচিওরিটি আমার ছিলোনা।
তবে এই স্যারকে হারিয়ে ফেললেও আমার অন্যান্য ছোটবেলার টিচারদের সাথে এখনো আমার যোগাযোগ আছে।
উনারা সবাই অতুলনীয় সন্দেহ নেই তবে এই স্যার আমাকে অন্যরকমভাবে সম্পর্কের মূল্যায়ন শিখিয়েছেন।
যেখানেই থাকুক খুব ভাল থাকুক আমার প্রিয় কাবুলিওয়ালা।
মন্তব্যে ধন্যবাদ।
আপনার কাবুলিওয়ালার জন্য আমার শ্রদ্ধা।
২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪১
চাঁদগাজী বলেছেন:
শিক্ষকের প্রতি অনেক ভালো অনুভবতা
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১০
মিথী_মারজান বলেছেন: লেখাটি ফিল করার জন্য অনেক ধন্যবাদ চাঁদগাজি সাহেব।
এটা আমার নিখাদ অনুভূতি, তবে স্যারের মহানুভবতাটা ছিল অনন্য।
ভালোবাসা আর স্নেহের ঋণে আমি আজীবনের জন্য উনার কাছে দায়বদ্ধ হয়ে গিয়েছি।
ভালো থাকবেন।
শুভেচ্ছা এবং ধন্যবাদ।
৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সত্যি এক ভিন্নরকম অনুভবে মনটা ছেয়ে গেল!
দারুন সমন্বয়ে আজকের কাবুলীওয়ালা যেন দুৃয়ের অসাধারন এক মেলবন্ধন!
মুগ্ধ পাঠ
+++
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০১
মিথী_মারজান বলেছেন: আপনার মন্তব্যটিও আমার মন ছুঁয়ে গেল ভাইয়া।
অনেক ধন্যবাদ।
শুভ কামনা রইলো।
৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২
মনিরা সুলতানা বলেছেন: দারুন এক নৈবদ্য !!
চমৎকার লেখা মিথীমনি !!!
অনেক দরদ আর মায়া লেখায় ।
ভালোবাসা তোমার জন্য।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৫
মিথী_মারজান বলেছেন: থ্যংক ইউ প্রিয় মন আপু।
নৈবদ্য আর কোথায় দিতে পারলাম, মানুষটাকেই তো হারিয়ে ফেলেছি।
কোনদিন তিনি জানবেনও না, মিনি তার কাবুলিওয়ালাকে এখনো কতটা ফিল করে।
আপনার জন্য অনেক বেশি ভালোবাসা মন আপু।
৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৫
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: ডুমুরের ফুল, ডুমুরের ফুল
কোথায় তুমি থাকো?
কখন আসো, কখন যাও
দেখা হয় নাকো....
এটা কে রে? এক সময়ের পুচকে মিনি???
সারের জন্য শ্রদ্ধা। তিনি তোমাকে তো আসলেই মেয়ের মত ভালোবাসে। একে বারে পিওর।
স্যারকে মাঝেমধ্যে ফোন দিও। পারলে বছরে দু এক বার নিজের হাতে রান্না করে স্যারের সাথে দেখা করো।
গল্পের নাম, "আমার কাবুলিওয়ালা" হলে ভালো হত।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৭
মিথী_মারজান বলেছেন: হাহাহা
বন্দুক থুক্কু বন্ধু আমার
লুকিয়ে আমি থাকি
ইজি কাজে বিজি আমি
তাই অফলাইনে বেশি থাকি।
শিরোনাম প্রথমে আমিও এটাই ভেবেছিলাম, পরে পোস্ট করার সময় বেশি ইমোশনাল হয়ে এভাবে লিখে ফেলেছিলাম।
আপনার সাথে আগেরটা ভাবনা মিলে যাওয়ায় আবার এডিট করে দিলাম।
স্যারকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য থ্যাংক্স।
আল্লাহ্'র কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা চারপাশে এত বেশি ভালোবাসার মানুষদের মাঝে আমাকে ঘিরে রেখেছেন জন্য।
তবে, স্যারের সাথে যে যোগাযোগ এখন আর নেই এটা শেষের দিকে লেখা আছে ফাঁকিবাজ পাঠক।
আবার কখনো ফিরে পেলে অবশ্যই তাকে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াবো।
৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৬
ল বলেছেন: মুগ্ধ হলাম
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩১
মিথী_মারজান বলেছেন: লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
কিছু চমৎকার, নি:স্বার্থ সম্পর্ক আছে জন্যই পৃথিবীটা বোধহয় এত বেশি সুন্দর।
ভালো থাকবেন।
শুভেচ্ছা।
৭| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: ও! আমি ফাঁকিবাজ! আর চন্দ্রকন্যারা মনেহয় সুপার হিরো, বুদ্ধির ঢেঁকি।।।
আচ্ছা, কাবুলিওয়ালার নাম কী?
