নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরমানু গল্পঃ পাত্রী দেখা !!

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৫




-এতো দেরি করলেন কেন ?

আমি এখনও ঠিক মত বসতেও পারি নাই আর এই মেয়ে এমন কঠিন কন্ঠে প্রশ্নটা করলো যে আমি কিছুক্ষন কি বলবো ঠিক বুঝতেই পারলাম না ! মনে মনে ভাবলাম এখনও বিয়ে হয় নাই তাই গলার স্বর এতো কঠিন হয়ে গেছে । আর বিয়ে করলে কি অবস্থা হবে কে জানে ?
অবশ্য বিয়ের পরে প্রত্যেকটা ছেলের অবস্থাই খারাপ হয় । কারো কম আর কারো বেশি ! আমার অবস্থা মনে হচ্ছে বেশ খারাপের দিকে যাবে যদি এই মেয়ের সাথে বিয়ে হয় !

তানজিনা আবার বলল
-আপনার আসার কথা ঠিক চার টার সময় আর এখন বাজে পাঁচটা ! এক ঘন্টা লেট ?
আমি তানজিনার প্রশ্নের জবার না দিয়ে ওর চেহারার দিকে কিছুটা হাসি হাসি মুখ নিয়ে তাকিয়ে রইলাম । এমন একটা ভাব যেন ও খুব একটা মজার প্রশ্ন করেছে । এদিকে তানজিনার চেহারা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে । না জানি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যায় !

আমার হঠাৎই কেন জানি মনে হল তানজিনা আগে থেকেই কোন কারনে রেগে ছিল । আমার দেরি করে আসাতে সে আরও বেশি রেগে গেছে । এতোক্ষন রাগ ঝাড়ার জন্য অন্য কোন মানুষ পায় নি । আমাকে পেয়ে এমন মনে হয় কিছুটা রাগ ঝাড়বে ! যাই কোন আমি বেশি পাত্তা দিলাম না । তানজিনার রাগ কে আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ওকে বলল
-আসলে তোমার স্বামীর জন্য তুমি ঠিক কতটুকু অপেক্ষা করতে পারো তাই পরীক্ষা করছিলাম । কিন্তু মনে হচ্ছে খুব বেশিক্ষন অপেক্ষা করতে প্রস্তুত নও ! এমন করলে তো হবে না ! আরও অপেক্ষা করতে শিখতে হবে । শুনো নাই সবুরে মেওয়া ফলে !

তানজিনা আমার কথা শুনে যেন আরও রেগে গেল । চোখ দিয়ে পারলে আমাকে ভস্ম করে করে দেয় ! আমি হাসি মুখে তাকিয়ে থাকি !


মেয়েটির নাম তানজিা আহমেদ । বাবার পরিচিত কারো মেয়ে মনে হয় । আমি ঠিক মত চিনিও না । বলা নেই কওয়া নেই বাবা গত পরশু দিন বললেন যে তিনি আমার বিয়ে দিটে চান ওমুক মেয়ের সাথে । আমি যেন তার সাথে দেখা করি । দুজনার পছন্দ হলে কথা বার্তা আগে বারানো হবে !

যাই হোক বাবার বাধ্য ছেলের মত মেয়ে দেখতে চলে এলাম আজকে । যদিও একটু লেট করে ! তবে দেরিটা আমি ইচ্ছে করেই করেছি ! কারন যতদুর খোজ খবর নিয়ে জেনেছি যে মেয়েটা বেশ যোগ্যতা সম্পন্ন । কোন দিন পরীক্ষায় সেকন্ড হয় নি নাকি । তার উপর এমবিএ করে কোন কোম্পানীতে চাকরী করছে । এই মেয়ের আমার বিয়ের করার কোন কারন নেই । তার উপর মেয়েটা দেখতে যথেষ্ঠ সুন্দরী বললে এই সৌন্দর্য্য কে খাটো করা হবে !

আমি প্রথম বার দেখে তো খানিকটা ধাক্কার মত খেয়েছিলাম ! বারবার মনে হয়েছিল এই মেয়ে এতো সুন্দরী কেন ! যাই হোক আমার মোটামুটি ধারনা যে এই মেয়ে আমাকে কোন ভাবেই বিয়ে করবে না ! আর যখন বিয়ে করবেই না তখন এই মেয়ের সাথে একটু মজা করাই যায় !