দেশের বাড়ী?
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১০
মিথী_মারজান বলেছেন: জনাব ফাঁকিবাজ সাহেব,
স্যারের নাম লেখাতেই আছে, আতিক।
পুরো নাম খুব সম্ভবত: মো: আতিকুর রহমান।
গ্রামের বাড়ী যে কোথায় এটা জানিনা।
ঢাকায় স্যারের অফিস আর বাসার এ্যাড্রেস দিয়েছিলেন তিনি।
রঙ বা কি নামের কোন একটা এ্যাডভারটাইজ ফার্ম বা এমন কিছু একটা অফিস এ্যাড্রেস হিসাবে দেয়া ছিল।
সেদিনের কথায় কথায় স্যার বলেছিলেন গ্রামীণফোনের একটা লোগো ছিল উনাদের করা।
(আগের লোগোটা যেখানে একটা মহিলা আর একটা পুরুষের ফেইস সহ কানে সেলফোন টাইপ যে লোগোটা ছিল।)
পরবর্তীতে জিপি থেকে সেই প্রতিষ্ঠানের ফোন নাম্বার কালেক্ট করেও সেখানে স্যারকে খুঁজেছি আমি।
উনি তার অনেক আগেই ঐ জবটা ছেড়ে দিয়েছিলেন আর কোন কন্টাক্ট নাম্বারও সেখান থেকে পাইনি।
৮| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২২
ঢাবিয়ান বলেছেন: ভাল লেগেছে। ++++
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৩
মিথী_মারজান বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাবিয়ান।
শুভেচ্ছা জানবেন।
৯| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৫
বার্ণিক বলেছেন: কিছুটা কৃত্রিমতা থাকলেও ভাল লেগেছে।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭
মিথী_মারজান বলেছেন: কৃত্রিমতা কোথায় পেলেন কাইন্ডলি বলবেন কি?
আমার এবং আমার স্যারের তরফ থেকে এটা একটা নিখাদ আবেগ।
লেখার দোষে কোন কৃত্রিম কিছু মনেহলে সেটা হল আমার ভাব প্রকাশেের ব্যর্থতা।
ধন্যবাদ।
১০| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০০
অচেনা হৃদি বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ!
আপু এখন তো ফেসবুকে পুরনো পরিচিতদের সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। আমার মনে হয় আপনি উনাকে ফেসবুকে কোন এক সময় পেয়ে যাবেন।
অ-নে-ক ভালো লাগা রইল।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১০
মিথী_মারজান বলেছেন: খুঁজে পেলে সেটা হবে আমার জন্য বিশাল পাওয়া।
আর, আমাদের বাসার এ্যাড্রেস তো চেইঞ্জ হয়নি, তাই আবার অনেক বছরপর হলেও কোন একদিন তিনি আসবেন সেই আশা আমার মনের ভেতর কেন যেন উঁকি দেয়।
অনলাইনে আরো ভাল করে খুঁজে দেখবো।
থ্যাংক ইউ হৃদি আপু।
অনেক ভালোবাসা রইল।
১১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৪
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এমন শিক্ষককে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু বর্তমান সময়ের শিক্ষকরা শিক্ষাকে টাকা উপার্জনের হাতিয়ার আবার কেউ বা পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ। এমন শিক্ষক পাওয়া এখন অসম্ভব।
আপনার স্যারের জন্য অনেক শ্রদ্ধা।
চমৎকার পোস্ট। লাইক।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৩
মিথী_মারজান বলেছেন: ব্যবসায়িক মেন্টালিটির কিছু শিক্ষক আছে জানি, তবে ভাইয়া কেন যেন আমি আমার প্রায় প্রতিটা টিচারের কাছ থেকেই এত স্নেহ পেয়েছি! আলহামদুলিল্লাহ্।
আমি আসলেই অনেক ভাগ্যবতী।
স্কুল লাইফের একদম প্রাইমারী লেভেলের অন্য আরেকজন টিচারও এখনো মাঝে মাঝে আমাকে দেখতে আসেন।
তবে এই স্যার আমার কাছে অন্যরকম স্পেশাল।
উনার অনুভূতির প্রকাশটা আমাকে অন্যরকম নাড়া দিয়েছিল।
মন্তব্যে ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার লিটল এঞ্জেলদের নিয়ে অনেক অনেক ভাল থাকুন।
শুভ কামনা।
১২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩০
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
বাহ!! নিজের অতীতে ফিরে গেলাম৷
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৬
মিথী_মারজান বলেছেন: তাই ভাইয়া!!!
তাহলে আপনিও লিখে ফেলুন সেইসব সোনালী অতীতের গল্প।
আপনাকে পেয়ে ভালো লাগলো ভাইয়া।
ভালো থাকুন।
সুন্দর থাকুন।
সবসময় পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৭
জাহিদ অনিক বলেছেন:
বাহ মিথী আপু ! দারুণ লাগলো আপনার শিক্ষকের গল্প পড়ে। আপনি সত্যিই বেশ ভাগ্যবান মিথী আপু। আপনার ছোট্টবেলার শিক্ষক বেশ বেশী ভালো ছিল। বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। একটানে পড়ার মত।
ভালো থাকুক আপনার স্যার। এমন স্যার পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের কথা। এবং আপনার মত ছাত্রী পাওয়াও কম সুখের কথা না। শিক্ষকের কথা কয়জনে মনে রাখে।
জানানের এমন একজন শিক্ষক হোক
আপনার শিক্ষকের গল্প পড়ে নিজের শিক্ষকের কথা মনে পড়ে গেল-----------
আমাকে শিশু-শ্রেণিতে পড়তে হয়েছে দুই বছর ! (বয়স তিন থেকে পাঁচ হওয়া পর্যন্ত) । বাবা-মা দুজনেই স্কুল মাস্টার থাকলে যা হয়। একক পরিবার হওয়াতে বাবা-মা দুইজনেই স্কুলে চলে যেত ফলে আমাদের দুই ভাইকে দেখাশুনার জন্য কেউ বাসায় থাকত না। অগত্যা, মা স্কুলে যাওয়ার সময় সাথে করে টানতে টানতে আমাদের দুই ভাইকেও নিয়ে যেত। স্কুলে যাওয়ার পথে আমাদের হাতে দেয়া হত তিন বাটির একটা স্টিলের টিফিন ক্যারিয়ার। যেটার মধ্যে আমাদের তিনজনের দুপুরের খাবার থাকত। সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী শুরুর অর্ধেক পথ সেটা আমি টেনে নিতাম এবং বাকী অর্ধেক আমার ভাই নিত। মাঝেমাঝে দেখা যেত আমার ভাগের অর্ধেক পথ যখন শেষ হবে হবে তখন আমার ভাইজান এক দৌড় দিয়ে চলে গেছে স্কুলের কাছাকাছি। ফলে পুরোপথ টিফিন ক্যারিয়ারটা আমাকেই বয়ে নিতে হত।