তানজিনা কঠিন গলায় বলল
-আপনার ধরনা কেমন করে হল যে আপনার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে ?
আমি অবাক হওয়ার ভান করে বললাম
-ওমা হচ্ছে না !
-জি না ! বাবা-মার ইচ্ছে মত আমরা কেবল দেখা করতে এসেছি !
-আরে সমস্যা নেই । বাবা মার ইচ্ছে মত যখন আমরা দেখা করতে এসেছি তখন তাদের ইচ্ছে মত নিশ্চই বিয়েটাও হয়ে যাবে !
-আমার তা মনে হয় না !
-আরে তাই নাকি ? জানেন আমার মায়েরও তাই মনে হয় ! দেখেছো তো তোমার আর আমার মায়ের মতের কত মিল ! যদি তুমি আমার বউ হও তাহলে পুত্র বধু আর শ্বাশুড়ির ভিতর কোন দিন ঝগড়াই হবে না !

তানজিনা আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে রইলো যেন আমি সদ্য পাবনা থেকে পালিয়ে এসেছি ! আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে তাকিয়ে রইালাম !

আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই ওর ফোন বেজে উঠলো ! ফোনে কিছুক্ষন কি যেন কথা বলল । তারপর ফোন রেখে বলল
-আমাকে এখন যেতে হবে !
-এখনই ! সবে তো এলাম !
-আপনি সবে এসেছেন কিন্তু আমি অনেকক্ষন এসেছি ! আমার কাজ আছে ! আসি ভাল থাকবেন !
-আরে চলে যাচ্ছো ?
-হুম !
-একটা সমস্যা হয়ে গেছে ?
-কি সমস্যা ?
-আমি মানি ব্যাগ আনতে ভুলে গেছি ! আর প্রচুর খিদেও পেয়েছে । তুমি দয়া করে খাবারের অর্ডার টা দিয়ে বিলটা দিয়ে যাও ! বিয়ের পরে তো আর বিল দিবে আগে একবার দিয়ে নাও !

তানজিনা আমার এই কথা শুনে এতো অবাক হল যে খানিকট ক্ষন রাগ করতে ভুলে গেল ! আমি ভেবেছিলাম ও প্রথমিক ধাক্কা টা সামলে নিয়ে ব্যাগ নিয়ে উঠে চলে যাবে ! কিন্তু আমাকে খানিক টা অবাক করে দিয়ে ওয়েটার কে ডাকলো হাতের ইশারায় ! তারপর খাবারের অর্ডার দিল । সাথে সাথে বিলের কাগজ টাও আনতে বলল !

-ঠিক আছে ?
-হুম ! একদম ঠিক আছে ?
-এখন আমি যাই ?
-একা একা খাবো ?
-আপাতত একা একাইখান ! ঠিক আছে !

খাবার আসার আগেই তানজিনা উঠে চলে গেল ! আমি চুপচাপ বসে রইলাম ! বুঝতেই পারছি বাসায় গেলে বাপের কাছে ঝাড়ি শুনতে হবে ! মেয়ে নিশ্চই বাসায় নিয়ে আমার নামে খুব ভাল কিছু একটা বলবে না ! আর সেই খবর আমার বাসায় পৌছাতে খুব বেশি দেরি হবে না !

যাক গে ! খাবার চলে এসেছে । এতো চিন্তা করার কোন দরকার নেই । আগে পেট কে শান্ত করে নেই !



-------
-আপনি ?
আজকে দিনের ভিতর তানজিনা কে এই নিয়ে ২য়বার অবাক হতে দেখলাম । ঘন্টা চারেক আগে একবার রেস্টুরেন্টের ঝকঝকে আলোতে আমার দিকে অবাক হয়েছিল । আর এখন ল্যাম পোস্টের আলোতে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে ।
-হুম !
-বাসায় যান নি ?
-তোমাকে বলেছিলাম না যে মানি ব্যাগ আনি নি । বাসায় কিভাবে যাবো তাই ভাবছিলাম ! ভাবলাম আসেপাশে তোমার অফিস আছে । কিছুক্ষন অপেক্ষা করে তোমার সাথে যাই !

তানজিনা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুটা সময় ! কি বলবে মনে হচ্ছে ভেবে পাচ্ছে না ! আমি ডান পকেট থেকে একটা দুমড়ানো গোলাপ ফুল বের করে ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম ! বললাম
-ঐ সময় তোমাকে দেওয়ার জন্য এনেছিলাম ! দিতে ভুলে গেছিলাম !
তারপর বাঁ পকেট থেকে ছোট্ট একটা চকলেটের প্যাকেটও বের করলাম !
-এটাও এনেছিলাম !
-তখন ?
-হুম !
-সত্যি ?
-আসলে সত্যি না ! আমি এগুলো কিনেছি তুমি চলে যাওয়ার পরে ! জানি আমার প্রতি প্রথম ইম্পেশন টা তোমার ভাল হয় নি ! আমাকে কি আরেক টা সুযোগ দেওয়া যায় ?