এমন করুণ অবস্থায় আমি মায়ের দিকে তাকাতাম।
মা আমাকে অভয় দিয়ে বলতেন, - আজকের পুরোটা তুই নিয়ে নে, আগামীকাল ঐ শয়তানটাকে দিয়ে পুরোটা টানাবো। বলা বাহুল্য এই আগামীকাল আজ পর্যন্ত আসে নাই।
যাইহোক, স্কুলে নিয়ে আমাদের বসিয়ে দেয়া শিশু-শ্রেণীতে। আমরা চল-স্লেট নিয়ে হিজিবিজি করতাম। এইভাবে প্রথম বছর চলে গেল, ফাইনাল পরীক্ষার ফল দিল। শিশু শ্রেণীর ছাত্ররা ক্লাস ওয়ানে উঠে গেল। আমাদের ওঠা হল না। (আমাদের বয়স তখন তিন পেড়িয়ে চার, আম্মাজানের এক কথা- ছয় বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুতেই তাঁর ছেলেদের তিনি ক্লাস ওয়ানে প্রোমোশন দিবেন না- দিবেন না তো দিবেনই না। ) রয়ে গেলাম আরও এক বছর শিশু-শ্রেণীতে।
পরের বছর- বার্ষিক পরীক্ষার ফল দিল। শিশু-শ্রেণীর ছাত্ররা ক্লাস ওয়ানে প্রোমোশন পেয়ে গেল। নতুন বই পেল। বাংলা বইএর উপরে বড় বড় করে লেখা “আমার বই- বাংলা” গণিত বইএর উপর লাল কালিতে লেখা “দেখি সব পারি কিনা”। সবাই মহা-উৎসবে বইএর উপরে পোষ (মলাট) লাগাচ্ছে। আমি দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছি ওদের আনন্দ ! আমার কাছে কোন নতুন বই নাই !
ব্যাপারটা একদম মেনে নিতে পারলাম না। হুট করে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিলাম--
কান্না শুনে লাইব্রেরী থেকে প্রধান শিক্ষক এসে জানতে চাইলেন কাঁদছি কেন?
তখন স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন প্রফুল্ল রঞ্জন সরকার। তিনি ছিলেন আমার নানুর বন্ধু। ফলে আমার মা’কে তিনি মেয়ের মত দেখতেন, আর আমাদের দৌহিত্রের মত।
যাক গে, এতক্ষণে যখন একটা সুযোগ পেয়েছি হেডমাস্টারের কাছে মা’র নামে আচ্ছামত একটা নালিশ করতেই হবে- কাঁদতে কাঁদতে বললাম---
“আ আ আমি পরীক্ষায় ফার্স্ট হইছি কিন্তু আমাকে ওয়ানের বই দেয় নাই উ উ আ আ (কান্না চলছে সুর করে করে)”
শুনে তো প্রফুল্ল স্যার বেজায় ক্ষেপে গেলেন- হুংকার ছেড়ে বললেন, কার এত বড় সাহস আমার নাতিদের বই দেয় নাই ! হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন লাইব্রেরীতে, নিজের হাতে ক্লাস ওয়ানের এক সেট নতুন বই তুলে দিয়ে দিয়ে আম্মুর দিকে রাগত স্বরে বললেন-
- “তোমার সাহস তো কম না? পরীক্ষায় ফার্স্ট বয়’কে তুমি বই দাও নাই !
আমার এইসব ম্যাওপ্যাও পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা আপু।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩০
মিথী_মারজান বলেছেন: ওরে আমার ছোট্ট আলাভোলা ভাইটা রেএএ...।
ছোটবেলায় তো তাহলে আরো কিউটি ছিলেন আপনি!
আপনার ভাইকে পেলে পিট্টি দেব আমি, আমার ভাইটার সাথে এত অনাচার করার জন্য।
সত্যি বলতে আমি কিন্তু হাসতে হাসতে শেষ!
এত সুন্দর কোন কমেন্ট আমি আমার ব্লগিং লাইফে পাইনাই।
কমেন্ট প্রিয়তে নেয়া গেলে এটা আমি প্রিয়তে নিয়ে রাখতাম।
হা হা হা।
নানাভাইয়া হেড স্যারটা কত্ত কত্ত ভালো!
উনার জন্য শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা।
সবকিছু যেন আমি চোখের সামনে দেখলাম।
ছোট্ট জাহিদ অনিকের উউ আআ কান্না, টিফিন ক্যারিয়ার হাতে গোল্লু একটা বাচ্চার গালফোলানো অভিমান, দুষ্টু আরেকটা বাচ্চার দৌঁড়ে পালানোর আনন্দ, এমনকি নতুন বইয়ের গন্ধমাখা গালভেজা চোখ ভেজা ফার্স্ট বয়ের খুব ইনোসেন্ট বিজয়ী এক হাসি।
অসাধারণ স্মৃতিচারণ ভাইয়া।
ম্যাওপ্যাও থেকে যদি দারুণ কিছু হয় তাহলে তো এমন ম্যাওপ্যাওই সবচেয়ে ভালো।
অনেক অনেক ভালোবাসা রইল ডিয়ার ফার্স্ট বয়, কবি।
১৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৬
আখেনাটেন বলেছেন: সুন্দর একটি অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। মহান এই শিক্ষকের জন্য রইল শ্রদ্ধা।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৭
মিথী_মারজান বলেছেন: লেখাটি পড়ার জন্য এবং আমার স্যারকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
এটা আমার জন্য অমূল্য এক স্মৃতি বা অভিজ্ঞতা।
ভালো থাকুন।
আর আপনার ইউনিক স্টাইলে লেখা মজার মজার পোস্ট দিয়ে দিয়ে সবাইকে আনন্দে রাখুন।
১৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৩
মলাসইলমুইনা বলেছেন: প্রিয় নদীতো আত্মীয়,
আগের শিরোনামটা চেঞ্জ করলেন কেন ? ভালোবাসার উল্লাসে রাখা প্রথম ওই শিরোনামের মধ্যেইতো সেই কবে ফেলে আসা ছেলেবেলার আদরে যত্নে কোলে কাঁধে করে অ আ ,ক খ শেখানো প্রথম স্যারের জন্য মনের অনেক গভীরে জমা আপনার সত্যিকারের ভালোবাসাটা মুক্তোর মতো জড়িয়ে ছিল I পুরো লেখার সাথে শিরোনামটাও খুব ছেলেবেলার স্যারের জন্য আপনার ভালোবাসার একটা অনবদ্য নৈবদ্যও হয়ে উঠেছিল I এখনকার শিরোনামটা খুব সাধারণ হয়ে গেছে আপনার জীবনের একজন উল্লেখযোগ্য মানুষের জন্য ভালোবাসায় বোনা অসাধারণ এই লেখাটার জন্য I সব সময়ের মতোই মায়াময় আরেকটা লেখায় ভালোলাগা |
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪১
মিথী_মারজান বলেছেন: তা-ই বুঝি!!!
শিরোনাম নিয়ে সবসময় কি যে কনফিউশনে থাকি!
সবসময় এত বেশি আবেগে ভাসি যে মাঝে মাঝে কিছু ভুল হয়ে যায়, লজ্জাও পাই কিছুটা, মনের অনুভূতিগুলো বেশি উচ্ছাস নিয়ে বলে ফেলি জন্য।
তাই ভাবলাম এবারও হয়ত: তেমন আবেশিত হয়ে অতিরিক্ত কিছু লিখে ফেললাম নাতো!
তাই নিজাম ভাইয়া বলার পর এডিট করেছিলাম শিরোনামটা।(যদিও প্রথমল আমি নিজেও আমার কাবুলিওয়ালা শিরোনামটি ঠিক করেই লেখাটা শুরু করেছিলাম)।
এই স্যার সত্যিই আমার প্রাণের মানুষ, প্রাণের কাবুলিওয়ালা।
ঠিক আমার আব্বুর মত করে উনিই মনেহয় আমাকে এতটা স্নেহধন্য করে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন।
কি যে আফসোস হয় এমন মানুষকে ফিরে পেয়েও আবার হারিয়ে ফেলেছি জন্য!
তারচেয়েও বেশি কষ্ট কেন হয় জানেন, - তিনি যদি এমনটা ভেবে কষ্ট পান যে, তার মিনি তাকে তেমনভাবে কখনো অনুভব করতে পারেনি।
এমন ভেবে কষ্ট পেলে সে দায়ভার আমি কিভাবে এড়াবো!