তানজিনা কিছু সময় চুপ করে থেকে বলল
-এতোক্ষন আপনি কোথায় ছিলেন ?
-এই তো আশে পাশেই !
-আশেপাশে ?
-মানে ঐ সামনের ফাস্ট ফুডের দোকান টা তে !
আমি তানজিনার অফিসের ঠিক সামনের দোকান টা হাত দিয়ে দেখালাম !

-এই চার ঘন্টা বসেছিলেন ?
-হুম ! ভাবছিলাম আবার যখন দেখা হবে তখন কি কি বলব ! এই ভাবতে ভাবতেই সময় কেটে গেল !
-তো কি ভাবলেন ?
-অনেক কয়টা প্লট ভেবে রেখেছিলাম ! কিন্তু একটাও কাজে আসছে না !

আমার দিকে কিছুটা সময় তানজিনা তাকিয়ে থেকে হাত বাড়িয়ে গোলাপ ফুল টা নিল ! তারপর চটকেল টা !
-আপনার কাছে তো টাকা ছিল না ! এগুলো কিনলেন কিভাবে ?

আমি কোন উত্তর না দিয়ে হাসলাম ! তানজিনা ততক্ষনে ফুটপাত দিয়ে হাটতে শুরু করেছে । আমিও ওর পাশে পাশে হাটতে শুরু করলাম !
এক হাতে আমার গোলাপ ফুল টা অন্য হাতে চকলেটের প্যাকেট টা নিয়ে ও কি যেন ভাবছে । আমি ওর কথা বলার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি ! মেয়েটি কি আরেকবার সুযোগ দিবে ....


মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৬

অপ্‌সরা বলেছেন: আমার মনে হচ্ছে রাস্তায় যেতে যেতে দোমড়ানো ফুলটা সে ছুড়ে ফেলবে ডাস্টবিন পেলেই আর চকলেট টা কোনো বাবুকে দিয়ে দেবে রাস্তায় যাকে পাবে তাকেই। :)

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩০

অপু তানভীর বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৯

অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: এই গল্প মানি না, মানব না। X(( X(( X(( X((

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৭

অপু তানভীর বলেছেন: সে কি ? কেনু ? :-& :-&

৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: পরমাণু গল্প ভালা পাইলাম ।
এবার এলেকট্রন প্রোটন গল্পের অপেক্ষায় :P :P

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৭

অপু তানভীর বলেছেন: দেখা যাক সামনে আরও কত কি আসিবে ? ;););)

৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৩

নতুন বলেছেন: ভাল লাগছে... একটা ছোট্ট সট` ফিলিম বানাইয়া ফেলান...

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৮

অপু তানভীর বলেছেন: বানানো যায় অবশ্য !
কিন্তু কেমনে বানামু ? ক্যামেরা নাই ! :D :D

৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৩

নতুন বলেছেন: যেই কাহিনি তাতে ভাল মোবাইল দিয়েই বানানো যাবে...

কাহিনিটা মজার..

আর মাথায় প্লানটা রেখে দেন.... তাহলে ক্যমেরা ঠিকই যোগাড় হয়ে যাবে..

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩১

অপু তানভীর বলেছেন: উকে
দেখা যাক সামনে কোন দিন.....।

৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২১

অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: আগন্তুকের গল্প চাই। :(

২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৩

অপু তানভীর বলেছেন: এখন না ! রবিবারের পরে দেখি কিছু করা যায় নাকি !! :):)

৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১২

মিজভী বাপ্পা বলেছেন: ভালা হইচে :) ++++++++++

২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৬

অপু তানভীর বলেছেন: :) :) :) :)

৮| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৬

পার্থ তালুকদার বলেছেন: ভাললাগা.....

২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৩

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৬

সোনারতরী বলেছেন: আর একবার সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি......

না হলে ............

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:০৮

অপু তানভীর বলেছেন: না হলে তো খবরই আছে আমি জানি :D :D :D

১০| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩

সোনারতরী বলেছেন: জানার জন্য ধন্যবাদ

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৫

অপু তানভীর বলেছেন: :D :D :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.