যেখানে থাকুক, খুব ভালো থাকুক আমার প্রাণের কাবুলিওয়ালা।
তার মনে মিনি হয়ে থাকাটা আমার আজন্ম আকাঙ্খা হয়ে থাকবে।
শিরোনাম ফিল করার জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় নদীতো আত্মীয় আমার।
মায়ার মন আপনার, তাইতো অনুভূতিগুলো এভাবে ছুঁয়ে যায় আপনাকে।
@পাঠকের প্রতিক্রিয়া, ডিয়ার বন্ধু, সবকিছু নিয়ে কনফিউশনে থাকা আর সেইসাথে আবেগে ভাসা মানুষ আমি।
শিরোনামটা তাহলে আগের মতই করে দিলাম।
আরেকবার চেইঞ্জ করলাম জন্য আপনাকেও স্যরি বলে নিলাম বন্ধু।
প্রাণের মানুষটাকে নিয়ে লেখায় প্রাণ কথাটি এখন কেমন একটু মিস্ করছি আমি।
১৬| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: অনেকদিন পর আপনার পোষ্ট পেলাম।
ধন্যবাদ।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭
মিথী_মারজান বলেছেন: খুব ব্যস্ত একটা সময় যাচ্ছে রাজীব ভাইয়া।
প্রচন্ড ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ব্লগে ঢুঁ দিতে পারিনা তাই।
গতকাল আর আজ একটু ফ্রি আছি তাই ব্লগে আসার ফুসরত হল।
আগামীকাল থেকে আবার উধাও হয়ে যেতে হবে মনেহয়।
খোঁজ খবর নেবার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
সুন্দর থাকুন।
১৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৯
সুমন কর বলেছেন: লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগল। মুগ্ধ।
+।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৮
মিথী_মারজান বলেছেন: থ্যাংক ইউ সুমন ভাইয়া।
ভালোলেগেছে জেনে অনুপ্রাণিত হলাম।
শুভ কামনা।
১৮| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮
ওমেরা বলেছেন: আপু খুব ভাল লাগল আপনার আবেগ মাখা লিখা ।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫
মিথী_মারজান বলেছেন: আমি বরাবরই একটু আবেগী মানুষ ওমেরা।
ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম।
ভাল থাকবেন ওমেরা।
শুভেচ্ছা।
১৯| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০০
করুণাধারা বলেছেন: মিথী, এই লেখার মধ্যে প্রাণ আছে। আমি ছবির মত দেখতে পাচ্ছিলাম ডাইনিং রুমে বসে জুতো খোলা, স্যারের সাথে কথা বলার দৃশ্য। চমৎকার পোস্ট।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯
মিথী_মারজান বলেছেন: এমন সুন্দর করে বলার জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় করুণাধারা আপু।
প্রাণের মানুষকে নিয়ে কোন লেখায় কেউ প্রাণের স্পর্শ পেলে তখন অন্যরকমের এক ভালোলাগা কাজ করে।
আন্তরিক শুভ কামনা রইল।
২০| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: মিথী_মারজান ,
আপনার এমন লেখাটিতে "কাবুলীওয়ালা"র উল্লেখ এবং আপনার জীবনের একটা অধ্যায়ের সাথে তার স্মৃতি জড়িয়ে যা লিখলেন তাতে বুকের গভীরে কোথাও টনটন করে উঠলো । গলার কাছে কিছু কান্না আটকে গেলো কি !
লেখাটি পড়ে শৈশবের গহীন থেকে ভেসে উঠলো এক কাবুলীওয়ালার মুখ । মনে পড়ে গেলো, রাঙা চেলিতে সাজানো মিনির সাথে শেষ দেখা হবার মূহুর্তে সুদূরের এক কাবুলীওয়ালার মুখে যে এক করুন পিতার আদল ফুটে উঠেছে , রবীন্দ্রনাথ তাকে এঁকেছেন এভাবে ----
" এই বলিয়া সে আপনার মস্ত ঢিলা জামাটার ভিতর হাত চালাইয়া দিয়া বুকের কাছে কোথা হইতে একটুকরা ময়লা কাগজ বাহির করিল । বহু সযত্নে ভাঁজ খুলিয়া দুই হস্তে আমার টেবিলের উপর মেলিয়া ধরিল ।
দেখিলাম, কাগজের উপর একটি ছোট হাতের ছাপ । ফটোগ্রাফ নহে, তেলের ছবি নহে , হাতে খানিকটা ভুষা মাখাইয়া কাগজের উপরে তাহার চিহ্ণ ধরিয়া লইয়াছে । কন্যার এই স্মরণচিহ্ণটুকু বুকের কাছে লইয়া রহমত প্রতিবৎসর কলিকাতার রাস্তায় মেওয়া বেচিতে আসে - যেন সেই সুকোমল ক্ষুদ্র শিশুহস্তটুকুর স্পর্শখানি তাহার বিরাট বিরহী বক্ষের মধ্যে সুধা সঞ্চয় করিয়া রাখে ।............. তাহাকে দেখিয়া কাবুলিওয়ালা প্রথমে থতমত খাইয়া গেল, তাহাদের পুরাতন আলাপ জমাইতে পারিলনা । অবশেষে হাসিয়া কহিল, " খোখী, তোমি সসুরবাড়ি যাবিস ?" "
জানিনে, আপনার সেই শিক্ষক আপনাকে কখনও রাঙা চেলিতে দেখবে কিনা , কিম্বা আপনার হাতে একখানা গ্লুকোজ বিস্কুটের প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে আর কখনও বলে উঠবে কিনা , মিথী কত্তো বড় হয়ে গেছো !
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭
মিথী_মারজান বলেছেন: স্যারের কথা ভাবলে আমার বুকের গভীরেও টনটন করে সবসময়।
লেখাটিতে একটি শব্দও বানানো নেই।
চেষ্টা করেছি দেখা হবার দিনটা হুবহু সেভাবে সংরক্ষণ করতে।
দুই বছর আগে একদিন টিচার্স ডে তে স্যারকে মনেপড়তেই লিখে রেখেছিলাম।
ব্লগে শেয়ার করলাম দেরীতে।
কোথায় আছেন, কেমন আছেন আমার স্যার জানিনা, তবে আজীবন আমি অপেক্ষায় থাকবো তার সাথে আরেকটিবার দেখা হওয়ার জন্য।
উনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে এখন আমার কাছে।
আমার মেয়েকে দেখলে উনি নিশ্চিত ছোট আমি ভেবে ভুল করবে।
খুব প্রিয় একটা স্মৃতিতে এভাবে একাত্ম হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা।
শুভ কামনা নিরন্তর।
আর হ্যাঁ, দেরী করে রিপ্লাই দেবার জন্য দু:খিত।
গতকাল রিপ্লাই দেবার জন্য লগইন করেও সুযোগ পাইনি জন্য খারাপ লেগেছে।
ভালো থাকবেন।
২১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮
শায়মা বলেছেন: কাবুলিওয়ালা টিচার!
দারুন আপুনি!
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২১
মিথী_মারজান বলেছেন: হুম আপু,
বাল্যবন্ধু কাবুলিওয়ালা।
টিচার কাবুলিওয়ালা।
একজন কাবুলিওয়ালা বাবা।
উনি আমার জীবনের একটা স্বার্থক ছোটগল্প।
ভালোবাসা প্রিয় শায়মা আপু।
২২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:১১
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: হায়রে অতীত - আবার যদি ফিরে যাওয়া যেতো ???
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪
মিথী_মারজান বলেছেন: ইশ্!
কত মজাই না হতো তাহলে!!!
ভুলেও আর বড়বেলায় ফিরতাম না আমি।
পুরাতন আফসোসে নতুন করে ফেলে দিলেন ঠাকুরমাহমুদ ভাইয়া।
আমার ব্লগে স্বাগতম।
২৩| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫২
প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার লেখা, অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩০
মিথী_মারজান বলেছেন: লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।
শুভেচ্ছা রইল।
২৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: স্মৃতির অমলিন এই ঘটনা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
++++++++++++
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২১
মিথী_মারজান বলেছেন: স্মৃতিকথায় শামিল হওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
শুভেচ্ছা।
২৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৭
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমি কি আর মন্তব্য করব আমার কথা গুলো অনেকেই বলে ফেলেছেন।
করুনাধারা আপুর বলেছেন, এই লেখার মধ্যে প্রাণ আছে। আমি ছবির মত দেখতে পাচ্ছিলাম ডাইনিং রুমে বসে জুতো খোলা, স্যারের সাথে কথা বলার দৃশ্য।
আহমেদ জী এস ভাইয়া বলেছেন,আপনার এমন লেখাটিতে "কাবুলীওয়ালা"র উল্লেখ এবং আপনার জীবনের একটা অধ্যায়ের সাথে তার স্মৃতি জড়িয়ে যা লিখলেন তাতে বুকের গভীরে কোথাও টনটন করে উঠলো । গলার কাছে কিছু কান্না আটকে গেলো কি !
আপনার সেই শিক্ষকের জন্য অনেক শ্রদ্ধা রইল।
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৩
মিথী_মারজান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া এভাবে ফিল করার জন্য।
প্রিয় স্যারের জন্য শ্রদ্ধার প্রকাশে কৃতজ্ঞতা।
ভাল থাকবেন ভাইয়া।
২৬| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:৩৬
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অনেক সুন্দর গল্পটি। মনে ধরেছে।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২
মিথী_মারজান বলেছেন: লেখাটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
শুভেচ্ছা জানবেন।
২৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: এ পৃথিবীটাতে কতনা মায়ার খেলায় আমরা জড়িয়ে পড়ি!
খুব ভাল লাগলো আপনার এ মধুর স্মৃতিচারণ। করুণাধারা যেমনটি বলেছেন, এই লেখার মধ্যে প্রাণ আছে - সে প্রাণের স্পন্দন আমিও অনুভব করেছি। আর এই "প্রাণ" কথাটা নিয়েই শিরোনামের কয়েকবার অদল বদল, সেটাও ঘটেছে মায়ানুভূতি থেকেই।
@জাহিদ অনিক, আপনার এই ম্যাঁওপ্যাঁও মন্তব্যটার জন্য মেনী মেনী থ্যাঙ্কস! পুরোপথ টিফিন ক্যারিয়ারটা আপনাকেই বয়ে নিতে হত - আশাকরি এর সুফল আপনি ব্যক্তিজীবনে ইতোমধ্যে পেয়ে গেছেন। এর সুফল হিসেবে নিশ্চয়ই আপনার হাতের মাসল বিল্ড আপ ভাল হয়েছে, আপনার মধ্যে ধৈর্য আর আত্মবিশ্বাস বেড়েছে, আর সর্বোপরি আপনি পরবর্তী জীবনে ত্যাগ স্বীকারের মহিমাটুকু উপলব্ধি করে এড় চেয়ে আরো অনেক বড় ত্যাগ স্বীকারে আগ্রহী হয়েছেন।
আহমেদ জী এস এর মন্তব্যটা পড়ে সেই কবেকার পড়া 'কাবুলীওয়ালা"র কথা মনে পড়ে গলার কাছে কী যেন একটা আটকে গেলো!
মায়াময় এ পোস্টে ভাল লাগা + +
২৮| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:০০
মিথী_মারজান বলেছেন: পৃথিবীটা আসলেই এক মায়ার জগৎ।
স্মৃতিচারণেে আপনাকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
যে মমতা আর যত্ন নিয়ে লেখাটি এবং কমেন্টগুলো পড়েছেন সেটিও আমাকে ছুঁয়ে গেল।
মন্তব্যে সবসময় অন্যরকম আবেশ ছড়ান আপনি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকবেন আপনি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪০
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: প্রত্যেকের জীবমেই এমন অনেক কাবুলিওয়ালা রয়েছেন, কিন্তু ক'জনই শেষমেশ তাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পেরেছে। আপনার প্রথম সার্থকতা দেখে আমার হিংসে হয়েছিল কিন্তু শেষার্জন দেখে নিজের অপ্রাপ্তির কথা ভুলে গেলাম।
লেখার হাত অনেক ভাল, শুভকামনা থাকলো।